স্বাধীন বাংলাদেশকে বাংলাস্তান বানানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান
জামায়েতে ইসলাম ও ইসলামি ছাত্র শিবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া আরম্ভ হওয়ার পর থেকেই দেশব্যাপী সহিংস কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করে। মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে গৃহযুদ্ধ শুরু করার হুমকিও দেয় তারা। ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বিএনপি তাদের সাথে সুর মিলিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে নানা ছল-চাতুরী ও প্রতিবন্ধকতা তৈরী, সহিংস সাম্প্রদায়িকতা, হত্যা, সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর ও উপাসনালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মত জঘন্য তাণ্ডব চালায়। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক সমাজ আজ উৎকণ্ঠিত। সংখ্যালঘু ভোটার সংখ্যা কমিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যেই যে এই একতরফা সহিংসতা একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে শংকিত হবার বিষয় এই যে, এই প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যেই কার্যতঃ বিএনপি - জামায়েতে ইসলামের ‘বি টিম’ হিসাবে রূপান্তরিত হয়ে গেছে।
দেশের গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী মানুষ বিশেষতঃ তরুণ সমাজ পূর্বোক্ত অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সাথে অবস্থান নিয়েছেন শুরু থেকেই। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ সেই প্রয়াসেরই অভিব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উর্দ্ধে তুলে ধরে দলীয় রাজনীতির গণ্ডীর বাইরে সমস্ত দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে দুই মাসের অধিক সময় ধরে প্রয়াস চালিয়ে আসছে এই তরুণরা। তাদের এই প্রয়াস সর্বস্তরের দেশবাসীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলোড়ন সৃষ্টিতেও সক্ষম হয়েছে। এই অবস্থায় অন্যকোন উপায়ে তারুণ্যের এই অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে না পেরে জামায়াত - বিএনপি জোট ধর্মদ্রোহীতা তথা ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগ এনে শাহবাগ চত্বরের গণজমায়েত মঞ্চের বিরুদ্ধে নাস্তিকতাবাদের অপবাদ উত্থাপন করে দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা শুরু করে জোরে-সোরে। এভাবে তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যহত করার লক্ষ্যে দেশে অগণতান্ত্রিক শাসন অনিবার্য করে তোলার উদ্দেশ্যে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।
এই প্রয়াসেরই নতুন সংযোজন হেফাজতে ইসলাম। হেফাজতে ইসলাম দাবি করে তাঁদের কোন রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। তাঁরা আরও বলে যে তাঁদের দেয়া ১৩ দফা দাবি রাজনীতি বর্জিত। অথচ এই দাবি সমূহ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ হবে একটি তালেবানী রাষ্ট্র। তাদের এই ১৩ দফা দাবি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী এবং প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
হেফাজতে ইসলাম সরকার কর্তৃক গৃহীত শিক্ষানীতি এবং নারী উন্নয়ন নীতি বাতিলের দাবি করেছে তাদের ১৩ দফায়। অথচ বর্তমান সরকারের গৃহীত শিক্ষানীতি এবং নারী উন্নয়ন নীতি সমাজ প্রগতির ধারাকে অগ্রসর করার লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ। এই দুই নীতি যারা বাতিল করতে বলে তারা বাস্তবে বাংলাদেশকে আধুনিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি পশ্চাৎপদ দেশে পরিণত করতে চায়।
তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় যে চেতনা দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল তার মূল কথা ছিল ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় যে ধর্মীয় রাষ্ট্রের দাবি উত্থাপন করেছেন তা দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বসবাস কঠিন করে তুলবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে জটিলতার সৃষ্টি করবে। যার প্রতিফলন আমরা বিদেশী পত্রিকা এবং টিভি কভারেজের ধরনে দেখতে পাচ্ছি। এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় দেশের ৩৫ লক্ষ নারী শ্রমিক যে অবদান রেখে চলেছেন, এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠির দাবির মুখে সেটাও বিরাটভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই হেফাজতের মহাসমাবেশ চলাকালীন সময়ে নারী সাংবাদিকদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে এবং সমাবেশ শেষে শাহবাগ চত্বরে হামলার চেষ্টা করে তাঁরা নিজেদের অসহিষ্ণু ও আগ্রাসী চরিত্র সবার সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তারপরও একমাসের সময় দিয়ে ঢাকা অবরোধের হুমকি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছে - তিনি বাধ্য হবেন ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করতে।
হেফাজতে ইসলামের সকল কর্মকাণ্ড বস্তুতঃ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্য জামাত-শিবির এবং বিএনপি যে চেষ্টা চালিয়ে আসছে তারই সহায়তা করবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যারা মানবতাবিরোধী কার্যক্রমে অভিযুক্ত তাদের বিচার প্রক্রিয়াকে নিরবচ্ছিন্নভাবে অগ্রসর করে তা শেষ করার দাবিতে আজ অটল থাকতে হবে সবাইকে। এখানে কোন ইস্তঃস্তততার অবকাশ নেই। তাই-
(ক) সর্বস্তরে, বিশেষতঃ তৃণমূল পর্যায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি বিশ্বস্তদের ঐক্যকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর গড়ে তুলার বিকল্প নেই;
(খ) স্বাধীন বাংলার মাটিতে আল-বদর, রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষক ও তাদের নব্য অনুসারীদের কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
স্বাধীন বাংলাদেশকে বাংলাস্থান বানাবার প্রক্রিয়া এদেশের মাটিতে সফল হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিনষ্ট হবে।
পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম
ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন
ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট
আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন
ল অব অ্যাট্রাকশন
জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
চরফ্যাশন
নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।
প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন