২ নভেম্বর, ২০১৩:
# বন্ধুরা বলে মানিকজোড়, এক বড় ভাই জোড়া কলার সাথে তুলনা করে ডাকে 'ব্যানানাস্ִ'। এক ক্লাসমেট আজকেও ফোনে বলেছে, তোরা দুই দেহ, এক প্রান। এত বছরে ময়মনসিংহের মাত্র দুইটা মানুষ 'ভালা পাই'। এক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর আরেকটা @[100000824406564:অমিত]। মা-বাপি-রূপলের পর একসাথে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি ওর সাথেই। নিজের মায়ের রান্না আর হোস্টেলের বাবুর্চির রান্নার পর সবচেয়ে বেশি খেয়েছি ওর বাসাতেই। হলফ করে বলতে পারি ময়মনসিংহ ছেড়ে চলে গেলে একটা জিনিস মিস করলে সেইটা হবে ও। শুভ জন্মদিন পুটুশ!
৩ নভেম্বর, ২০১৩:
# বাংলাওয়াশ না, সবচেয়ে বড় তৃপ্তি ৩০০ প্লাস রান চেজ করার পথে, ফতুল্লার এমন একটা স্লো আউটফিল্ডে, সাকিব-তামিম ছাড়াও একটা মুহূর্তের জন্যেও মনে হয়নি বাংলাদেশ হারতে পারে! টোটাল ডোমিনেশন। কমপ্লিট প্রফেশনাল। বাই দ্যা ওয়ে, থ্রি জি'র মত বাংলাওয়াশও ছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। এতবছর পর আজ তা পূরণ হলো!
# ১) বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলায় চৌধুরী মুঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খানের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। জয় বাঙলা।
২) পরীক্ষার কারণে সবকিছুই খুব লেটে হয়। খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনার কথোপকথন শুনলাম। অন্য কিচ্ছু নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। শুধু একটাই কথা, খালেদা-হাসিনা বাদ, দুইটা মেয়ে ফোনে কথা বলে কিভাবে?! কেউই তো কথার মাঝে ন্যূনতম বিরতিটুকু দেয়না। কথার ঝাপটায় কিছু কথা বোঝাই যায়না। আরও মজার ব্যাপার কথা পুরোটুকু না শুনেই একজন আরেকজনকে উত্তর দেয়। বিসাইড পলিটিকস্ִ, ইটস্ִ লটস্ִ অফ ফান!
৩) জয়নাল আবেদিন ফারুকের ফোন স্ক্যান্ডাল আগেই শুনেছিলাম। এবার বাংলা লিকসের সৌজন্যে শুনলাম এম কে আনোয়ার এর স্ক্যান্ডাল। বিএনপির বড় বড় নেতাদের স্ক্যান্ডাল বের হচ্ছে। এমন না যে আওয়ামীলীগের কারও কখনওই হবে না। কিন্তু যে জিনিসটা খেয়াল করলাম, এইসব এরোটিক ফোন চ্যাট করার কথা টিন এজারদের। করছে সব বুড়া ভামেরা!
৪) আগামী জনসভায় চাইলে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর কথা নকল করে বলতে পারবেন, 'হরতাল যখন দিয়েছি, হরতাল আরও দেবো। রাজবন্দী রাজাকারদের মুক্ত করে ছাড়বো। এনশাল্লাহ।'
৫) 'আই হেট পলিটিক্স', 'পলিটিক্স? ওয়্যাট?', 'পলিটিক্স মাই ফুট', 'রাজনীতি খায় না মাথায় দেয়?' ব্লা ব্লা ব্লা! এবং ইহা একটি অরাজনৈতিক স্ট্যাটাস!
৫ নভেম্বর, ২০১৩:
# ১) ছোটভাই ক'দিন আগে গ্যালাক্সি নোট থ্রি কিনেছে ৬৯ হাজার টাকা দিয়ে। কয়েকদিন ব্যবহার করার পর এখন আর ওর ফোনটা ভালো লাগতেছে না। মা কে বলেছে চাইলে আমি ফোনটা নিয়ে নিতে পারি। মা ক'দিন আগে ফোনে বললো, 'ওর আর এই ফোন ভালো লাগতেছে না। বলেছি না, ওর জন্যে আমার ৪ টা মেয়ে দেখে রাখতে হবে। বিয়ের কিছুদিন পরে বলে দিতে পারে এই বউ আমার ভালো লাগছে না। পাল্টায়ে দাও। তুমি ফোনটা নিবা, বাপি?' বললাম, 'নাহ্ִ। নিজের থেকে দামী জিনিস পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মানে নেই!'
২) একমাত্র টি-টুয়েন্টিতে ইলিয়াস সানির বদলি হিসেবে ঢুকেছে সৌম্য সরকার। সৌম্যকে নিয়ে একটা ছোট স্মৃতি আছে। সাতক্ষীরায় আমার এক কাজিনের বাড়ি। বছর তিনেক আগে একবার গেছিলাম বেড়াতে। গিয়ে শুনি এলাকাভিত্তিক এক ক্রিকেট ম্যাচ হবে সেটার মাইকিং চলছে। ভাইটাকে নিয়ে গেলাম খেলা দেখতে। ওদের এলাকার হয়ে একটা বাহাতি ছেলে মারতি গোল্ড বলে একটার পর একটা কাভার ড্রাইভ খেলছিলো। টেপ টেনিস বা মারতি গোল্ড বলে ক্ল্যাসিকাল অফ ড্রাইভ খেলাই কঠিন। বল উঠে যায়। অথচ ওই ছেলেটা কী দারুণ অফ ড্রাইভ খেলে। বেশি না, যদ্দুর মনে পড়ে ৩৫/৪০ করেছিলো। এরপর বোলিংও দুর্দান্ত করলো। শুকনা, পাতলা, লম্বা ছেলেটা। মোটামুটি ভালোই পেস। আমার কাজিনের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কে রে এইটা? ও নাম বলতে পারেনি। শুধু বলেছিলো হায়ারে দুটো প্লেয়ার এনেছে, তার একটা ও। পাশের একজন থেকে শুনলাম, নাম সৌম্য। ফার্স্ট ডিভিশন খেলে।
কয়েকমাস আগে খুলনা গিয়ে এলাকার এক ভাইয়ের সাথে খেলা নিয়ে কথা বলছিলাম। উনি বলেছিলেন, 'রণি, খুলনা ডিভিশনের হয়ে সৌম্যর খেলা দেখলাম কয়েকটা। শেন ওয়াটসনের সাথে মেলানো ঠিক হবে কী-না জানিনা তবে নিশ্চিত একটা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।' বয়স মাত্র ২০। বাংলাদেশ দলে দীর্ঘদিন একজন পেস-বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব পুরণ করতে পারবে কী-না সেটা সময় বলে দেবে। তবে নির্বাচকেরা ঘরোয়া আর যুবদলের পারফরমেন্সকে বিবেচনায় এনে এই অতি অল্প বয়সে ওকে যে সুযোগ করে দিলেন, ওর ছোট কাধে যতটুকু আস্থা রেখে দেখালেন এবং বুঝিয়ে দিলেন নির্বাচকদের দৃষ্টি ওর উপর আছে সেটাই ওর ক্যারিয়ারে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করি।
৩) যার শব্দভান্ডার শূন্য, বোধ বিবেচনা শক্তি নগন্য, গালিই তার অস্ত্র। ভালো অভিজ্ঞতা হলো। বাই দ্যা ওয়ে, আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ বলেই জানতাম। আমার ছোট লেখা এত মানুষ সিরিয়াসলি নেয় জেনে ভীষণ অবাক হয়েছি! লাভড ইট এনিওয়ে। আমি দেশোদ্ধারে, ত্যানা পেঁচা-পেঁচি করতে বা বাগড়া বাঁধাতে অনলাইনে আসি না। আসি কিছু লেখা পড়তে, আপডেটেড থাকতে এবং সময় সুযোগে টুকটাক লিখতে। অনলাইন বাদে যে কাজগুলো করি, সেগুলোই আমার জীবনে এই মুহূর্তে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখন বুড়ো হয়ে যাবো, আর কিছুই করার থাকবে না, তখন অনলাইনকে প্রাধান্য দেবো। তার আগে না। সো, নাথিং সিরিয়াস। জাস্ট চিল।
৪) অনেকদিন পর একটা দিন রিল্যাক্স গেলো। এক প্রিয় স্যারের বাসাতে কিছু সুন্দর সময় কাটিয়ে এই রাতে বিরাতে ফিরতে ফিরতে স্ট্যাটাস লিখছি। হেডফোনে প্রেয়ার হলের 'বুঝছো' গানটা বাজছে। পুরো লেখাটাতে একটাও স্যাটায়ার নেই আজ সুতরাং কি লিখেছি, তা কি বুঝ্ִছো? নাকি ১৫৫ টা গালি রেডি করছো?
৬ নভেম্বর, ২০১৩:
# ১) বাংলাদেশ ক্রিকেট বলতে এখন দুইটা জিনিস বুঝি। জয় আর পরাজয়। অন্য কিছু না। 'ভালো খেলেছি', 'ভালো ফাইট দিয়েছি', 'মাথা উঁচু করে মাঠ ছেড়েছি'র দিনগুলোর এপিটাফ অনেক আগে লিখা হয়ে গেছে। এখন সে এপিটাফে যুগ পরিবর্তনের শ্যাওলা। 'আমরা অতিথিপরায়ন্ִ, 'নিউজিল্যান্ডকে বিদায় উপহার দিলাম আর কী', 'মিনোজরা মাঝে মাঝে জিতে যায়', 'ইটস অ্যান আপসেট' বা 'খেলা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের হয়নি' কথাগুলো এখন শান্তনা খোঁজাও না, স্রেফ ট্রল। উই ওয়্যার নট আপ টু দ্যা মার্ক, অ্যান্ড উই লস্ট। দ্যাটস্ִ ইট। নো এক্সকিউজ।
২) যদ্দুর বুঝি, সৌম্য সরকারকে দলে ডাকা হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ২০১৫'র বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে; আন্তর্জাতিক লেভেলে একটু বাজিয়ে দেখতে। ওদের পিচ তো আর উপমহাদেশের ট্রেডিশনাল স্পিন বান্ধব উইকেট হবে না। সেটা কেউ আশাও করে না। সুতরাং ২ পেসার ৩ স্পিনার ফর্মুলা কম কাজে দেবে তা অনুমানই করেই সম্ভবত ওকে ডাকা। জিয়া যেহেতু যথেষ্ট সুযোগ পাওয়ার পরেও থিতু হতে পারেনি, মুশফিকও ওকে বোলিংয়ে আনতে খুব একটা কনফিডেন্স পায় না এবং যদিও এক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ একজন প্লেয়ারকে জাস্টিফাই করতে যথেষ্ট না তবুও সৌম্যকে বাজিয়ে দেখতে পারতো।
৩) প্রতিষ্ঠিত দলগুলোতে কিছু বিশেষ প্লেয়ার থাকে যাদের শুধুমাত্র বিশেষ সময়ে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। ভিভিএস লক্ষণ বা বর্তমান চেতস্মর পূজারার কথা চিন্তা করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ন চন্দরপল, দক্ষিন আফ্রিকার অ্যালেভারো পিটারসেন, অ্যাশওয়েল প্রিন্স, শ্রীলংকার থিলান সামারাবীরা বা এই নিউজিল্যান্ডেরই বিজে ওয়াটলিং। কমবেশি ওয়ানডে খেললেও প্রত্যেককে মূলত শুরুর দিক থেকে গ্রুম করা হয়েছে বা হচ্ছে লংঙ্গার ফরম্যাটের জন্যে। শুধুমাত্র ওই সময়েই তাদের ডাকা হয়। খেলা কম থাকাতে এই প্লেয়াররা বেশি বিশ্রাম পায় এবং শুধুমাত্র এক ধরণের ক্রিকেটে মনোযোগের কারণে সফলতার সম্ভাবনাও বেশ বেশি থাকে। এবং স্ট্যাটিস্টিকস্ִ বলে তারা বেশ সফল। হাশিম আমলা-রাহুল দ্রাবিড় তো শেষ সময়ে এসে টি-টুয়েন্টি খেললো। কিছু প্লেয়ারকে এভাবেই গড়ে তুলতে হয়। অন্তত সফল দলগুলো বেশ আগে থেকে এই কাজটা করে আসতেছে। অথচ বাংলাদেশকে এদিকে নজর দিতে দেখি না। মমিনুলের লঙ্গার ভার্সনে এরকম দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পরে ওকে হুট হাট শর্টার ফরম্যাটে না ডেকে লঙ্গার ভার্সন দু'টোর জন্যে বিবেচনা করা যেতে পারে। কালে কালে পানি অনেক গড়িয়েছে। দিনও অনেক বদলে গেছে। একটু ভিন্নধর্মী চিন্তা করার অবকাশ নিশ্চয়ই এখন নির্বাচকদের আছে।
৪) ক্রিকেটারদের নিয়ে বিজ্ঞাপন হচ্ছে এটা বেশ আশাব্যাঞ্জক। আবার যেসব থিম নিয়ে বিজ্ঞাপনগুলো হচ্ছে, যেমন, এতো বছর ধরে ডানো খেয়ে তামিম ছক্কা হাঁকায় বা ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসামে আম্পায়ার-বোলার পটে যায়, টিফিন বিস্কুট খেলে সাকিবের মত ছক্কা হাকানো যায়, গ্লুকোজ খেয়ে সুপারম্যানের মত উড়ে অ্যাকুয়ারিয়াম ক্যাচ ধরা যায়; এগুলো ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে হতাশার। দেশের সেরা সন্তানেরা আরেকটু কৌশলী নির্মাতা বা আরেকটু লজিক্যাল বিজ্ঞাপনে কাজ করাটা ডিজার্ভ করে।
৫) জিম্বাবুয়ের সাথে একটা সিরিজ প্রস্তাবিত আছে। সেটা না হলে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার সাথে পরবর্তী সিরিজের জন্যে আরও প্রায় মাস তিনেকের অপেক্ষা। বাংলাদেশের খেলা ঈদ-পূজার মত। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আসে। আবার ক্যামনে জানি হুট করেই চলে যায়। যাওয়ার আগে চরম রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতি বা দূর্যোগের মাঝেও ১৬ কোটি মানুষ কয়েকবার প্রাণ খুলে হাসতে পারে। অল হেইল টু আওয়ার টাইগারস্ִ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৬