এক
হারিয়ে এসেছি প্রথম রুমাল, ছকবর্গ কাগজ, পাশাপাশি হাঁটা শ্বেত বিড়াল, তোমার তরুণ চুলের ঘ্রাণ আর শরীরে জড়িয়ে নিয়েছি অনিচ্ছার জ্বর। প্রচণ্ড তৃষ্ণায় কাতর আঙুল। স্পর্শ থেকে দূরে ছায়া নিয়ে হাঁটি। স্মৃতিতে চিরতরে হারানো স্নিগ্ধ সময়।
শহরে শীত নেমে এলে গ্রামের দিকে তাকিয়ে দেখি হলুদ সর্ষে খেত। উভচর মন সিদ্ধান্তহীন, ভাসমান।
দুই
আমি বলি, জীবন কখনো কখনো নিঃশেষে বিভাজ্য নয়। হিজল বলে, জীবন কখনোই নিঃশেষে বিভাজ্য নয়। আমার তখন তৃপ্তমানুষের মুখের কথা স্মরণ হয়। মনে হয়, কোন এক বিকেলে পৃথিবীটা গোল অনুভব করে আমি ভেবেছিলাম ভাগফল মিলে গেছে। যদি ভাজকের মানটা লিখতে ভুল না করতাম, তবে হয়তো মিলে যাওয়া ভাগফল আমাকে তৃপ্ত করতে পারতো। কেউ না কেউ ভাগফল মিলিয়ে নিচ্ছে, সে আমি না হই।
ভাগফল মিলে গেলে জীবনকে নিঃশেষে বিভাজ্য মনে হয়, যখন মিলে না তখন মনে হয় কিছু ভাগশেষে রয়ে গেছে প্রাপ্তির বাইরে, দূরে।
তিন
বিষয়টায় প্রথমে আমরা নিমজ্জিত হই, তারপর ভেসে উঠি
দীর্ঘদিন পর মনে হয়, ওহ একটা বিষয় ছিলো বটে!
চার
তাঁরা এবং আমি, আমরা। আমরা মোটর সাইকেলে আর মোটর সাইকেল গতিশীল পথে। দাদা বলেন, দ্যাখো মেঘেরা চোখ আঁকে, তিনি আকাশ দেখেন আর আমি পথ দেখি। পথে ছড়িয়ে থাকা ধূলোয় পায়ের চিহ্ন। চিহ্নরা বুক জুড়ে হাহাকার। আমি বলি, আকাশ ও পথ চিহ্ন ধারণ করে। তারপর আমরা একটা গোলাপী আভার পাথরের পাহাড়ে দাঁড়াই। নীচে নীল জল। তিনি গাছে চড়েন। দাদা মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলেন। আমি দূরে কাউকে হারিয়ে যেতে দেখি। আমরাও পথ হারাতে শিখি। আমরা ভুল পথে তার বাড়ি যাই। সে তখন দুপুরের রোদে খড়ের চালে শুকিয়ে নিচ্ছে মাসকলাইয়ের বড়ি। আমি তার চিকন চুলে বনফুল ঝুলতে দেখেছি। দাদা বলেন, হ্যালুসিনেশন, এসব কিছুই হয়নি। তুমি টিলায় চড়তে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলে।
আমি সত্যের কাছাকাছি মিথ্যে জীবনে বেঁচে থাকি।
পাঁচ
তোমার সারা শরীরে লেবু বাগান
স্পর্শ বুনে দেওয়া রাত
সেখানে দারুচিনিবন গভীর প্রশান্তি
তোমার ঠোঁটের স্পর্শে আচানক মৃত্যু আমাকে দহন করে বলে বোধ হয়