somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন যুদ্ধবাজেরা বাইডেনকে সমর্থন করেছেঃ

২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার্কিন মিলিটারি স্টাবলিশমেন্ট জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহনের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রায় ৮০০ উচ্চপদস্থ সামরিক এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাইডেনের সমর্থনে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। প্রাক্তন জেনারেল, রাষ্ট্রদূত, অ্যাডমিরাল,সিনিয়র জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা,প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব ম্যাডেলিন আলব্রাইট থেকে শুরু করে বুশ আমলের ডেপুটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি উপদেষ্টা স্টিভ অ্যাবোট,বাইডেনকে মার্কিন ক্ষমতা পুনরুজ্জীবিত করার সেরা বাজি হিসেবে সমর্থন করেছেন। এর কিছুদিন আগে রিপাবলিকান প্রশাসনে কর্মরত ১৩০ জন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাইডেনের পিছনে কাতারবন্দি হয়েছেন।তারা যুক্তি দেখান যে পররাষ্ট্র নীতিতে ট্রাম্প আমেরিকার ক্ষতি করেছেন।
বাইডেন কেন যুদ্ধাবাজদের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন? ট্রাম্প পিরিয়ডের পররাষ্ট্র নীতির বিশৃঙ্খলা এবং বিতর্ক ছিল বৈশ্বিক সুপার পাওয়ারের আপেক্ষিক পতনের লক্ষন।যেখানে এই বিশৃঙ্খলার বাইরে আসার বাস্তব কোন কৌশল নেই।
মার্কিন সাম্রাজ্য একটি টার্নিং পয়েন্ট অতিক্রম করছে। এটা বিশ্বের অবিসংবাদিত সুপারপাওয়ার সামরিক এবং অর্থনৈতিক উভয় দিক থেকেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮৭১ সাল থেকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, এবং বিশ্বের ৮০টি দেশে প্রায় ৮০০ সামরিক স্থাপনা বা ঘাঁটি আছে। কিন্তু আজ ক্রমবর্ধমান শক্তি চীনের অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হচ্ছে, এবং বেশ কয়েকটি কম শক্তি সম্পন্ন দেশ বিশ্বের প্রতিটি জায়গায় তার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে,বিশেষ করে ইরান এবং রাশিয়া।
জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন কর্তৃক শুরু হওয়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফল স্বরূপ ২০০১ সালে আফগানিস্তান এবং ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ করে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিসের তথ্যানুসারে এই দুই যুদ্ধে মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং আমেরিকার খরচ হয়েছে ২.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। মধ্যপ্রাচ্য এবং আফগানিস্থানের মানুষের জন্য এগুলু গণহত্যা অন্যদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যের জন্য এগুলু ছিল ভয়াবহ বিপর্যয়।ইরাককে কেন্দ্র করে পেন্টাগন ইরানের শাসন ব্যাবস্থা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখলেও ইরাক যুদ্ধের কারনে এই অঞ্চল জুড়ে শুধু প্রভাবই বৃদ্ধি ঘটেছে।এর পরিবর্তে এটি মার্কিন শক্তির দুর্বলতা এবং সীমা উন্মোচন করে দেয় তখনি যখন চীনের নাটকীয় অর্থনৈতিক এবং সামরিক উত্থান শুরু হয়।সাথে মৃতপ্রায় সুপার পাওয়ার সাবেক কেজিবি প্রধান পুতিনের উপর ভর তার হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে।
গত এক দশকে চীনের সাথে মার্কিন উত্তেজনা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।বিশেষ করে বিশ্ব বানিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তির পর থেকে চীন তার অর্থনৈতিক,কূটনৈতিক এবং সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে।অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়েছে অনন্ত যুদ্ধে এবং ফলশ্রুতিতে ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক সংকট ও মন্দার সম্মুখীন হয়েছে।
বারাক ওবামার "পাইভট টু এশিয়া" পরিকল্পনার মাধ্যমে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌ বাহিনী বৃদ্ধির পরিকল্পনার সাথে একটি সংকেত স্পষ্ট ছিল যে,মার্কিন শাসক শ্রেণী চীনকে নিয়ন্ত্রণ এবং ঘিরে ফেলতে চায়। ওবামার তৎকালীন শ্রেণীবদ্ধ আকাশ-সমুদ্র যুদ্ধ মতবাদ ছিল একটি সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের জন্য কার্যকরী পরিকল্পনা তৈরি করার একটি প্রচেষ্টা। উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া তারবার্তায় জানা গেছে যে অস্ট্রেলিয়া মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী কৌশলের সাথে আবদ্ধ ছিল। ২০০৯ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সাথে কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড এই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী মোতায়নে মার্কিন প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন।তবে তিনি শর্ত দিয়েছিলেন যদি সব চেষ্টা ব্যার্থ হয় তবেই কেবল সামরিক শক্তি মোতায়েন করা যাবে।যার কারনে তথাকথিত গণতান্ত্রিক রেভুলেশনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।কিন্তু ওবামার কৌশল ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।ততদিনে চীন নিজের সক্ষমতা জানান দিতে শুরু করে। চীন,দক্ষিণ চীন সাগরে তার ঐতিহাসিক দাবির পক্ষে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক সক্ষমতার বিশাল ব্যবধান ঘোচাতে করতে শুরু করে,শান্তিকালীন সময়ে দ্রুত সামরিক সক্ষমতা অর্জনের ইতিহাসে চীন অলৌকিক ক্ষমতা দেখিয়েছে।
ট্রাম্পের অধীনে, এই উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। ট্রাম্পের সংঘাতপূর্ণ বক্তব্য এবং বাণিজ্য যুদ্ধ চীনকে আন্তর্জাতিক উদারনৈতিক ব্যবস্থায় একীভূত করার দশকের পর দশক ব্যাপী মার্কিন কৌশল ভেস্তে যায়।যদিও এটা মার্কিনিদের পক্ষে কখনো সম্ভব ছিল না এবং চীন সেটা ভালো ভাবেই বুঝেছিল।চীনা জাতি তাদের ভাষায় সেঞ্চুরি অব হিউমিলিয়েশান কখনো ভুলে যায় না। ১৯৭২ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের বেইজিং সফরে আসা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শাসক শ্রেণী ভেবেছিল যে এটি চীনকে তথাকথিত লিবারেল বিশ্ব ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করে মার্কিনিদের বৈশ্বিক আধিপত্য নিশ্চিত করতে পারে। কিছুসময়ের জন্য মনে হচ্ছিল এটা কাজ করছে।আস্তে আস্তে চীন দুনিয়ার সুইট শপ হয়ে উঠে।মার্কিন গাড়ি নির্মাতা জেনারেল মোটরস এবং মোবাইল কন্ট্রাক্টর এপলের জন্য আকর্ষণীয় বিনিয়োগ মার্কেট হয়ে উঠে।কিন্তু দুই দেশের এই মধুর স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক খুব দীর্ঘ হয়নি।আজকের দিনে উল্কাপিণ্ডের মত বর্ধমান চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে কাজে লাগিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে।
চীনকে ঠেকানোর জন্য ওবামা প্রশাসনের আরেকটি স্ট্র্যাটেজিক চুক্তি টিপিপি।টিপিপি ছিল দুনিয়ার ইতিহাসে বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি।এর মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে মার্কিন অর্থনীতির সাথে আরও একীভূত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওবামার প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাশটন কার্টারের মতে,’’আমাদের কাছে একটা এয়ারক্রাফট যেরকম গুরুত্বপুর্ন ঠিক টিপিপিও আমাদের কাছে সেরকম গুরুত্বপুর্ন’’।এর লক্ষ্য ছিল চীনের উত্থান ঠেকিয়ে রাখা।
ট্র্যাম্প ক্ষমতায় আসার তিনি টিপিপি থেকে বের হয়ে আসেন।তার এই সিদ্ধান্ত ছিল মার্কিন সামরিক এবং অর্থনৈতিক অভিজাত শ্রেনির চিন্তার বিপরীত।যদিও চীনের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব দুই পক্ষেরই একই রকম।কিন্তু চীনকে মোকাবেলার জন্য ট্র্যাম্প ভিন্ন পথে হাঁটেন।ওবামার মত ট্রাম্পও চীনকে কারেন্সি ম্যানিফুলেশন এবং প্রযুক্তি চুরির জন্য অভিযুক্ত করেন।২০১৯ সালের ষ্টেট অব দ্যা ইউনিয়ন ভাষণে ট্র্যাম্প বলেন,’’বছরের পর বছর ধরে আমেরিকান শিল্প খাতকে টার্গেট করে চীনের পলিসি এবং প্রযুক্তি চুরির এখানেই শেষ’’। একই বছর ট্র্যাম্প বানিজ্য ঘাটতির জন্য চীনকে দায়ী করে আমদানিকৃত ৫৫০ বিলিয়ন ডলার মুল্যের চীনা পন্যের উপর শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেন এবং ৩৫০ বিলিয়ন ডলার মুল্যের পন্যের উপর শুল্ক আরোপ করেন।মার্কিন সামরিক এবং অর্থনৈতিক অভিজাত শ্রেনি এতে ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন।অন্যথায় আভ্যন্তরীণ কর হ্রাস এবং নিয়ন্ত্রন হ্রাস নিয়ে তারা খুশিই ছিলেন।করোনা পূর্ববর্তী সময়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতির পরিমান হবে ৩১৬ বিলিয়ন ডলার।
মার্কিন যুদ্ধবাজদের জন্য আর উদ্বেগজনক বিষয় ট্র্যাম্প প্রতিষ্ঠিত মার্কিন মিত্রদের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন।বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলুর উপর।ট্র্যাম্প এটা ভুলে গিয়েছিলেন গত ৭-৮ দশকে দুনিয়া ব্যাপি তাদের অপকর্মের মুল সমর্থক ছিল এই ইউরোপ।ট্র্যাম্প যখন টিপিপি থেকে বের হয়ে যান তখন তিনি বলেছিলেন বহু পাক্ষিক মুক্ত বানিজ্য চুক্তি শুধুমাত্র আমেরিকার ক্ষতিই করেছে।তার এই অভিযোগ কিছুটা সত্য হলেও যুদ্ধবাজেরা এটার চরম বিরুধি ছিল কারন এসব বানিজ্যের মাধ্যমে মার্কিন অভিজাতেরা তাদের অপকর্মে এসব দেশের পূর্ণ সমর্থন আদায় করে নেন।টিপিপি থেকে বের হয়ে যাবার ট্র্যাম্প কানাডিয়ান স্টিল,জার্মান গাড়ি এবং ফ্রান্সের বিলাসবহুল পন্যের উপর শুল্ক করেন।মার্কিন যুদ্ধবাজদের মতে এর কারনে চীন তার বেল্ট এন্ড রোড প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজস্ব মুক্ত বানিজ্য ধারনাকে আর এগিয়ে নিয়ে যাবেন।যেটা মার্কিন হেজিমনির প্রতি মারাত্মক হুমকি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল,ইউএন,ডব্লিউবি এবং ন্যাটোর মত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলুকে মার্কিনিরা তাদের হেজিমনিক অস্তিত্ব রক্ষার কাজে দশকের পর দশক ব্যাবহার করে আসছে।ট্র্যাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট নীতির কারনে তিনি এসকল প্রতিষ্ঠানের সাথে দন্ধে জড়িয়ে পড়েন।যেটা যুদ্ধবাজদের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দেয়।যদিও এটা এখন তারা স্বীকার করে যে,এসব প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া ভুমিকার পরেও চীনের উত্থানকে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।
যুদ্ধাবাজেরা আশা করছে যে বাইডেন আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের জন্য সম্মতি উৎপাদনকারী উদারনৈতিক মতাদর্শকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে তথাকথি লিবারেল রাজনৈতিক বৈধতা পুনরুদ্ধার করবে। সর্বোপরি, তারা আশা করছে যে বাইডেন মার্কিন মিত্রদের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে এবং চীনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তার মিত্রদের সাথে একটি জোট গঠন করবে, যা চার বছর ধরে মার্কিন বৈশ্বিক নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা যেমন বিলাপ করছেন, "আমাদের মিত্ররা আর আমাদের বিশ্বাস করে না বা সম্মান করে না, এবং আমাদের শত্রুরা আর আমাদের ভয় পায় না"।
মার্কিন সাম্রাজ্যের হকিশ প্রবক্তা হিসেবে বাইডেনের রেকর্ড প্রমাণিত। কয়েক দশক ধরে তিনি সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন। ইউএসএসআর-এর পতনের পর সাবেক পূর্বাঞ্চলীয় ব্লকে মার্কিন প্রভাব বিস্তারের জন্য তিনি ন্যাটোর সম্প্রসারণের প্রাথমিক প্রবক্তা ছিলেন। তিনি বলকান যুদ্ধে মার্কিন হস্তক্ষেপ সমর্থন করেন, ২০০১ সালে আফগানিস্তান আক্রমণ সমর্থন, ২০০৩ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে ভোট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে লিবিয়ায় মার্কিন হস্তক্ষেপ সমর্থন করেন।
চীনের সাথে "শক্ত" হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মার্কিন শাসক শ্রেণীর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় বাইডেন,ট্রাম্পকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর "খেলা" বলে অভিযুক্ত করেন, যাকে তিনি "গুণ্ডা" ডাকতেও ভুল করেননি। এটা কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনুশীলনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, কংগ্রেস প্রথমদিকে চীনের প্রতি কঠিন না হওয়ার জন্য ট্রাম্পের সমালোচনা করে। উদাহরণস্বরূপ, সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার চীনের সাথে একটি বাণিজ্য চুক্তির পর বলেছিলেন ট্রাম্প চীনের কাছে নিক্রি হয়ে গেছেন। ট্রাম্প যখন হুয়াওয়ে ইস্যুতে পিছিয়ে আসেন তখন শুমার হুয়াওয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য আইন প্রনয়নে নেতৃত্ব দেন।
কংগ্রেসে বাইডেন তার প্রথম দিন থেকে বর্ণবাদী রাষ্ট্রে ইজরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে নিজের জন্য একটি স্পেস তৈরি করেছেন। ইজরায়েলি প্রকাশনা হারেৎজের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাইডেন ইজরায়েলের ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে "সত্যিকারের বন্ধু’’ অভিহিত করেছিলেন। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুর সাথে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সাহায্য চুক্তি স্বাক্ষর করে, যাকে স্টেট ডিপার্টমেন্ট "যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহায়তার একক বৃহত্তম অঙ্গীকার" বলে অভিহিত করে। নির্বাচনী প্রচারনার সময়ও এই বিষয়ে বাইডেন চুপ ছিলেন।শপথ নেওয়ায় একদিনের মাথায় তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইজরায়েলের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।এমনি ট্র্যাম্প ইজরায়েলের যা যা করেছিলেন সব কিছুই চালু রাখার অঙ্গীকার করেছেন।
আফগানিস্তানে, বাইডেন ট্রাম্পের বিপরীত নীতি গ্রহন করে যুদ্ধবাজদের আশা পুরন করবেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তিনি দেশটিতে স্থায়ী মার্কিন সামরিক উপস্থিতি সমর্থন করেছিলেন। অন্যদিকে ট্রাম্প মার্কিন সামরিক বাহিনীকে চমকে দেন যখন তিনি টুইটারে ঘোষণা করেন যে তিনি ক্রিসমাসের মধ্যে সব সৈন্য বের করতে চান। এর বিপরীতে, সামরিক সংবাদপত্র স্টার এন্ড স্ট্রাইপস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছিলেন যে তিনি আফগানিস্তান এবং ইরাকে সৈন্যদের উপস্থিতি বজায় রাখতে চান এবং সেটাই তিনি করবেন।
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধীরা যদি বাইডেনকে বিচার করতে চাই তাহলে কংগ্রেসে তার রক্তে ভেজা রেকর্ড থেকে বিচার করতে পারেন।মার্কিন সামরিক প্রতিষ্ঠানের বেশীরভাগ অংশ বাইডেনকে সমর্থন করেছে কারণ তারা মনে করে যে তার বহুপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি দুনিয়া ব্যাপি যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করবে। এই কারণে ফোর্বস ম্যাগাজিনের সিনিয়র কন্ট্রিবিউটর লোরেন থম্পসন গত মাসে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন:ট্রাম্প থেকে বাইডেনের হাতে অন্য দেশে সামরিক বাহিনী ব্যাবহারের সম্ভাবনা ১০০ ভাগ বেশি।
বৈশ্বিক পুঁজিবাদ এক গভীর সংকটের সম্মুখীন হয়েছে যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করছে এবং বিদ্যমান দ্বন্দ্বের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। উন্মুক্ত সাম্রাজ্যবাদী প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগামী সময়ের একটি বৈশিষ্ট্য হবে, সাথে হবে আঞ্চলিক বিরোধ নিয়ে যুদ্ধ। এমন কোন বিষয় নেই যা জন্য মার্কিন শাসক শ্রেণী বৈশ্বিক সুপারপাওয়ার হিসেবে তার অবস্থান রক্ষা করার জন্য ব্যাবহার করবে না।আর এটাই হল ভয়ের কারন।কারন মার্কিন বৈশ্বিক সুপার পাওয়ারের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হল চীন আর জো বাইডেনের মত একজন যুদ্ধবাজ কমান্ডার-ইন-চিফ। সে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক মানুষ।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×