somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নফ্‌স ও রূহের পার্থক্য (পর্ব-২)

১২ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব-১ এখা্নে
কোরান-এর ৭৮ নম্বর সূরা নাবা-র ৩৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ঃ
ইয়াওমা(সেই দিনটিতে) ইয়াকুমুর(দাঁড়াইবে) রূহ(রূহ) ওয়াল্‌(এবং) মালাইকাতু(ফেরেশতারা) সাফ্‌ফাল্‌লা(সারিবদ্ধভাবে)। অর্থাৎ, "সেই দিনটিতে রূহ্‌ এবং ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে"।
এই আয়াতে একটি বিষয় লক্ষ করার মতো আর তা হলো, রুহ্‌কেও
দাঁড়াবার কথাটি বলা হয়েছে এবং রূহের সঙ্গে ফেরেশতাদেরও সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর কথাটি উল্ল্যেখ করা হয়েছে। এখানে নফ্‌সের দাঁড়াবার কথাটি বলা হয় নাই। অথচ নফ্‌সেরই দাঁড়াবার কথা। যে-সাধকের নফ্‌সটি খান্নাসমুক্ত হয়ে পবিত্র হয়েছে সেই নফ্‌সটি তখন রূহের মহাশক্তির মাঝে সম্পূর্নরূপে ডুবে যায়। তখন মনে হয় নফ্‌স দাড়িয়ে আছে ঃ আসলে রূহের মহাশক্তির মাঝে অবস্থান করছে। কোরান-এর অন্যত্র বলা হয়েছে যে, "আপনি ছুড়ে মারেন নি, বরং আমি(আল্লাহ্‌) স্বয়ং ছুড়ে মেরেছি"। সাধারন মানুষ হতে বিজ্ঞলোকেরা পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছে যে, মহানবী হাত দিয়ে ছুড়ে মারছেন, অথচ আল্লাহ্‌ অস্বীকার করে বলছেন যে, ওটা আপনার হাত নয়, বরং ওটা আমার হাত। সেই রকম খান্নাসমুক্ত রূহ্‌-এর জাগ্রত পরিপুর্নতায় নফ্‌সটি ডুবে থাকলে রূহের দাঁড়ানোর কথাটি বলা একান্ত স্বাভাবিক। এবং ফেরেশতাদের দাঁড়ানোর বিষয়টি একেবারে স্বাভাবিক একটি বিষয়। কারন ফেরেশতারা নফ্‌স ও রূহ্‌ বর্জিত আল্লাহ্‌র সেফাতি নূরের তৈরি কুদরতি রোবট। কুদরতি রোবট এজন্যই বলা হলো যে ফেরেশতাদের ভাল এবং মন্দ কিছুই করার ক্ষমতা নাই, বরং আল্লাহ্‌ যে-হুকুমটি করবে উহাই পালন করতে বাধ্য থাকবে। সতরাং সারিবদ্ধভাবে ফেরেশতারাও দাঁড়াবে ইহাতে অবাক হবার কিছুই নাই।

জাগ্রত রূহের অধিকারী সাধকেরা আকৃতিতে মানব হলেও মানবের স্বাভাবিক ভাব ভঙ্গি হতে সম্পুর্ন বর্জিত অবস্থায় অবস্থান করে। এই জাতীয় সাধকদের কে বান্দানেওয়াজ বলা হয়। আবার কখনো ওয়াজহুল্লাহ্‌ বলা হয়। আবার কখনো সারাপা বলা হয়। আবার কখনো নর রূপে নারায়ণ বলা হয়ে থাকে। কারন এই সাধকেরাই আল্লাহ্‌র রূপটি ধারন করে আছেন। এই জাতীয় অনেক সাধকেরা এক ও অভিন্ন। কারন সব সাধকই একই নূরের অধিকারী। এজন্য বিশেষভাবে আরেকটু লক্ষ করার মত বিষয়টি হলো,রূহ্‌ শব্দটি কোরানুল হাকিম-এ একটি বারের তরেও বহুবচনে ব্যবহার করা হয় নাই। ইহারা সবাই মিলে "আমরা" রূপটি ধারন করে। আসলে এই "আমরা"ই এক ও অভিন্ন। এইখানে এসেই শেরেকের হয় অবসান। যদিও সাধারন মানুষের পক্ষে এই বিষয়টি বুঝা একটু কস্টকর বৈ কি।
কোরান-এ "আমরা" নামক বহুবচনের ব্যবহারটিতে একটি বিস্ময়কর সৌন্দর্য ফোটে উঠেছে। এই বিস্ময়কর কোরান-এর সৌন্দর্যটি বুঝতে না পারলে তওহিদের আসল এবং রহস্যময় রূপটি উপলব্ধি করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
আবার কোরান-এর অনেক অনুবাদক ফেরেশতাদের দাঁড়ানোর কথাটি মেনে নেয়, কিন্তু তার পরেই রূহ্‌কে জিব্রাইল অনুবাদ করে। জিব্রাইলও যে একজন ফেরেশতা ইহা তারা জেনেও না জানার ভান করে। আল্লাহ্‌ কি রূহে্‌র স্থলে জিব্রাইল নামক বিশেষ ফেরেশতাটির নাম উল্ল্যেখ করতে পারতেন না? কিন্তু কোরান-এ রূহ্‌ শব্দটি ব্যবহার করলে কি হবে,অনুবাদে অনুবাদক রুহ্‌কে জিব্রাইল ফেরেশতা অনুবাদ করে ফেলেন। কেন এই রকম করে বলে প্রশ্ন করলে একবোঝা গোজামিল-দেওয়া কথা শুনিয়ে দেবেন,তবু নিজের ভুলটি মোটেই স্বীকার করে নেবেন না। অথবা 'বুঝতে পারলাম না' বলে সৎ সাহস নিয়ে ঘোষনাও করে না। এখানে কোরান-এর কত শব্দের যে কত রকম বিকৃত অর্থের দ্বারা ভ্রে রাখে তারই বা প্রতিবাদ কে করে? এই রকম অনুবাদকদেরকে জ্ঞানপাপী বলতে চাই না,কিন্তু এরকম করাটি বিভ্রান্তি ছড়ায় না? এই রকম বিভ্রান্তির যাতাকলে পড়ে কত সহজ-সরল মানুষেরা যে বিভ্রান্ত হচ্ছেন তারই বা খবর কে রাখেন? একটিবারের তরে চিন্তা করে দেখুন তূ যে, প্রথমেই বলা হয়েছে ফেরেশতাগন এবং তার পরে বলা হয়েছে রূহ্‌, আর সেই রূহে্‌র অনুবাদটি করা হলো জিব্রাইল নামক ফেরেশতা। অনুবাদক কি বেমালুম ভুলে গেছেন যে জিব্রাইল ফেরেশতার রূহ্‌ও নাই এবং নফ্‌সও নাই? যেখানে জিব্রাইল ফেরেশতার রূহ্‌ থাকার প্রশ্নই ওঠে না সেখানে রূহ্‌কে কেমন করে জিব্রাইল ফেরেশতা বলে অনুবাদ করা হয়। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×