somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজের পাতা ফাঁদেই আছাড় খেল ভারত!!

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিউজিল্যান্ডের ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামসন আজ নাগপুরের শুকনো উইকেট দেখে একটা বিশাল বাজি ধরেছিলেন। সেই বাজিতে তিনি সাকসেস। দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তিন জন বেস্ট বোলারকে রেস্ট দিয়েছিলেন। টিম সাউথি ও ট্রেন্ট বোল্ডকেই শুধু বসিয়ে রাখেননি, পাশাপাশি একাদশের বাইরে রাখেন ব্রেন্ডন ম্যাককুলামকে। এই তিন নির্ভরযোগ্য বোলারকে একাদশের বাইরে রেখে তাহলে উইলিয়ামসন কাদের নিয়ে এই বাজিটা ধরলেন ভারতের বিপক্ষে? ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের ছোট ভাই নাথান ম্যাককুলাম, মিচেল সান্টনার আর ইশ শোধিকে একাদশে নিলেন আজ। কারণ, এরা সবাই শুকনো পিসে শ্লো ডেলিভারি দিতে পারেন। ফলটাও হাতে নাতে পেলেন কেন উইলিয়ামসন। মিচেল সান্টনার ৪ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আজকের ম্যান অব দ্য ম্যাচও সান্টনার। ইশ শোধি ৪ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ ধ্বসাতে আর কী লাগে? নাথান ম্যাককুলাম ৪ ওভার বল করে ১৫ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। ভারতের আর উইকেট কয়টা থাকলো? একটা? সেইটা নিলেন অ্যাডাম মিলনে ২.১ ওভার বল করে ৮ রানে। ভারত আজ আসলে নিজের পাতা ফাঁদে নিজেই পা দিয়েছে।

ভারত আজ নাগপুরের শুকনো উইকেট অশ্বিন, জাদেজা, রায়ানা, বুমরা, পান্ডিয়া, নেহারাকে দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে নির্ধারিত ২০ ওভারে আটকে রাখে মাত্র ১২৬ রানে। আর শুকনো পিসে শুরুতেই অশ্বিন ইউকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে চোখ রাঙান। যে ধারাবাহিকতা দেখা গেল নেহারা, বমুরা, রায়ানা, জাদেজাদের মধ্যেও। ফলে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে করল মাত্র ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান। নিউজিল্যান্ডের কোরি এন্ডারসন বুমরার কাছে বোল্ড হবার আগে করেন দলীয় সর্নোচ্চ ৩৪ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান আসে লুকে রোনচি'র ব্যাট থেকে। তৃতীয় সর্বোচ্চ করেন মিচেল সান্টনার ১৮ রান। ১২৭ রানের জয়ের জন্য লো স্কোরিং ম্যাচে ভারত যে এভাবে মাত্র ৭৯ রানে ১৮.১ ওভারেই অলআউট হবে এটা কী আগে টের পেয়েছিল তারা? ক্যাপ্টেন এমএস ধোনি ৩০ বলে ৩০ রান করে একাই একটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ১৮ তম ওভারের চতুর্থ বলে নাথান ম্যাককুলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে সান্টনারের চতুর্থ শিকারে পরিনত হলে পরের তিন বলেই ভারত অলআউট। ধোনি আউট হন নবম ব্যাটসম্যান হিসাবে। এর আগে ২৭ বলে ২৩ রান করে ভারতের প্রধান ব্যাটিং স্তম্ভ বিরাট কোহলি শোধির শিকাড় হওয়ার আগ পর্যন্ত একটা ধৈর্যশীল ইনিংস খেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দিনটি যে আজ নিউজিল্যান্ডের। নইলে শুকনো পিস দেখেও টস জিতে কেন উইলিয়ামসন কেন ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেবেন!

নিউজিল্যান্ডের কাছে সুপার ১০ পর্বের প্রথম ম্যাচে হারার পর এখন ভারতের বাঘা বাঘা ধারাভাষ্যকাররা বলা শুরু করেছেন সুপার ১০ পর্বে গ্রুপ-২ নাকি ডেথ গ্রুপ। ডেথ গ্রুপ মানে এই গ্রুপ থেকে যে কেউ সেমি-ফাইনাল বা ফাইনালে যেতে সক্ষম। এই গ্রুপের অপর দলগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান আর কোয়ালিফাইয়িং ম্যাচে এ-গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ। যে কথার আসল অর্থ হলো আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের সুপার ১০ পর্বে এখন গ্রুপ-২কে বলা হচ্ছে ডেথ গ্রুপ। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের ৪৭ রানের বিশাল হারকেই এখন ডেথ গ্রুপ হিসাবে দেখার প্রধান কারণ! নাকি বাকি সব দল এখন সত্যি সত্যিই উজ্জীবিত বাংলাদেশ দলকে ভয় পাচ্ছে!! ভারতের পরবর্তী ম্যাচ ১৯ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। আর আজকের জয়ী নিউজিল্যান্ডের পরবর্তী ম্যাচ ১৭ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ধর্মশালায়। যে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবার সম্ভাবনা প্রবল। ভারত যদি পরের ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে হেরে যায়, এবারের আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে কিন্তু সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা ভারতের সামনে! স্বাগতিক হিসাবে ভারতের জন্য যা হতে পারে এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় অঘটন। কারণ এবার ঘরের মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে ভারত সব ধরনের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছিল।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ম্যাচটি হবে ২৫ মার্চ ব্যাঙ্গালুরু'র চিন্নেস্বামী স্টেডিয়ামে। আর ভারতের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ হবে ২৭ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মোহালীতে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এমএস ধোনির ঘরের মাঠে খেলা। আর মোহালীতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের জয়ের রেকর্ড ইর্ষনীয়। আজ নাগপুরে ভারত যে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে, ১৯ মার্চ ইডেন গার্ডেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই গ্লানি যদি কনটিনিউ হয়, তাহলে ঘরের মাঠের সুপার পাওয়ারের উজ্বত নিয়ে কিন্তু টানাটানি শুরু হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনা কিন্তু এখন প্রবল ভাবেই দেখা যাচ্ছে! নিজের পাতা ফাঁদে-ই কী শেষ পর্যন্ত এবার পা দিচ্ছে ভারত!! ক্রিকেট চরম অনিশ্চয়তার খেলা। আর সীমিত ওভারের খেলা তো আরো বড় বেশি মাত্রায় অনিশ্চয়তার। অতএব সাধু সাবধান!!

.....................................
১৬ মার্চ ২০১৬

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৬
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×