somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা ও রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত-সালেহ আহমেদ

১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
’৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনীর এদেশীয় দোসর আলবদর-আলশামসরা তাদের পাকিস্তানী প্রভূদের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করতে এদেশের নিরীহ মানুষের উপর দানবীয় ও নৃশংস আক্রমণ পরিচালনা করে তারা যেমন বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ সবই করেছে। পাশাপাশি আমাদের মা-বোনদের ধরে নিয়ে পাকিস্তানী সেনাদের গনিমতের মাল বলে উপহার দিয়েছে। সেনা ক্যাম্পে তারা লালসা চরিতার্থই করেনি বরং এদের উপর বর্বর অত্যাচার চালিয়েছে, তাদের এই লালসা আর বর্বরতার প্রধান টার্গেট ছিলো - সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরভুক্ত হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান অধ্যুষিত পাড়া-মহল্লা এবং স্বাধীনতাকামী মানুষেরা। তারা শুধু অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ক্ষান্ত থাকেনি, তারা অনেক হিন্দু পরিবারকে ধর্মান্তরিতও করেছে। এই সময়ে লক্ষ লক্ষ পরিবার তাদের ভিটে-মাটির মায়া ত্যাগ করে পার্শ¦বর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছিলো। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাঙালী জাতি বিজয় অর্জন করেছে ঠিকই, কিন্তু যে স্বাধীনতার স্বপ্নে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে আতœত্যাগ করেছে এবং ৩০ লক্ষ শহীদ আত্মহুতি দিয়েছে সে স্বপ্ন বিগত ৪২ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। সাধারণ মানুষ আজও স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করতে পারেনি। এরই মাঝে সমাজে এক শ্রেণির শোষক ও লুণ্ঠনকারী তৈরী হয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধকে শুধু ব্যবহারই করেনি বরং ব্যবসার নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছে আর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে করেছে বিকৃত। এদের লুট-পাট, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির সুযোগ নিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা ও রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত। বিগত দিনগুলোতে এই শক্তি সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই ’৭১ এর কায়দায় দখলবাজী, হত্যা, রগকাটার রাজনীতি চালিয়ে আসছে।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার প্রতিশ্র“তিকে দেশের আপামর জনগণ তথা যুবসমাজ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে আওয়ামী লীগ ও তার জোটকে। এই সময়ে সরকার পরিচালনায় নানা ব্যর্থতার দায় যদিও ক্ষমতাসীনরা এড়াতে পারেন না তারপরও সরকারের অনেকগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপকে দেশবাসী তথা নতুন প্রজন্ম স্বাগত জানিয়েছে। পদক্ষেপগুলি হলো, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও তার হত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পুন্ন করা, শিক্ষা, কৃষি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তনে দেশবাসীকে আশাম্বিত হয়েছে। একই সময়ে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতা বিরোধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করায় দেশবাসীসহ সারা বিশ্বের জাগ্রত বিবেক ব্যাপক সমর্থন দিয়েছে।

অন্যদিকে সরকারের এ পদক্ষেপসমূহকে যারা মেনে নিতে পারেনি তারা নানান তাল বাহানা, দেশ-বিদেশে অপপ্রচার, লবিষ্ট নিয়োগ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করেই ক্ষান্ত হয়নি। এই বিচারের ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করে তা বন্ধ করার ও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ৩ জন অপরাধীর বিচারের রায় প্রদান করার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কারা যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের মূল পৃষ্ঠপোষক। তাদের রাজনীতির উদ্দেশ্য কি? বিএনপি নামক দলটি যদিও স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশীদারিত্ব দাবী করে আসছে, এ দলে যদিও অনেক পুরোনো রাজনীতিক অবস্থান করছেন কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই দলটির প্রতিষ্ঠার ইতিহাস রাজাকার- আলবদর-আলশামসদের পূণর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হয়েছে, তা আজ নতুন করে প্রমাণ করার দরকার পড়ে না। আজকে বিএনপি নেত্রী যখন স্বাধীনতা বিরোধীদের রক্ষার জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন করে, তখন বলতে হয় চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে তিনি কি পাকিস্তানি শাসকদের ভূমিকাকে যুক্তিসংগত প্রমাণ করে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্র না?

তাই দেশবাসী বিএনপি নেত্রীর কাছে আশা করে, আর কোন সম্পদ যেন নষ্ট না হয়। আর কোন থানা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আর কোন রক্তক্ষরণ নয়, সে জন্য তিনি সচেষ্ট হবেন। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরের প্রীতি ভুলে দেশের প্রকৃত ইতিহাস চর্চা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নবজাগরণের নব কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সংসদ কার্যকর হবে - সংসদ হোক জাতির প্রত্যাশার চাবিকাঠি।

সালেহ আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।
অনুলিখন: কে, এম, রফিকুল কাদের
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×