somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৫২ থেকে আজ অবধি কি পাইলাম আমরা !!!!!

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৫২থেকে ৭১। মাতৃভাষা থেকে মাতৃভূমি। বাঙালি হিসেবে অহংকার করতে শিখেছি সেই বায়ান্ন থেকেই। পৃথিবীতে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে এমন জাতি দ্বিতীয়টি আছে কিনা আমার জানা
নেই। ইচ্ছে করলেই কি প্রাণ দেয়া যায়? শুধু নিজেরা কথা বলবে বলেই কি সালাম, বরকত, শফিউরেরা ৫২’তে প্রাণ দিয়েছিলেন? মূলত আমরা যাতে মায়ের কোলে বসে চাঁদ মামার গল্প শুনতে পারি সেই জন্য তারা প্রাণ দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হল আজ আমরা তাঁদের এ আত্বত্যাগ ভুলতে বসেছি। তাঁদের আমরা এখন শুধু ২১শে ফেব্রুয়ারির দিনটিতে একটু মনেকরার চেষ্টা করি। আমরা কেন জানি আজকাল বাংলার মধ্যে ইংরেজি মিশিয়ে জগাখিচুরি ভাবে কথা বলতে গর্ববোধ করি। এ জন্যই কি আমাদের পূর্ব পূরুষরা প্রাণ দিয়েছিলেন, বিষয়টি আমাকে ভাবায়? এতো গেল ভাষার কথা। এবার মুক্তিযুদ্ধের দিকে ফিরে তাকানো
যাক। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর থেকেই তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান কেন জানি আমাদের উপর শাসন করার চেয়েই শোষনই বেশি করেছে। আমাদের ফসল আমাদের কাছ থেকে স্বস্তায় নিয়ে গিয়ে আবার আমাদের কাছেই চড়া দামে বিক্রির নজির কে না দেখেছে। জালেমরা শেষ পর্যন্ত ৭০এর নির্বাচনে আমাদের
জনপ্রতিনিধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জয় লাভ করার পরেও ক্ষমতায় বসতে দিতে রাজি হয়নি। নানান তালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত তারা ২৫শে মার্চ কালো রাতে আমাদের উপর নির্বিচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ গণহত্যা চালিয়েছিল তারা। তারপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে
শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের রক্তক্ষয় মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে পেলাম একটি স্বাধীন ভূখন্ড। সেই সাথে পেলাম আমাদের অহংকারের বিজয় নিশান জাতীয় পতাকা। এগুলো সবই আমাদের জানা কথা। তবুও লেখার প্রাসঙ্গিকতায় তা
টেনে আনতে হলো বলেই আনা। বাঙালী জাতি বীরের জাতি। কিন্তু আজ আমার বাঙালী বলে পরিচয় দিতে কিছুটা দুঃখ হয়। কেননা যে মানুষটি আমাদের স্বাধীনতা এনেদিয়েছে সেই মানুষটিকে আমরা হত্যা করেছি। যে মানুষটি আমাদের পশ্চিমাদের
শোষন-শাসন থেকে মুক্তির নায়ক হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই মানুষটিকে হত্যা করেছি। যে মানুষটি বাঙালীদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, যে মানুষটিকে পশ্চিম পাকিস্তানিরাও মারার সাহস পায়নি, ইতিহাসের সেই মহানায়ককে বাঙালীরা হত্যা করেছে। এর চেয়ে বড় অকৃতজ্ঞ জাতি পৃথিবীতে কি আর
দ্বিতীয়টি কি আছে? অন্যদিকে, স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহানায়কের
হত্যার বিচার পেতে আমাদের দারে দারে ঘুরতে হয়েছে বহু বছর। কেউ বিচার করেনি, কেউ’বা করার সাহস করেনি। শেষ পর্যন্ত সর্বকালের সেরা বাঙালী হত্যার বিচার করতে তার মেয়েকেই ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখের কথা কি কিছু থাকতে
পারে? ছি… আরো একটি কারণে আমার বাঙালি বলে পরিচয় দিতে কষ্ট হয় । আজ আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলতে বসেছি।তাইতো আমরা এখনও এই স্ব্বাধীন সার্বভৌম দেশটাকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে
তুলতে পারিনি(কাগজে কলমে
অসাম্প্রদায়িক দেশ তবে বাস্তবতা
ভিন্ন)। মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি চেতনা
ছিল দেশের প্রতিটি নাগরিকের
অর্থনৈতিক মুক্তি। আমরা স্বাধীনতা
পেয়েছি কিন্তু সেই স্বাধীনতার
চুয়াল্লিশটি বছর পার হয়ে গেলেও
অর্থনৈতিকভাবে প্রতিটি মানুষ
স্বাধীন হতে পারেনি।
বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক
স্বাধীনতা না আশার জন্য অন্যতম কারণ
আমাদের নীতি নির্ধারকদের
নোংরা মনোভাব, ছোট স্বপ্ন, দূনীতি
এবং যারা দেশ মাতৃকার জন্য কাজ করে
যাচ্ছে তাদের বাধা প্রদান। আমাদের
দেশে যারা ব্যবসায়ী তারা অন্য
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে খুব একটা ভাল
চোখে দেখে না। তারা অন্য ব্যবসা
প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগী না ভেবে
শত্রু মনেকরে। অপরদিকে দেশের
নিম্নশ্রেণীর মানুষ থেকে শুরু করে
নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যারা
থাকেন তাদের স্বপ্ন গুলো খুবই ছোট। শুধু
নিজের ফসলটাই যেন খুব দ্রুত ঘরে নিতে
পারে সেই জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে
ফরিয়াদ করাই যেন আমাদের দেশের
কৃষকের স্বপ্ন। একজন ছাত্রের স্বপ্ন
ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।
কিন্তু ঐ ছাত্রকে এমন স্বপ্ন আমরা
দেখাতে পারছিনা যে- সে বড় হয়ে
এমন কিছু করবে যেখানে সে নিজেই
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি
দেবে। ঠিক নীতিনির্ধারনি পর্যায়ে
যারা আছেন তারা পাঁচবছর পর ক্ষমতায়
কে বসবে সেটা নিয়েই বেশি ব্যস্ত।
আর দূনীর্তির কথা কি বলব। এটা সবাই
জানে দেশের এমন কোন সেক্টর নেই
যেখানে দূনীর্তি হয়না। বড় বড় রাঘব
বোয়ালরা যখন দূনীতি করে তখন
তাদের বাঁচানোর জন্য নির্দোষ
মানুষকে দোষি হিসেবে চালিয়ে
দিতেও আমরা পিছপা হই না। আর দেশ
মাতৃকার জন্য যারা নিঃস্বার্থ ভাবে
কাজ করে যেতে চায় তাদের কাজ বন্ধ
করার দৃষ্টান্ত এই দেশেরই আছে। অথচ
সম্ভাবনাময় আমাদের দেশটিতে কি
নেই? আমাদের আছে দুটি সমুদ্র বন্দর
(সিঙ্গাপুরের একটি), আমরা খাদ্যে
সয়ংসম্পূর্ণ, আছে অফুরন্ত গ্যাস সম্পদ,
তেল, সোনলি আঁশ পাঠ, নদী, চিংড়ি,
মিঠাপানির মাছ, ইলিশ আর আছে
আমার সোনার বাংলার সোনার মানুষ
এবং সোনার জমিন। যে জমিনে বীজ
ফেলে রাখলেই ফসল হয়। পৃথিবীর এমন
কোন দেশ নেই যেই দেশে পাখির
বৃষ্ঠা থেকে গাছ জন্মে। অথচ আমাদের
দেশের মাটি এতো উর্বর এখানে
সেটাও সম্ভব। সম্ভাবনাময় এই দেশটিকে
এগিয়ে যেতে তাই বার বারই বিভিন্ন
মহল থেকে বাধা প্রদান করা হয়েছে।
উপরে যে সমস্যা গুলোর কথা উল্লেখ
করেছি তা থেকে আমরা যদি রক্ষা
পেতে পারি তাহলে এই দেশ এগিয়ে
যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×