somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিরক বিহীন ইমান

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরকালে নাজাতের জন্য ইমান শর্ত আর ইমান কবুল হওয়ার জন্য তা 'শিরক' মুক্ত হওয়া শর্ত । আরবের মুশরিকরাও আল্লাহকে স্বীকার করত, সৃষ্টি কর্তা হিসবে মানত, হজ্জ করত । কিন্তু আল্লাহ ছাড়া আরো দেব-দেবীর এবাদত করত। তাই তাদের ' আল্লাহকে বিশ্বাস' বা ' ভাল কাজ' কোনটাই গ্রহণযোগ্য হয়নি । আমাদের দেশেও অনেক -কে দেখা যায় যারা কবরে সেজদা করে , মাজারে গিয়ে সন্তান কামনা করে , 'বাবা' কে পরকালে নাজাতের অবলম্বন মনে করে , বাবার হুকুমে নামাজ মাফ বিশ্বাস করে । এসবই শিরক এবং ইমান ধংসের কারণ । শিরকের দ্বারা ইমান ধ্বংস করে ফেললে পূন্য কর্মে কোন ফায়দা নেই । শিরক সম্পরকে বিস্তারিত জানতে চাইলে বেহেশতী জেওর কিতাবের প্রথম খন্ড সংগ্রহ করুন । সেখানে শুরুতেই সংক্ষেপে শিরক ও কুফরের বর্নণা এসেছে । আমাদের সমাজে শিরক বিহীন ইমান নিয়ে বাচতে চাইলে অতটুকুই জানাই যথেষ্ট।

তবে এই পোষ্ট-এ একটা বিষয় আলোচনা করতে চাইছি , সেটা হল বিভিন্ন দল উপদল বা ভ্রান্ত মতের অনুসারীদের শিরক বিষয়ক বাড়াবাড়ি । ভ্রান্ত মতের অনুসারী দলগুলো এই শিরক নিয়ে অনেক বাজে কথা চালু করেছে সরল মুসলমানদের ধোকা দেবার জন্য । এদের মধ্যে প্রথম সারিতে আছে কথিত 'আহলে হাদীস' দলটি । এরা বলে বেড়ায় মাজহাব মানা শিরক ।

শরীয়তে কিছু বিষয় আছে যেগুলো খুবই স্পষ্ট , সেখানে কাউকে জিজ্ঞেস করার কিছু নেই । যেমন নামাজ পড়া , রোজা রাখা ইত্যাদী কাজ ফরজ হওয়া কিংবা চুরি করা বা মদ খাওয়া হারাম হওয়া । তবে শরীয়তের অনেক বিধি বিধান ব্যাক্ষা সাপেক্ষ । যেমন নামাজে কখন হাত উঠাবেন , কতবার উঠাবেন । এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে । সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত শুধু নামাজ শুরুর সময় হাত উঠাতে হবে । কোন কোন সাহাবী থেকে অন্য সময় হাত উঠানোর বর্ণনাও এসেছে । বিজ্ঞ আলেমরা বলেছেন অন্য সময়ে হাত উঠানোর বিষয়টা ইসলামের শরুর দিকের ঘটনা , কিন্তু শেষ জীবনে রসুল শুধু নামাজের শুরুতেই হাত উঠিয়েছেন । তাই শুরুতে হাত উঠান-ই সুন্নত অন্য সময় হাত উঠানো সুন্নত না। এবিষয়ে বেশ কিছু ব্যাক্ষা -বিশ্লষণ এবং মতপার্থক্য আছে । শরীয়তের ব্যাক্ষা বিশ্লষণ যদি আপনি কোন বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নেন সেটাকে বলা হয় তাকলীদ, সোজা বাংলায় বলে ' মাঝহাব মানা ' । এতে শিরকের কি হল ?

মাজহাব মানা শিরক বলা যাবে তখনই যদি কোন ব্যক্তি বলে আমি নামাজ পড়ি এজন্য যে সেটা মাজ হাবে বলা আছে , তাই । এজন্য না যে আল্লাহর নির্দেশ । অথচ এমনটা কেউ বলেও না , করেও না । বরং মানুষ নামাজ পড়ে আল্লাহর নির্দেশ হিসেবে , আর নামাজ আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে যে অসংখ্য বর্ণনা আছে তার মধ্যে কোনটা অনুসরণীয় তা বুঝার জন্য । বিষয়টা এমন যে আপনি দেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধানের আনুগত্যই করেন, কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের কথায় উঠেন বসেন বা উকিলের কাছ থেকে আইন শোনেন - তার কথামত কাজ করেন । কারণ একটাই তারা দেশের আইন সংবিধান ভাল বুঝেন , প্রফেশনাল । এটাকে কি কেউ রাষ্ট্রের আনুগত্য বাদ উকিল -ম্যজিষ্ট্রেটের আনুগত্য বলবেন ? রাস্ট্রদ্রোহ বলবেন ? রাস্ট্রের ভিতর রাষ্ট্রদ্রোহের আইন যেমন কঠিন, ইসলামের ভিতর -ও শিরকের আইন খুবই কঠিন ।

শিরক বিষয়ে ভ্রান্তি ছড়ানো আরেকটি দল 'জামাতে -ইসলামী' বা মউদুদীর চিন্তা-ভাবনার অনুসারীরা । তাদের একটা বক্তব্য হচ্ছে ' হুকুম একমাত্র আল্লাহর ' । তাই রাস্ট্র বা সরকারের আনুগত্য করা শিরক । কথাটা কখনও তারা সরাসরি বলে আবার কখনও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে । বক্তব্য একই । অথচ আল্লাহ পাকই পবিত্র কোরাণ শরীফেই বর্ণিত আছে আল্লাহকে মান , রসুলকে মান আর তোমাদের মধ্যে আদেশ দাতাকে মান । ইসলাম ধর্মের সমস্ত বিশষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত রাষ্ট্রের আনুগত্য করতে হবে যতক্ষন পর্যন্ত না রাস্ট্র বা রাজা প্রকাশ্য শরীয়ত বিরোধী কোন নির্দেশ না দেন । মউদুদীরা একথা মানে না । অথচ তাদের আমীর কোন শরীয়ত বিরিধী নির্দেশ দিলেও সেটা অবনত মস্তিষ্কে 'এবাদত হিসেবে' মেনে নেয় তবুও এতে তাদের শিরক হয় না !
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×