চমকে দেয়ার মত প্রশ্ন বটে! যারা চাষাবাসের কোন খবরই রাখেন না শুধু তারাই নন বরং ছোট ছেলে মেয়েরাও জানে গরু ঘাস খায়। তবে যাই হোক চট করে জবাব না দেয়াই ভাল । কারন জাবর কাটে যেসব প্রাণী , অর্থাৎ গরুও , সত্যি সত্যি তৃণ ভোজী প্রাণী বলা চলে না ।
আমরা জানি যে উদ্ভিদ শরীরে আছে প্রচুর সেলুলোজ , দেহ কোষের দেয়ালের মাল মশলা হিসেবে এই সেলুলজের প্রয়োজন। এই সেলুলোজ থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহের জন্য চাই একটা এনজাইম যা ওই সেলুলোজ কে ভাংতে পারে। অবাক করা বিষয় হল এই যে গরুর অন্ত্রের গ্রন্থি গুলি এই এনজাইম তৈরি করে না। সাধারন ভাবে কোন প্রাণী যারা কাঠ বা সেলুলোজ ছাড়া কিছুই খায় না ( হরিন থেকে গরু , কাঠের ঘুন পোকা ) তাদের কারুর দেহেই এই এনজাইমটা নেই । যেসব প্রাণী কঠিন উদ্ভিজ্জ পদার্থ খাবার হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা সবাই এই খাদ্য হজম করতে পারে তাদের পৌষ্টিক নালির মধ্যে বসবাস কারি লক্ষ লক্ষ জীব কনার সাহায্যে । এই যে অসংখ্য জীব কনার বসতি রয়েছে জীব জন্তুর পেটের ভিতর এদের কার্যকলাপ খুব ভাল করে চর্চা করা হয়েছে গরুদের ক্ষেত্রে । এই জীবাণুগুলি বাস করে পাকস্থলীর একটা বিশেষ অংশে যার নাম রুমেন (Rumen) বা প্রথম পাকস্থলি।এখানে প্রতি ঘন সেন্টিমিটার অঞ্চলে দেড়শ থেকে দুইশ কোটি জীবাণু থাকে।গরুর পাকস্থলী তে ঘাস এসে পৌঁছালে এরা সেগুলি খেতে শুরু করে।এই বিনা পয়সার ভোজ তারা বেশ চেটেপুটে খেয়ে মোটা হয়ে বংশ বৃদ্ধি করে হয়ে যায় বহু গুন। ঘাসের সেলুলোজ পরিনত হয় স্টার্চে আর গ্লাইকজেন সদৃশ পদার্থে জিবানুদের শরীর যা দিয়ে গড়ে ওঠে তাই, উদ্ভিজ প্রোটিন পরিনত হয় জীবাণু দেহজ প্রোটিনে।
দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করতে ব্যাস্ত এই জিবানুদের ঘাঁটির পরিনিতি বেশ সহজেই আন্দাজ করা যায়। তারা পাকস্থলীর পরবর্তী অংশ গুলিতে এবং অন্ত্রের মধ্যে অতি দ্রুত হজম হয়ে যায় আর তাদের দারা সৃষ্ট গ্লুকজ , এমাইনো এসিড আরও কয়েকটি পদার্থ রক্তে মিশে যায় বিনা পরিবর্তনে ।এই জীবাণু গুলই তাহলে পুষ্টির প্রধান উৎস। এই কারনে গরুকে তৃণ ভোজী বলা ঠিক হবেনা, এরা আসলে জীবাণু ভোজী।
{হাত ব্যাথা হয়ে গেছে আর কিছু লিখলাম না এই বিষয়ে }
সুত্র:
রাশিয়া হতে প্রকাশিত ডঃ ব.সেরগেইয়েভ রচিত "ফিজিওলজি ফর এভরিওয়ান"
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:০৯