somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগুন!!! আগুন!!!

২৮ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামে থাকতাম। গ্রাম সম্পরকে অনেক ভাল জানা আছে। এখন বাবার চাকুরির খাতিরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্য স্থানে থাকতে হয়। এটিও গ্রামের মতই, তবে কিছুটা শহরের ছোয়া আছে।

রমজানের ৮ রোজা শেষ। রাত ১>২০ বাজে। আমি আমার ছোট দুই ভাইয়ের সাথে গল্প/দুস্টমি করছি । আব্বু আম্মু অন্য রুমে ঘুমিয়ে গেছে। হঠাত বাহির থেকে শব্দ সুন্তে পেলাম। তারপরেই চিৎকার !!! “বাচাও বাচাও”, “মরে গেলাম মরে গেলাম” বলে এক মহিলা চিৎকার করছে ।শব্দ টা ছিল কাউকে বাশ বা কঞ্ছি দিয়ে পেটানোর শব্দ। এটা আমার কাছে খুব পরিচিত(বাবার হাতে বেতের মার)। চিৎকার ও শব্দের মধ্যে মিল রেখে ভাবলাম পাশের বাসার স্বামী তার বউকে পেটাচ্ছে(গ্রামে এই ঘটনাগুলো আগে প্রায়ই দেখা যায় যদিও এখন কমে গেছে)। চিৎকারের মাত্রা বেড়ে গেল। তখন মনে হল, “মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় কেমন করে! এত বাজে ভাবে মারছে কেন??” জানালা খুলে তাকাচ্ছিলাম, কিন্তু কাউকে দেখতে পেলাম না। চিৎকার আরও বাড়তে লাগলো। কিছুক্ষণ পরেই অন্য বাড়ি থেকে আরেক মহিলা বের হয়ে উনিও “বাচাও বাঁচাও”, “সব গেল রে ” বলে চিৎকার করতে লাগলো। এনার আবার কি হল! পাশের বাসার চিৎকার তখনও থামে নি। অনেকদিন পর বাসায় এসেছি, তাই গ্রামের অবস্থা ভাল ভাবে জানি না। ভাবলাম, জমি নিয়ে এক পরিবার আরেক পরিবারের সাথে বিবাদ লেগেছে নাকি! ঠিক তখনি , এক লোক ওই বাড়ির দিকে দৌড়াচ্ছে, আর আগুন আগুন বলে চিৎকার দিচ্ছে। উনার সাথে আরেকজন চিৎকার দিচ্ছেন, “সবাই ঘুম থেকে উঠেন, আগুন লেগেছে”।

এবার বুঝতে পারলাম যে ওই বাড়িতে আগুন লেগেছে। আমার ছোট ভাই আম্মু আব্বু কে ডাকল। সবাই রুম থেকে বাইরে এলাম।

আগুন দেখেই অবাক হয়ে গেলাম। আগুন অনেক উপরে উঠেছে। ভয়ঙ্কর এক পরিবেশ। আগুনের কাছে ছুটে গেলাম। অনেকেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। বালতি দিয়ে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। যদিও বালতির পানি দিয়ে ওই আগুন নেভানো অনেক কঠিন, তবুও ওই মুহূর্তে এটা ছাড়া আর কোনও উপায়ও নাই। আগুন লেগেছে রান্নাঘরে আর রান্নাঘর ওই বাড়ির অন্যোন্য ঘর থেকে আলাদা হওয়ায় আগুন খুব বেশি ছড়াতে পারে নি। ততক্ষণে কারেন্ট অফিস থেকে এই এরিয়ার লাইন বন্ধ করা হয়েছে(এক বড় ভাই অফিসে ফোন দিয়েছে)। দমকল বাহিনী কে কল দেয়া হয়েছে।

আগুন নেভানো শেষ। বাড়ির দিকে আসছি, পাশেই অনেক মহিলা আল্লাহর শুকর করছে। দমকল বাহিনীর কোনও খবর নাই। আগুন নেভানোর প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর দমকাল বাহিনী আসলো। দমকল বাহিনী কে আসতে দেখে অনেকে কানাকানি করছে, “অকাজের দমকাল , যখন দরকার তখন নাই আর এখন আসছে কি জন্য?? ” । দমকল বাহিনীর গাড়ি ওই বাড়ির সামনে দাঁড়ালো। একজন বলল, “পানি ত নিভে গেছে, তবুও পানি দিয়ে ছাই গুল ভাল ভাবে ভিজিয়ে দিন”। তারা আবার পানির ট্যাঙ্ক নিয়ে আসে নি, তাই কিছু দূরে এক পুকুর থেকেই পানি নেয়ার চিন্তা করল। পুকুরে পানি উঠানোর মেশিন সেট করছে। সেই মেশিন সেট করতেই সময় লাগলো ৭-১০ মিনিট(যদিও ১ মিনিটেই হয়ে যাওয়ার কথা)। ভাবলাম, “আগুন থাকলে তো তোদের দিয়েও আগুন নেভানো যেত না।!”

আগুনের উৎপত্তি কিভাবে হল তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও ধারনা করা হয়েছে যে রান্নাঘরের চুলোর আগুন থেকেই আগুনের উৎপত্তি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×