somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবু'দার ভাতের হোটেল-৩!

০১ লা জুন, ২০১৯ রাত ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ বছর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএম একটি আসনও পায়নি। চৌত্রিশ বছর পশ্চিমবঙ্গ শাসন করা দলটি এবারের লোকসভা নির্বাচনে একেবারে জিরো! বিষয়টি নিয়ে শিবু'দার খুব মেজাজ খারাপ। পশিচমবঙ্গে লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২২টি আসন। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পেয়েছে ১৮টি আসন এবং কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ২টি আসন। সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গে এভাবে ধরাসাই হবার জন্য শিবু'দা দুষলেন বরং দলের নেতাদেরকেই।

জনশ্রুতি হলো- ভোটের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুপোকাত করার জন্য সিপিআইএম নাকি তলে তলে বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে। শিবু'দা অবশ্য এমন কথা বিশ্বাস করতে রাজি নন। ওদিকে টিএমসি ভক্তদের সুর আবার আরেকটু ভিন্ন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি'র এই উত্থানের পেছনে নাকি সফটওয়্যার কারসাজি মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে নাকি সেরকম ভেলকি লাগানো ছিল! ইভিএম-এ ভোট যেখানে দাও না কেন, তা নাকি বিজেপি'র বাক্সে গেছে! এই নিয়ে তৃণমূলের ভেতরে চলছে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ!

আরেক দলের বক্তব্য হলো- মোদিজি গুহায় ধ্যান করতে বসে নাকি রাতারাতি ভোটারদের হৃদয় জয় করেছেন। মোদিজি'র ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় নাকি এবারো বিজেপি গোল করেছে! কিন্তু এসব ব্যাপারে শিবু'দার সাফ কথা- ভোট শেষ! এখন রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ! তারচেয়ে বসে বসে সা-রে-গা-মা-পা'র অনুষ্ঠান দেখাই ভালো। ভোটের আলাপটি জমে ওঠার আগেই শিবু'দা এভাবে স্ক্রু টাইট দিয়ে দিলেন!

আলু-কুমড়ো-ঝিঙ্গে মিলিয়ে শিবু'দা যে মিক্স সবজি রান্না করেছেন, তার একদম তুলনা হয় না। সাথে পটল ভাজি, বেগুন ভাজি আর ডাল। আহা আর কী চাই! শিবু'দা বললেন, আজকে কাতল মাছ রান্না করেছি। মাছ খেতে না চাইলে ডিম সিদ্ধ খাও! আমরা যেটাকে ডিমের ভুনো বলি, শিবু'দা সেটাকেই বলেন- ডিম সিদ্ধ! কিন্তু শিবু'দার সবজি এত টেস্টি হয়েছে যে, মাছ বা ডিম কিছু আর খাওয়ার মত পেটে একদম জায়গা নেই!

'৪৬ সালে নোয়াখালী দাঙ্গার সময় শিবু'দার বাবা পূর্ববঙ্গ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে স্থানান্তর হন। চৌদ্দপুরুষের জন্মভিটে ছেড়ে ভারতে আসার পর পরিবারটি তখন একদম সর্বশান্ত হয়ে পড়ে। যে কারণে শিবু'দার আর স্কুলে পড়া হয়নি। তাই শিবু'দার বাবা'র সাথে কর্মজীবনে প্রবেশ ঘটেছে সেই শিশু বয়সেই। তারপর থেকে কর্মকেই শিবু'দা সর্বদা ধ্যান জ্ঞান করেছেন। শিবু'দার একটাই কথা- কর্মই আসল ধর্ম। আর কোনো বিকল্প নাই!

বাসায় ফিরতে ফিরতে শিবু'দার শেষ কথাটি মনে গেঁথে গেল। এই যে আমরা নষ্ট একটা এডুকেশান সিস্টেেমে কতগুলো বছর জীবন থেকে নষ্ট করেছি। কতগুলো বছর গেল ছাত্র আন্দোলনের নামে। কতগুলো বছর গেল এরশাদের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। কতগুলো বছর নষ্ট হলো শিক্ষাজীবনের সেশন জ্যামে। আর এখন ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে আমাদের কত হাজার ঘণ্টা জীবন থেকে নষ্ট হচ্ছে। তবুও আমরা এই নষ্ট সিস্টেমকে একবিন্দুও পাল্টাতে পারলাম না। শুধুমাত্র কর্মকে ধ্যান-জ্ঞান করলে এতদিনে কিছু একটা হয়ে যেত!

অথচ আমাদের জীবনের বিনিময়ে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের এসব নিয়ে কোনোই মাথাব্যথা নাই। দিনদিন তাদের বিদেশে স্বপ্নের সেকেন্ড হোম হচ্ছে। তাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে ওয়েল এডুকেশান পাচ্ছে। আর আমজনতার উপর ছড়ি ঘোরানোর জন্য আমাদের সিস্টেমকে তারা কূটকৌশলে একেবারে বারোটা বাজিয়ে রাখছে! এই যে রাজনীতির নষ্ট ভ্রষ্ট আবর্জনায় আমরা ডুবে মরছি, এর থেকে উত্তরণের আর কী কোনো উপায় নাই! হয়তো সময় একদিন এসবের কড়ায় গণ্ডায় জবাব বুঝিয়ে দেবে!

-------------------- চলবে----------------------------
৩১ মে ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৯ রাত ১২:৪৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×