somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা,ঈর্ষা এবং আয়নার গল্প..........

১২ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :











কয়েকদিন ধরেই নীলার সাথে আমার খুব ঝামেলা হচ্ছে , কেন ? বলতে পারতেছি না ! আগে তো এমন হতো না , ইদানিং ওর সাথে সব কিছুতেই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে যা আগে কখনও হতো না ! নাহ , মাথা ধরেছে প্রচন্ড , সাথে চোখও ব্যথা করছে ।

ডিংডং
- কি ব্যাপার আজ এতো দেরী কেন ?
- কোথায় দেরী তোমাকেতো দুপুরে বললামই আজ আসতে দেরী হতে পারে , তারপরও তো তাড়াতাড়ি এলাম ।
- কখন বললে ? দেখো এই সব ফালতু কথা বলবা না আমার সাথে বুঝছ ?
আমার কানে ওর গলার স্বরটা খুব বেশি জোরালো মনে হলো , অথচ আমি এতো জোরে কখনও কথা বলি না , ব্যাপারটা আসলে ভাবিয়ে তুললো আমাকে , আমি চুপ করে থাকলাম ।
- তুমি খেয়ে নাও , আমি খেয়েছি ।

এই ব্যাপারটা আগে কখনও ঘটেনি , ইদানিং ঘটছে , আমার খুব খারাপ লাগলো এভাবে একা একা খেতে ।

..............

আমি হাঁটছি , অনেক সুন্দর একটা পথে , আমার খুব পছন্দের একটা পথ এটা , আগে মাঝে মাঝেই আসা হতো , এখন ব্যস্ততায় খুব আসা হয় না । আজ অনেকদিন পর এলাম , ভালই লাগছে । এই পথে আমার আর নীলার আমাদের দুজনের সমস্ত স্মৃতি একে একে সাজানো । আমার যখন ইচ্ছে করে স্মৃতিতে ডুব দিতে তখন আমি এই পথে আসি , এক একটা দরজা খুলে আমি উপভোগ করি । আমাদের সেই প্রথম দেখা , সেই প্রথম ছোঁয়া ! তারপর একে অপরের অপেক্ষায় কেটে যাওয়া বিনিদ্র কতশত রাত । কতবার নীলার খেয়ালী অভিমান ভাঙ্গতে আমি কত পাগলামি যে করেছি তার সবকিছুই নীলা সাজিয়ে রেখেছে পরম যত্নে । নীলার এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে । ও আগে থেকেই খুব গোছানো মেয়ে । যদি গুছিয়ে রাখতে না পারে তাহলে যেনো ওর ঘুম হারাম হয়ে যায় , এলোমেলো এই আমি যে কতবার তার মিষ্টি কন্ঠের ঝাড়ি খেয়েছি মনে হলেই কেমন যেনো একটা মুচকি হাসি চলে আসে ।

কিন্তু ইদানিং যেনো কেমন হয়ে গেছে ? কেন এমন হলো ? আচ্ছা যাই হোক , আমি মাথা থেকে দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে স্মৃতির পথে ঘুরতে থাকি ।

হঠাৎ একটা অচেনা দরজার সামনে দাঁড়ালাম মনে হলো ! আমার কপালে ভাঁজ স্পস্ট হয়ে উঠলো । এটা আমার সবসময়ই হয় , নীলা এই ব্যাপারটায় বেশ মজা পায় । কিন্তু দরজাটা খুলছে না কেন ? মনে হচ্ছে সেখানে আমার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ! আমার রাগ উঠলো , হাতের শিরাগুলো কাঁপতে লাগলো ,
-কি ?নীলার স্মৃতির রাস্তায় আমার প্রবেশাধিকার নেই ?
জিদে প্রচন্ড ধাক্কায় দরজাটা ভেঙ্গে ফেলি , আমি ঢুকে পরি অনেক কৌতুহল নিয়ে ,আমার কাছে পুরোপুরিই অপরিচিত এই রাস্তা । কিছুদুর এলোমেলো হাঁটাহাঁটি করতে থাকি , তেমন কিছু চোখে পরছে না , তাহলে নীলা এই দরজাটা আমার জন্য আটকে রেখেছিলো কেন ?
কে জানে আমি হয়তো ফিরেই যেতাম ! কিন্তু যখনই এই চিন্তা মাথায় আসলো আমার পা আরো দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেলো ।

একি! ওহ, মাই গড !! এই লোকটি কে ? নীলার সাথে ঘুরছে ,ফোনে কথা বলছে ! হাত ধরে তাকিয়ে আছে !! কে এই লোক ? এতো বড় সাহস ? আমি আরো সামনে হেঁটে যাই , ওহ! এই দৃশ্য দেখার জন্য কি আমি আজো বেঁচে আছি ? নীলা ওর সাথে
ঘুমিয়ে আছে একেবারে একান্ত করে !!! আমার প্রচন্ড কান্না আসতে লাগলো , কেন কেন ? এমন দেখলাম কেন ? আমি প্রচন্ড
যন্ত্রনায় কুঁকড়ে গেলাম । পুরো আকাশ আমার উপর ভেঙ্গে পরেছে ।

হঠাৎ মাথা চারা দিয়ে উঠলো , ধীরে ধীরে আমি শক্ত হলাম , আমার মাথায় প্রচন্ড খুন চেপে গেছে , একটা কিছু করতে হবে । যেকোন কিছু !

আমি এগিয়ে যাই , ওদের সেই মিলন মুহুর্তে । হঠাৎই ঘুম ভেঙ্গে নীলা আমাকে দেখে যেন ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠতে চাইলো । আমি খুব নিষ্ঠুর হাতে ওর মুখ চেপে ধরি । ও দ্রুতই ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় , আমিও এটাই চাইছিলাম ।

এবার লোকটিকে দেখি , প্রচন্ড ঘৃণায় বমি আসে আমার , এই লোকটি আমার ভালোবাসাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ভোগ করছে , আমি ওর হাত দুটো দেখি , পাশবিক আনন্দের সাথে তার হাত দুটো ভেঙ্গে দেই , সে চিৎকার করে ওঠে , আমি ভ্রুক্ষেপ করি না এরপর তার মাথাটা ধরে আমি ঘাড় মটকানোর চেষ্টা করি , এর
মধ্যে যেন নীলার জ্ঞান ফিরে আসে , সে এসে আমাকে বাধা দেয় , এক ধস্তাধস্তির ভিতর হঠাৎই আমি যেনো জ্ঞান হারাতে শুরু করি , আমার মনে হচ্ছে যা করার দ্রুত করতে হবে । আমি শেষ হিসেবে ওই লোকটির ঘাড়টা ঘুরিয়ে দেই , সাথে সাথেই আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ।


.............

- এই , শুনছ ? উঠো অফিসে যাবা না ? দেরী হচ্ছেতো ?
- হুম , কি ? কয়টা বাজে ?
- আজ এতো ঘুমাচ্ছ কেন ? উঠে পর ।
- একটু এদিকে আসতো । আহ! আসই না ।
আমি হাত ধরে টান দেই , আমার বুকে এসে পরে , আমি নীলার গভীর চোখে তাকিয়ে বলি ,
- আজ যাবো না , সারাদিন তোমার সাথে থাকবো ।
খুশীর ঢেউ খেলে যায় ওর মুখে ,
- সত্যি !!!

হঠাৎ নীলার একটা ফোন আসে ,
- হ্যালো কে বলছেন ?
নীলা প্রচন্ড রেগে ওঠে ,
- আপনি কে ? আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন ? কি আজব ! আপনার এতো সাহস ?
আমি কৌতুহলী হয়ে বলি
- কে ?
- দেখোত , কে ? আমার সাথে উল্টা পাল্টা কথা বলছে ।

আনমনে আমার একটা বিজয়ীর হাসি আসে, আমি ফোনটা নিয়ে ঝাড়ি দিতে থাকি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১২ রাত ১২:১৬
১৬১টি মন্তব্য ১৬৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×