somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্যাক ক্যালিসের সাথে বিশ্বের 'সাবেক' সেরা অলরাউন্ডারদের তুলনা এবং ফলাফল।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের নাম বলেন। হুম, গ্যারি সোবার্স, রিচার্ড হ্যাডলি, ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, কপিল দেব। আর? অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, সনথ জয়সুরিয়া, শহীদ আফ্রিদি। নাহ্ִ, এদের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাতারে ফেলা যায় কি? আরেকটু খোঁজখবর করলে কেইথ মিলারের নামটাও পাবেন। এইতো, 'সেরা'র লিস্ট এ পর্যন্তই। লিস্টটা অসম্পূর্ণ লাগছে না? হ্যা, কারণ এই লিস্টে 'সর্বকালের সেরা' অলরাউন্ডার জ্যাক হেনরি ক্যালিসের নামটাই তো নেই! 'সর্বকালের সেরা' বলার যৌক্তিকতা অবশ্যই আছে। ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে ক্যালিস আমার কাছে ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা। শচীনের পরে এবং ডন ব্রাডম্যানের উপর যথেষ্ট সম্মান রেখেই তাঁর উপর ক্যালিসকে রাখবো। ব্যক্তিগত মতামতে জোর খাটে না। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে এতসব গ্রেট অলরাউন্ডারের আগে ক্যালিসের নামটা বসানোর ব্যাখ্যাটা বরং দেই।

তুলনায় যেতে হলে স্ট্যাটিসটিকস্ִ লাগে। শুরুতে সেটাতেই বরং একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক:

গ্যারি সোবার্স:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ৯৩ ম্যাচে ৮০৩২ রান। অ্যাভারেজ ৫৭.৭৮ সাথে ২৬ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ৩৪.০৩ অ্যাভারেজে ২৩৫ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ১ ম্যাচে ৬ রান। অ্যাভারেজ ৬। সেঞ্চুরীর প্রশ্নই ওঠে না।

বোলিং: ওই একমাত্র ম্যাচেই ৩১ রানে ১ উইকেট।



> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ৮০৩২+৬= ৮০৩৮

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ২৩৫+১= ২৩৬

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ১০৯+০= ১০৯



ইয়ান বোথাম:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ১০২ ম্যাচে ৫২০০ রান। অ্যাভারেজ ৩৩.৫৪ সাথে ১৪ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৮.৪০ অ্যাভারেজে ৩৮৩ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ১১৬ ম্যাচে ২০১৩ রান। অ্যাভারেজ ২৩.২১। কোনো সেঞ্চুরী নেই।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৮.৫৪ অ্যাভারেজে ১৪৫ উইকেট।



> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ৫২০০+২১১৩= ৭৩১৩

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ৩৮৩+১৪৫= ৫২৮

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ১২০+৩৬= ১৫৬


রিচার্ড হ্যাডলি:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ৮৬ ম্যাচে ৩১২৪ রান। অ্যাভারেজ ২৭.১৬ সাথে ২৪ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২২.২৯ অ্যাভারেজে ৪৩১ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ১১৫ ম্যাচে ১৭৫১ রান। অ্যাভারেজ ২১.৬১ সাথে ৪ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২১.৫৬ অ্যাভারেজে ১৫৮ উইকেট।



> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ৩১২৪+১৭৫১= ৪৮৭৫

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ৪৩১+১৫৮= ৫৮৯

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ৩৯+২৭= ৬৬





ইমরান খান:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ৮৮ ম্যাচে ৩৮০৭ রান। অ্যাভারেজ ৩৭.৬৯ সাথে ৬ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২২.৮১ অ্যাভারেজে ৩৬২ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ১৭৫ ম্যাচে ৩৭০৯ রান। অ্যাভারেজ ৩৩.৪১ সাথে ১ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৬.৬২ অ্যাভারেজে ১৮২ উইকেট।



> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ৩৮০৭+৩৭০৯= ৭৫১৬

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ৩৬২+১৮২= ৫২৮

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ২৮+৩৬= ৫৪


কপিল দেব:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ১৩১ ম্যাচে ৫২৪৮ রান। অ্যাভারেজ ৩১.০৫ সাথে ৮ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৯.৬৪ অ্যাভারেজে ৪৩৪ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ২২৫ ম্যাচে ৩৭৮৩ রান। অ্যাভারেজ ২৩.৭৯ সাথে ১ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৭.৪৫ অ্যাভারেজে ২৫৩ উইকেট।



> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ৫২৪৮+৩৭৮৩= ৯০৩১

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ৪৩৪+২৫৩= ৬৮৭

> টেস্ট এবং ওয়ানডে মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ৬৪+৭১= ১৩৫



এবং…





জ্যাক ক্যালিস:



> টেস্ট-

ব্যাটিং: ১৬৬ ম্যাচে ১৩২৮৯ রান। অ্যাভারেজ ৫৫.৩৭ সাথে ৪৫ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ৩২.৫৩ অ্যাভারেজে ২৯২ উইকেট।



> ওয়ানডে-

ব্যাটিং: ৩২৫ ম্যাচে ১১৫৭৪ রান। অ্যাভারেজ ৪৪.৮৬ সাথে ১৭ সেঞ্চুরী।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ৩১.৭৯ অ্যাভারেজে ২৭৩ উইকেট।



> টি-টুয়েন্টি-

ব্যাটিং: ২৫ ম্যাচে ৩৫.০৫ অ্যাভারেজে ৬৬৬ রান। ৫ টা অর্ধশতক।

বোলিং: একই সংখ্যক ম্যাচে ২৭.৭৫ অ্যাভারেজে ১২ উইকেট।



> টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি টুয়েন্টি মিলিয়ে টোটাল রান সংখ্যা: ১৩২৮৯+১১৫৭৪+৬৬৬= ২৪৮৬৩

> টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে টোটাল উইকেট সংখ্যা: ২৯২+২৭৩+১২= ৫৬৫

> টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি টুয়েন্টি মিলিয়ে টোটাল ক্যাচ সংখ্যা: ২০০+১২৯+৭= ২৩৬

তালিকার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কপিল দেব। ৯০৩১ আন্তর্জাতিক রান। আর জ্যাক ক্যালিসের রান? ২৪৮৬৩। কপিল দেব বাদে বাকি ৪ জন; গ্যারি সোবার্স, ইয়ান বোথাম, রিচার্ড হ্যাডলি এবং ইমরান খানের ক্যারিয়ারের সব আন্তর্জাতিক রান যোগ করলে হয় ২৭৭৪২। ক্যালিস থেকে সামান্য বেশি! অন্তত: রান সংখ্যায় ক্যালিসের সাথে বিশ্বের সাবেক সেরা অলরাউন্ডারদের তুলনাটাই স্রেফ অযৌক্তিক। সেটা বরং অলরাউন্ডারদের সাথে না হয়ে সব গ্রেট ব্যাটসম্যান; শচীন, পন্টিং, লারা, রাহুলদের সাথেই হোক।



নেক্সট, বোলিং। সোবার্সের ২৩৬ উইকেট, বোথাম এবং ইমরানের ৫২৮, হ্যাডলির ৫৮৯ এবং রানের মতই উইকেট সংখ্যাটাও কপিলেরই বেশি, ৬৮৭ উইকেট। জ্যাক ক্যালিস এখানে হ্যাডলি থেকে কিঞ্চিৎ পিছিয়ে, মাত্র ২৪ উইকেটে। আর কপিল থেকে ১২২ উইকেট পিছিয়ে। ক্যালিসের আন্তর্জাতিক উইকেট ৫৬৫ টি। এখানে উল্লেখ্য, ক্যালিস টেস্ট থেকে অবসর নিলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ছেন না। ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। সুতরাং কপিলকে ছাড়াতে না পারলেও রিচার্ড হ্যাডলিকেও ছাড়িয়ে যাওয়াটা সময়ের ব্যাপার বলেই ধরে নেই।

আরেকটি আনুষাঙ্গিক বিষয় ফিল্ডিং। আমি অনেক ধারাভাষ্যকারকে, ক্রিকেট নিয়ে ইন্টারন্যাশনালি ফিচার লেখককে জন্টি রোডসকে 'অলরাউন্ডার' বলতে এবং লিখতে দেখেছি। তাদের যুক্তিই ছিলো ব্যাটিংয়ের সাথে বোলিং করে একজন উইকেট নিয়ে দলকে সাহায্য করছে। আর কেউ দুর্দান্ত ফিল্ডিং করে অপ্রত্যাশিত ক্যাচ ধরে বা রান আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দিচ্ছে। তাহলে একজন দুর্দান্ত ফিল্ডারকে কেন অলরাউন্ডার বলা হবে না? যে 'সাবেক সেরা' পাঁচ জনের স্ট্যাটিসটিকস্ִ পর্যালোচনা করলাম, সেখানে সর্বোচ্চ ক্যাচ নিয়েছেন ইয়ান বোথাম, ১৫৬ টি। ক্যালিসের ইতিমধ্যে ২৩৬ টি। সর্বোচ্চ জন থেকেও ৮০ টা বেশি। এই সংখ্যাটা নি:সন্দেহে আরও বাড়বে। স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে ক্যালিসের জুড়ি মেলা ভার। আমার দেখা সেরা স্লিপ ফিল্ডার মহেলা জয়বর্ধনে। এটাও ব্যক্তিগত পছন্দ। ক্যালিসকে এর পরেই রাখবো পন্টিং-ফ্লেমিং-আজাহারউদ্দিনদের সাথে, একই কাতারেই।

প্রায় সব কিছুতে পিছিয়ে থাকার পরেও অনেকে এসে দাবী করবে- না, স্যার গ্যারি সোবার্সই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। কেউ বলবে না, ইয়ান বোথাম অথবা স্যার রিচার্ড হ্যাডলিই সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার। অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করি, এই দাবী গুলো মাঝ বয়সীরাই, নিবেদনপক্ষে মিড থার্টিস-ফোর্টিস গ্রুপই তোলে বেশি। যখন বাপ-চাচা বা আরও সিনিয়রদের সাথে খেলা নিয়ে কথা বলি, তাদের ভাষ্যে সুনীল গাভাস্কার বা ভিভিয়ান রিচার্ডস হয়ে যান শচীন-পন্টিং-লারা থেকেও গ্রেট প্লেয়ার। ম্যালকম মার্শাল বা কার্টনি ওয়ালসকে দাবী করেন ওয়াসিম আকরাম-গ্লেন ম্যাকগ্রা-স্টেইন থেকেও কয়েকগুন ভালো। সহ্য ক্ষমতা বেশরকম কম হওয়াতে আমি তর্ক জুড়ে দেই মাঝে মধ্যে। যুক্তি আসে, পরিসংখ্যানই কী সব? রেকর্ডই শুধু বিবেচ্য বিষয়? আমি বলি, তাহলে কী বিবেচনা করবো? পরিস্থিতি? পারিপার্শ্বিকতা? সেটা তো পুরোটাই আপেক্ষিক। মাঝে মাঝে বর্তমান রুলস নিয়ে যুক্তি-তর্ক হয়। ব্যাটসম্যানরা ইদানিং বেশি সুবিধা পায় শর্টার ফরম্যাটে, ত্রিশ গজের বাধ্যবাধকতা, বাউন্সারে লিমিটেশন, পাওয়ার প্লে রুলস ব্লা ব্লা ব্লা। আমি বলি, সেগুলোতো শর্টার ফরম্যাটে। শর্টার ফরম্যাট দিয়ে তো কাওকে সেরা দাবী করছি না আমরা, তাই না? তখন যুক্তির থেকেও বড় আক্রমন যেটা করা হয় সেটা, 'তুমি কী সেকালের খেলাগুলো দেখেছো? বুঝবে কিভাবে?' ওখানেই ক্ষ্যান্ত দিতে হয়। আমার মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে সেই সত্তর-আশি এমনকী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যখন নামেমাত্র দু'-এক ঘরে টেলিভিশন পৌছেছে, ডিশ বলতে কিছুর অস্তিত্বই নেই, তখন তারা কিভাবে দিনের পর দিন মার্শাল-রিচার্ডস-চ্যাপেল-হেইন্সদের দেখেছেন? নাকি শুধু রেডিও শুনেই?

১৯৯৫ থেকে ২০১৩। দেড় যুগ ধরে সমানতালে ব্যাটিং বোলিং দু'টাই একসাথে চালিয়ে নেওয়া সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটা ছিলো। বর্তমান টেস্ট ক্রিকেটে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অপ্রতুলতা আর স্থায়িত্ব দেখে সহজেই অনুমান করা যায়, জ্যাক ক্যালিসের প্রতিদ্বন্দ্বীই আর নিকট ভবিষ্যতে পাচ্ছে না ক্রিকেটবিশ্ব। হয়তো আর কখনোই না। অনিল কুম্বলে একবার বলেছিলেন, তার দেখা স্পিনে সেরা খেলোয়াড় জ্যাক ক্যালিস। ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা বলেছিলেন, 'If I have to put anyone to bat for my life, it'll be Kallis or Dravid.'

ক্যালিসের আরেকটা বিশেষত্বের কথা না লিখলে স্রেফ তার সাথে অন্যায় করা হবে। টেন্ডুলকারের পর টেস্ট ক্রিকেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে মাত্র আর ৯০ রান লাগতো। ক্যাচের সংখ্যাতে রাহুল দ্রাবিড়ের ২১০ ক্যাচের বিশ্ব রেকর্ডটা ভাঙতে লাগতো মাত্র ১০ টা ক্যাচ। শচীন যেখানে ২০০ তম টেস্ট খেলে শেষ করবে বলে আলাদা করে একটা বাই-ল্যাটারাল সিরিজ আয়োজন করলো বিসিসিআই সেখানে ক্যালিস এতো আকর্ষণীয় সব রেকর্ড বিনা মোহেই ছেড়ে দিলেন। আরও বছর দুই-আড়াই খেললে হয়তো শচীনকেই ছাড়িয়ে যেতে পারতেন টেস্টে। ২৬৩২ রান আর ৬ টা সেঞ্চুরীই তো পিছনে ছিলো! লোকটার এক বিন্দু আকর্ষণ নেই রেকর্ডের প্রতি!

সাকিব আল হাসান তার কলামে একটা কথা দু'বার লিখেছে, ক্যালিস যদি ভারতীয় উপমহাদেশে জন্মাতো তাহলে শচীন টেন্ডুলকারের মত বিদায় সংবর্ধনা পেতো। সেটা পায়নি। টিম মেটরা একবার ঘাড়ে তুলে কয়েক মিনিট ল্যাপ দিলেন আর স্মিথ-স্টেইন-প্লেসিসরা টি-শার্টের সামনে ক্যালিসের ছবি আর পিছনে 'অনলি ক্রিকেটার উইথ টেন থাউজেন্ট রানস অ্যান্ড টু হানড্রেড উইকেটস' নিয়ে পুরষ্কার বিতরণীতে আসলো আর ক্যালিস মিনিট দুয়েক পরিবার, প্রাক্তন কোচ, ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে ধন্যবাদ দিলেন, এইতো। এইটুকুই। ক্রিকেট উপমহাদেশে 'রিলিজিয়ন', দক্ষিণ আফ্রিকায় না। তাই শচীনের কাছাকাছি কিছু হবে সেটা আশা করিনি। তাই বলে একটা আলাদা স্মারক ট্রফি পর্যন্ত বরাদ্দ হলো না বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারের জন্যে!

রিকি পন্টিং চলে গেছেন ২০১৩ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে। ২০১৩ দেখলো বিশ্বের সর্বকালের সেরা দুই ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার আর জ্যাক ক্যালিসের বিদায়। ১৩ টাকে আনলাকি না বলে উপায় কী?

লাস্ট বাট নট লিস্ট, ক্রিকেটের 'সেরা' প্রজন্মটা আমরাই দেখলাম। আমাদের সময়ে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারকে দেখলাম, সর্বকালের সেরা স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরণ আর শেন ওয়ার্নকে দেখলাম। বিতর্ক সাপেক্ষে সর্বকালের সেরা পেসার ওয়াসিম আকরামকেও দেখলাম। এবং সর্বশেষ দেখলাম সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারকে বিদায় নিতে। গর্বিত হওয়ার মত বিশেষ কিছু নি:সন্দেহে।



শচীন টেন্ডুলকার সারাজীবন বলে এসেছেন, বিশ্বকাপই তার একমাত্র অপূর্ণতা। সর্বশেষ বিশ্বকাপ টেন্ডুলকারকে পূর্ণতা দিয়েছে। ক্রিকেট টেন্ডুলকারের সাথে বেঈমানী করেনি। ক্যালিসও বলেছেন, বিশ্বকাপই তার একমাত্র অপূর্ণতা। ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলে অধরা বিশ্বকাপটা জিতেই ক্যালিস বিদায় নিতে চান ক্রিকেট থেকে। শুধুমাত্র জ্যাক ক্যালিসের জন্যেই ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও সমর্থন দেবো। আশাকরি ক্রিকেট সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারের সাথে বেঈমানী করবে না।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×