নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে বাস ও ট্রাক মালিক–শ্রমিকদের ধর্মঘট। অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সড়কে বাস চলছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
পরিবহন শ্রমিকদের একাংশ যে ধর্মঘট শুরু করেছে, তাতে পেছন থেকে সমর্থন যোগাচ্ছেন সরকারেরই দুই সাবেক মন্ত্রী। বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের প্রধান দু'টি সংগঠনের দু'জন শীর্ষ নেতা শাজাহান খান এবং মসিউর রহমান রাঙ্গা। তারা দুজনেই আওয়ামী লীগের জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
তবে শাজাহান খান এবং মসিউর রহমান রাঙ্গা দুজনেই জানিয়েছেন, তাদের দু'টি সংগঠনের পক্ষ থেকে ধর্মঘট বা কর্মবিরতির কোন কর্মসূচি নেয়া হয়নি। কিন্তু তারা আবার একইসাথে একথাও জানিয়েছেন যে, শ্রমিকদের দাবিকে তারা সমর্থন করেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান বলেছেন, সরকারের গঠিত কমিটিতে তারা আইনটিতে বিভিন্ন অপরাধের ব্যাপারে জরিমানা কমানোসহ বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছিলেন। সেই আলোচনা যখন চলছে তার মধ্যেই আইনটি কার্যকর করা হয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
এখন বিষয় হচ্ছে যে জরিমানার কথা বারবার বলা হচ্ছে সে প্রসঙ্গ আসছে কেন। আপনারা যদি আইন মেনে গাড়ি চালান তাহলে জরিমানার বিষয় আসবে কেন? আমিতো মনে করি, জরিমানা আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন ছিল। একইসঙ্গে তালিকায় আরও কিছু বিষয় যোগ করা দরকার। যেমন- ফুটপাথ দিয়ে বাইক চালালে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, উল্টোপথে রিকশা গেলে ১ সপ্তাহের জেল (যেহেতু একজন রিকশাওয়ালা বেশি টাকা জরিমানা দিতে পারবে না) এ ধরনের আরও কিছু বিষয় আসা উচিৎ ছিল।
এবার আসি পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে। গত তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন তারা। আজ আবার এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে কেউ যদি গাড়ি নিয়ে বের হন তাকে আটকে রাখাসহ মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি পুলিশের গাড়ি, রুগিবাহী অ্যাম্বুলেন্সও যেতে দেয়নি তারা।
দুই সাবেক মন্ত্রীর প্রশ্রয়ে করা এ আন্দোলন জনবিরোধী শুধু নয়, অনৈতিকও বটে। তারপরও তিনদিন ধরে সরকার কেন এদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এটাই আমার প্রশ্ন। তাহলে কি সরকারও আইন বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়! নিরাপদ সড়কের দাবিতে করা আন্দোলনে আমরা পুলিশ আর ছাত্রলীগের ‘অ্যাকশন’ দেখেছি, অথচ এক্ষেত্রে পুরো নিরব। সবইকি খান সাহেবের কারিশমা।
বিষয়টির সমাধান হোক সেটা আমি চাই। তবে সেটি অবশ্যই সড়ক আইনে শাস্তি কমিয়ে নয়। বরং শাস্তি আরও বাড়ানো উচিৎ। পরিবহন শ্রমিকদের অনৈতিক আর অহেতুক দাবির কাছে মাথা নত না করে সরকারের উচিৎ আরও কঠোর হওয়া। না হলে ৭১ এর প্রেতাত্মা খান সাহেবরা বারবারই হায়েনার হাসি হাসবে আর আমাদের সড়কে পিষে মারবে।