somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জন্মতারিখের রহস্যময় গুন, ১০০০০ ঘন্টার রেসিপি

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন কিছুর সিরিজ করা এত ঝামেলার আগে জানতাম না ।
ইন্টারেষ্টিং টপিক -- কিন্তু সময় বের করতে পারছিলাম না + আর আলস্যের কারনে দেরী হয়ে গেলো।

আউটলায়ারসে অনেক ডিটেলে এই সব বিষয়গুলো দেয়া আছে এবং খুব চমকপ্রদ ভাবে । আমি শুধু যেগুলো আমার কাছে দারুন মনে হয়েছে সেগুলো তুলে ধরছি ।

জন্মতারিখের ম্যাজিক: দারুন সব খেলোয়াড় , অসাধারন গনিতজানা স্কুলবালক,সারা দেশে স্কুলের মেধাবী ছাত্র এদের মধ্যে জন্মতারিখের একটা বিশেষ ভুমিকা দেখা যায় । আমি প্রথম মনে করেছিলাম -- রাশি সংক্রান্ত কোন ব্যাপার হবে মনে হয় ।আসল ব্যাপারটা আরো বিচিত্র ।কানাডিয়ান হকি খেলেয়োড় দের মেজর লীগে যারা খেলে তাদের বয়স বিশ্লেষন করে দেখা যায় ৪০% খেলোয়ার জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী অথবা মার্চে জন্মগ্রহনকারী । কারনটা কি -- ? সেই সময় উইন্টার থাকে ? না ।
এটাকি কো নির্দিষ্ট সালের কথা বলা হচ্ছে ? না । প্রত্যেক বছরই জন্মমাসের এই শুভ/অশুভ প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে ।
এখানে বলে রাখা উচিত -- মেজর জুনিয়র লীগ যারা খেলে --তারা হচ্ছে বেষ্ট অফ দা বেষ্ট অফ বেষ্ট । সারাদেশের সেরা সব খেলোয়ারদের এখানে জড়ো করা হয় ।
কারনটা হচ্ছে একটা সিম্পল তারিখ সংক্রান্ত -- জানুয়ারীর ১ তারিখে যাদের বয়স ১০ হয়েছে -- কেবল তারাই জুনিয়র হকিলীগে চান্স পায় ।
যারা জানুয়ারী ১ তারিখের পরে জন্ম তারা পরের বছর চান্স পায় । ধরা যাক একটা ছেলের জন্ম জানুয়ারীর ৪ তারিখে -- সে এই বছর ১ লা জানুয়ারী ১০ হবে না -- পরের বছর সে হবে ১০ বছর ১১ মাস ।
এমন না কেউ সচেতন ভাবে কাজটা করেছে কিন্তু সব কোচ
সিলেক্ট করে বড় বড় ছেলেদের । আর অতিরিক্ত ১ বছর খেলার কারনে তারা সুবিধা পায় ও বেশী ।

ইউরোপিয়ান ফুটবল লীগেও একই চিত্র।

মজার ব্যাপার হচ্ছে -- এমন তারিখ তৈরী করে দিয়ে আমরা নির্দিষ্ট কিছু সংখক আউটলায়ার তৈরী করছি ।
যদি কোন ন্যাচারাল সিলেকশন হতো --তবে দেখা যেতো যে সারা বছর জুড়ে জন্ম নেয়া ছেলেপেলেরাই খেলতে পারতো ।

এখানে একটা ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার দেখা গেছে পৃথিবী ঘুরে -- কাট অফ ডেটে আসে পাশেই -- বেষ্ট অফ দা বেষ্ট দের জন্ম B-) । আমরা মনে করি -- সাকসেসফুল হওয়াটা ব্যক্তিগত প্রতিভার ঝলকানি । কিন্তু আমরাই কাটঅফ ডেট তৈরী করে এর দূর্বলবাচ্চাদের ঝুকির উপরে ছেড়ে দিচ্ছি না ?
বিশেষ করে স্কুলিং সিষ্টেমে এই কাট-অফ ডেট গুলো বন্ধ করা খুব জরুরী ।

১০০০০ ঘন্টা রুল এবং জন্মসাল রহস্য :
কোন ব্যাপারে মাষ্টার হবার জন্য পরিশ্রম করা ছাড়া গতি নাই ।
কিন্তু কতোটুকু পরিশ্রম করলে আসলে মাষ্টারী অর্জন করা যায় -- ? রকষ্টার , চেসপ্লেয়ার, খেলোয়াড়, বিলিয়নিয়ারদের জীবনী ঘেটে ১০০০০ ঘন্টা রুলটা বের করা হয়েছে ।
ধরা যাক বিটলসকেই -- হামবূর্গে তারা ১০০০০ ঘন্টা বাজানোর পর তারা বিখ্যাত হয়েছিলো -- যেখানে সাধারন কোন ব্যান্ড সারাজীবনেও ১০০০০ ঘন্টা বাজায় না ।
তাদের হামবূর্গ যাওয়া ইতিহাসটাও বিচিত্র -- নেহাত কাকতাল বলা যায় । বিটলস যদি হামবূর্গে ১০০০০ ঘন্টা না বাজাতো -- তবে আমরা এই বিটলসকে পেতাম কিনা সন্দেহ ।
বিলগেটসের জীবনী ঘাটলেও আমরা ১০০০০ ঘন্টা রুল দেখতে পাই । একি কথা মোৎসার্ট বা ববিফিশারের বেলায় সত্য ।
তবে ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হচ্ছে হিষ্ট্রির মোচরটা --
অনেকটা সেই কাট-অফ ডেটে মতো --

বইটাতে একটা লিষ্টি দেয়া হয়েছে -- আজ পর্যন্ত সারা দুনিয়ায় সর্বকালের সবচে বেশী সম্পদশালী ব্যক্তিদের। B-)
লিষ্টে এসেছে -- ফারাও, কিওপেট্রে থেকে শুরু করে হাল আমালের আম্বানী, বিল গেটস রাও ।
লিষ্টটা অবশ্য তৈরী করা হয়েছে এখনকার দিনে টাকার সমমূল্যে ।
শীর্ষে আছে জন ডি রকফেলার (৩১৮ বিলিয়ন)
২নং এ্যান্ড্রু কার্নেগী (২৯৮ বিলিয়ন)
৩নং ওসমান আলী খান (২১০) (হায়দ্রাবাদ)
১১ নং আমেনোফিস (১৫৫ বিলিয়ন) প্রাচীন মিশর
২১ নং ক্লিউপেট্রা (৯৫ বিলিয়ন)
২৭ নং সুলতান বলখিয়া (৮০ বিলিয়ন) ব্রুনাই
৩৭নং বিলগেটস (৫৮ বিলিয়ন)
৪০নং মুকেশ আম্বানী (৫৫ বিলিয়ন)
৪২নং লক্ষী মিত্তাল (৫২ বিলিয়ন)

[আমার যেসব ইন্টারেষ্টিং মনে হলো সেসব দিলাম বিস্তারিত নিচের ডাউনলোড লিংকে আছে ]
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
তো যাই হোক এই ৭৫ জনের লিষ্টের সবচে চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে এই লিষ্টে ১৪ জন ধনী আমেরিকার ১৮৭০ দশকের ।
যারা এখনো ধরতে পারেন নি তাদের জন্য -- সারা দুনিয়ার সর্বকালের লিষ্টে ২০% ধনী একটা দেশের আর একটা নির্দিষ্ট সময়ের !!!
কারনটা আর কিছুই না -- সেই কাটঅফ ডেট আর বার্থ ডে রুল ।
সেই ১৪ জনের জন্ম ১৮৩০ দশকে । ১৮৭০ এর দিকে আমেরিকাতে ব্যাপক শিল্পায়ন ঘটে -- রেল রোড , ওয়ালষ্ট্রীট , ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং । যারা সেই সময়ে সদ্ব্যবহার করতে পারছে তারাই অন্যতম ধনী হতে পেরেছে।

~~~~~~~~~~~~
পার্সোনাল কম্পিউটারের হিষ্ট্রিতে সবচে রিভিলুশনারী দিন ছিলো জানুয়ারী ১৯৭৫। আল্টেয়ার৮৮০০ বিশ্বের প্রথম মিনি কম্পিউটার ছিলো ।
এবার আসুন বর্তমানের সিলিকন ভ্যালীর মোগলদের ধরা যাক - > বিলগেটস, জন্ম ১৯৫৫ মাইক্রোসফট
পল এলেন , জন্ম ১৯৫৩ মাইক্রোসফট
ষ্টিভ বালমার , জন্ম ১৯৫৬ মাইক্রোসফট
ষ্টিভ জবস , জন্ম ১৯৫৫ এ্যাপল
এরিক ষ্কিম্ডট, জন্ম ১৯৫৫ গুগল
সান মাইক্রোসিষ্টেমের চারজন ফাউন্ডারের জন্ম ১৯৫৫।

কারন সেই সহজ -- ১৯৫৫ আশে পাশে জন্ম হলে যখন পৃথিবী প্রথম মিনি কম্পুটারটা বের হলো -- সেটা নিয়া সদ্য স্কুল থেকে বের হওয়া ছেলেদেরই খেলা করা সহজ ছিলো -- পরে জন্মালে তুমি এখনো স্কুলে -- আর আগে জন্মালে তুমি চাকরী নিয়ে ব্যস্ত ।

~~~~~~~~~~~~~~~

যাক এতক্ষনে আউটলায়ার বইয়ের মোটামুটি একটা আইডিয়া দিতে পারলাম -- যে সাফল্য পাওয়া মোটেই ব্যক্তিগত ব্রিলিয়ান্সের উপর বর্তায় না -- বরং সেই সময় সেই যুগ ।সাথে ১০০০০ ঘন্টার পরিশ্রমও থাকতে হয় ।
আউটলায়ার তারাই যারা সাধারনের বাইরে সাফল্য পায় ।
তাদের রহস্য উদ্ধার করা জন্যই এই বই।


..:: ডাউনলোড ::..


আউটলায়ারস -- ১
Click This Link


লেখকের সাথে বই নিয়ে আলোচনা দেখুন -

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৩২
৪৩টি মন্তব্য ৪২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×