somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিকেটার নাসিরের ওয়ালে বাজে কমেন্টকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই!!!

২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন অন্যতম সদস্য নাসির হোসেন। কয়েক দিন আগে তিনি ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে রংপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছোট বোনের আবদার রক্ষা করতে নিজের ফেসবুক পেইজে বিমানের সিটে বসা দুজনের একটি ছবি আপলোড করেছিলেন। সেই ছবি নাসির অবশেষে ঘোষণা দিয়ে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। রাগে ক্ষোভে নাসির নিজের আরেকটি ছবি পোস্ট করে সেখানে লিখেছেন, ''Dear fans, I really get hurt by your comments. I posted this pic on request of my younger sister; many of you put bad comments on it. And some of them made fun posts with it. I have removed the picture. Are you happy now? I do not need fans like you. Whoever do not like me, please don’t follow me and put comments in my picture.Thank you! আপনাদের খারাপ মন্তব্য দেখে অনেক কষ্ট পেলাম। আমার ছোট বোনের আবদার মেটাতে তার সাথে আমার ছবি পেজে পোস্ট করেছিলাম। আপনারা অনেকেই বাজে মন্তব্য করেছেন। যেটা নিয়ে অনেকেই ফান পোস্টও করছেন। পোস্টটা ডিলেট করে দিলাম এখন খুশিতো? আপনাদের মত ফ্যান আমার দরকার নাই। আমাকে যারা পছন্দ করেন না, তারা আমার ছবিতে লাইক দিবেন না। আমাকে ফলো করবেন না। ধন্যবাদ।''
বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কি টের পাওয়া যাচ্ছে? এই হচ্ছে দেশের বর্তমান চিত্র। এমন ডিজিটাল শিক্ষিত মানুষের ভারে এই দেশ এখন ধ্বংসের চূড়ান্ত দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটা দেশ। যেখানে কোনো পরিবার-পরিকল্পনা নাই। নাই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা। হাজার হাজার মাদ্রাসায় দেশ সয়লাব। দেশের শাসকবর্গ শিক্ষার হার বেশি করে দেখানোর ভূতুরে নেশায় মত্ত। সারা দেশের কোথাও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। ইভ-টিজিং, ধর্ষন, খুন কত কিসিমের খবরের ছড়াছড়ি।
এবার জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নাসিরের ছোট বোনকে ফেসবুকে আক্রমন করেছে সেই দুবৃত্তের দল। পহেলা বৈশাখে যে লোকগুলো মেয়েদের যৌন নিপিড়ন করে পুলিশের সহায়তায় এখন সংবাদেরও আড়ালে। স্বয়ং পুলিশের সদস্য ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে এক মেয়েকে যৌন নিপিড়ন করেও কিভাবে যেনে এখন ঘটনারও আড়ালে! সেই সংখ্যাটি যে দেশে জোয়ারের পানির মত কেবল বাড়ছে, তা শাসক দল স্বীকার করুক আর না করুক, দেশের এই চিত্রটি তাই বলছে। এই চিত্রটি কিন্তু সত্যি সত্যিই খুব ভয়াবহ।
এই দুবৃত্তদের স্বয়ং দেশের পুলিশ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেই এরা এতো বাড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এদের এই ক্রমোন্নতি শাসকবর্গের এখনো দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়নি! যেদিন কোনো মন্ত্রী/এমপি-র মেয়েরা এদের নির্যাতনের শিকার হবে, হয়তো সেদিন এদের টনক নড়লেও নড়তে পারে। তার আগে শাসকবর্গ দিয়ে এসব দুবৃত্তদের সায়েস্তা করার আশা করা বাতুলতা।
আমরা এমন একটি রাষ্ট্রে বসবাস করি, যেখানে পরিবারের সদস্যদের ছবি ফেসবুকে দেওয়া যাবে না। সেখানেও এসব দুবৃত্তদের কুদৃষ্টি। সেখানেও এরা এসে নাক গলাবে। তাহলে, এই রাষ্ট্র, এই সমাজ আর কবে সভ্য হবে? কিভাবে সভ্য হবে? এসব মুর্খের দল জুকারবার্গের ফেসবুক ব্যবহার শিখেছে। কিন্তু কোথায় কী বলতে হবে, তা শেখেনি। কোথায় তার প্রবেশাধিকার তাও এরা জানে না। সুযোগ পেলেই এরা ছোবল মারে। এসব হায়েনার দল থেকে কী এই জাতির মুক্তি নাই???
ফেসবুক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যারা এটি ব্যবহার করেন, তাদের হাজারো সচেতন চেষ্টা স্বত্ত্বেও এখানে এসব অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করছে। আর আমাদের পুলিশ বাহিনী বসে বসে বাতক ব্যাধি বাধাচ্ছে। ফেসবুকে কেউ যদি কোনো জঘন্য অপরাধ করেন, তাদের সনাক্ত করার জন্য পুলিশ তাহলে কি নিয়ে বসে আছে?
শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফেসবুকে কেউ কোনো কটাক্ষ করলে পুলিশ তাহলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনতে খুব সচেষ্ট। কিন্তু প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে ফেসবুকে যে হাজার হাজার অপরাধ হচ্ছে, সেসব অপরাধীদের তাহলে কোন দেশের পুলিশ ধরবে? পুলিশ সেসব অপরাধীদের ধরার জন্য নিরব কেন?
পুলিশের এই যে একচোখা নীতি, এ কারণেই দেশে অপরাধের আওতা ও সংখ্যা দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা নিয়ে শাসকদের কোনো মাথা ব্যথা নাই। পুলিশের রাতের ঘুমেরও কোনো সমস্যা নাই। অথচ কেবল ফেসবুকে আড়ি পেতেই পুলিশ এসব দুবৃত্তদের অতি সহজেই আইনের আওতায় আনতে পারে। এদের যতক্ষণ না আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া না হবে, ততক্ষণ এসব অপরাধ চলতেই থাকবে। এসব অপরাধীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
নাসির তার ফেসবুক ওয়ালে নিজের একটি ক্ষুব্ধ ছবি দিয়ে সেখানে লিখেছেন, ''ডোন্ট ফলো মি''। একজন ব্যক্তি কতোটা অসহায় হলে নিজের ফেসবুক পেইজে এমন কথা লিখতে পারেন, তা কি আমরা অনুধাবন করতে পারি? আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেট খুব পছন্দ করেন। জাতীয় দলের সকল ক্রিকেটারকে তিনি নিজের সন্তানদের মত ভালোবাসেন। আশা করি, নাসিরের এই বিষয়টি নিয়ে তিনি এবার ইভ-টিজিং করা বা মেয়েদের সম্পর্কে আজেবাজে কমেন্ট করা এসব দুবৃত্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে যথাযথ নির্দেশ দেবেন।
নইলে বাংলাদেশ যতই ডিজিটাল হোক, এসব দুবৃত্তদের বংশ বিস্তারে কেবল ব্যক্তি নাসির নয়, হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন নানাভাবে নাজেহাল হতেই থাকবে। যে দেশে একজন ভাই তার ছোট বোনের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে এভাবে নাজেহাল হয়, সেই দেশের আইন-আদালত তাহলে কোথায় কী নিয়ে বসে থাকে? আমরা কী এসব বসে বসে দেখতেই থাকব নাকি আমাদের এসব নিয়ে প্রতিবাদ করার এখনই সময়? নাকি নিজের উপর আঘাত না আসা পর্যন্ত আপনি চুপ মেরে তামাশা দেখে যাবার দলে?
জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসির হোসেনের ফেসবুক পেইজে অশ্লিল কমেন্টকারী সেসব দুবৃত্তদের এখনই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হোক। আমরা গোটা জাতি হাজার ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছি। কেবল এই ক্রিকেট এখনো আমাদের একটি সুতায় বেধে রেখেছে। সেই গৌরবের ক্রিকেটের একজন জাতীয় দলের সদস্যকে এভাবে প্রকাশ্যে নাজেহাল কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।

২৭ জুন ২০১৫
ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×