somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলেটির শিবির জীবন ...

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রসুলপুর গ্রামের এক মায়ের আদরের ছেলেটি ছিল স্কুলের প্রথম সারির একজন নামকরা ভাল স্টুডেন্ট … জন্মের মাত্র ছয় মাস বয়সে বাবাকে হারনো ছেলেটি বড় হয়েছে মায়ের সংস্পর্শেই … গার্ডিয়ান বলতে মা ছাড়া বড় একটি বোন এবং একটি ভাই ...
বয়ষ বাড়ার সাথে সাথে ছেলেটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ...
মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ভাল রেজাল্ট করে উত্তীর্ন হয়ে উপরের ক্ল্যাশে উঠতে থাকে ছেলেটি ষষ্ঠ থেকে সপ্তম- অষ্টম- নবম ...

ধীরে ধীরে ছেলেটি পরিচিত হতে থাকে স্কুলের বড় ভাইদের সাথে ... তাদের মাজে উপরের ক্ল্যাশের এক বড় ভাই এসে মাজে মাজেই ছেলেটি সহ ছেলেটির সহপাঠিদের একসাথে বসে আলোচনা করে ইসলাম-নামাজ- দ্বীনের ...

অতঃপর ধীরে ধীরে নামাজ-কালামের কথা এবং কিশোর-কন্ঠ নামের একটি মাসিক প্রকাশিত বই এর প্রতি সকলের আকর্ষন সৃষ্টি করে , বইটি পরতে সবাইকে উদ্ধৃত করে ... পাশা-পাশি নামাজের জন্য সকলকে আহবান জানায় ... অন্য সবার মত ছেলেটিও দুর্বল হয়ে পরে বড় ভাইয়ের আদর্শ এবং ইসলামের প্রতি আনুগত্য এবং দ্বীনের কথা বলছে দেখে ...

এভাবে দিন যেতে যেতে , এক সময় দেখা যায় উপরের ক্ল্যাশের বড় ভাইটি ছেলেটি সহ সকলকে নিয়ে নামাজের শেষে একসাথে বসছে , ইসলামী দ্বীনের কাজ নিয়ে আলোচনা করছে , এবং নামাজ কত ওয়াক্ত আদায় করছে তা লিখার জন্য ফর্ম বিতরন করছে ...

ধীরে ধীরে আরোও এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইসলামী লেখক দের বই , যার বেশীর ভাগোই লেখা জামাতী নেতাদের ... একসময় সকলের কাছ থেকে বায়ুতুল মালের নাম করে আদায় করা হয় সকলের কাছ হেকে চাদা ,যে যত দিতে পারে প্রতি মাসে ......
অতঃপর আরোও এগিয়ে ইসলামী শিক্ষা সফরের নামে দূরের কোন এক স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয় , সারা দিনবর ইসলাম , দ্বীন এবং ইসলাম ধ্বংসে কাফেরদের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয় , এবং আলোচনা শেষে সকলকে ইসলাম প্রচারের কর্মী হিসাবে একটি ফর্ম পূরন করিয়ে বলা হয়, আজ থেকে তুমরা সবাই ইসলামের প্রচারে কাজ করবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র-শিবিরের হয়ে । আর এভাবেই জরিয়ে পরে শিবিরের সাংঘঠনিক কাজে ।। হয়ে ঊঠে শিবিরের একনিষ্ঠ কর্মী ।
কিন্তু এই মধ্যে ছেলেটি মোটামুটি ভুলতে চলেছে এই দেশের স্বাধীনতার কথা, ভুলতে চলছে এই সময়টাতে দেশে হয়েছে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ... আর ভুলবেই না কেনো ! যে সময়টা ছেলেটির মন বিকশিত হবার কথা , এই সময় কৌশলে তাঁর অজান্তেই তাঁর মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ইসলামী দ্বীন-জিহাদের নামে একটি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নের সুবিশাল এজেন্ডা। বলা হয়েছে এই দেশের স্বাধীনতা দিবস কিংবা ভাষা দিবসে প্রভাতফেরী আর শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়া ইসলাম বিরোধী কাজ , এর চেয়ে শহীদদের আত্মার জন্য দুয়া করাই উত্তম !!!

যে সময়টায় ছেলেটির জানার কথা এই দেশ সম্পর্কে ,শিখার কথা এই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে ওই সময় এই ছেলেটির মাথায় কৌশলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ইসলামের নামে জিহাদ , আর দ্বীনের প্রচারের নামে শিবিরের রাজনৈতিক প্রচারের কথা ...
অতঃপরঃ
এভাবেই চলতে চলতে মাধ্যমিক স্কুলের শেষ পর্যায়ে এসে গেলেও ছেলেটির একবারো মনে প্রশ্ন জাগেনি এই দেশের সাথে কারা বেইমানী করেছিল , এই জামাত নামের সংঘঠন যার হয়ে ছেলেটি ইসলাম প্রচারের কাজ করছে সেই সংঘঠনটিই এই দেশের সাথে বেইমানী করেছিল ...

কিন্তু.........
ছেলেটির সৌভাগ্যে ছিল । মাধ্যমিক স্কুলের শেষভাগে এসে পারিবারিক অস্বচ্ছলতার জন্য ছেলেটিকে পড়ালেখা এবং তাঁর প্রিয় ইসলামের খেদমত করা বড় ভাই , সহপাঠিদের ছেরে গমন করতে হল প্রবাসে ...

অতঃপর , পুরোপুরি মগজ দোলাই খেয়ে দেশ থেকে আসা ছেলেটি দেখল , জামাত-শিবির নামটা শুনলেই তাঁর আসে পাশের লোকজনের মাজে কেমন যেন ঘৃনার চোখ ভেসে উঠে...এরা জামাত-শিবিরের নাম শুনেই রাজাকার আর জঙ্গি বলে সম্বোদন করে ... যেগুলা ছেলেটি দেশে থাকা অবস্থায় শুনলেও কোন পাত্তাই দেয়নি , ভেবেছে কাফেরদের অপপ্রচার ... চলতে থাকে প্রাবসের অন্য লোকদের সাথে তর্ক বিতর্ক , কেও কেও তো ছেলেটিকে চ্যালেঞ্জও ছুরে দেয় , সে প্রমান করে দেখাবে জামাত -শিবির ইসলমী নয় বরং ইসলামের দুশমন ...ছেলেটি বিস্মিত হয় !!
কিন্তু এখানেও তাঁর খুজ মিলে দুই একজন জামাত কর্মীর তাদের সাথে পরিচয় হওয়ার পর তারাও দেখা গেলো একোই কায়দায় নিদির্ষ্ট সময়ে একসাথে বৈঠকে লিপ্ত হয় , যার মূল উদ্দেশ্যেই থাকে ইসলামের উন্নয়নের নামে বায়ুতুল মালের আকারে টাকা সংগ্রহ করে দেশে পাঠানো ...

আস্তে আস্তে ছেলেটির সামনে আসতে থাকে একের পর এক দেশবিরোধী , ইসলামের নামে ভন্ড জামাত শিবিরের অপকর্মের কথা , ধীরে ধীরে বিশ্বাসও করতে লাগে সে ...

পরিবর্তন হতে থাকে দেশের অবস্থাও মানুষের মুখে মুখে এখন রাজাকার ,আলবদর , জঙ্গিবাদের কথা বের হতে শুরু করে । সবার মুখে মুখে জামাত-শিবিরের নেতাদের বাংলাদেশ জন্মলগ্নের সময় ভয়াবহ নৃশংসতার কথা ...

ধীরে ধীরে ছেলেটি জানত পায় সত্যকে , উপলব্ধি করে সত্য কোথায় এবং বিশ্বাস করতে শিখে ...মুক্তিপায় মিথ্যার বেড়াজাল থেকে ...
ছেলেটি এখন ওই ইসলামের নামে অপকর্ম করা জামাত-শিবিরকে গালি দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোদ করে না ।

৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×