somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেফাজতের আইপিএস বিস্ফোরন ও আমার দেখা অভিজ্ঞতা।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখানবাজারে হেফাজত নেতার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদরাসায় বিস্ফোরণের খবর এখন টক অফ দ্যা টাউন।
এখানে আইপিএস নাকি ইউপিএস নাকি বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরন কোনটা সত্যি তা এখনো রহস্য আবৃত।

এই ব্যপারে আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি।
তখন আমি নতুন চাকরী করি। ঢাকা শহরের নামকরা একটা আইএসপি তে।
সেখানে ডাটা সেন্টারের পাওয়ার ব্যকাপের জন্য কোন জেনারেটর সিষ্টেম ছিল না। তাই তারা IPS দিয়ে ৪ঘটনার বেকআপ এর একটা বাংলা সিষ্টেম তৌরি করেছিলেন।
সিষ্টেমটা ছিল এই রকম। প্রথমে বৈদ্যতিক লাইন থেকে একটা IPS এ কানেশন, তার পর সেখান থেকে UPS ও তারপর সেখান থেকে কম্পিউটার ও ডাটা সেন্টারের অন্যান্য রাউটার, সুইচ, বা কম্পিউটারে সংযোগ ছিল। অনেকটা নিচের চিত্রর মত।



যাতে করে মেইন লাইনের বিদ্যুত চলে গেলে সাথে সাথে UPS বিদ্যুতে ডাটা সেন্টার চলবে। আর ২/৩ সেকেন্ডের ভেতরে সেই UPS পাওয়ার চলে আসবে আইপিএস থেকে। তাতে করে ডাটা সেন্টারের কোন যন্ত্র বন্ধ হবার চান্স নেই।

আইপিএস গুলো ডাটা সেন্টারের ভেতরেই রাখা ছিল। যার প্রতিটা আইপিএসের সাথে থাকত দুটি বিশাল সাইজ ২৪ ভোল্টের ট্রাকের ব্যাটারি।

সেই কোম্পানীতে মোট ৮/৯ টা এই রকম ঢাউস সাইজ আইপিএস ছিল। আইপিএস গুলো কেনা হয়েছিল এডমিন ম্যানেজারের তত্বাবধানে। উনি তার পরিচিত একজনের কাছ থেকে সেগুলো কিনেছিলেন। আমরা আদারব্যপারী এত কিছুই জানতাম না কোথা থেকে কে এই আইপিএস গুলো কেনা হয়েছিল।

যাইহোক... একদিন সকাল থেকেই দেখা গেলো এই আইপিএস গুলো মাঝে একটা থেকে ভো ভো একটা শব্দ বের হচ্ছে... মনে হচ্ছে ভেতরে কিছু একটা কাপছে.... এটা সাধারনত হয়ে থাকে ভেতরের ষ্টেপ আপ ট্রান্সফার্মারের কয়েলের কম্পন থেকে। প্রথমে সবাই একটু আতংঙ্কিত হলেও পরে বুঝতে পারল সেটা কোন ভয়ের বিষয় না....

কিন্তু সেইদিন বিকেলেই ঘটল দূর্ঘটনা। হটাৎ করে দেখা গেলো একটা আইপিএসের ভেতর থেকে ধোয়া বের হচ্ছে... ধোয়া দেখে সবাই হইচই শুরু করল... এর মাঝে দেখা গেলো সেই ধোয়া থেকে আগুন বের হচ্ছে....ডাটা সেন্টার তখন ধোয়ায় আচ্ছন্ন...... তখন আমরা ৪/৫জন সেখানে উপস্থিত ছিলাম।
এর মাঝে একজন দৌড়ে গিয়ে ফায়ার এ্ক্সটিংগুশাইয়ার এনে আগুন নেভালো....
সাথে সাথে কোম্পানীর সিও কে জানানো হল যে, ডাটা সেন্টারে আগুন লেগেছিল ও পরবর্তীতে সেটা নেবানো হয়েছে, সিইও তখন কোম্পানীতে ছিলেন না...

যাই হোক আইপিএস গুলোর ১বছরের ওয়ারেন্টী থাকার কারনে সেটা পরদিন সেই কোম্পানীতে ফেরৎ পাঠানো হল আর তাদের কিছু ভাল মন্দ কথাও শুনিয়ে দেয়া হল... এই রকম বাজে মাল তৌরির জন্য।

তার ২দিন পরে ঘটল আসল ঘটনা.... আমাদের এ্যডমিন ম্যানেজার অত্যন্ত রাগের সাথে রুমে প্রবেশ করে সবাইকে বলতে লাগল..."আপনারা এত্ত বড় নাটক না করলেই পারতেন............ কোথায় আগুন লেগেছিল? কোন আগুনই জ্বলে নাই..... আপনার মিথ্যা বলে শুধু শুধু আইপিএস গুলো ফেরতৎ পাঠালেন... ইত্যাদি ইত্যাদি....এগুলো অনেক ভাল মানের আইপিএস...
আমরা সবাই তো আক্কেল গুড়ুম... বলে কি? নিজের হাতে সবাই আগুন নিভাল... আর সে বলে কিনা আগুনই জ্বলে নাই?...... :(

প্রতিবাদের চেষ্টা করা হল... তার হম্বি তম্বিতে সবই দেখি চুপসে গেলো.....
আমি তখন কোম্পানীতে নতুন.... আমি কিছুই বলার সুযোগ পেলাম না.....
আমি শুধু বললাম আমরা সবাই ভূল দেখেছি.....:((

তখন এডমিন ম্যানেজার বলল... আইপিএস কোম্পানীতে উনি গিয়েছিলেন... তারা মেশিন খুলে দেখিয়েছে যে.. সেটার ভেতরে কোন কিছুই পুড়ে যায় নাই.... সব ঠিক আছে.... এই কোম্পানী অনেক ভাল মানের একটা কোম্পানী...ইত্যাদি ইত্যাদি....
আমরা সবাই আক্কেল গুড়ুম.... এটা কি করে সম্ভব?....

তার কয়েকদিন পরে জানতে পারলাম যে, এই এডমিন ম্যানেজার নাকি নিজেই সেই কোম্পানী থেকে এই আইপিএস গুলো কিনে এনেছিলেন....
যা কিনা তৎকালীন বাজার দর থেকে প্রতিটা ৫/৭ হাজার টাকা বেশী ছিল....:P :P

তখন বুঝলাম কেন আইপিএস আমাদের অফিসে পুড়ার পরেও সেটা না পোড়ার কারন..... ;)
এবং এডমিন ম্যানেজার কেন এত তৎপর এটা প্রমানে যে, আই্পিএস টি পুড়ে যায় নি.....

হেফাজতের মাদ্রাসায় ও আইপিএস পুড়ে যাবার পর সেখান থেকে তখন কিছু না পাওয়া গেলেও ৬/৭ ঘন্টা পর কি করে গ্রেনেড আর বিষ্ফোরন পাওয়া গেলো সেটাও সময়ই বলে দিবে....
অপেক্ষায় থাকে হবে ২৪ অক্টোরব পর্যন্ত... যতদিন না এই এডমিনরা ক্ষমতা থেকে না নেমে যায়...... তার পর জানা যাবে এই আইপিএসের পেছনের কি রহস্য...... :D:D:D
১৫টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×