somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কর্ণফুলী

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হয়তো লোভে চকচক করছিল আমার চোখ দুটো । মুহূর্তে স্থির করে ফেলি আমাকে কি করতে হবে।





ঘটনাটা গত মাসের , এর শুরুটা বলাযায় তখন থেকে যখন লিটন ও মিলা এসে উঠল আমার হোটেলে । হোটেল বা মোটেল নিয়ে বিতর্কে যাবার দরকার নেই, আমার বাবা এর নামকরণ করে গেছেন । তার নামকরণ অনুসারে এটা হোটেল ।

ঘটনাটা বর্ণনার আগে আমি নিজের ও আমার হোটেলের পরিচয়টা দিয়ে নেই। আমি পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া হোটেলের মালিক ও ম্যানেজার, বিবাহিত ও চার বছরের শিশু কন্যার বাবা। মানুষ হিসাবে ভাল সে বিচার নিজে করতে চাইনা। তবে এটুকু জানি যে বুদ্ধি হবার পর থেকে আমি অপরের কোন অপকার করিনি। আমার হোটেলটি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের একটি মাঝারি পাহাড়ের চুড়ায় । যে পাহাড়ের পাস দিয়ে বয়ে গেছে কর্ণফুলী । হোটেলের ছাদ ও বারান্দা থেকে দেখা যায় দুরের দিগন্ত জোড়া সবুজের সমারোহ , ছোট ছোট পাহাড় আর এঁকে-বেঁকে বয়ে যাওয়া মায়াবী কর্ণফুলী ।

এত সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও এখানে মানুষ সচরাচর বেড়াতে আসেনা । বলাযায় আমার হোটেলের বাসিন্দা বছরের প্রায় সময় আমি নিজে।

তো, গত মাসের শুরুর দিকে এক রাতে লিটন ও মিলা এসে উঠল আমার হোটেলে। যেহেতু খুব কম মানুষ আমার এখানে আসে তায় চেষ্টা করি যথেষ্ট সেবা যত্ন করতে। এভাবে আতিথেয়তায় মুগ্ধ দু-চার জন রেগুলার অতিথি পেয়ে গেছি আমি । প্রথম কয়েকদিনে একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করলাম যে ওরা দুজন কখনোই বাইরে বের হয়না । আসার পর থেকে সারাক্ষণ ঘরের ভিতর বন্দি থাকে দুজনে । যাওয়ার ভিতর মাঝেমধ্যে বারান্দায় ও ছাদে যায় ওরা। যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার ভেবে আমি এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামালাম না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস আছে আমার, তবে বাসি খবর। কারণ এখানে খবরের কাগজ পৌছাতে দুপুর ১২টা ১ টা বেজে যায়। তাই আগের দিনের কাগজটায় ভোরে পড়তে বসি । পড়তে পড়তে একটা জায়গায় আমার চোখ স্থির হয়ে যায় । হয়তো লভে চকচক করছিল আমার চোখ দুটো । মুহূর্তে স্থির করে ফেলি আমাকে কি করতে হবে। শান্ত ও সহজ ভঙ্গিতে কথা বলি লিটনের সাথে। তারপর এক অপার্থিব আনন্দে ভোরে যায় আমার মন। কারণ লিটন আমাকে আসশস্থ করেছে খুব তাড়াতাড়ি তারা যাচ্ছে না এখান থেকে। তার পর খবরটা পাঁঠিয়ে দিলাম যথাস্থানে । এখন শুধু অপেক্ষা ।

রাত ১২.৩০ দুটো প্রাইভেট কার এসে থামল হোটেলের সামনে । আমি শুধু ডুপ্লিকেট চাবিটা ধরিয়ে দিলাম ওদের একজনের হাতে। ৫ মিনিটের মাথাই মিলা নেমে এলো নিচে। শান্ত ভঙ্গিতে হেটে গিয়ে দাঁড়াল ওর বাবার সামনে। তার দু মিনিট পর লিটন ছুড়ে ফেলা হল দোতলার বারান্দা থেকে। সেদিকে তাকিয়ে মিলা শুধু একবার বলল, ‘ বাবা আমি ওর সাথে শুধু একমিনিট কথা বলব তার পর তুমি যা বলবে তায় করব’।
ওর কণ্ঠে এমন কিছু ছিল উনি না করতে পারলেন না।

না মিলা কাঁদেনই কাঁচা ঘুম ভেঙে যাওয়া দৃষ্টি নিয়ে এলোমেলো পায়ে হেঁটেযায় লিটনের কাছে । ততক্ষণে লিটন উঠে দাঁড়িয়েছে কোনরকমে। বাম চোখের উপরে ভ্রু থেঁতলে রক্তে ভেসে যাচ্ছে মুখের একটা পাশ। মিলা ওর কাছে গিয়ে একটু দুতত্ত নিয়ে দাঁড়াল । দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ । তারপর সবকিছু বুঝে গেছে এমন একটা হাঁসি ফুতে উঠল ওর কেটে যাওয়া ঠোঁটে । হাত দুটো দুপাশে ছড়িয়ে দিল মিলাকে জড়িয়ে নেবার জন্য। এক মুহূর্ত দেরি না করে মিলা দুপা দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল ওর বুকে। পরস্পর কে আঁকড়ে ধরে ওরা ছিটকে পড়ল পিছনে , যেখানে খাড়া পাহাড় শেষ হয়েছে কর্ণফুলীতে । /#


রহস্য পরতিকায়
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:২৮
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×