somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

♥♥♥বলতে পারেন বাংলাদেশের জাতীয় খেলার নাম কি?♥♥♥♥

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বলতে পারেন এই খেলা আপনি সর্বশেষ কবে খেলেছেন? না আপনাকে ধিক্কার দেবার জন্য এই পোষ্ট করিনি, শুধু একটা প্রশ্ন মনে জাগে- কেন এই খেলাটা আমাদের জাতীয় খেলা? এটা কি শুধুই ক্লাস টুতে পড়ুয়া বাচ্চাদের সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা করার একটি প্রশ্ন মাত্র?

আজ আপনাদের আমি আপনাদের জাতীয় খেলা কাবাডি'র ইতিহাস, কিভাবে খেলতে হয় ইত্যাদি জানাব।
কাবাডি খেলার ইতিহাস
কাবাডি এশিয়া মহাদেশের গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় দেশ সমূহের একটি জনপ্রিয় খেলা। বিশেষ কোরে পাক ভারত উপমহাদেশের এটি একটি প্রাচীন খেলা। এই উপমহাদেশে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন নামে এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু আঞ্চলিক খেলা তাই কোন বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন ছিল না। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু খেলার পোশাকী নাম কাবাডি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত হা-ডু-ডু খেলাই ছিল বিনোদনের অন্যতম উৎস। হা-ডু-ডু প্রতিযোগিতার বিজয়ীদলকে পুরস্কার স্বরূপ যাড়, খাসি, পিতলের কলসি কিংবা সোনা- রূপার মেডেল উপহার দেওয়া হতো। এটি একটি দলীয় খেলা এবং এ খেলায় খরচ বলতে কিছুই নেই।
ধারণা করা হয় যে প্রাগৈতিহাসিক যুগে যখন খাদ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য মানুষ এককভাবে বা দলীয়ভাবে শিকার করতে এবং বন্য প্রাণীর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে শিখেছিল, তখনই কাবাডির সূচনা। পুরো দক্ষিণ এশিয়াতে কাবাডি প্রচলিত থাকলেও এর উৎপত্তি স্থল পাঞ্জাব। কাবাডির উৎপত্তি সম্পর্কে আরেকটি মত হোচ্ছে, মহাভারতে বর্ণিত অভিমন্যূ কর্ত্তৃক কৌরব সৈন্যদের চক্রব্যূহ ভেদ করার ব্যর্থ চেষ্টার ঘটনার থেকে ধারণা নিয়ে এ খেলার সৃষ্টি হয়।:|:|
কাবাডি খেলার উৎপত্তি সম্পর্কে প্রচলিত আরেকটি ধারণা হচ্ছে- এটি আরম্ভ হয় তামিলনাড়ুতে। দু'টি বাচ্চা ছেলের ছোঁয়াছুয়ি খেলা থেকে এর ধারণা পাওয়া যায়, যদিও দম ধরে রাখার বিষয়টি তাতে পরে যুক্ত হয়। তামিল এলাকায় এ খেলাটি কাবাডি, সাডুগুডি, গুডুগুডু, পালিঞ্জাডুগুডু ও সাডুগুডাত্থি নামে পরিচিত। কাবাডি শব্দটি খুব সম্ভবত উৎপত্তি হয়েছে তামিল কাই (হাত) ও পিডি (ধরা) শব্দ থেকে। এ খেলা ভারত ও পাকিস্তানে কাবাডি, বাংলাদেশে হা-ডু-ডু, নেপালে ডুডু, শ্রীলংকায়, গুডুগুডু, থাইলাণ্ডে থীকাব ও মালয়েশিয়ায় ছি গুডু গুডু নামে প্রচলিত ছিল। ব্যক্তি ও দলগতভাবে শত্রুপক্ষের আক্রমণ প্রতিহতকরণ এবং তড়িৎ পাল্টা আক্রমণের কৌশল চর্চা করতে গিয়েই এ খেলার উদ্ভব। এ খেলায় সফলতার পূর্বশর্ত হোচ্ছে শারীরিক ও মানসিক ক্ষিপ্রতা, পেশীর ক্ষিপ্রতা, ফুসফুসের শক্তি ও সহনশীলতা, দ্রুত চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও তা প্রয়োগের সামর্থ এবং সর্বোপরি প্রতিপক্ষের কৌশল ও মনোভাব অনুধাবনের যোগ্যতা।
কাবাডি একটি অনাড়ম্বর খেলা। এর জন্য খুব আয়োজনের প্রয়োজন নেই। উন্মুক্ত মাঠে, ইনডোরে, স্কুলে, কলেজে, বাড়ির আঙিনায় এমনকি বাড়ির পাশে এক চিলতে জমিতেও কাবাডি খেলা যেতে পারে। তবে কাবাডি কোর্টের স্বীকৃত মাপ হল ছেলেদের জন্য ১২.৫ মি গুনন ১০ মি. এবং মেয়েদের জন্য ১১ মি গুনন ৮ মি.। প্রতি দলে ৭ জন খেলোয়াড় থাকে এবং খেলার সময় প্রতি অর্দ্ধে ২০ মিনিট করে ৪০ মিনিট। মাঝখানে ৫ মিনিটের বিরতি। একজন রেফারী খেলা পরিচালনা করেন। তাকে সহায়তা করেন দু'জন আম্পায়ার। একজন থাকেন যিনি পয়েন্ট গণনা করেন।
একটি ঐক্যবদ্ধ নিয়মে খেলাটি প্রচলেনের জন্য ১৯৫০ সালে ভারতে জাতীয় কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। ১৯৫৩ সালে এই ফেডারেশন কাবাডি খেলার নিয়ম- কানুন প্রণয়ন করে। কয়েক বছর বিচার বিশ্লেষণ করে ১৯৬০ সালে কিছু নিয়ম-কানুন সংশোধন ও সংযোজন করেন। ১৯৭৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম টেস্ট বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। ভারতীয় কাবাডি দল ৫টি টেস্টে অংশগ্রহণ কোরে ৪- ১ এ জয় লাভ করে। এ প্রতিযোগিতা বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহের সৃষ্টি করে। ফিরতি টেস্ট খেলার জন্য বাংলাদেশের জাতীয় কাবাডি দল ১৯৭৯ সালে ভরতে যান।
১৯৮৭ ভারতের লৌহনগরী নামে খ্যাত মধ্য প্রদেশের ভিলাই স্টিল মিলের গেস্ট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারত বাংলাদেশ ও নেপালের প্রতিনিধিবৃন্দ যোগদান করেন। উক্ত বৈঠকে এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। এরই সূত্র ধোরে ১৯৮০ সালে প্রথম এশিয়ান কাবাডি চ্যাম্পিয়নশীপ কলিকাতায় অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল অংশগ্রহণ করে। ভারত চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ রানার্স আপ হয।
স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের খেলাধুলার গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে বিভিন্ন ফেডারেশন পূনর্গঠন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে পশ্চিম বাংলার আসনসোলে ভারতের জাতীয় কাবাডি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিযোগিতা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ থেকে জনাব কাজী আনিছুর রহমান ও জনাব আমীর হামজা আসনসোলে যান। তখন থেকে ভারতীয় কাবাডি খেলার নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা হয়। ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে জাতীয় কাবাডি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৮০ সালে ভারতের এন.আই.এস. থেকে কাবাডি খেলায় উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে জনাব আ: হক বাংলাদেশে কাবাডি খেলার কলাকৌশল ও নিয়ম-কানুন প্রবর্ত্তন করেন।
বাংলাদেশের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৮৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ্‌ গেমসে কাবাডি খেলা নিয়মিত ইভেন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন থেকে কাবাডি খেলা আন্তর্জজাতিক অঙ্গনে পা রাখে। ১৯৯০ সালে বেইজিং এ অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেম্‌সে কাবাডি খেলাকে অন্তর্ভুক্ত কোরে এই খেলাকে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উত্তীর্ণ করেন। এরপর থেকে কাবাডি খেলা নিয়মিত ইভেন্ট হিসেবে এশিয়ান গেমসে অনুষ্ঠিত হোয়ে আসছে। বর্ত্তমানে কাবাডি খেলা নিম্নলিখিত দেশ সমূহে জনপ্রিয় হোয়ে উঠেছে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভূটান, জাপান, থাইল্যাণ্ড, ইরান, মালয়েশিয়া ও কোরিয়া। এই দেশ সমূহের ফেডারেশন গুলো কাবাডি খেলার উন্নতি ও প্রসারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জামানী, যুক্তরাজ্য, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কানাডা এ সমস্ত দেশগুলোতে কাবাডি খেলা অনুষ্ঠিত হোয়ে আসছে। এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিল এই খেলাটিকে নিয়মিত ইভেন্ট হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
কাবাডি খেলার নিয়মাবলী:
১. মাঠ (Ground) : মাঠ বলতে সমান্তরাল এক টুকরা ভূমি যার মাপ পুরুষদের ১৩  ১০ মিটার এবং বালক ও মহিলাদের ১২  ৮ মিটার বুঝায়। মাটি গোবর বা কাঠের গুড়া মিশ্রিত কোরতে হবে। এখন ম্যাট দ্বারা তৈরী করার জন্য বলা হোয়েছে। মাঠ সমতল ও নরম মাটির হবে। কাঠের গুড়া বা গোবর মিশানো মাটির মাঠ অগ্রাধিকার যোগ্য।
ক। পুরুষ খেলোয়াড় যাদের ওজন ৮০ কেজি বা তার নিচে তাদের জন্য মাঠ হবে ১৩  ১০ মিটার।
খ। বালক ও মহিলা যাদের ওজন ৫০ কেজি বা তার নিচে তাদের জন্য কাবাডি কোর্টের মাপ হবে ১২  ৮ মিটার। মিডলাইন থেকে বাক (Bulk Line) লাইনের দুরুত্ব পুরুষদের জন্য ৩.৭৫ মিটার, বালক ও মহিলাদের জন্য হবে ৩ মিটার। যা লবি বাদে মিড লাইন সমান্তরালে কোর্টের মাথা থেকে অপর মাথা পর্যন্ত টানা থাকবে।
বি: দ্র: প্রয়োজনবোধে কোর্টের চতুর্দিকে ৪ মিটার খালি জায়গা রাখতে হবে।
গ। বসার স্থান (সিটিং ব্লক) প্রান্ত সীমা বা এন্ড লাইন থেকে ২ মিটার দুরে এন্ড লাইন বরাবর টানতে হবে যার দৈর্ঘ্য হবে পুরুষদের ৮  ১ মিটার ও বালক ও মহিলাদের হবে ৬  ১ মিটার। যদি জায়গায় সংকুলান না হয় তাহোলে রেফারী যে ভাবে সীমানা নির্ধারণ কোরে দিবে সেটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
২. খেলার মাঠ (Play Field): A, B, C, D দ্বারা সীমাবদ্ধ মাঠকে খেলার মাঠ বলে। যা পুরুষদের বেলায় ১৩  ৮ মিটার এবং বালক ও মহিলাদের জন্য ১২  ৬ মিটার।
৩. চতুর্সীমা (Boundary): খেলার মাঠের উভয় দিকের বর্ধিত জায়গা সীমানাকে বাউণ্ডারী বলে যা AB, BC, CD I DA দাগ দ্বারা চিহ্নিত। প্রত্যেক সীমারেখার দাগ (Line) চওড়া হবে ২ ইঞ্চি এবং প্রত্যেক দাগ উক্ত মাপের ভিতরে থাকবে।
৪. লবি (Lobby): খেলার মাঠের উভয় দিকে ১ মিটার চওড়া জায়গাকে লবি বলে। ধস্তাধস্তি বা স্ট্রাগল হোলে লবি খেলার মাঠের অন্তর্ভুক্ত হয়।
৫. মধ্যরেখা (Mid-line): যে রেখা খেলার মাঠকে সমান দু'ভাগে বিভক্ত কোরেছে সেই রেখাকে মধ্য রেখা বলে। গঘ রেখাকে বুঝায়।
৬. কোর্ট: মধ্য রেখার উভয় পাশে লবিবাদে স্থানকে কোর্ট বলে।
৭. বাক লাইন (Baulk Line): মধ্যরেখা থেকে পুরুষদের জন্য ৩.৭৫ মিটার ও মহিলাদের জন্য ৩ মিটার দুরে মধ্যরেখার সমান্তরাল কোরে যে রেখা টানা হয় তাকে বাক লাইন বলে। দম দেওয়ার সময় রেইডারকে অবশ্যই বাক লাইন অতিক্রম কোরতে হবে। অন্যথায় বিপক্ষদল এক পয়েন্ট লাভ কোরবে।
৮. বোনাস লাইন: এন্ড লাইনের ১.৭৫ মিটার ভিতরে বাক লাইনের সমান্তরাল যে রেখা টানা হয় তাকে বোনাস লাইন বলে।
বি:দ্র: যখন রেইডার বোনাস লাইন অতিক্রম কোরে এন্টিকে স্পর্শ করে বা স্পর্শ না কোরলেও বোনাস লাইন অতিক্রম হোয়েছে বোলে ধরা হবে।
৯. দম (Cant): এক নিশ্বাসে স্পষ্টভাবে এক নাগাড়ে অনুমোদিত শব্দ 'কাবাডি' উচ্চারণ করাকে দম বলে।
১০. আক্রমণকারী (Raider): দম নিয়ে যে খেলোয়াড় বিপক্ষের কোর্টে যায় তাকে রেইডার বলে। বিপক্ষের কোর্ট ক্রস করার পূর্বেই রেইডার কে দম নিতে হবে।
১১. এন্টি রেইডার বা এন্টি : যে কোর্টে দম চোলছে ঐ কোর্টের সমস্ত খেলোয়াড়কে এন্টি রেইডার বা এন্টি বলে
১২. দম হারানো (Losing the cant): রেইডার যদি দম বন্ধ করে বা স্পষ্টভাবে এবং অনবরত কাবাডি না বলে বা শ্বাস নিয়েছে বোঝা যায় তাহোলে দম হারানো হোয়েছে বলে ধরা হয়। দম একবার শুরু কোরে সমান লয়ে নিয়মিত কোরতে হবে।
১৩. এন্টিকে মারা (To put out an anti): যদি রেইডার এন্টির শরীরের যে কোন অংশ বা পরিধেয় বস্ত্র বা জুতা স্পর্শ কোরে দম সহ নিজের কোর্টে ফিরে আসে তাহোলে এন্টি মারা হোয়েছে বোলে ধরা হবে।
১৪. রেইডারকে ধরা (To hold a raider): দম থাকা পর্যন্ত কোন এন্টি বা একাধিক এন্টি রেইডারকে ধোরে কোন নিয়মভঙ্গ না কোরে নিজ কোর্টে ধোরে রাখে তাহোলে, রেইডারকে ধরা হোয়েছে বলে ধরা হবে।
১৫. কোর্ট নিরাপদে পৌঁছা (To reach the court safely): কোন নিয়মভঙ্গ না কোরে, রেইডার যদি দম সহ শরীরের যে কোন অংশ দিয়ে নিজ কোর্ট স্পর্শ কোরতে পারে তাহোলে, ঐ রেইডার নিজ কোর্টে নিরাপদে পৌঁছেছে বলে গণ্য হবে।
১৬. স্পর্শ (Touch): রেইডাররের সাথে এন্টির শরীরের যে কোন অংশ বা পরিধানের কাপড় বা জুতার সাথে স্পর্শ হয় তাহোলে, স্পর্শ হোয়েছে বলে ধরা হবে।
১৭. ধস্তাধস্তি (Struggle): যখন এন্টি রেইডারকে বা রেইডার এন্টিকে স্পর্শ করে তখনই ধস্তাধস্তি শুরু হোয়েছে বলে ধরা হয়।
১৮. আক্রমণ (Raid): যখন রেইডার দমসহ বিপক্ষের কোর্টে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ঢোকে তখন তাকে রেইড বলে।
১৯. সফলদম (Successful Raid): রেইডার যদি তার দমসহ প্রতিপক্ষের বাক লাইন অতিক্রম কোরে নিজ কোর্টে ফিরে আসে তাকে সফল দম বলে।
বি:দ্র: ক) রেইডার যদি এক বা একাধিক এন্টিকে স্পর্শ করে ফিরে আসে তাহোলে বাক লাইন অতিক্রম করার প্রয়োজন হয় না।
খ) যখন রেইডারের শরীরের যে কোন অংশ মধ্য রেখা ও বাক লাইনের মধ্যবর্ত্তি জায়গার স্পর্শ থাকবে না তখনই বাক লাইন অতিক্রম হোয়েছে বলে গণ্য হবে।
খেলার নিয়মাবলী:
১. টসে যে দলের ক্যাপ্টেন জয়লাভ কোরবে সে তার পছন্দমত রেইড অথবা কোর্ট নিবে। পরাজিত দলের ক্যাপ্টেন তা মেনে নিবে। দ্বিতীয়ার্ধে কোর্ট বদল হবে। খেলা শুরুর সময় যে দল দম দিয়েছিল দ্বিতীয়র্ধে তার প্রতিপক্ষ দল দম দিয়ে খেলা শুরু কোরবে। প্রথমার্ধের শেষে যে কয়েকজন খেলোয়াড় কোর্টে ছিল দ্বিতীয়ার্ধে ঐ কয়েকজন নিয়েই শুরু হবে।
২. খেলোয়াড়ের শরীরের যে কোন অংশ বাউণ্ডারীর বাইরের ভূমি স্পর্শ করলে সে আউট বা মরা হবে। ধস্তাধস্তি বা স্ট্রাগল হোলে বাইরের ভূমি স্পর্শ করলে খেলোয়াড় মরা হবে না যদি তার শরীরের কোন অংশ বাউণ্ডারীর ভিতরের ভূমির টাচে থাকে।
৩. খেলার সময় কোন খেলোয়াড় যদি বাউণ্ডারীর বাইরে যায় তাহোলে সে আউট বা মরা হবে। রেফারী বা আম্পায়ার তৎক্ষণাৎ তাকে বাইরে নিয়ে যাবে। রেফারী/আম্পায়ার উচ্চ স্বরে ঐ খেলোয়াড়ের নম্বর ধোরে মরা ঘোষণা কোরবেন। ঐ সময় বাঁশী বাজানো যাবে না। দম চলতে থাকবে।
৩ (ক) যদি কোন এন্টি খেলোয়াড় বাউণ্ডারীর বাইরের ভূমি স্পর্শ কোরে রেইডারকে ধোরে রাখে তাহোলে রেইডার আউট হবে না, তবে ঐ এন্টি খেলোয়াড় আউট হবে।
৪. ধস্তাধস্তি শুরু হোলে লবি খেলার মাঠের মধ্যে গণ্য হবে। স্ট্রাগল শেষে স্ট্রাগলে অংশ গ্রহণকারী খেলোয়াড়বৃন্দ লবি ব্যবহার কোরে নিজ কোর্টে যেতে পারবে।
৫. রেইডার স্পষ্টভাবে কাবাডি উচ্চারণ কোরে দম নিবে। যদি সে ঠিকমত দম গ্রহণ না করে তাহোলে রেফারী/আম্পায়ার তাকে ব্যাক করাবে এবং পুরো টিমকে সতর্ক কোরে দিবে। পরবর্ত্তী দম দিবে বিপক্ষদল। এবং তারা একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট পাবে।
৬. বিপক্ষের কোট স্পর্শ করার পূর্বেই রেইডার দম গ্রহণ কোরবে। যদি সে দেরিতে দম নেয় তাহোলে তাকে রেফারী/আম্পায়ার ব্যাক করাবে এবং সতর্ক কোরে দিবে। বিপক্ষকে দম দেওয়ার সুযোগ দিবে ও একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট দিবে। ঐ সময় যদি রেইডার কোন এন্টিকে স্পর্শও করে তবুও সে এন্টি মরা হবে না।
৭. রেইডার নিজ কোর্টে ফিরে আসলে বা বিপক্ষের কোর্টে ধরা পড়লে বিপক্ষদল ৫ সেকেণ্ডের ভিতর রেইডার পাঠাবে। এভাবে খেলার শেষ পর্যন্ত পরিবর্ত্তিত ভাবে (ধষঃবৎহধঃরহম) উভয় দল রেইডার পাঠাবে। যদি কোন দল রেইডার পাঠাতে ১০ সেকেণ্ডের বেশি সময় নেয় তাহোলে বিপক্ষদল একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট পাবে।
৮. কোন দল যদি দম দেওয়ার পালা না থাকা সত্ত্বেও দম দিতে যায় তাহোলে আম্পায়ার ঐ রেইডােেক ব্যাক করাবে ও বিপক্ষদলকে একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট দিবে।
৯. একসাথে একাধিক রেইডার বিপক্ষের কোর্টে ঢুকতে পারবে না। যদি একসাথে একাধিক রেইডার প্রবেশ করে তাহোলে রেফারী/আম্পায়ার সকলকে নিজ কোর্টে ব্যাক করাবে। তাদের দম দেওয়ার পালা শেষ হবে। ঐ সময় যদি কোন রেইডার কোন এন্টিকে ছুয়েও থাকে তাহোলে ঐ এন্টি মরা হবে না। এ ক্ষেত্রে পারসু করা যাবে না। বিপক্ষদল একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট পাবে।
১০. যদি রেইডার বিপক্ষের কোর্টে দম ছাড়ে বা হারায় তাহোলে ঐ রেইডার মরা হবে। কোন দলের দম দেওয়ার পালা না থাকা স্বত্বেও দম দিতে যায় তাহোলে তাকে ব্যাক করাতে হবে। বিপক্ষদল একটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট পাবে।

১১. এক দলের সমস্ত খেলোয়াড় মরা হোলে বিপক্ষদল একটি লোনা অর্থাৎ অতিরিক্ত দুটি পয়েন্ট পাবে। লোনা হওয়ার পর খেলোয়াড়দের ১০ সেকেণ্ড এর ভিতর মাঠে নামতে হবে। যদি ঐ সময়ের মধ্যে নামতে ব্যর্থ হয়, তাহোলে প্রতি ৫ সেকেণ্ড অন্তর অন্তর বিপক্ষদলকে একটি পয়েন্ট দিতে থাকবেন।
১২. রেইডার যদি মারাত্মক (উধহমবৎড়ঁং) খেলার জন্য সতর্ককৃত হয় বা নিজ দলের কোন দলের খেলোয়াড় বা কোচ দ্বারা নির্দেশিত হয় তাহোলে বিপক্ষদল একটি পয়েন্ট পাবে।
১৩. বিপক্ষের কোন খেলোয়াড় রেইডারকে ধরার জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ চেপে ধোরে দম আটকানো বা এমন কোন টেকনিক ব্যবহার কোরবে না যাতে রেইডারের আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধরার জন্য অসৎ উপায় অবলম্বন করা যাবে না। যদি উপরে বর্ণিত উপায়ে রেইডারকে ধোরে রাখে তাহোলে রেইডার মরা হবে না ঐ এন্টি মরা হবে। [শাস্তি হবে 'খেলা পরিচালনা কর্ত্তৃপক্ষ' অনুচ্ছেদের ৩ ও ৪ নং বিধি মোতাবেক।]
১৪. কোন এন্টি যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে হাত বা শরীরের যেকোন অংশ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে রেইডারকে বাউণ্ডারীর বাইরে পাঠায় তাহোলে রেইডার আউট হবে না, ঐ এন্টি মরা হবে। অপরপক্ষের রেইডার যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন এন্টিকে ধাক্কা দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দেয় বা টেনে আনে সেক্ষেত্রেও এন্টি আউট হবে না, যে প্রতিপক্ষকে ধাক্কা দিবে সেই আউট হবে।
১৫. দম চলাকালীন কোন এন্টির শরীরের কোন অংশ যদি মিডলাইন অতিক্রম কোরে রেইডারের কোর্ট স্পর্শ করে তাহোলে এন্টি মরা হবে।
১৬. ১৫ নং আইন ভঙ্গ কোরে যদি এন্টি রেইডারকে ধোরে রাখে তাহোলে ঐ রেইডার মরা হবে না এন্টি মরা হবে।
১৭. রেইডারকে ধরার পরও স্ট্রাগল কোরে যদি সে নিরাপদে তার কোর্টে ফিরে আসে তাহোলে তাকে পারসু করা যাবে না। অর্থাৎ রেইডার রেইড শেষে নিজ কোর্টে প্রবেশের মুহূর্ত্তে তার অসতর্ক অবস্থায় প্রতিপক্ষের রাইডার তাকে স্পর্শ কোরে নিজ কোর্টে ফিরে যাওয়াকে পারসু বলা হয়।
১৮. যদি একাধিক রেইডার বিপক্ষের কোর্টে ঢোকে রেফারী/আম্পায়ার তাদের সতর্ক কোরে দিবেন। সতর্ক করার পরও যদি ঐ খেলোয়াড় পুনরায় একই অপরাধ করে তাহোলে ১ম জন বাদে বাকী খেলোয়াড়কে আউট ঘোষণা কোরবেন। তাদের দম বাতিল হবে। বিপক্ষদলকে দম দেওয়ার সুযোগ দিবে।
১৯. রেইডারের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বাদে কোন এন্টি যদি রেইডারকে ধোরে রাখে তাহোলে ঐ রেইডার মরা হবে না, এন্টি মরা হবে।
২০. এক বা দুইজন খেলোয়াড় কোর্টে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন ইচ্ছা কোরলে ঐ দুই খেলোয়াড়কে আউট ঘোষণা কোরে সব খেলোয়াড় তুলতে পারেন। এমতাবস্থায়, ঐ মরা খেলোয়াড়দের জন্য এক পয়েন্ট এবং লোনার (খঙঘঅ) জন্য অতিরিক্ত আরও দুই পয়েন্ট বিপক্ষদল পাবে।
২১. খেলোয়াড় আউট হওয়ার পর যে ক্রমে বসবেন সে ক্রমানুসারেই উঠবে। অর্থাৎ যে আগে মরবে সে আগে উঠবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২০
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×