somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“আড়ালে”

১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নীরার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় দুই মাসের মত।এরেঞ্জ ম্যারেজ তাই এখনো বুঝে উঠতে পারিনি ওকে। তবে আমি খুব সহজেই যেকোন মেয়েকে বুঝে যাই , কিম্বা অন্তত পড়ে ফেলতে পারি।কিন্তু নীরার ব্যাপারে তা ঘটছে না। আমি কোনভাবেই নীরাকে বুঝতে পারছিনা। নীরাকে যতই বুঝে উঠবার চেষ্টা করি ততই সে আরো দূর্বোদ্ধ হয়ে ওঠে আমার কাছে। সহজ সরল একটা সাদামাটা ভাব একটা অন্য রকম সরলতা আছে নীরার মাঝে। এই সরলতাটাই আরো বেশী ওর মনের ভেতরের জগৎটাকে একটা পর্দার মত করে ঢেকে রেখেছে।ওর সাথে যত সহজ হতে চাই ততই কেন যেন কি এক জটিলতা ঘিরে ধরে।এতদিন হয়ে গেলো এখনো সে আমাকে আপনি বলে। অবশ্য এখনো আমাদের মাঝে তুমিতে আসবার মত বোঝা পোড়া তৈরি হয়নি।কারণ বিয়ে তিন মাস হলেও আমাদের সংসারের গোড়া পত্তন হলো মাত্র সপ্তাহ খানেক হলো।দুজনের দূরত্বটা তাই এখনো অনেকটাই রয়ে গিয়েছে।

অফিস থেকে ফিরেই নিরার মুচকি হাসি আর আর উচ্ছল চাহুনিতে মনের ক্লান্তি দূর হয় নিমিশেই।কিন্তু প্রায়ই কেন যেন বিষন্ন ও লাগে।কারণ নিরার হাসির মধ্যে নিরুর ছায়া চলে আসে।সেই ভবঘুরে জীবন , নিরুর সাথে শত স্মৃতি যেন কয়েক মূহুর্তের জন্য মনে ভেসে উঠে। আনমনা হয়ে যাই। হঠাৎ নিরুর কথা মনে পড়ে যাওয়ায় কফি খেতে ইচ্ছে হলো।আমাকে অবাক করে দিয়ে নিরা দুকাপ কফি নিয়ে হাজির!বললো তাড়াতড়ি ফ্রেশ হয়ে আসেন এক সাথে কফি খাবো। আপনাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে।নিরুর সাথে শেষ কবে কোল্ড কফি খেয়েছিলাম মনে নেই।ফ্রেশ হয়ে এসে নিরার হাতের কোল্ড কফি আর ঝাল-পিঠা খেতে খেতে নিরার দিকে অপলক তাকিয়ে আছি।নিরা চমকে উঠে লজ্জায় লাল হয়ে চলে গেলো।

গভীর রাত।পূর্ণিমা।হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো।জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে নীরার মুখে পড়েছে।অপূর্ব লাগছে শ্যামবরণ মুখখানি।চুল দিয়ে মুখের কিছু অংশ ঢেকে আছে।সরিয়ে দিতেই নিরা চোখ মেললো।
কখন উঠেছেন?
এইতো খানিক আগেই।
কোন স্বপ্ন টপ্ন দেখনি তো?
নাহ এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
ওহ আচ্ছা।
নীরা!
জ্বী বলেন।
তুমি আমাকে আপনি করে আর বলবে না।
ঠিক আছে।চেষ্টা করবো।
ছাদে যাবে? জ্যোৎস্না দেখবো।আজ শেষ তিথিতে লাল চাঁদ দেখা যাবে।
চলেন যাই।
আবারো?একবার বলোনা , “চলো যাই”।
কিছু না বলেই নীরা চলে গেলো।রান্না ঘর থেকে এক কাপ গরম কফি বানিয়ে ঢেকে নিয়ে এলো ।

আমরা দুজনে ছাদে।পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুজনে এক কাপে কফি পান করছি,এক জায়গাতেই ঠোট লাগিয়ে।আর জ্যোৎস্না , মুক্ত আকাশে মেঘেদের উড়ে চলা , ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করছি।নীরা পরম নির্ভরতায় আমার বুকে পিঠ ঠেকিয়ে কাছে চলে এলো।এতটা কাছে এর চেয়ে কাছে হয়তো আর আসা যায় না।আমিও ওকে জড়িয়ে ধরে জ্যোৎস্নায় ডুবে গেলাম।ওর চুল থেকে বেলী ফুলের গন্ধ আসছে।একটা আলাদা প্রশান্তি বুকের ভেতরে অনুভব করছি।আমি নীরা নামের মেয়েটাকে ভালোবাসতে শুরু করেছি।ঠিক যে ভাবে নিরুকে মনে ঠাই দিয়ে রেখেছি সেভাবেই হয়তো।নীরা আমার থেকে দিন দিন ভালোবাসা আদায় করে নিচ্ছে।গভীর থেকে গভীরে গেথে যাচ্ছে সেই ভালোবাসা।অথচ নীরাকে আমি বুঝতে পারছিনা। নীরা থেকে যাচ্ছে এত কাছে থেকেও অন্য এক আড়ালে।ভালোবাসা হয়তো এভাবেই পরিপুর্ণতা পায়। তাই নীরাকে বোঝার চেষ্টা বাদ দিয়েছি।শুধু ওকে খেয়াল করছি হয়তো এভাবেই একদিন নীরা কেউ পড়ে ফেলবো। আর ও আমার মনের ভেতরের খুব চেনা মানুষ হয়ে উঠবে......

১৫-০৮-২০২১ রাতঃ ৩.৩৫ মিনিট।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:৪৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×