somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যা বলা হয় আর যা বলা হয় না।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যা বলা হয় আর যা বলা হয় না।
যদি চীন এবং আমেরিকার মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে তাহলে তাদের যুদ্ধের মুল কারন হবে দক্ষিন চীন সাগর।তথাকথিত ফ্রিডম অফ নেভিগেশনের নামে আমেরিকা প্রতিনিয়ত দক্ষিন চীন সাগরে যুদ্ধের মহড়া দেয়।পশ্চিমি মিডিয়াগুলু এসবকে হাইলাইট করলেও ঐতিহাসিক কন্টেক্সটা কখনো জানতে দেয় না।চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কখনও আলোচনা করা হয় না আর হলেও সেটা খুবই কম।
১২ই জুলাই,২০১৬ সালে ফিলিপাইন ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আর্বিটেশনা থেকে দক্ষিন চীন সাগর নিয়ে রায় পাই।সেই আর্যের আদালত উল্লেখ করেন,’’কোনও সময় চীন সমুদ্র বা তার সংস্থানসমূহের উপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করেছে এমন কোনও প্রমাণ নেই’’। অতএব তথাকথিত “9 ড্যাশ লাইন’’এর কোন আইনগত ভিত্তি নেই যেটা চীন তার একচেটিয়া এখতিয়ারের মধ্যে থাকার দাবি করেছে।
চীন আদালতের এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশুদ্ধ ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি খুব অবাক করা ব্যাপার ছিল।কারণ চীন কয়েকশ বছর পূর্বে এই অঞ্চলটিতে ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছিল,তবে ঐতিহাসিক পরিস্থিতি প্রায়শই আধুনিক ভূ-রাজনীতিক বিশ্বে সন্দেহজনক প্রাসঙ্গিক। বেইজিংয়ে সমসাময়িক সরকারের মনোভাব ও আচরণ বোঝার ক্ষেত্রে তা অবশ্যই প্রাসঙ্গিক নয়। তবে এটি গল্পের একটা অংশ মাত্র। ঐতিহাসিক নজিরগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে তুচ্ছ। তাদের নিজ সীমানা থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের সাগরে "নৌচালনার স্বাধীনতার" নামে সামরিক অনুশিলনের জন্য এটাকে তারা কোন গুরুত্ব দিতে রাজি নয়।
ওয়াশিংটন এবং অস্ট্রেলিয়া এই পর্যন্ত এরকম একটা ঘটনাও দেখাতে পারেনি যে চীন নৌ চলাচলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে।দক্ষিন চীন সগরে নিরাপদ নৌ চলাচল চীনের স্বার্থেই দরকার।কারন চীনের আমদানি রপ্তানি বানিজ্যের ৮০% শতাংশই এই রুটে।
ওয়াশিংটন সমুদ্র সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আদালত (UNCLOS) এর আদেশগুলু মেনে নেয় না।শুধু এই ক্ষেত্রে নয় অন্য অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার কোন রায় বা পর্যবেক্ষন ওয়াশিংটন মেনে নেয়না যদি সেটা তাদের চিন্তা ভাবনা বা স্বার্থের বাইরে যাই।কিন্তু অন্যকে এগুলু মেনে চলার উপদেশ দেয় বা বাধ্য করে।
মুলত চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লবের মুলে ছিল দক্ষিন চীন সাগরে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।পশ্চিমা মিডিয়া চীনের দাবিকে হাইলাইট করলেও তাইওয়ানের একই দাবির ব্যাপারে তার নিশ্চুপ।তাইওয়ানের দাবি করা একটা দ্বীপ তাইওয়ান উপকুল থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।কিন্তু এই ব্যাপারে পশ্চিম শুধু চুপচাপ থাকেনি বরং তারা তাওয়ানকে উস্কে দিচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ঐতিহাসিক বা কৌশলগত স্বার্থকে কোনভাবেই হ্রাস না করে দক্ষিণ চীন সাগরকে এত বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কমপক্ষে আরও একটি কারণ রয়েছে।সেটা হল তেল এবং গ্যাসের মজুদ।এটা বিশ্বাস করা অসম্ভব যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিন চীন সাগরে তেল এবং গ্যাসের মজুগ সম্পর্কে বেখেয়াল।এবং পুরু দুনিয়া জুড়ে সে যেভাবে তার বৃহৎ কর্পোরেশনগুলুর স্বার্থের জন্য দন্দে জড়ার সেটা দক্ষিন চীন সাগর নিয়ে সে করবে না। ২০১৩ সালের সার্ভে অনুযায়ী দক্ষিন চীন সাগরে প্রমানিত তেল মজুদের পরিমান প্রায় ২৮ বিলিয়ন ব্যারেল।যেটা দুনিয়ার সর্ববৃহৎ।এবং প্রমানিত প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ প্রায় ২৬৬ ট্রিলিয়ন গনফুট।পশ্চিমা গনমাধ্যম দক্ষিন চীন সাগরের নেভিগেশন স্বাধীনতা নিয়ে মুখে ফেনা তুললেও তাদের মুল উদ্ধেশ্য এই তেল গ্যাসের বিষয়টি পুরু এড়িয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্র সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কনভেনশন International Convention on the Law of the Sea (UNCLOS) অনুমোদন করতে অস্বীকৃতি জানালেও এই কনভেনশন অন্যকে মানতে বাধ্য করে।এটাই হল দক্ষিন চীন সাগরের আমেরিকার আধিপত্য চেষ্টার মুল কারন।কারন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,অস্ট্রেলিয়া,জাপান এবং তাইওয়ানকে দিয়ে এই সম্পদ গ্রাস করতে চাই এবং দক্ষিন চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার করে চীনের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×