somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নফ্‌স ও রূহের পার্থক্য (পর্ব-১)

১২ ই অক্টোবর, ২০১১ সকাল ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নফস শব্দটি দিয়ে প্রানকেই বোঝনো হয়েছে। যদিও হিন্দুশাস্ত্রে নফ্‌স্ককে আত্মাই বলা হয়েছে তবে জীবের আত্মা বলা হয়েছে। এই নফ্‌স তথা প্রান কেবল মাত্র জিন এবং মানুষের মধ্যেই দেওয়া হয়নি, বরং স্থলচর,জলচর সর্বপ্রকার অতি ক্ষু্দ্র হতে অতি বড় জীব- সবারই নফ্‌স তথা প্রান আছে।
আরেকটু প্রশ্ন থেকে যায় যে, বৃক্ষ হতে তরু-লতারও প্রান আছে। এবং যে কঠিন ছোট-ছোট পাথর গুলো আস্তে-আস্তে প্রকান্ড পাথরে পরিনত হয় উহাতে কি প্রান আছে? নাকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনা-আপনি বেড়ে চলে? এই প্রশ্নটির উত্তর জীববিজ্ঞানীরাই ভাল দিতে পারবেন। তবে আল্লাহর সৃষ্টিরাজ্যের মাঝে যাদেরকে প্রান দেওয়া হইছে তারা সবাই তৌহিদে বাস করে - একমাত্র জিন এবং মানুষ ছাড়া, কারন জিন এবং মানুষকে সীমিত ইচ্ছাশক্তিটি দান করা হয়েছে। তথা ভাল-মন্দ বিচার-বিবেচনা করার সীমিত স্বাধীন ক্ষমতাটি আল্লাহ কর্তিক দান করা হয়েছে। অন্যথায় আমাদের জানা মতে আর কোন জীবকেই এই রকম সীমিত স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিটি দেওয়া হয় নাই। স্থলচর এবং জলচর যত প্রকার ছোট বড় অসংখ্য প্রানী আছে তাদের কার শাহরগের তথা জীবন-রগের নিকটে আল্লাহর অবস্থান করার কথাটি কোরান-এ পাওয়া যায় না, এমন কি আল্লাহ তার সৃষ্টিজগতের জড় প্রদার্থের সঙ্গে অবস্থান করান কথাটিও পাওয়া যায় না। অংকের হিসাবের চেয়েও অনেক বেশি হিসাব করে আল্লাহ কোরান-এর প্রতিটি কথা চয়ন করেছেন। কিন্তু আমাদের বোঝবার সূক্ষ্ম দুর্বলতাকে প্রকাশ না করে গোঁজামিলের আশ্রয় নেই এবং নিতে হয়। যেমন রূহ শব্দটির পরিভাষা ইংরেজিতে পাওয়া যায় না। তাই না বুঝে 'স্পিরিট' শব্দটি ব্যবহার করি। রূহের প্রতি শব্দ যদিও আমরা পাইনা তবে হিন্দুশাস্ত্রে এই রূহ শব্দটিকে পরমাত্মা বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে পরম র্থটি হল আল্লাহ এবং আল্লাহর আত্মা বলে বুঝানো হয়েছে। অবশ্য করান-এ রূহকে বলা হয়েছে "কুলুর রূহ মিন্‌ আমরি রাব্বি"- অর্থাৎ
"রূহ আমার রবেরই আদেশ হইতে আগত"।
জীবের জীবন আছে তথা প্রান আছে তথা নফস্‌ আছে- তাহলে এই জীবন এই প্রান এবং নফস্‌ কে কেমন করে আত্মা বলে ঘোষনা করি? সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে ইহাও একটি সাংঘর্ষিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তবে বুঝতে এবং বুঝাতে কোন উপায় থাকে না বলেই এই সাংঘর্ষিক বিষয়টি তোলে ধরতে হয়। কেউ জেনে-শুনে তোলে ধরেন আবার কেউ না জেনে তোলে ধরেন। বিষয়টি ভুল হলেও দুষ দেওয়া যায় না।কারন জ্ঞানের অভবেই এরকমটি হয় বলে মনে করি। জীবের প্রান আছে কিন্তু আত্মা নাই - একমাত্র জিনের এবং মানুষের শাহ্‌রগের তথা জীবন-রগের নিকটে অতিব সূক্ষ্মরূপে অবস্থান করে, যাহা টের পাবার কোন উপায় থাকে না সেই পর্যন্ত, যে পর্যন্ত না একজন মানুষ কামেল গুরু অথবা কামেল গুরুর খেলাফতপ্রাপ্ত কোন খলিফার নির্দেশে নির্জন স্থানে একাকী ধ্যানসাধনায় মগ্ন থাকে। কারন রুহ্‌ বিষয়টি কথার দ্বারা বুঝান যায় না। তবে অতি সামান্য একটি ধারনার ছায়া দেয়া যায়। কোরান-এর এই ছোট্র আয়াতটি দিকে একটু বিশেষ ভাবে ল্কখ্য করে দেখুন যে, "কুলুর নফ্‌সি মিন আম্‌রি রাব্বি" বলা হয়নি।কেন বলা হয়নি? কারন আল্লাহ্‌র কোন নফ্‌স নাই।নফ্‌স যাদের আছে তাদের অবশ্যই একটি বার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। কিন্তু যেহেতু রূহ্‌ রবেরই আদেশ বলা হয়েছে সেই-হেতু রূহ্‌ জন্ম-মৃত্যুর বৃত্তে তথা ব্লয়ে অবস্থান করে না। যেহেতু রবের আদেশটি রুহ্‌ এবং এই রূহ্‌ নামক আদেশটি আল্লাহ্‌র সমগ্র সৃষ্টিরাজ্যের মধ্যে (অবশ্য আমাদের জানা মতে, কারন অন্য গ্রহের যদি এই জাতীয় জীব থেকে থাকে!) কেবল মাত্র দুটি জীবের সঙ্গে তথা দুইটি নফ্‌সের কাছাকাছি অতীব সূক্ষ্মরূপে অবস্থান করে। সেই দুটি জীবের নাম হল ঃ একটি জিন এবং অপরটি মানুষ। যেহেতু আমাদের কাজ-কারবার মা্নুষদের নিয়েই সেই-হেতু ইচ্ছা করেই জিন জাতিকে এড়িয়ে যাই। তাছড়া কোরান এই মানুষকেই সৃস্টির শ্রেষ্টজীব (ক্রাউন অব দ্য ক্রিয়েশন) বলে ঘোষনা করেছেন। এরপরেও আরো কিছু কথা থাকে আর সেই কথাটি হলো, শয়তানকেও আল্লাহ্‌র সৃস্টিরাজ্যের মধ্যে জিন এবং মানুষের অন্তরে অবস্থান করার আদেশটি আল্লাহ্‌ কর্তিক দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে ভাল করে মনে রাখতে হবে যে, জিন এবং মানুষের অন্তর বিহনে শয়তানকে আর কোথাও থাকার অনুমতি দেয়া হয় নাই। সুতরাং শয়তানের যত বাহাদুরি নর্তন-কুর্তন সব কিছু জিন এবং মানুষের অন্তরের মধ্যেই অবস্থান করে। জাগতিক সভ্যতা বিকাশ ঘটানোর পেছনে এবং ধংসের বিভিষিকা ছড়ানোর পেছনে শয়তানের অবদান কতটুকু তা আমাদের জানা নাই। এই শয়তান আবার চারটি রূপ ধারন করতে পারে এবং এই চার রূপের যে কোন রূপ ধারন করে মানুষকে সঠিক পথ হতে সরিয়ে দিয়ে ভ্রান্ত পথে ফেলে দেয়। সেই চারটি রূপ হলো ঃ এক. শয়তান দুই. ইবলিশ ৩. মরদুদ এবং চার. খান্নাস। যেহেতু "মিন শার্‌রিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস" তথা খান্নাসের অপকারীতা হতে আশ্রয় চাওয়ার কথাটি কোরান-এ বলা হয়েছে তাই পবিত্র নফ্‌স তথা প্রান তথা জীবনের সঙ্গে একত্রে বাস করে নফ্‌সটিকে খান্নাস রূপী শয়তান মোহ-মায়ার জালে আটকিয়ে রাখে। এই মোহ মায়ার জালটিকে ছিন্ন করতে পারলেই নফ্‌সের নিকট যে রূহ্‌ অতিব সূক্ষ্ম রূপে অবস্থান করছে উহা তখন পরিপূর্নরূপে ধারন করতে থাকে। সাধকেরা একটানা ধ্যানসাধনা করার পর আল্লাহ্‌র বিশেষ রহমত প্রাপ্ত হলেই রূহের অতীব সূক্ষ্ম রূপটিকে পরিপূর্নরূপে দেখতে পেয়ে অবাক বিস্ময়ে হতভম্ব খেয়ে যায়। এই পরিপূর্নতার প্রশ্নে সাধকদের নিকট রূহের দর্শনে ফানা-বাকার এমন রহস্যময় লীলা খেলা চলে যে, সাধারন মানুষতো দূরে থাক ,বরং বড়-বড় বিদ্বান পন্ডিতেরাও এদের বিষয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। রূহের পরিপূর্ন জাগ্রত অবস্থানটি যে-সাধকের মধ্যে অবস্থান করে তিনিই বান্দানেওয়াজ তথা আল্লাহ্‌ত বিশেষ রহমত প্রাপ্ত বান্দা। তিনিই রূহুল্লাহ্‌ তথা পরিপূর্ন রূহের অধিকারী। তিনিই ওয়াজহুল্লাহ্‌ তথা তিনিই আল্লাহ্‌র চেহারা। তিনিই নর রূপে নারায়ন তথা নরনারায়ন। আল্লহ্‌র এই দানটি একমাত্র শক্তিশালী রাত্রে দান করা হয়। ইহা কোন নৈসর্গিক রাত্রি নহে, বরং আধ্যাত্মিক রাত্রি। নফ্‌স এবং খান্নাস জোড়া হলে এই শক্তিশালী রাত্রির সন্ধান পাওয়া যায় না। তাই খান্নাসকে তারিয়ে দিয়ে সাধক যখন বেজোড় রাত্রিতে অবস্থান করে তখনই সেই রাত্রিটি হয় শক্তিশালী রাত্রি এবং এই শক্তিশালী রাত্রেই আল্লাহ্‌ 'রহিম'-রূপটি ধারন করে (রহমান-রূপে নয় কারন রহমান-রূপে সাধারন দান) দান করন। তাই আল্লাহ্‌ এখানে গফুরুর রহিম, কিন্তু গফুরুর রহমান নন, কারন কোরান-এর একটি স্থানেও গফুরুর রহমান ব্যবহৃত হয়নি।

কোরান-এর ৯৭ নম্বর সূরা কদর-এর ৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ
''তানাজ্জালুল মালাইকাতু ওয়ার্‌ রূহ্‌ ফিহা বিইজনি রাব্‌বিহিম মিন্‌ কুললি আম্‌রিন'- অর্থাৎ, তাহার মধ্যে (সেই রাত্রিতে) অবতরন করিয়াছে ফেরেশতাগন এবং রূহ্‌ উহার মধ্যে তাহাদের রবের অনুমতিতে প্রত্যেক আদেশ হইতে"

সাধকেরা যখন বিরাট ধৈর্যধারন করে একটানা ধ্যানসাধনা করতে থাকেন (মহানবীর হেরাগুহায় পনের বছর ধ্যানসাধনাটি মনে করে) তখন সাধকের মধ্যে অবস্থান করা রব তথা প্রতিপালকের প্রত্যেক আদেশ হতে ফেরেশতাগন এবং রূহ্‌ অবতরন করে। এই ফেরেশতাগন এবং রূহ্‌ শক্তিশালী বেজোড় রাত্রিতে অবতরন করে, কারন জোর রাত্রিতে সাধকের সঙ্গে তখনও খান্নাসরূপী শয়তানটির সামান্য অবস্থানেও দুইজন হয়ে যায় এবং এই দুইজন হওয়াকেই জোর বলা হয়। এবং দিনে না বলে রাত্রিতে কেন বলা হলো? দিনের আলোতে সবকিছু যেমন পরিস্কার দেখা যায় তেমনি রাত্রির অন্ধকার সবকিছু ঢেকে দেয়। এই রাত্রির অন্ধকারে সবকিছু ঢেকে দেবার কথাটি দিয়ে বুঝানো হয়েছে যে, দর্শনীয় সবরকম মোহমায়াগুলো আল্লাহ্‌র অনুমতিতে ঢেকে দেয়া হয়। রাতের আধার যে রকম সবকিছু ঢেকে দেয় সে রকম সাধকের ভেতরে অবস্থান করা লোভ-মোহ মায়া গুলো আল্লাহ্‌র অনুমতিতে ঢেকে দেয়া হয় এবং যখনি ঢেকে দেয়া হয় তখনি ফেরেশতা এবং রূহ্‌ অবতরন করে। এই ফেরেশতা এবং রূহ্‌ যে রাতেই আল্লাহ্‌র অনুমতিতে অবতরন করে সেই রাত্রিকে বেজোড় এবং শক্তিশালী রাত্রি বলে আখ্যায়িত করা হয়। হাকিকতের সঙ্গে মেজাজি কথা গুলোর কি অপূর্ব মিলন ঘটানো হয়েছে কোরানুল হাকিমে-এ। এখানে একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো যে ফেরেশতাগন এবং নফ্‌স নাজেল করার কথাটি বলা হয়নি। প্রথমে ফেরেশতাগন এবং পরে রূহের কথাটি বলা হয়েছে,কারন ফেরেশতাদের নফ্‌সও নাই রূহ্‌ও নাই এবং থাকার প্রশ্নই উঠতে পারে না, কারন ফেরেশতারা যত শক্তির অধিকারী হোক না কেন তাদের সৃস্টির শ্রেষ্ঠ জীব মোটেও বলা হয়নি বরং ফেরেশতাদের আমরা সেবকের ভূমিকায় দেখতে পাই, মওলার ভূমিকায় নয়। ফেরেশতারা সেফাতি নূরের তৈরি তাই ফেরেশতারা সৃস্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত তথা সিদ্‌রাতুল মুনতাহা পর্যন্ত যাবার অনুমতি পেয়েছে। অনেক অনুবাদক না-বুঝে, না-শুনে রূহ্‌কে জিব্রাইল ফেরেশতা বলে অনুবাদ করেছেন। সহজ-সরল পাঠকের এরকম খাস্তা অনুবাদ পড়ে-পড়ে আস্তা থাকার কথা নয় এবং তখনই এক ইসলামের মধ্যে ফেরকাবাজি শুরু হয়ে যায়। আত্মকেন্দ্রিকতার অন্ধকার গহ্বরে নিরপেক্ষ্য দর্শনটি হারিয়ে যায়। অনেকে তো কোরানুল হাকিম-কে ডাল-ভাতের মত সহজ মনে করে থাকে এবং বিকৃত অনুবাদ ও বিকৃত ব্যাখ্যায় ভরপুর করে রাখে এবং এই বিকৃত অনুবাদ ও বিকৃত ব্যাখ্যা পড়ে-পড়ে সরল-সহজ মানুষটির ম্নের অবস্থানটি কেমন হয় তাহা কমবেশী সবায় বোঝতে পারে। নিউটন, আইনস্টাইন, নিলস্‌ বোর এবং স্টিফেন হকিং-এর মতো অসংখ্য জ্ঞানীগুনিদের জন্য যদি কোরানুল হাকিম শিক্ষনীয় বিরাট একটি বিষয় না হতে পারে তাহলে আমাদের মত অল্প বিদ্বার বিদ্বানেরা এই প্রশ্নের কী উত্তর দেয়?

সূরা মোমিন-এর ১৫ নম্বর আয়াতে রূহ্‌ সম্বন্ধে বলা হয়েছে ঃ ইউল্‌কির্‌(নিক্ষপ করেন, ক্ষেপ্ন করেন, সম্মুখে স্থাপন করেন অর্পন করেন) রূহা(রূহকে, পরমাত্মাকে) মিন্‌(হইতে) আম্‌রিহি(তাহার আদেশে) আলা(উপর)মাই(যাহাকে) ইয়াশাউ(ইচ্ছা করেন)।
অর্থাৎ, "নিক্ষেপ করেন রূহ্‌ তাহার আদেশ হইতে যাহার উপর ইছা করেন" এই আয়াতে রূহকে নিক্ষেপ করা হয় বলা হইছে তথা রূহকে ক্ষেপন করা হয় বলা হইছে। এই রূহকে ক্ষেপন করার কাজটি করা হয় তার (আল্লাহ্‌র) আদেশ হতে যার উপর তিনি (আল্লাহ্‌) ইচ্ছা করেন। আল্লাহ্‌র ইচ্ছার উপযুক্ত বান্দা হতে পারলেই সেই বান্দার উপর তার আদেশ হতে রূহকে নিক্ষেপ করা হয়। অবশ্য আল্লাহ্‌র তৈরি প্রতিটি মানুষের সঙ্গে অতীব সূক্ষ্ম বীজরূপে স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে তথা প্রতিটি মানুষের সঙ্গেই আল্লাহ্‌ প্রতিপালকরূপে তথা রবরূপে বিরাজ করছেন। তাও মানুষ নিজের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা সত্যটিকে বুঝতে না পেরে উর্ধ্ব গগনে আল্লাহ্‌র অবস্থানটি আছে বলে বিশ্বাস স্থাপন করে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনার ভাষাটি বলতে থাকে। সাধক যখন নির্জনে একাকী মাসের পর মাস বিরাট ধৈর্যধারন করে ধ্যানসাধনায় মগ্ন থাকে তখন এই মগ্ন অবস্থার মাঝেই একদিন না একদিন আল্লাহ্‌রই আদেশ হতে তথা আল্লাহ্‌র বিশেষ রহমতে এই রূহকে জাগ্রত অবস্থায় দেখাতে পেয়ে হতভম্ব হয়ে যায় এবং মেজাজি সেজদায় লুটিয়ে পড়ে।
এই রূহের পরিপূর্ন দর্শনটিকেই আমরা তথা মুসলমানেরা নূরে মোহাম্মদির দর্শন বলে থাকি। আবার অন্য যে-কোন ধর্মের যে-কোন সাধক যদি পরিপূর্ন রূহের দর্শন লাভ করে থাকেন আর যদি সেই ধর্মের প্রবর্তকের নামে নূরটির নামকরন করে থাকেন তাহলে আমার বলার কিছু থাকে না। কারন আল্লাহ এক, তার নূরও এক এবং বীজরূপী রূহের অবস্থানটিও এক। এখানে দুইয়ের কোন স্থান নাই। দুইয়ের স্থানটিকে স্বীকার করে নিলেই শেরেক করা হয়ে যায়। ইহাই আসল শেরেক। মুখের কথায় শেরেকের কোন দাম নাই।
এই আয়াতে বর্নিত রূহ শব্দটির মর্মার্থ বুঝতে না পেরে অনেক অনুবাদক এই রূহকেই 'ওহি' অনুবাদ করেছেন কোথায় রূহ্‌ আর কোথায় ওহি! আল্লাহ কি রূহের স্থলে ওহি শব্দটি বলতে পারতেন না? আবশ্য না বুঝার কারনে এরকম গোজামিল দাঁড় করানো হয়। তবুও একটি বারের তরেও এই অনুবাদকারীরা ভুলেও বলতে চাইবেনা যে ইহার অর্থটি জানা নাই। ইনারা সব কিছু জানেন, তাই রুহ্‌কেও প্রয়োজনে ওহি লিখে ফেলেন। সুতরাং এরকম অনুবাদ পড়ে আপনি আর আমি যে কত রকম ভুল শিখছি তারও হিসাব নেই। যেমন কোরান-এর সূরা বনী ইসরাইলের ৭৮ নম্বর আয়াতের "কোরান"কে প্রায় অনুবাদকারী "নামাজ" অনুবাদ করে ফেলেছেন এবং কোরান-কে নামাজ অনুবাদ করার কারনটির একবোঝা ব্যাখ্যা আর বিশ্লেষন আপনাকে আর আ্মাকে শুনিয়ে চোঁখ ধাধিয়ে দেবে। আবার এই "রূহ" শব্দটিকে অনেক অনুবাদকারী বুঝতে না পেরে রূহের অনুবাদে জিব্রাইল নামক ফেরেশতাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। অথচ আমরা সবাই জানি যে জিব্রাইল ফেরেশতা যতই মর্যাদার অধিকারী হন না কেন, কিন্তু জিব্রাইল ফেরেশতার মাঝে রূহ্‌ও নাই এবং নফ্‌সও নাই। এ যেন 'অন্ধকে সুন্দর দুটি চোখের অধিকারী' বলার মত। এ যেন 'টুন্ডা ছেলেকে হাটিবার নতুন ইস্টাইল দেখানো হচ্ছে' বলে বুঝানো। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৭
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×