somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিব্রাল্টারে হাত মোজা কেনাঃ মার্ক টোয়েন (একটি রম্য অনুবাদ পোস্ট)

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মার্ক টোয়েন
জিব্রাল্টারে হাত মোজা কেনা




দোকানের একজন খুবই সুদর্শনা মেয়ে আমাকে একজোড়া নীল রঙের হাত মোজা কিনার প্রস্তাব দিল। আমি নিল রঙের চাই না, কিন্তু সে বলল এই হাতমোজা দুটি নাকি আমার হাতে খুব মানাবে। এই কথাটি আমার খুব মনে ধরল। আমি একবার আড়চোখে আমার হাতের দিকে তাকালাম। কিভাবে যেন এক সুশ্রীই দেখাচ্ছিল। বাঁ হাতে আমি একটা মোজা পরতে চেষ্টা করলাম এবং কিঞ্চিৎ লজ্জা পেলাম। স্পষ্টই, আমার জন্য মোজাটি আকারে খুব ছোট। কিন্তু আমি ধন্য হয়ে গেলাম যখন সে বলল,
“ওহ এটা একদম ঠিকমত হয়েছে।” যদিও আমি জানি এটা একদমই ঠিক হয় নাই।

আমি মৌজাটা টেনে বের করে ফেললাম। কিন্তু এতে সুদর্শনা হতাশ হয়। সে বলে, আমি দেখতে পাচ্ছি আপনার হাতে বাচ্চাদের মৌজা অনায়াসে হয়, যদিও অনেক ভদ্রলোকের হাতে বেখাপ্পা লাগে।

আমি আশা করেছিলাম এটি ছিল তাঁর করা শেষ প্রশংসা। আমি হরিনের চামড়ার মোজা ঠিকভাবে পড়তে পারি। আমি আবারও চেষ্টা করলাম এবং বৃদ্ধাঙ্গুলীর নিচ দিয়ে হাতের তালুতে মৌজাটা ছিড়ে গেল। আমি ছেড়াটা লুকানোর চেষ্টা করলাম। মেয়েটি প্রশংসা করেই যাচ্ছে, আর আমিও প্রশংসাগুলো নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করলাম, নয়তো মরেই যাব!
“আহ! আপনি তো পরে দেখেছেন।” (হ্যা, হাতের পিছনের দিকে ছিড়েও ফেলেছি), “এগুলো আপনার জন্যই ঠিক আছে। আপনার হাত খুবই ছোট, যদি মোজাগুলো ছিড়ে যায় তাহলে এর জন্য আপনার দাম দেওয়ার কোন দরকার নেই।” (হাতের ঠিক মাঝে একটা ছেঁড়া তো আছেই!) “আমার মতে যখন একজন ভদ্রলোক বাচ্চাদের হাত মৌজা পড়ার চেষ্টা করে, তখন তাদের দীর্ঘ ধৈর্য্যে দেখে করুনা হয়।” (এরমধ্যে আমি সর্বচ্চো প্রয়াস দিয়ে “হেইয়ো, হেইয়ো” করে হাত থেকে মৌজাটা টেনে বের করার চেষ্টা করেছি, যেমনটা নাবিকরা করে থাকে। কাপড়টা কয়েক টুকরো হয়ে ছিড়ে যেতে লাগল। একটা বিষাদময় ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাকি রইলো না।)
প্রশংসায় আমি খুবই তৈলাক্ত হয়ে মেয়েটির হাতে অন্য মোজাটি ছুড়ে দিয়েছি। আমি রেগে গিয়েছি, জ্বলেছি যদিও খুব খুশিও হয়েছি।কিন্তু আমার মত অন্য ছেলেরাও এই পদ্ধতিতেই পন্য কিনতে আগ্রহী হবে, ব্যাপারটা আমার পছন্দ হচ্ছে না। আমি খুব সুন্দরভাবে এবং আনন্দের সাথে মেয়েটিকে বললাম, “এই মোজাটা খুব ভাল। খুব দারূন মানিয়েছে। আমি মানানসই মোজাই বেশী পছন্দ করি। না, কিছু মনে করবেন না ম্যাম...কিছু মনে করবেন না। আমি অন্য মোজাটি রাস্তায় গিয়ে পড়ব। এখানে খুব গরম।”

এটা খুবই উষ্ণ জায়গা। এতটা উষ্ণ জায়গায় আমি আর কখনই আসি নি! আমি বিল পরিশোধ করে ছোট্ট একটি অভিবাদন জানিয়ে বের হয়ে গেলাম, আমার মনে হল সেই মেয়েটি খুব বিদ্রুপাত্মক দৃষ্টি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর যখন আমি রাস্তা থেকে পিছনের দিকে তাকালাম দেখলাম সে আপন মনে হাসছে। আমি নিজে নিজেই বললাম, “ওহ নিশ্চিত! তুমি জানো না কিভাবে ছোট মোজা হাতে পড়তে হয়, জানো? যদি না জানো তবে নিজের স্নায়ুকে/মনকে অনেক বেশী তৈলাক্ত করে ফেলো। মনে করো তোষামুদে কোন মেয়ের কথায় তুমি তৈলাক্ত হচ্ছ। তারপর আর কোন ছোট মোজা পড়ার কোন ঝামেলায়ই থাকবে না।”

(সামান্য সংক্ষেপিত)


****৩০ নভেম্বর ১৮৩৫ সালে ফ্লোরিডার মিসৌরীতে মার্ক টোয়েনের জন্ম। তিনি আমেরিকার অন্যতম দার্শনিক এবং জগত বিখ্যাত রম্য লেখকও বটে। ‘Mark Twain Buying Gloves in Gibraltar’ ঠিক তেমনি একটি কৌতুকপূর্ণ লেখনি তাঁর।****

‘Mark Twain Buying Gloves in Gibraltar’ এর বাংলা অনবাদ করার প্রয়াস চালিয়েছি। আগে কখনো এর বাংলা অনুবাদ হয়েছে কিনা আমি জানি না। নিতান্তই শখের বশে করা। ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে। ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি।


একটি টেলিফোন কথোপকথনঃ মার্ক টোয়েন (বাংলা অনুবাদ পোষ্ট)

মজার মানুষ মার্ক টোয়েন এর প্রথম সাক্ষাৎকার !! (একটি হা হা প গে পোস্ট)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৭
৩১টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×