somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিঝুম

২৮ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




৩য় পর্ব,


"সালাম স্যার, স্যার আমি রনি.."
"ওহ হ্যা, কি কোনো খবর আছে?" আহসান জিজ্ঞেস করলো।
"জ্বি স্যার, আমি অপেক্ষা করতেছি স্যার।"
মোবাইল পকেটে রেখে আহসান বললো, "ফাইয়াজ, নাসির, চল খবর নিয়ে আসি! গাড়ি রেডি?"
নাসির নিচে নিচে নামতে নেওয়াজ রহমানকে কল করে বলল গাড়ি গেটে আনতে।
নেওয়াজ রহমান আজ খুব খুশি! সে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না আবারও সে দুই হাতে স্টেয়ারিং ধরবে।
"স্যার কোথায় যাবেন?"
"আলাউদ্দিনের বাসা থেকে একটু সামনে। এক্সেলারেশনে ফুল পাওয়ার দেন নেওয়াজ, আর্জেন্ট!"
আহসানের কথায় নেওয়াজ টানের উপর গাড়ি চালানো শুরু করলো। হঠাৎ আহসানকে বলল, "স্যার একটা ছোট্ট উপকার করতে পারবেন?"
"আপাতত গাড়ি চালান নেওয়াজ চাচা, যত যা বলার ঘুরে আসি, তারপর বলবেন।" আহসান বলল।

রনির চায়ের দোকানের একটু আগে গাড়ি থামিয়ে তারা তিনজন নেমে পরল। ফাইয়াজ বলল, "নেওয়াজ চাচা, গাড়িটা ওই চায়ের দোকানের সামনে নিয়ে আসবেন যখনই আমরা সিগন্যাল দিব, ওকে?"
"জ্বী স্যার।"
"ঠিক আছে, আমরা তিনজন এখন তিনদিকে ভাগ হয়ে যাবো। সবার কানেকশন ঠিক আছে? গিয়ার কাজ করছে?" আহসান জিজ্ঞেস করলো।
ফাইয়াজ এবং নাসির বলল, "ইয়েস স্যার।"
"গুড, পজিশনে চলে যাও তোমরা।"
আহসান রনির দোকানের ঠিক সামনে দিয়ে স্বাভাবিকভাবে হেটে আসতে লাগলো। নাসির জানিয়ে দিল সে তার পজিশন নিয়ে নিয়েছে! একটুপর ফাইয়াজ জানালো সেও তার অবস্থানে আছে। গুটি গুটি পায়ে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই হেটে অগ্রসর হচ্ছে তারা। গাড়িতে বসা নেওয়াজ অপেক্ষা করছে আহসানের কমান্ডের! ঠিক অল্প সময়ের মধ্যেই আহসান বলল, "নেওয়াজ, ফুল পাওয়ার এবং হার্ড ব্রেক, ঠিক ওই চায়ের দোকানের সামনে। আমরা ঠিক ১৫সেকেন্ডের মধ্যে একে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করবো। স্টার্ট!"
"জ্বি স্যার!"
রনি আহসানকে ইশারায় দেখিয়ে দিল সাসপেক্ট।
"ওকে নীল শার্ট, সিগারেট টানছে। ওটাই আমাদের টার্গেট।"
"কপি।"
একটু একটু করে হাটার গতি বারিয়ে দিল তারা! নেওয়াজের দক্ষ ড্রাইভিং একদম চায়ের দোকানের সামনে গাড়ি কশে ব্রেক করে থেমে গেল! ফাইয়াজ এসে সাসপেক্টের ঘাড়ে বাম হাত এবং ডান হাত দিয়ে সাসপেক্টের বাহু শিকারি প্রাণীর মত শক্ত করে ধরে টেনে গাড়ির দিকে ঘুরিয়ে দিল! নাসির এসে দরজা খুলে দিলে ফাইয়াজ তাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে ঢুকিয়ে দেয়! কোনভাবে যেন বের হতে না পারে সেজন্য আহসান অপরপাশ থেকে গাড়িতে বসে গেল! নেওয়াজ রহমান আবারও এক্সেলারেশনের পারা দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি দৌড়ানো শুরু করলেন! সবকিছুই যেন চোখের পলকে ঘটে গেল! চা স্টলে দারিয়ে রনি হা করে শুধু দেখে গেল! কিছু বুঝে উঠার আগেই সবকিছু হয়ে গেল! আশেপাশের মানুষ ভাবতে লাগলো কি হল এখানে? কিডন্যাপ?
"নেওয়াজ রহমান, কেমন লাগলো আপনার প্রথম মিশন?" নাসিরের কথায় নেওয়াজ চাচা কি বলবেউ বুঝতেই পারছিল না! শুধু বলল, "স্যার এটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না! সত্যিই এমন হয় স্যার? মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই কাজ শেষ!"
ফাইয়াজ হেসে বললো, "এতে মাত্র শুরু! সামনে আরও কত কি দেখবেন..."
আহসান চশমা পরে মনে মনে বলল, "ডিবি এভাবেই কাজ করে। বাঘের থাবায় শিকার কখনও মিস যায় না! আর যদি মিস হয়েও যায় তবে সেখান থেকে মাংসপিণ্ড উঠে আসে! আহত শিকার বেশিদূর যেতে পারে না। ধরা পরতেই হয়!"
আহসান বললো, "নেওয়াজ আপনার ড্রাইভিং এর তুলনা নাই! ইম্প্রেসড!"


"নাম কি তোর?" আহসান জিজ্ঞেস করল।
"রুস্তম।"
টেবিলে আহসান তার রিভলভারটা রুস্তমের সামনে রেখে বলল, "Desert Eagle, 50cal. জীবনে দেখা হইছে বলে মনে হয় না?"
রুস্তম ভয়ে কাপতে কাপতে বলল, "না, না স্যার!" "এর এক ফায়ারের সাউন্ডে আশেপাশের কাকপক্ষীও থাকতে পারে না এবং এটার এক বুলেট তোর মাথার অর্ধেকটা উড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট! তাই, যা যা জিজ্ঞেস করব তার সোজা সোজা উত্তর দিবি।"
আহসানের গম্ভীর স্বরে রুস্তম ভয়ে সকল প্রশ্নের সহজ উত্তর দেয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল! দুরে দারিয়ে ফাইয়াজ আর নাসির খুব কষ্টে দাত চেপে নিজেদের হাসি নিয়ন্ত্রণের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে! নাসির দেখছে কিভাবে অপরাধীকে ইন্টারোগেট করতে হয়।
"সিসি ক্যামেরাগুলো কেন নষ্ট করছিলি?"
"স্যার, আমার মোবাইলে কল আসে একজন ব্যক্তির! সেই আমারে এই কাজ দেয়, আর সাথে ১৫হাজার টাকা পুরষ্কার দিবে বলছে!"
- তো সে কি টাকা দিছে তোকে?
- জ্বি স্যার, আমাকে একটা ঠিকানা দিছিলো, ওইখানে গিয়া প্যাকেটে পাইছি। ফোনে কথা বইলা পথ দেখাইয়া দিছে।
আহসান জিজ্ঞেস করলো, "ক্যামেরার এই কাজে তুই একা তো ছিলি না? আরও কয়েকজন থাকার কথা?"
রুস্তম চুপ হয়ে গেল! আহসান টেবিল জোরে বারি দিয়ে বলল, "বল কে কে ছিলি? না হলে তোর শরীরের প্রত্যেকটা অংশ আধা আধা করে গুলি করে অকেজো করে দিব!"
এবার ভয়ে রুস্তম কেঁদেই ফেলল! দুরে দারিয়ে ফাইয়াজ আর নাসির মনে মনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে!
"স্যার, আরও দুইজন আছে স্যার!"
আহসান তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, "এই তো লক্ষি ছেলে, বলে ফেল কে ছিল তোর সাথে?"
"গৌরব আর সুমন!"
"আচ্ছা, ভেরি গুড! তাহলে এবার নিজের জন্য একটা কর। যদি তুই এদের আমার কাছে এনে দিতে পারিস তাহলে তোর জন্য পুরষ্কার আছে!"
রুস্তম বলল, "স্যার আমার পুরষ্কার লাগবে না!"
আহসান হেসে বলল, "ওহ আচ্ছা! ফ্রি করবি? তাহলে তো আরও ভাল!"
রুস্তম বলল, "আমারে খাবার দেন! আমার খাওয়ার জন্য না, আমার বাচ্চার জন্য!"
আহসান একদম নিশ্চুপ হয়ে গেল রুস্তমের কথা শুনে! ফাইয়াজ এবং নাসিরের ও একই অবস্থা!
আহসান বললো, "তুমি বিবাহিত?"
"জ্বি স্যার! আজ বাসা থেকে বাইর হওয়ার সময় চিন্তা করছি কম কামাই করুম তাও খারাপ কাজ করুম না!" একটু থেমে আবারও বলল, "আমরা সবাই অভাবে থাকি স্যার, টাকাই সব আমাদের। যেখানে টাকা আছে সেখানে আমার মত আমরা আছি!"
আহসান চেয়ার টেনে বসলো। রিভলভারটা হাতে নিয়ে বললো, "তাহলে আমার জ্যাক হয়ে যাও! হালাল খেতে পারবে! যদি মঞ্জুর থাকো তাহলে.....! তোমার ইচ্ছা!"
রুস্তম ভেবে বলল, "ঠিক আছে স্যার, আমি রাজি!" আহসান বলল, "তাহলে আজ যা কাজ দিলাম এটা করে আসো। কালকের মধ্যে আমার বাকি দুইজনকে চাই!"
রুস্তমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিল আহসান। নাসিরকে ডেকে বলল, "লোক লাগাও এর পিছে, জানা দরকার কাজ করে নাকি!"
"ইয়েস স্যার!"

"নাসির, নেওয়াজকে নিয়ে ইমিডিয়েটলি ওই ফ্যাক্টরিতে যাও। রনির কল এসেছিল, ম্যানেজার উপস্থিত, সবকিছু নিয়ে এসো।" শক্ত কমান্ড করে দিল আহসান।
ফাইয়াজকে বলল, "ফাইয়াজ, চল আমার সাথে। গৌরব আর সুমনের কাপড় ফাপড়ে ছেড়ার পালা।"


"নাম কি তোদের?" ফাইয়াজ জিজ্ঞেস করল।
"আমার নাম সুমন সরকার" সুমন বললো।
- আর তোর?
"গৌরব সরকার"
ফাইয়াজ জিজ্ঞেস করলো, "তোরা দুইজন কি ভাই ভাই? চেহারায় তো তাই বলে!"
গৌরব বললো, "জ্বি স্যার।"
ফাইয়াজ বলল, "তারমানে একজনকে ঝেরে দিলে আরেকজন তো আছেই! কোনো সমস্যা হবে না।"
সুমন ভয় পেয়ে বলল, "মানে স্যার? বুঝতে পারি নাই!"
ফাইয়াজ জানালো, "মানে তোদের যা যা জিজ্ঞেস করবো এর উত্তর যে মিথ্যা বা ভুল দিবে তাকে উড়িয়ে দিব! আর যদি দুইজনই মিথ্যা বলিস তাহলে দুইজনকে উড়িয়ে দিব!"
ফাইয়াজ দেখলো তাদের কপাল ঘাম ঝরা শুরু হয়ে গেছে! নাসিরকে বললো, "এই নাসির! এসির পাওয়ারটা আপ কর তো! ঠাণ্ডায় বিদায় নিতে বেশি সুবিধা হবে।"
ফাইয়াজ চেয়ার টেনে বসল। রিভলভারটা বের করে টেবিলে রেখে বলল,
"রুস্তমকে চিনিস তোরা?"
তারা একে অন্যের দিকে তাকালো! তাদের চাহনি দেখে ফাইয়াজ বলল, "বাহ! চিনিস তাহলে! গতকাল ওই রিভলভারের ট্রিগার ওর সামনেই চালিয়েছিলাম। কানের পাশ বুলেট চলে গেছে! ওর কোনো ক্ষতি হয় নি শুধু ডান কানে কিছুই শুনতে পারে না! তো আমি চাই না একই কাজ তোদের সাথেও করি?"
ফাইয়াজের ধমকিতে সুমন কেঁদে দিল। কিছুক্ষণ পর গৌরবও কেঁদে ফেলল। ফাইয়াজ তাদের জিজ্ঞেস করলো, "কিছু খাওয়া দাওয়া হয়েছে সকাল থেকে?"
উভয়ই উত্তর দিল, "না স্যার।"
"নাসির, কাউকে দিয়ে দুই প্যাকেজ গরম গরম বিরিয়ানি নিয়ে আসো।" এটা বলেই ফাইয়াজ আবার তাদের দিকে তাকালো।
"খাবার আসতেছে, তোমাদের বাসায় যারা আছে তাদের জন্যেও। তো যা যা প্রশ্ন করবো সঠিক উত্তর চাই। ওকে?"
তারা উত্তর দিতে রাজি হল।
"এই কাজ কে করতে বলেছে তোমাদের? নাম কি?"
সুমন বলল, "স্যার ফোন কলের মাধ্যমে স্যার। প্রথমে অর্ধেক টাকা বাসার দরজায় একটা ব্যাগে ঝুলিয়ে দিছে বাকিটা কাজের পরে।"
গৌরব বলল, "আমাদের তারা নাম, ঠিকানা কিছুই বলে নি।"
গৌরবকে থামিয়ে দিয়ে বলল, "এক মিনিট এক মিনিট! তারা মানে? কয়জন?"
সুমন বলল, "স্যার, কয়জন এটা তো সঠিক জানি না তবে আমাদের সন্দেহ হচ্ছিল দেখে কল রেকর্ড করে রাখছিলাম!"
ফাইয়াজ বিস্ময় চেহারা নিয়ে জিজ্ঞেস করল, "রেকর্ডিং আছে ফোনে?" "জ্বি স্যার!"


"Excuse me please!"
"আসসালামু ওয়ালাইকুম স্যার, শুভ সকাল, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?"
আহসান তার ব্যাজ দেখিয়ে বলল, "আপনাদের ডিরেক্টরের সাথে আমাদের একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।"
"ওকে স্যার আমি দেখছি, আমাকে একটু সময় দিবেন প্লিজ!" হেল্প ডেস্কের মেয়েটার সুরভীত কণ্ঠের সমাদরে আহসান ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে বলল, "জ্বি অবশ্যই! Take your time!"
ফাইয়াজ পাশ থেকে হালকা কাশি দিল আহসানের উদ্দেশ্যে!
"জ্বি স্যার আছে, আমি যোগাযোগ করে জানাচ্ছি। এমডি স্যার কনফার্ম করলেই আমাদের স্টাফ আপনাদের নিয়ে যাবেন।" আবারও সুরভিত কণ্ঠের সমাদরে আহসান উত্তর করল, "আ.. তাহলে আমরা বসি! অপেক্ষা করি?"
"প্লিজ স্যার, শিওর!"
সোফায় বসে আহসান একটু একটু করে সেই মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছে! তার চোখের গতিবিধির ওপর নজর রেখে ফাইয়াজ বলল, "এত খাতির জমিয়ে নিলি অন্তত আমাদের আপ্পায়নের জন্য ড্রিংকস এর কথা বলতিস!"
আহসান বলল, "Excuse me উনার জন্য ড্রি...." আহসানের পায়ে পারা দিয়ে ফাইয়াজ বলল, "আরে কি করিস এসব বাচ্চাদের মতন! চুপ থাক!"
"মি. আহসান, আসুন আপনাদের স্যারের কাছে নিয়ে যাই।" আরেকজন সুন্দরী তরুনী এসে বলল!
"জ্বি অবশ্যই, After you!" এবার ফাইয়াজ বলল আহসানকে উদ্দেশ্য করে।
"স্যার, এখানে ছয়টা ফোন নম্বর আছে যার মধ্যে তিনটা সচল এবং তিনটা বন্ধ! স্যার এই ছয়টা নম্বরের লাস্ট তিন মাসের ডিটেইলস আমাদের দরকার।" আহসান বলল।
ডাইরেক্ট নেওয়াজি নাম্বার গুলো দেখে টেলিফোনে বললেন, "আরশীকে আমার রুমে পাঠিয়ে দাও!"
ফাইয়াজ নিচু আওয়াজে আহসানকে বলল, "উনি কি শুধু মেয়েদের বেশি নিয়োগ দেন? সবই তো সুন্দর দেখতে!" "চুপ কর শালা!"
কিছুক্ষণপর,
"স্যার, আসতে পারি?" সুন্দর চেহারার আরশী এসে অনুমতি চাইলো।
"প্লিজ আসুন... আরশী উনারা হলেন ডিবি পুলিশ জনাব আহসান এবং জনাব ফাইয়াজ!" আহসানকে বললেন, "আর ইনি হচ্ছেন আমার মোস্ট মেধাবী স্টাফ আরশী।"
এরপর তারা নিজেদের মধ্যে হাই হ্যালো সেরে নিলেন। আরশী বলল, "জ্বি স্যার বুঝতে পেরেছি, আপনারা বসুন আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেডি করে আসছি।"

হাইটেক ফ্যাক্টরি,

"ম্যানেজার আছেন ভিতরে?"
"জ্বি আছেন, আপনি কে? কাকে চাই? কেন আসছেন? দেখছেন না লেখা আছে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ?" সিকিউরিটির এমন প্রশ্নে মুহূর্তেই মেজাজ গরম হয়ে গেল নাসিরের! পেশীবহুল ডান হাতের গতিময় চড় সিকিউরিটির গালের কাছে আসতেই থেমে গেল নাসির! মনে মনে ভাবলো, "সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে!" পরে ব্যাজ দেখিয়ে বললো, "আশাকরি আর কিছু বলতে হবে না? যাও ম্যানেজারকে বল নাসির স্যার এসেছে!" সিকিউরিটি ঢোক চিপে নিয়ে বলল, "সরি স্যার, বুঝতে পারি নাই!" সাথে সাথে কল করলো ভিতরে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্টাফ এসে গেল। সিকিউরিটিকে বলল, "গেট খুলে গাড়ি ভিতরে আনো।" "জ্বি স্যার।"

কন্ট্রোলরুম,
"জ্বি.. জ্বি, এই হল ভিডিও ফুটেজ। দেখে নিন।" ম্যানেজার কন্ট্রোল রুমে নিয়ে বললেন।
নাসির বললো, "আমার আজকের দিনের পর্যন্ত ভিডিও গুলো চাই।"
"নো প্রব্লেম স্যার। রেডি করে দিচ্ছি, আপনি আমার রুমে বসুন।"
নাসির অপেক্ষা করতে থাকলো ফাইল রেডি হওয়ার। এরমধ্যে আহসানের কল এল,
- জ্বি স্যার,
- ভিডিও পাওয়া গেছে?
- জ্বি স্যার।
- ওগুলো নিয়ে জলদি চলে আসো, আমরা রওনা দিয়েছি।
- রজার স্যার।


"তো উপস্থিত আমার সাথীরা, আমরা একটু মনোযোগী হয়।" আহসান সবাইকে মিটিং এ ডেকে বলল। একটুপর আবারও বলতে শুরু করলো, "আমাদের কাছে সিসি ক্যামেরার ভিডিও, কল রেকর্ডস এবং ভয়েস রেকর্ড আছে। আমরা প্রথমে সিসি ক্যামেরার প্রসঙ্গে আসি।
সকাল ৭.৩০ মিনিট, আলাউদ্দিন বাসা থেকে বের হয়ে বাজারের দিকে রওনা হয়েছে। তারই পাঁচ মিনিট পর কালো কালারের মাইক্রোবাস মন্ডল ভিলার সামনে এসে থামে। আশেপাশের বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ছিল না তাই আমাদের কাছে গাড়ির নম্বর নেই! আচ্ছা, এরপর গাড়ি থেকে নামে চারজন। বাসার ভিতরে কি হয় সেটা আমরা জানি না! ঠিক দেড় ঘন্টা পর তারা বের হয়ে আসে। এবং এরই দশ মিনিট পর আলাউদ্দিন হাজির হয়! গাড়িটা যখন ফ্যাক্টরির সামনে দিয়ে যায় তখন সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় গাড়িতে কোনো নম্বরপ্লেট নেই!" আহসান এটুকু বলে থেমে গেল।
ফাইয়াজ বলল, "তারমানে খুব সূক্ষ্মভাবে অপরাধ করে কোনো প্রমাণ রেখে যায় নি!"
"না ঠিক সেটাও না! অপরাধ যতই সূক্ষ্ম হোক তাতে ছোট কিছু ভুল থাকেই!" আহসান বলল।
ডিরেক্টর ওসমান জিজ্ঞেস করলেন, "কিরকম ভুল সেটা?"
"জ্বি স্যার বলছি, এবার আমরা আসি ফোন কলের রেকর্ড নিয়ে। ছয়টা নাম্বার, তিনটা তো রুস্তম আর বাকি দুইজনের এটা আমরা জানি, বাকি ৩টা নম্বর যার নামে রেজিস্টার করা উনারা মৃত! কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই তিনটা নম্বরই ইন্সপেক্টর মকবুলের সাথে প্রায়ই কথা বলেছে! এখানে তারা ছোট ভুল করে ফেলেছে। ভয়েস রেকর্ড তো বের করা সম্ভব নয় কিন্তু এতটুকু জানা গেল এদের সাথে মকবুলের কন্টাক্ট ছিল এবং এখনও আছে! আমরা কন্ট্রোলে বলে দিয়েছি ওই তিন নম্বরের যেকোনো একটি যদি কখনও চালু হয় তাহলে সাথে সাথে আমাদের জানাতে। ইনশাআল্লাহ আমরা খুব জলদি ধরে ফেলবে অপরাধীদের।"
"গুড জব আহসান, তুমি আর তোমার টিম নিয়ে আমি শুরু থেকেই সন্তুষ্ট।" ওসমানের খুশবার্তা।
"It's an honer Sir!"


ফাইয়াজের বাসায় আড্ডা চলছে এবং সেই সাথে চায়ের দাওয়াত! চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নাসির বলে উঠলো, "স্যার তাহলে এখন গাড়ির মালিককে কিভাবে বের করবেন?"
আহসান বলল, "আরও একবার ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসে যেতে হতে পারে!"
নাসির বলল, "স্যার আমরা আরও একবার রুস্তম আর ওর বন্ধুদের জিজ্ঞেস করতে পারি এই গাড়ি সম্পর্কে? হতে পারে তারা কিছু খবর এনে দিবে?" ফাইয়াজ টান টান মেজাজে বলল, "সাবাস নাসির! এটা তো ভাবি নাই আমরা! আহসান ডাকা যায় তাদের?"
"ঠিক আছে তাহলে রনি সহ আসুক?" আহসান বলল।
ফাইয়াজ বলল, "অবশ্যই তবে আলাদাভাবে!"


"তোমাদের তিনজনকে আবারও ডাকার উদ্দেশ্য হল একটা গাড়ির খোজ করতে হবে।" আহসানের কথা শুনে সুমন বলল, "কেমন গাড়ি স্যার?"
"তোমরা এই ভিডিওটা দেখ, তেমন স্পষ্ট নয় তবে বুঝা যাচ্ছে আরকি!"
আহসান তাদের ভিডিওগুলো দেখাতে শুরু করল। ভিডিও দেখতে দেখতে গৌরব বলল, "স্যার আমি জানি এরা কারা আর এ গাড়ি কার!"
আহসান চমকে উঠলো! বলল, "সত্যি জানো? কে সে?"
"জ্বি স্যার, আপনি দুইদিন সময় দেন, আমি এই গাড়ি দেখছি দেখছি মনে হয়! বাম্পার ভাঙা আর পিছনের সিট নষ্ট, চরছিলামও!"
গৌরবের কথায় আহসান আশ্বাস পেল। এবার খুনিদের ধরতে আরও দুইধাপ এগিয়ে গেল তারা!


কেন্দ্রীয় কারাগার,

"কি অবস্থা আলাউদ্দিন সাহেব?" চঞ্চলমনা শফিক এসে বসলো আলাউদ্দিনের পাশে!
"এই যে খোলা আকাশ দেখছি। দুরে পায়রা গুলো উড়ে আবার নীরে ফিরছে!" আলাউদ্দিনের উত্তর।
"আজ হঠাৎ কাব্য চর্চা হচ্ছে যে?" শফিকের প্রশ্ন!
"আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি কখনও এখান থেকে বের হই তবে সেদিন থেকে আর টিচিং প্রফেশনে থাকবো না!"
আলাউদ্দিনের কথা শুনে শফিক বলল, "হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ?" "আসলে আমি এই জেল কারাগার এর মধ্যে অনেক সেফ আছি! বাইরের জগতে মুক্ত হলেই ধর্ষক, কুলাঙ্গার, নারীলোভী আরও কত কি শুনতে হবে!"
আলাউদ্দিনের নিরাশ উত্তর।
এমন সময় কনস্টেবল এসে বলল, "ওই আলাউদ্দিন, যাও দেখা করে আসো। আহসান স্যার আসছে!"
আলাউদ্দিন শফিককে বলল, "এই ব্যবহারে আমি অভ্যস্ত! বসেন আমি দেখা করে আসি।"

"আসসালামু আ'লাইকুম স্যার, হঠাৎ কি মনে করে?"
আহসান তিনটা ছবি দেখিয়ে বলল, "এটা রুস্তম, সুমন আর গৌরব। এদের কাউকে চিনেন বা আগে দেখছেন?"
আলাউদ্দিন ছবি গুলো দেখে বলল, "না স্যার, এদের আমি চিনি না।"
"আমরা আপনার কেসের খুবই শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। ইনশাআল্লাহ আপনার সাথে সুবিচার হবে।" আহসান বলল।
আলাউদ্দিন কোন কথা বলছে না। কিছুটা চুপ থেকে বলল, "আচ্ছা স্যার, আপনার কি মনে হয় যদি আমি এখান থেকে কখনও ছাড়া পাই তাহলে কি আমার আগের রেসপেক্ট থাকবে? কিংবা আমার এলাকায় যে সম্মানটা ছিল সেটা কি ফিরে আসবে?" আহসান উত্তরে বলবে, "হয়তো আবার হয়তো নাও আসতে পারে! মানুষের মন বলে কথা?"
"মানুষের মন শুধু খারাপটা নিয়েই বসে থাকে!" আলাউদ্দিন বেশ দুঃখের সাথে বলল।
"ওহ আরেকটা কথা, নেওয়াজ চাচা আপনাকে সালাম এবং ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার দুর্দিনেও সাথে থাকার জন্য!" আহসান জানিয়ে দিল।
"ওয়ালাইকুম আসসালাম, আসলে নেওয়াজ চাচা মানুষ যেমন ভাল তেমন তার কাজ!"
"জ্বি, উনি অসাধারণ গাড়ি চালান!" আহসান বলল। এরপর বিদায় নিয়ে চলে গেল আহসান। ওদিকে মাগরিবের আযান দেয়া শুরু হয়েছে। আলাউদ্দিনের মন এখন আগের সেই আলাউদ্দিনের মত নেই!


দুইদিন পর,
"হ্যালো স্যার, স্যার আমি গৌরব।"
গৌরবের কল পেয়ে আহসান নড়েচড়ে বসল। বলল, "হ্যা কোনো খবর আছে?"
"জ্বি স্যার, ওই গাড়িটা পাইছি স্যার এবং দুইজন আছে স্যার এর ভিতরে। আমি ঠিকানা বলতেছি লিখে নেন, জলদি আসেন।"
আহসান নাসিরকে ঠিকানা লেখার ইশারা দিল। "হ্যা, হ্যা আছা, আড়পারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া, ৪ নম্বর গলি! ওকে আসছি, তুমি খেয়াল রাখো।" ঠিকানা নিয়ে আহসান নাসিরকে নিয়ে বের হল।
"নেওয়াজ চাচাকে গাড়ি রেডি করতে বল আর ফাইয়াজ কই?"
আহসান ফাইয়াজকে কল করে গৌরবের ঠিকানা পৌঁছতে বললো।
আহসান বললো "নেওয়াজ, আবারও ফুল স্পিড এবং এই ঠিকানা।"
"জ্বি স্যার!" দক্ষ হাতে গাড়ি আবারও ফুল স্পিডে চলতে শুরু করল। নেওয়াজ বলল, "স্যার এবারের প্ল্যান কি?"
"এখনও কোন প্ল্যান নেই। সিচুয়েশন বুঝে নিয়ে তারপর প্ল্যান!" তারপর নাসিরকে বললো, "ফাইয়াজকে কল কর নি? কই সে?"
"স্যার কল রিসিভ হচ্ছে না!"
আহসান রেগে বললো, "কেমনটা লাগে শালা ফোন রিসিভ করতেছে না!"

স্পটে পৌঁছে গৌরবকে জিজ্ঞেস করল গাড়ি কোথায়? গৌরব বললো, "স্যার লেট কইরা ফেলছেন! গাড়ি চলে গেছে ২মিনিট হল!" নেওয়াজ বলল, "স্যার বেশিদূর যায় নি হয়তো?"
"লাভ নেই! এখান থেকে রাস্তা অনেকগুলো বের হয়েছে! বুঝতে পারবো না কোনদিকে গেছে!" আহসান বলল।
"স্যার আমি কয়েকটা ছবি তুলছি, হয়তো আপনের কাজে আসবে।" গৌরবের কথা শুনে আহসান অবাক হয়ে বললো, "কি???? কই দেখাও! এত বুদ্ধি নিয়ে ঘুমাস কিভাবে তোরা?"
"এই দেখেন স্যার। এই চারটা!"
আহসান ছবিগুলো দেখে বেশ খুশি হয়ে গেল! "বাহ! চমৎকার! একের কাজ করছিস রে তুই! সব ছবিই ক্রিস্টাল ক্লিয়ার! নাসির দেখ.." নাসিরকে ছবিগুলো দেখতে দিল সে। এমন সময় গৌরব আবারও বলল, "স্যার আপনের কপাল ভাল, গাড়ি আবার ব্যাকে আসছে, ওই যে আসতেছে! মনে হয় কিছু রাইখা গেছে ওরা!"
আহসান তাকিয়ে দেখে গাড়ি আসছে!
"টেক কভার নাসির!" এই বলে লুকিয়ে পরল নাসির আর আহসান! গৌরব তখন সেখানে দারিয়ে আর বললো, "কিসের কভার স্যার?"
আহসান নিজের কপালে জোরে হাত রেখে বলল, "ধুর... এদিকে লুকা!" গৌরবকে টান দিয়ে আড়াল করল সে!
গাড়ি তাদের কিছুটা সামনে থামলো। আহসান বললো, "ওকে, টার্গেট দুইজন এবং জীবিত। গাড়ি নিয়ে বেশিদুর আগানো যাবে না কারণ শিল্পএলাকা! অলি গলিতে ট্রাক থামানো! Don't fire, we need them alive! ওকে? তাদের কাছে হাতিয়ার থাকতে পারে। যদি আমাদের দিকে ফায়ার করে তাহলে রিটার্ন ফায়ার, ট্রাই করবে যেন পায়ে লাগে। নাসির পিছন থেকে আর আমি সামনে থেকে। ওকে?"
"ইয়েস স্যার!"
"নেওয়াজ, আমার সিগন্যাল পাওয়া মাত্রই গাড়িটা সামনের যেকোনো রাস্তায় ব্লক করে রাখুন। জিপিএস ট্র‍্যাকার এক্টিভ আছে তাই আমি আপনাকে দেখতে পাবো এবং আপনিও ম্যাপ দেখে চালানো শুরু করেন, গুড লাক!"
আহসানের কথামত নেওয়াজ গাড়ি নিয়ে রওনা হলেন। সেই সাথে নাসিরকেও পজিশনে যেতে বললো। শেষে গৌরবকে বললো, "এলাকা পরিচিত না?"
"জ্বি স্যার!"
গুড, দুই চারজন ছেলেপেলে কে বলে রাখো চিকনা চাকনা কাউকে দৌড়াতে দেখলে বাধা দিতে। খেয়াল রাখতে বলবা যেন আমাদের বাধা না দেয়! নাসির এবং আমার বর্ণনা দাও সাথে গাড়িটারও! যাও বের হও।"
গৌরবও চলে গেল কাজে।
"ওকে নাসির আগাতে থাকো আর গুলি চালাবে না, সিভিলিয়ান খুব বেশি!"
"রজার দ্যাট!"

নাসির এবং আহসান উভয়দিক থেকে আগাতে থাকলো। তাদের গাড়িতে ঢুকতে দেখেই আহসান এবং নাসির তাদের গুলি তাক করে নিল। তারা আহসান এবং নাসিরকে দেখে একদম থেমে গেল। আহসান জোর গলায় বলল, "আমার মনে হয় আমাদের দেখে বুঝতে পারছো আমরা কে আর তোমাদের অপরাধ কি?" তারা পিছনে ফিরে দেখলো নাসিরও গুলি তাক করে আগাচ্ছে! আহসান আবারও বললো, "যদি অস্ত্র থেকে থাকে তাহলে আগেই মাটিতে রেখে দাও না হলে আমি গুলি চালাতে বাধ্য হবো! আমাকে গুলি চালাতে বাধ্য কর না!" একটুপর নাসিরকে বললো, "আমার মনে হচ্ছে তারা অস্ত্র চালাবে!"
"আমারও তাই মনে হচ্ছে স্যার, লোকজন আমাদের দেখছে, এরা গুলি চালালে সিভিলিয়ান মরবে এতটুকু শিওর! কি করবো স্যার?" আহসান বলল, "পায়ে টার্গেট কর আর এলার্ট থাকো।" আহসান তাদের উদ্দেশ্য আবারও বলল, "সারেন্ডার কর, আমি কথা দিচ্ছি তোমাদের কোনো ক্ষতি হবে না!" বলতে বলতে তারা দুইজন অস্ত্র বের করে আহসান এবং নাসিরের দিকে গুলি চালিয়ে দিল! মুহূর্তেই গাছপালা থেকে পাখি উড়া শুরু হল! মানুষগুলো পাখির মত ছোটাছুটি করতে শুরু করলো! আপরাধীরাও এই ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতে লাগলো। আহসান এবং নাসির ছুটতে লাগলো তাদের পিছে! আহসান বলল "Don't fire, too many civilians! পিছু করতে থাকো। আর ওদের বুলেট শর্ট, কোনোরকম সার্ভাইভ কর। তারপর ফায়ার!"
"রজার স্যার।"
দৌড়াতে দৌড়াতে গৌরবকে বলল, "কি রে তোর পোলাপান কই? এতগলি ঘুরে কেমনে তোর পোলাপান থাকতে?" গৌরব জানালো সামনেই পেয়ে যাবেন তাদের।
"নেওয়াজ সামনের রোডে গাড়ি জমায়া দেন!"
এরমধ্যে তারা গুলি চালাতে থাকে! এলাকার দুইজন ব্যক্তি তাদের গুলিতে জখম হয়! নাসির জানালো, "স্যার তাদের বুলেট শেষ! ফায়ার করবো?"
"না না, কিপ রানিং! নেওয়াজ, ওরা গাড়ির দিকে যাচ্ছে!"
নেওয়াজ গাড়ি রাস্তায় রেখে ব্লক করে দিলেন। দুই অপরাধী দৌড়ে গাড়ির পিছন দিয়ে যাওয়ার জন্যে আসতেই নেওয়াজ সুইচ চেপে দিয়ে পিছনের দরজা খুলে দিলেন আর সাথে সাথেই তারা দুইজন সজোরে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পরে গেল! নেওয়াজ গাড়ি থেকে নেমেই ওদের ধরে ফেললো। নাসির এবং আহসান এসে বললো, "সাবাস নেওয়াজ চাচা! অস্থির কাজ করছেন আজ!" নেওয়াজ বললো, "স্যার দরজার যে অবস্থা হল এটা ঠিক করার টাকা কি আমার বেতন থেকে কাটা যাবে?" দরজার দিকে তাকিয়ে হেসে দিল নাসির! আহসানও না হেসে থাকতে পারলো না! ওদের দুইজনকে গাড়িতে তুলে রওনা দিল তারা। এমন সময় ফাইয়াজের কল! আহসানের মেজাজ চরম খারাপ। রিসিভ করেই একগাদা গালাগালি দিবে এমন সময় বললো,
"কি অবস্থা আহসান স্যার?"

অপরিচিত কণ্ঠ! আহসান চিনতে পারছে না একে। স্ক্রিনে আবার দেখলো নম্বরটা কার, দেখে ফাইয়াজের! আবারও কথা শুরু করলো,
"তুমি কে?"
সে রেগে বলল, "সোজা কথায় আসি, ফাইয়াজকে জীবিত দেখতে চাইলে যে দুইজনকে আটক করেছো তাদের সসম্মানে ছেড়ে দাও! এবং সেখানেই ছেড়ে দিবে যেখানে আমি বলবো, ওকে? দশ মিনিট পর কল করছি, ততক্ষণে ফ্রি রাইড কর!! আর আরেকটা কথা, কল ট্রেস বা ট্র‍্যাক করার ভুল কর না। ছোট করে বললাম।"
এই বলে কল কেটে দিল ওপাশের অজ্ঞাতনামা! নাসির এবং নেওয়াজ জিজ্ঞেস করল, "স্যার কি হইছে? ফাইয়াজ স্যার কি বললো? কোথায় উনি?"
আহসান কোনো কথা বলছে না! নেওয়াজকে বলল, "নেওয়াজ, গাড়ি ঘুরাতে থাকো কিন্তু হেডকোয়াটারে যেও না। ফাইয়াজ বিপদে আছে! তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে!"
পকেটের চাবি রিং বের করে আঙুলের মধ্যেই ঘুরানো শুরু করলো আহসান! যখন সে বেশিই টেনশনে থাকে তখন এই কাজ করে। শুধু ভাবছে কিভাবে ফাইয়াজকে উদ্ধার করা যায় এবং জীবিত...!

চলবে...

[ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন]
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৪২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×