ড. এনামুল হক, অভিনেতা
একজন মানুষের জন্মগত অধিকার হলো তার জন্মস্থানে থাকতে পারার অধিকার। কিন্তু রোহিঙ্গারা সেটি থেকেও বঞ্চিত। এরচেয়ে বড় বঞ্চনা আর হতে পারে না। আমাদের উচিত পুরো বিশ্বকে এ ব্যাপারে সজাগ করা। যাতে রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ রকম অধিকার বঞ্চনার শিকার আমরাও হয়েছিলাম। সেই কৃতজ্ঞতাবোধের জায়গা থেকে আমরা রোহিঙ্গাদের পাশে থাকছি। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে, রোহিঙ্গাদের এই বাড়তি জনসংখ্যা আমাদের দেশের জন্য বাড়তি চাপ। এই চাপ আমরা যে নিতে পারব না সেটা বাইরের দেশগুলোকে বোঝাতে হবে।
আবুল হায়াত, অভিনেতা ও নির্মাতা
রোহিঙ্গাদের ওপর এই নিপীড়নকে হলো ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’। এমন নৃশংসতা মেনে নেয়া যায় না। বিশ্ব নেতারা চাইলে এই ঘটনা আরো শক্ত ভাবে মোকাবিলা করতে পারে, করা উচিত। এই সময়ে বাংলাদেশ যে অবস্থান নিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ।
খালেকুজ্জামান, অভিনেতা
দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনাশিকার হয়ে এখন নির্যাতনেরও শিকার হয়ে দেশ ছাড়ছে রোহিঙ্গারা। ১৯৭১ এ আমরাও ভারতে অসহায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম, ভারত আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে, কিন্তু আমাদের পুনর্বাসন করেনি। আমরাও যুদ্ধের পর দেশে ফিরে এসেছিলাম। সে জন্য ঘরহারা মানুষের কষ্ট আমরা বুঝি। আমরাও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছি, খাবার দিচ্ছি, তবে তাদের পুনর্বাসন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। কারণ আমাদের ছোট একটি দেশ নানা সমস্যায় জর্জরিত। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশেই ফিরে যেতে হবে, তাদের সমস্যা তাদেরই সমাধান করতে হবে। এ জন্য রোহিঙ্গা সরকারের প্রতি বাইরের দেশগুলোর চাপ প্রয়োগ জরুরি।
কচি খন্দকার, অভিনেতা ও নির্মাতা
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দ্বারা রোহিঙ্গা নিপীড়ন হলো রীতিমতো ‘মধ্যযুগীয় বর্বরতা’। এই নিপীড়ন এখনই বন্ধ করতে হবে। এই সময়ে এসে একটি দেশের সংখ্যালঘু জনগণের ওপর এ অন্যায় কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
রোকেয়া প্রাচী, অভিনেত্রী ও নির্মাতা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছেন। শেখ হাসিনা যখন এগিয়ে যান তার মানে পুরো দেশ এগিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষার্থে মানবিক জায়গা থেকেই ওদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
চয়নিকা চৌধুরী, নাট্য পরিচালক
এর আগে ১৯৯৪ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন না, তখনো তিনি রোহিঙ্গাদের পাশে ছুটে গিয়েছিলেন। আর আজ ক্ষমতায় থেকেও তিনি রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাদের সুখ-দুঃখে খবর নিচ্ছেন। এতে করেই বোঝা যায়, তিনি আসলে কত বড় মনের মানুষ। আমাদেরও উচিত যার যার জায়গা থেকে রোহিঙ্গাদের প্রতি সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেয়া। আর রোহিঙ্গাদের প্রতি সে দেশের সরকার ও সেনাবাহিনী যে অবিচার ও নির্যাতন করছে সেটির প্রতিবাদের জন্য বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা প্রয়োজন।
অপু বিশ্বাস, চিত্রনায়িকা
গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে আসলে রোহিঙ্গা বিষয়ক ছবিগুলো দেখলে শরীর শিউরে ওঠে। আমি রক্ত সহ্য করতে পারি না, তার ওপর এসব বীভৎস ছবিগুলো দেখে ভয়ে ফেসবুক থেকে লগআউট করি। এদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করি। আমারও একটা সন্তান আছে। বাংলাদেশে জন্ম না হয়ে যদি আমার জন্মটা রাখাইন রাজ্যেও হতে পারত। আমিও তখন এই পরিস্থিতিতে পড়তে পারতাম। না আর ভাবতে পারছি না, অনুভব করলাম চোখের কোনে গরম তপ্ত জল গড়িয়ে পড়ছে। নিজের সন্তানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম… ‘আরো বেশি শক্ত করে। মানুষ কি করে এত অমানবিক হতে পারে? কি করে নির্দয় হয়। উফ! ভাবতে পারছি না।
ইরেশ জাকের, অভিনেতা
রোহিঙ্গাদের প্রতি আরো বেশি সদয় হোন। সারা বিশ্ব দেখুক বাঙালি কতটা শান্তিপ্রিয় মানুষ, বাঙালি চাইলে সামান্য সাধ্য দিয়েই মানবতার বিজয় ঘোষণা করতে পারে।’
আজমেরী হক বাঁধন, অভিনেত্রী
জাতি হিসেবে আমরা ইমোশনাল। আর রোহিঙ্গারা শরণার্থী হয়ে আমাদের দেশে এসেছে এক সময় আমারও শরণার্থী হয়েছিলাম। আমরা শরণার্থী ছিলাম একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এরপর ফিরে এসেছি। এখন আমাদের উচিত ওদের পাশে দাঁড়ানো। আগে জীবন বাঁচানো। তবে ভয়ের জায়গা হচ্ছে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনো বক্তব্য পরিষ্কার করছে না। কেন বলছে না? এই প্রশ্নটা আন্তর্জাতিক। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে চাইব রোহিঙ্গারা এখানে মানবিক আশ্রয় পাক। তারপর নিজের দেশের মাটিতে মিয়ানমারে ফিরে যাক। তাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার পাক।
আশনা হাবিব ভাবনা, অভিনেত্রী
এই সংকট ভবিষ্যতে আমাদের দেশের জন্য যেন ক্ষতির কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখাও জরুরি। তবে সবার আগে এদের আশ্রয় দেয়াটা আমাদের মানবিক দায়িত্ব।’
রাকিব মোসাব্বির, সংগীত পরিচালক
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবচেয়ে আগে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। দেশের স্বার্বভৌমত্ব ঠিক রেখে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খোঁজা উচিত। রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভবিষ্যতে যেন দেশ সমস্যায় না পড়ে সেদিকেও নজর দেয়া উচিত। আর বিপদগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পাশে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত। যাতে তারাও আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে এ কারণে যে, তাদের দুর্দশায় আমরা এগিয়ে এসেছিলাম।
মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি, মডেল
নৃশংসতম সময়ে একটি জীবন রক্ষা করতে পারাও যেন আধ্যাত্মিক পুরস্কার। একটি জাতি হিসেবে সেই পুরস্কার প্রদানের সক্ষমতা আমাদের আছে এবং আমাদের উচিত তা প্রদান করা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৭