somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তানজীর আহমেদ সিয়াম
সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি কোন ব্লগার নই মন চায় তাই লিখি তথ্য-উপাত্ত সবার সাথে শেয়ার করি ।nজব এর পাশাপাশি এয়ার টিকেট ও ট্রাভেল ভিসার ব্যাবসা করি ।nধন্যবাদn

কুড়ানো ( পর্ব ৩৮ ) উচ্চশিক্ষায় কুমিল্লা

২১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ঢুকেই একটা আবক্ষ মুর্তি নীচে লেখা।



In loving memories of Rai Bahadur Anando Chadro Roy, who founded Comilla Victoria College, in the year 1899.

সাদা মার্বেল পাথরের মুর্তিটা একজন সুপুরুষের।
এরা ছিলো পশ্চিম দেশীয় লোক, সিংহ পদবীধারী, রাজপুতনার অধিবাসী।

রাজপুতনা থেকে কুমিল্লা

বাংলা ছিলো উপমহাদেশের সবচাইতে সমৃদ্ধ জনপদ, তাই যুগে যুগে ছুটে এসেছে দেশ বিদেশের সবাই। রাজপুতনা থেকে তিলক চন্দ্র সিংহ হোমনাবাদ(পশ্চিম গাঁও) জমিদারীর স্টেটে, ফয়জুনন্নেসার পিতা আহম্মদ আলী চৌধুরীর এখানে চাকরী নেন। নিষ্ঠা ও সততার জন্য তিনি সেই জমিদারীর তালুক লাভ করেন এববং নিজ গ্রাম গোবিন্দপুরে জমিদার বাড়ি স্থাপন করেন।

রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায়, তিলক চন্দ্র সিংহের বড় ছেলে রাম দুলাল রায়ের সন্তান। সেই সময় সিংহ পদবী ত্যাগ করে রায় পদবী ধারণ করেন। কেউ কেউ চৌধুরী পদবী ধারণ করেন। কুমিল্লা তালপুকুর পাড়ে আনন্দ চন্দ্রের বাড়ি।

চাকুরী ও ব্যবসার সুবাদে পূর্ব পুরুষের কুমিল্লায় আগমণ। ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠার পর, ব্রিটিশ সরকার আনন্দ চন্দ্র রায়কে, রায় বাহাদুর উপাধীতে ভূষিত করেন। অবিভক্ত বাংলায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ উচ্চশিক্ষার পাদপীঠ, ত্রিপুরা রাজ্যে প্রথম কলেজ।

৬১ বৎসর

সত্যেন্দ্র নাথ বসু প্রথম প্রিন্সিপ্যাল, ১৯৪৭ সাল অবধি এই পদে বহাল ছিলেন। স্কুল ও কলেজ মিলিয়ে টানা ৬১ বৎসর একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কোন শিক্ষক শিক্ষকতা করেছেন বলে আমার জানা নেই। ত্রিপুরা এবং আশে পাশের জেলার মানুষ গড়ার দক্ষ করিগর, অধ্যক্ষ সত্যেন্দ্র নাথ বসু।

'রায় বাহদুর এন্ট্রাস স্কুল' প্রতিষ্ঠাকালে সত্যেন্দ্র নাথ বসু ও ডক্টর দিনেশ চ্ন্দ্র সেন ছিলেন অন্যতম সহযোগী। সত্যেন্দ্র নাথ বসু সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, ১৮৯৯ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পর তিঁনি অধ্যক্ষের পদ আলংকৃত করেন।

১৮৮৬ সালের 'রায় এন্ট্রাস স্কুল' ১৮৮৮ তে 'ভিক্টোরিয়া স্কুল', ১৮৯৯ সালে হয়ে গেলো 'কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ'। একই সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন লাভ করে।

সূচনা ও প্রসার

১৮৯৯ সালে একটি টালির ঘরে প্রথম ক্লাশ শুরু হয়েছিল, অধ্যক্ষ ছিলেন সত্যেন্দ্র নাথ বসু। ধীরে ধীরে কলেজ বিকশিত হয়, কলেজ প্রতিষ্ঠাতার কালে নওয়াব ফয়জুন্নেসা, ব্যারিস্টার এ. রসুল, নবাব হোসসাম হায়দার সার্বিক সহযোগিতা করেন।

১৯০৪ সালে, কলেজ পরিচালনা ও উন্নয়নের স্বার্থে একটি ট্রাষ্ট ডিডের মাধ্যমে স্কুল থেকে কলেজকে আলাদা করা হয়। সেই ডিডে রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায়কে, আজীবন গভার্নিং বডির সম্পাদক রাখার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

১৯১৮ সালে ডিগ্রি কোর্স চালু হয় এবং ১৯২৪ সালে বিজ্ঞান কোর্স প্রথম চালু হয়।
১৯২৫ থেকে ১৯৪৭ সাল মানে দেশভাগের পূর্বে ভিক্টেরিয়া কলেজে, গনিত, অর্থনীতি, বাংলা, ইংরাজি, আরবী, সংস্কৃত, পলিটিকাল সায়েনস্ বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু ছিলো।
১৯৪২ সালে বিএসসি, ১৯৪৭/৪৮ সালে বানিজ্য অনুষদে আই কম, ১৯৫৫/৫৬ সালে, বি কম কোর্সের প্রচলন হয়। ঢাকার বাইরে পূর্ব বাংলায়, সেইসময় ভিক্টোরিয়া কলেজ, সেরা কলেজ। সিলেট, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম এলাকার উচ্চ শিক্ষার আদর্শ কলেজ। আবাসিক ছাত্রদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা ছিলো এবং শহরে অনেক গুলো মেসের অস্তিত্ব ছিলো।
সামর্থবানরা মেধাবী ছাত্রদের জায়গীর রেখে নিজেদের সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন। আমার পিতা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ার সময়, অশোকতলায় জায়গীর থেকেই বিএসসি পাশ করেন।

রসায়ন বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ব বাংলা ঢাকায় ১৯২১ সালে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। অত্র এলাকার শিক্ষার্থীদের প্রযোজনে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের রসায়ন বিভাগ ছিলো সমৃদ্ধ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ কতৃপক্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগটা সাজিয়ে দিয়েছিলেন। সেচ্ছায়। বর্তমানে ঢাকা হাইকোট ভবনটি ছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ।

সামরিক ছাউনি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময় দক্ষিণ পূর্ব রনাঙ্গন এই কলেজ থেকেই পরিচালিত হয়েছিলো। লর্ড ওয়ালডেড, ১৪০০ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক ছিলেন। কলেজটি তখন সামরিক ছাউনি। কলেজের ক্লাশ বন্ধ হয়নি, বিভিন্ন বিভাগ গুলো স্থানান্তরিত হয়, মুরাদ নগর, কালিয়াজুরি, চাঁদপুরে কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিলো।

চলবে....
শওকত
#যে_স্মৃতি_ধূসর_হয়নি
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:১৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×