somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প, উপন্যাস এবং উপন্যাসিকা……কি??

০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকে বই পড়ুয়াদের অনেকগুলো গ্রুপ আছে। সেখানে বই পড়ুয়াদের সংখ্যাও কম না। বাংলা, ইংরেজী, অনুবাদ সহ বিভিন্ন গল্প/উপন্যাসের বই তারা পড়ে থাকেন। এবং কে কখন কোন বই পড়া শুরু করেছে এবং করবে অথবা অলরেডি পড়া শেষ করে ফেলেছেন এসব তথ্য গ্রুপে পোষ্ট করে অন্যদের জানিয়ে দিতেও তারা খুব পছন্দ করেন। যাইহোক, এসব লেখার কারনটা এবার পরিস্কার করি। আমি কয়দিন আগে একটা গ্রুপে ‘গল্প উপন্যাস এবং উপন্যাসিকা’র মাঝে পার্থক্য কি এটা জানতে চেয়ে পোষ্ট করেছিলাম। পার্থক্য বলতে তেমন আহামরি কিছুনা। গল্প, উপন্যাস এবং উপন্যাসিকা কি? এটাই তাদের নিজের ভাষায় নিজের মত করে বলতে বলেছিলাম। ভেবেছিলাম যারা সারাদিন এত এত বই পড়ে। তারা নিশ্চয় সুন্দর সুন্দর কিছু কথা বলবে। কিন্তু তারা যে আমাকে এভাবে হতাশ করবে আমি ভাবতে পারিনি। শুধু একজন আমার পোষ্টে একটা লিংক (উপন্যাসিকা সম্পর্কিত) শেয়ার করেছিল (উনার নামটা ভুলে গেছি)। এছাড়া আর কেউই কিছু লিখল না। তারমানে ঐ গ্রুপে বোধহয় কোন বৈষম্য কাজ করে। যেমন- অমুক বা তমুক কিছু পোষ্ট করলেই লাইক/কমেন্ট করব। এছাড়া অন্যকেউ পোষ্ট করে করলে Avoid করে যাবে এমন একটা বৈষম্য। অথবা এটাও হতে পারে। তারাও আমার মত গল্প, উপন্যাস এবং উপন্যাসিকা কি সেটা জানেই না। অথচ কয়েক হাজার গল্প উপন্যাসে বই পড়ে ফেলেছে.।


যাইহোক, আমার গোবর ভর্তি মাথায় যতটুকু ঢোকেছে এবং জেনেছি বা বুঝেছি ততটুকু নিয়েই আজ লিখতে বসলাম। একদম নিজের মত করে। তাছাড়া গল্প/উপন্যাসের বই পড়ব। অথচ গল্প-উপন্যাস কি সেটাই জানব না। এটা কোন কথা হতে পারে?? একদমই না। অন্তত একটু ধারনাতো থাকা উচিত……


প্রথমেই পার্থক্যটা দেখুন এভাবে –

দাদা/দাদী > বাবা/মা > ছেলে/মেয়ে

উপন্যাস > উপন্যাসিকা > গল্প


গল্পঃ সাধারনত গল্প হয় দু ধরনের হয়।

১) ছোট গল্প। ২) বড় গল্প।


ছোট গল্পের দৈর্ঘ্য ছোট হয়। এর বর্ননাও হয় সংক্ষিপ্ত। সাধারনত ছোট গল্পে একটা বা দুইটা (নায়ক/নায়িকা) প্রধান চরিত্র থাকে। এবং এদের নিয়েই গল্পটা ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। তবে মাঝে মাঝে অন্য দু-একটা চরিত্র গল্পের প্রয়োজনে চলে আসলেও, সেই চরিত্রগুলোর আলাদা কোন বৈশিষ্ট থাকেনা। তাদের আলাদা কোন গল্পও থাকেনা।


এখন ছোট গল্পের সংজ্ঞাটা এভাবে দেয়া যেতে পারে – কোন ঘটনা সহজ সুন্দরভাবে গুছিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে সংক্ষিপ্ত চরিত্র নিয়ে উপস্থাপন করাটাই হল ছোটগল্প।

সংক্ষিপ্ত আকারে মানে যেটা দশ/পনের মিনিটের মধ্যে পড়ে শেষ করা যায় যেটাই ছোট গল্প। তবে এই ব্যাপারেও অনেকের ভিন্ন মত আছে। পনের-বিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট পর্যন্ত পড়ার সময়কালকেও কেউ কেউ ছোটগল্প বলে থাকেন। তবে এরচেয়ে বেশি সময় লাগলে সেটি আর ছোটগল্প থাকে না। হয়ে যায় বড় গল্প অথবা উপন্যাস। ছোটগল্প ও উপন্যাস সম্পর্কে ইংরেজি সাহিত্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে- উপন্যাস হলো ছোটগল্পের বর্ধিত সংস্করণ আর ছোটগল্প উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত রূপ।


উপন্যাসিকাঃ উপন্যাসিকা বা ‘Novella’। এটা ছোট গল্পের চেয়ে একটু বেশী বড়। আবার উপন্যাসের চেয়ে একটু ছোট। সাধারনত নভেলাকে এর দৈর্ঘ্য দিয়েই সংজ্ঞায়িত করা হয়। এবং ২০ থেকে ৪০ হাজার শব্দের গল্পগুলোকেই নভেলা বলা হয়। যদিও প্রকাশকরা পৃষ্টা সংখ্যা দিয়ে নভেলাকে বিচার করে থাকেন। তাদের মতে ৬০ থেকে ১২০ পৃষ্টার গল্পগুলো হল নভেলা। উপন্যাসের তুলনায় নভেলায় প্রধান চরিত্রের সংখ্যা খুব কম হয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই একজন। বড়জোর দু’জন। সাধারনত এই একটা বা দুইটা চরিত্রের উপর ভিত্তি করেই নভেলা এগিয়ে যায়। তবে একজন সৃজনশীল লেখক এর সংজ্ঞা যেকোন সময় বদলে দিতে পারে।

*** উপন্যাসিকার তথ্যগুলো ফেসবুকে ‘Mohammad Nazim Uddin’ ভাইয়ার একটা পোষ্ট পড়ে জেনেছিলাম। উনার লেখাটা এখন খুঁজে না পাওয়ায় লিংকটা শেয়ার করতে পারছিনা। যাইহোক, উনাকে অনেক ধন্যবাদ।


উপন্যাসঃ এটা হল গল্পের দাদা/দাদী। বাকিটা আমি নিজে বলার চেয়ে wikipedia থেকে তুলে দিচ্চি। দেখুন…।। (ইং:Novel) গদ্যে লেখা দীর্ঘাবয়ব বর্ণনাত্মক কথাসাহিত্য। কবিতা, নাটক ও ছোটগল্পের ন্যায় উপন্যাস সাহিত্যের একটি বিশেষ শাখা। আধুনিক সাহিত্যে এটি তুলনামূলকভাবে নতুন আঙ্গিক। যিনি উপন্যাস রচনা করেন তিনি ঔপন্যাসিক। উপন্যাস লেখার নির্দিষ্ট নিয়ম বা কাঠামো নেই। তবে সচরাচর এগুলো ছোটগল্পের তুলনায় বৃহদাকার হয়ে থাকে। অধিকন্তু উপন্যাসের আখ্যানভাগ ও চরিত্রের বিস্তার লক্ষিত হয়। হ্রস্ব দৈর্ঘ্যের উপন্যাসকে অনু-উপন্যাস বা ইংরেজীতে নভেলা (ইং:Novella) বলা হয়ে থাকে।উপন্যাসে পরিবেশ (milieu) বর্ণনা, প্লট, চরিত্র, সংলাপ ইত্যাদি যখন মানুষের জীবনের কাহিনীকে সুন্দর ও স্বার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলে তার মধ্যে জীবনের কোনো অর্থ বা ভাষ্য প্রকাশ করা হয়। জীবনের এই রূপায়ণ উপন্যাসের মাধ্যমে পাঠকের কাছে বাস্তব বলে প্রতীয়মান হয়। নাটক, রাজাবলি (chronicle), কাব্য ইত্যাদি থেকে উপাদান গ্রহণ করে উপন্যাস রচনারও প্রথা রয়েছে। বস্তুত: উপন্যাসের রূপ অত্যন্ত নমনীয় ও মিশ্র। তাই এর নানা রূপভেদ চোখে পড়ে। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার মধ্যে উপন্যাস সর্বাধুনিক এবং সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় শাখা। অষ্টাদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে প্রথম আধুনিক উপন্যাস রচিত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিভাগে বাংলা ভাষায় প্রথম উপন্যাসের প্রবর্তন হয়। ইংরেজি ভাষায় ড্যানিয়েল ডিফো ও বাংলায ভাষায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়উপন্যাস ধারার প্রথম সার্থক রূপকার। তারপর থেকেই বিভিন্ন দেশে এই ধারার বিচিত্র ও বহুমুখী বিস্তার লক্ষ্য করা যায়।


আরো কিছু জানতে এখানে দেখতে পারেন – Click This Link


আমি কতটুকু বুঝেছি এবং আপনাদের কতটুকু বুঝাতে পেরেছি কে জানে।।
যাইহোক, আমার কোথাও কোন ভুল হলে শুধরে দিতে পারেন এমন কেউ এগিয়ে আসবেন আশা করছি…আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকু।।


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×