১
পহেলা বৈশাখের আগের দিন ২ কেজি তেলাপিয়া মাছ কিনে ঘরে ফেরেন রফিক সাহেব। তেলাপিয়া মাছ দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছোট্ট তুর্য দাদুর সাথে গল্প জুড়ে দেয়।
-দাদুভাই, আমাদের জাতীয় মাছ তো তেলাপিয়া। শুনেছি তোমাদের সময় নাকি জাতীয় মাছ ছিলো ইলিশ?
-হ্যা দাদুভাই, সে ঈলিশের যে কি স্বাদ ছিলো.. আহা্ মনে হলেই জ্বীভে জল এসে যায়! তা দাদুভাই, তুমি ইলিশ মাছ দেখেছো কখোনো?
-হ্যা বাবার সাথে যাদুঘরে গিয়ে একবার দেখেছিলাম।
-জানো দাদুভাই, আমাদের সময় তো মাত্র কয়েক হাজার টাকা কেজিতে ঈলিশ মাছ পাওয়া যেতো!
-ধুর তোমার যত্ত সব গাজাখুড়ি গপ্পো দাদুভাই। সবসময় খালি আমার সাথে মজা করো!
দাদুর ওপর রাগ করে ঘরে চলে যায় তুর্য।
২
ইলিশ ব্যবসায়ী যদু মিয়ার ৮ম কন্যা মিস বুলবুলির সাথে আমাদের আবুলের আবার একটু ইয়ে আছে। তাই আবুল যদু মিয়ার কাছে গিয়েছে তাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে।
-কি নাম তোমার?
-জ্বী প্রিন্স আবুল।
-কি করো তুমি?
-জ্বী আমি NASA’র চিফ ইন্জিনিয়ার।
-কিহ্? তোমার সাহস তো কম নয় হে ছোকরা! বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত? সামান্য একটা স্পেস ইন্জিনিয়ার হয়ে তুমি এসেছো আমার মেয়েকে বিয়ে করতে? সারা জ্বীবন আয় করে আমার মেয়েকে এক পেটি ঈলিশ খাওয়াতে পারবে?
-মিয়া সাহেব, আমি গরিব হতে পারি কিন্তু ছোটলোক নই। আপনার মেয়েকে আমি ইলিশ মাছ খাওয়াতে পারবো না জানি, তবে মাঝে মধ্যে তেলাপিয়া ঠিকিই খাওয়াবো।
-চুপ করো বেয়াদব! এই ব্রিফকেসে ২০০ গ্রামের একটা জাটকা আছে, এটা নিয়ে দুর হয়ে যাও আমার মেয়ের জীবন থেকে।
আবুল ব্রিফকেসটা নিয়ে চুপচাপ পেছনের রাস্তা ধরে হাটা দেয়!
৩
নিজের কোম্পানির বোর্ড মিটিং শেষে ঘরে ফেরে জামান সাহেব। এলোমেলো ভাবে ম্যাগাজিনের পাতাগুলো উল্টাতে থাকেন তিনি। পাশেই বসে ছিলো তার একমাত্র ছেলে চমক। ৭ম পাতায় গিয়ে হঠ্যাৎ থেমে যান জামান সাহেব। নিমিষেই তার চোখ দুটি জ্বলজ্বল করে ওঠে। চমক বাবার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে আসে।
-কি দেখছো বাবা?
-দেখেছিস চমক, লটারী!
-উফ্.. আবার শুরু করলে?
-দেখ, মাত্র কুড়ি হাজার টাকা টিকেট!
-বাবা নাহ্! এবার কিছুতেই হবে না।
-দেখ না বাবা, ১ম পুরস্কারটা..
-কি? আবার নিশ্চই ঐটা?
-হু! ১ম পুরস্কার একটা জাটকা ইলিশের ল্যাঞ্জা..
-কেনো মিছেমিছি লোভ করছো বাবা? জানো না, “লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু”!!!