somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামান্য ৫০০ টাকার জন্য।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রহিমুল একজন গ্রামের কৃষক। ৪২ বছর বয়স। সংসারে ৪ ছেলেমেয়ে নিয়ে তার বসবাস। ঠিকভাবে সংসার চালাতে পারেনা রহিমুল। যা আয় করে তার সবই শেষ হয়ে আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হয় মাঝেমধ্যে। বছর তিনেক আগে পাশের গ্রামের আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড়ের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নিয়েছিল। কথা ছিল ২ সপ্তাহের মধ্যে টাকাটা পরিশোধ করবে। কিন্তু ২ সপ্তাহের জায়গায় ৩টা বছর হয়ে গেলো অথচ আজও দিতে পারছেনা টাকা। আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড়কে আজ টাকা দেবার কথা। রহিমুলই বলেছিল আজ টাকা দিবে।

আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড় ঠিক সময়মতো রহিমুলের বাড়ি চলে এলো। রহিমুল বিগতবারের মতো এবারেও টাকা দিতে ব্যর্থ হলো। ঠিক আর কোন কথা না বলে আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড় চলে গেলো আবুল চেয়ারম্যন-এর কাছে নালিশ দিতে। আবুল চেয়ারম্যন নামাজি মানুষ। তার ছোট ভাইয়ের শশুড়ের নালিশ শুনে তাকে শান্ত হতে বললো। এতে আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড়ের মেজাজ আরও বিগড়ে গেলো। সে এবার সোজা গেলো এলাকার এম.পির কাছে। এলাকার এম.পি সেই সময় তার গ্রামের বাড়িতে বসে পিঠা খাচ্ছিলো। আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড় ও তিনি একই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছিলেন। একই স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিযোগ শুনলেন। আর এমপি সাহেব যখনই আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাইয়ের শশুড়, যার নাম কেরামত, তার জামাইয়ের বড় ভাই আবুল চেয়ারম্যন তখনই তার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। বদমায়েশ আবুল চেয়ারম্যনকে কয়েকবার তার সামনে আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু সে আসিনি। আবুল চেয়ারম্যানের নামে নাকি অভিযোগ আছে যে সে এমপি সাহেবের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ডোনেশন হিসেবে নিয়েছিল মাদ্রাসা ও স্কুল নির্মানের কাজে কিন্তু সেই টাকার ২ ভাগও ব্যয় হয়নি। আবুল চেয়ারম্যনের বাড়িতে যখনই লোক পাঠানো হয় তখনই নাকি সে থাকে বাইরে। তাই এবার আর বিলম্ব না করে সে দলবল নিয়ে আবুল চেয়ারম্যন এর বাড়িতে নিজেই উপস্থিত হলো। আবুল চেয়ারম্যন ঐ সময় পুকুরপারে গোসল করছিল। এমপি সাহেবকে দেখে তার বুকে ব্যাথা উঠে যায় যার ফলে হাসপাতালে নিতে নিতেই তার মৃত্য হয়।

মৃত্যুর খবর পেয়ে ক্ষোভে খেপে যায় আবুল চেয়ারম্যন এর ছোট ভাই। সে তখন তার শশুড় ও এমপি সাহেবের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা করে। এমপি সাহেব সেটাকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বলে তার এসবে কোন দোষ নাই এটা তার প্রতিপক্ষের হিংসা ও ষড়যন্ত্র।
ব্যাপারটিকে জব্বার সাহেবের মতো বিজ্ঞ আইনজীবির মোটেও ভালো লাগলোনা। সে এর আগে ঐ এলাকার এমপি ছিল। সে চ্যালেন্জ দিল কেনো বর্তমান এমপি এমন মন্তব্য করলো। এতে তাদের এলাকায় দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হলো। মারামারিতে অনেকেই গুরুতর আহত হলো।

জব্বার সাহেবের ইন্ধন থাকতে পারে ভেবে তাকে গ্রেফতার করা হলো। জব্বার সাহেব একজন বিজ্ঞ আইনজীবি সে কথাটা একটু আগেই বলা হয়েছে। তার এই গ্রেফতারের খবর মোটেও ভালচাবে নেয়নি আইনজীবি সমাজ। বহিরবিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের আইনজীবিদের সংগঠন একই সুরে কথা বলা শুরু করলো।

তারা তাদের সরকারের কাছে লবিং করা শুরু করলো। তাদের জোড়ালো দাবিতে এক দেশ ঘোষনা দিয়ে দিল যে তার দেশের কাছ থেকে যে ২০ কোটি ডলার লোন নেওয়ার কথা সেটা তারা দিবেনা জব্বার আইনজীবিকে ছাড়া না হলে। হাস্যকর একটা ব্যাপার। আমরা মাথা উচু করার জাত নিচু করার নয়, তাই ব্যাপারটিকে ভালো চোখে দেখেনি কেউই। এরই মধ্যে জব্বার আইনজীবির মুক্তির জন্য দফায় দফায় মিছিল শুরু হলো। সেরকমই একটি মিছিলের মধ্যে এমন একজন ছিল যে কিনা সমাজে এক লম্পট, বাটপার ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় লিপ্তকারী একজন ব্যাক্তি ছিলেন।

এটারই সুযোগ নিল জব্বার আইনজীবির প্রতিপক্ষ। তারা সেই অর্থ আত্মসাতকারী ব্যক্তির গ্রেফতারের দাবী জানালো ও তার নামে দুনিয়ায় যত ধরনের মামলা করা যায় কোনটি করাই বাদ রাখলোনা। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার মামলা থেকে শুরু করে তার প্রতিপক্ষ ব্যবসায়ীর পাশের বাড়ির ভাবীর পেটিকোট চুরির মামলা সবই তার বিরুদ্ধে করা হলো।

তাদের ধারনা ছিলনা যে এই ব্যবসায়ি যে এক বড় মাপের অস্ত্রব্যবসায়ী। সে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে নেবার জন্য দেশের বর্ডারে ঝামেলা বাধালো বাইরের দেশের সহায়তা নিয়ে। এইতো শুরু হলো দুই দেশের মধ্যে বিরোধ। সেই বিরোধে লিপ্ত হলো আরো কয়েকটি বড় বড় দেশ।

অবশেষে গোটা ব্যাপারটি পরিনত হলো এক যুদ্ধে। যে যুদ্ধ শেষমেষ গড়ালো বিশ্বযুদ্ধে।

কয়েক বছরের বিশ্বযুদ্ধে যে কি হয়েছিল সেটা আর নাই বললাম। তবে.........
:
:
:
:
:
:
বিশ্বযুদ্ধের পর রহিমুলকে অনেকেই হুক্কা টানতে দেখেছিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×