somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই নিয়ে হই চইঃ কিম্ভূত স্বদেশীর অদ্ভূত বিদেশ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এই বইটা আসলে একটা তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম। অনেকগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খুচরো লেখা এক সাথে জুড়ে দিয়ে বই বানানোর অপচেষ্টা আর কি। তাই এটাকে সংকলন বলাও ঠিক হবে না। বড়জোর টংকলন বলতে পারেন। পাঠককে চালাকি করে সংকলনের নামে যে অখাদ্য গছিয়ে দেয়া হয়, তাকেই বলে টংকলন।

অখাদ্য হলেও আসল উদ্দেশ্য ছিল খিচুড়ি রাঁধা। গোটা দশেক রম্য আর গোটা পাঁচেক ভ্রমনের চাল-ডাল চাপিয়ে ধোঁয়া এক প্লেট খিচুড়ি। কাঁচা মরিচে এক কামড় মেরে পাঠক যেন বিনা টিকেটে ঘুরে আসতে পারেন নান্দনিক কোন ইউরোপীয় দেশে। কখনো, কল্পনার রন-পা ফেলে গ্রীসের সান্তরিনি থেকে এক লাফে ইতালির গার্দা লেকের পাড়ের ছোট্ট শহরে। আবার, ইচ্ছে হল তো ভূমধ্যসাগরের নীল জলে টুপ করে একটা ডুব। জল থেকে উঠেই রোদ ঝলমলে দেশ মাল্টা’র পথে-ঘাটে একটা উদ্দেশ্যহীন চক্কর দিতে মন্দ লাগবে না। ইউরোপীয় অমৃতে অরুচি ধরলে আটলান্টিক নামের বড় পুকুরটা ডিঙ্গিয়ে সোজা উড়াল দেয়া যাবে মার্কিন মুলুকে। সান ডিয়াগোর তীর ঘেঁষে পাথরের চাঁইয়ে জি্রানো সীল মাছের অলস বিশ্রাম দেখে সৈকতে গা এলিয়ে দেবার সাধ জাগলেও জাগতে পারে বৈ কি। আসলে দেশান্তরের তেপান্তরে হারিয়ে যাবার নেই মানা। এমনই টুকরো টুকরো গল্পগুলো নিয়ে সাজয়েছি ‘সোনালি ক্রীট আর শ্বেতপায়রা সান্তরিনি’, ‘কমলা রোদের মাল্টা’ আর বাকি সব ভ্রমনকাহিনী।

প্রবাস জীবনের সুবাদে টো টো কোম্পানি হয়ে ঘুরে ফিরে বেড়ালেও জীবিকার দায়ে কিছু করে খেতে হয় বই কি। একাধিক জায়গায় চাকরি আর গবেষনার সুবাদে বিচিত্র সব মানুষের দেখা মিলেছে আর মিলছে। যেমন ‘কফিময় সকাল ও দেশী ফ্রাউ’ গল্পে বিয়ে পাগলা এক ক্ষ্যাপাটে বুড়োর আবদার টুকে রেখেছি। কিংবা প্রতিদিনের বাসা-টু-অফিস বাদুর ঝোলা ট্রেন যাত্রায় কত না রঙ্গিন চরিত্রের সাথে দেখা হয়। পাগড়ীওয়ালা শিখ সর্দার, পাঁড় মাতাল, আলসে ফকির সবার গল্পই অল্প অল্প করে লিখেছি, ‘পাতালরেলের কাব্য’-এ।

বইয়ের নামটাও বলিহারি। ‘কিম্ভূত স্বদেশীর অদ্ভূত বিদেশ’। রম্য আর ভ্রমনের এই অদ্ভূতুড়ে মিশেলের খিচুড়িতে পাঠকের কদ্দূর কি তৃপ্তি হবে, বলতে পারি না। তবে একটা ঘাউক ঢেকুর শুনতে পেলে লেখকের কানে বড় মিষ্টি লাগতো। সেই আশাতেই সবাইকে বইটার স্বাদ চেখে দেখার নেমন্তন্ন রইলো।

পুনশ্চঃ সম্পাদনা-প্রকাশনার সাথে জড়িত মুশতাক ইবনে আয়ূব ভাইকে অশেষ ধন্যবাদ। অমন ভয়ংকর তাড়া না দিলে এমন অলস মানুষ বই বানানোর ঝক্কিতে যেত না। আর, প্রচ্ছদ শিল্পী জারিন সালসাবিল প্রজ্ঞাকে মন থেকে ভালবাসা। প্রচ্ছদ দেখে কে বুঝবে যে সেটা অভিজ্ঞতার ভারে পেশাদার কোন প্রাজ্ঞ আঁকে নি, বরং এঁকেছে পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের বেনী দোলানো এক দুরন্ত তরুণী, প্রজ্ঞা। সর্বোপরি, প্রকাশকের প্রতি রইল অফুরান আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। প্রথম বই। তাও আবার বিনে খরচে। হতদরিদ্রের আসলে কপালই সহায়।

------
এক পলকে
বইয়ের নামঃ কিম্ভূত স্বদেশীর অদ্ভূত বিদেশ
বইয়ের ধরনঃ ভ্রমন, রম্য
লেখকঃ রিম সাবরিনা জাহান সরকার
প্রকাশনীঃ মাতৃভাষা প্রকাশ
প্রচ্ছদশিল্পীঃ জারিন সালসাবিল প্রজ্ঞা
স্টল নম্বরঃ ২০১-২০২
...................................................
ছোট্ট আপডেটঃ মেলা শেষে বইটা রকমারিতে চলে এসেছে এই ঠিকানায়ঃ
https://www.rokomari.com/book/199566/kimvut-swadeshir-odvut-bidesh


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ২:৩৭
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×