১৪৯২ সালের ১ এপ্রিল। অনেকের জন্য দিনটি অন্যান্য সাধারন দিনের মতো ছিল কিন্তু গ্রানাডাবাসীর জন্য ছিল অন্যরকম।
সংক্ষেপে বলছি.. সম্মুখযুদ্ধে স্পেনের মুসলমানদের পরাজিত করতে না পেরে খ্রিষ্টান সম্রাট ফার্দিনান্দের নির্দেশে গ্রানাডা শহরের সব শস্যখামার জ্বালিয়ে দেয়া হয়, পুড়িয়ে দেয়া হয় শহরের খাদ্য সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র ভোগা উপত্যকা। অচিরেই দুর্ভিক্ষ নেমে এলো শহরে। দুর্ভিক্ষ প্রকট আকার ধারন করলে প্রতারক ফার্দিনান্দ ঘোষনা করলো,'মুসলমানরা যদি শহরের প্রধান ফটক খুলে দেয় এবং নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে আশ্রয় নেয় তবে তাদের বিনা রক্তপাতে মুক্তি দেয়া হবে।"
দুর্ভিক্ষতারিত গ্রানাডাবাসী অসহায় নারী ও শিশুদের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রতারকের মিথ্যা আশ্বাস বিশ্বাস করে পবিত্র মসজিদে আশ্রয় নিয়ে খুলে দেয় গ্রানাডা শহরের প্রধান ফটক।শহরে প্রবেশ করে খ্রিষ্টান বাহিনী মুসলমানদেরকে মসজিদের ভেতর আটকে রেখে তালা লাগিয়ে দেয় প্রতিটি মসজিদে। এরপর একযোগে শহরের সমস্ত মসজিদে আগুন লাগিয়ে বর্বর উল্লাসে মেতে উঠে তারা। লক্ষ লক্ষ নারী -পুরুষ -শিশু অসহায় আর্তনাদ করতে করতে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক ভাবে প্রান হারায় পবিত্র মসজিদের ভিতরে। প্রজ্জলিত অগ্নিশিখায় দগ্ধ মুসলমানদের আর্তচিৎকার যখন গ্রানাডার আকাশ বাতাশ ভারী ও শোকাতুর করে তুলল তখন ফার্দিনান্দের স্ত্রী ও পর্তুগীজ রানী ইসাবেলা হেসে বলতে লাগল, "হায় এপ্রিলের বোকা ! শত্রুর আশ্বাস কেউ বিশ্বাস করে!"
সেই থেকে খ্রিষ্টান জগৎ প্রতি বছর ১ এপ্রিল আড়ম্বরের সাথে পালন করে আসছে "April Fool" মানে "এপ্রিলের বোকা " উৎসব।
ঘটনা কি এখানেই শেষ ?? তা নয়....
১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল গ্রানাডা ট্রাজেডির ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্পেনে আড়ম্বরপূর্ন এক সভায় মিলিত হয়েছিল বিশ্ব খ্রিষ্ট সম্প্রদায়। সেখানে তারা নতুন করে শপথ গ্রহণ করে একচ্ছত্র খ্রিষ্টীয় বিশ্ব প্রতিষ্ঠার। বিশ্বব্যাপী মুসলিম জাগরণ প্রতিহত করার জন্য গড়ে তোলে 'হলি মেরি ফান্ড'। আর এরই ধারাবাহিকতায় খ্রিষ্টান বিশ্ব নানা অজুহাতে একের পর এক মুসলিম দেশগুলোতে চালাচ্ছে আগ্রাসন।।
আজ ১ এপ্রিল ২০১৬। সিদ্ধান্ত আপনার, দিনটা কিভাবে শুরু করবেন আপনি....
তথ্যসূত্র :মাসিক প্রফেসর'স কারেন্ট আফেয়ার্স।