মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে হামলা চালাতে পারে। আইএস সমর্থিত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলায় ‘শিগগিরই আসছি’ লেখা একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া আইএসের বাংলায় লেখা ওই পোস্টারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদন বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে সম্ভাব্য হামলার কথা জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে আইএসের ‘শিগগিরই আসছি, ইনশাল্লাহ…’ লেখা ওই পোস্টারটি প্রকাশিত হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পোস্টারে 'শিগগির আসছি ইনশাল্লাহ' লেখার পাশাপাশি আল মুসারাত নামে একটি গ্রুপের লোগো সংযুক্ত রয়েছে। সেখান থেকেই তারা ধারণা করছে, এটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে হামলার ইঙ্গিত। প্রতিবেদনে ওই পোস্টারের কোনও ছবি যুক্ত করা হয়নি। গোয়েন্দা সূত্র বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলে দাবি তাদের।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বিশ্লেষক ও গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করেছে, আইএসের কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীনের (নব্য জেএমবি) মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থান জোরালো করেছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। জেএমবি কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশি কয়েকটি রাজ্যে সদস্য নিয়োগ ও আস্তানা তৈরি করেছে। শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের পর এই পোস্টার প্রকাশকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
তবে আইএস এর হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিলেও কোনো হামলার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশে কোনো হুমকি বা হামলার তথ্য এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে নেই।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নিউজিল্যান্ডে হামলার পর আমাদের দেশের জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে একটি প্রতিশোধপরায়ণ প্রবণতা জেগে উঠেছে। আমাদের বিভিন্ন ইন্টেলিজেন্সির মাধ্যমে কিছু তথ্য পেয়েছি। তবে হামলার জন্য যে পরিমাণ সরঞ্জামের প্রয়োজন সেগুলো জোগাড় করা অনেক সময়ের ব্যাপার।
তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমাদের বিভিন্ন অভিযানে তাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা অনেকটা ভেঙে গেছে। তবে শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনার পর থেকে নিঃসন্দেহে তারা ইন্সপায়ার হয়েছে। তবে হামলার জন্য সাংগঠনিক কাঠামো, মনোবল ও সরঞ্জাম তাদের নেই।
অবশ্য পৌনে ৩ বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর তার দায় স্বীকার করে বার্তা প্রকাশ করেছিল আইএস। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই সংঘটিত ওই হামলায় ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে। আর অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরেরদিন ভোরে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে বাকি জিম্মি উদ্ধার করা হয়। তবে হামলায় জড়িত পাঁচ জঙ্গি এবং ওই রেস্তোরাঁ কর্মী সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হয়।