মার্চের শেষ থেকে শুরু হওয়া অঘোষিত লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ধাপে ধাপে কয়েকবারে বৃদ্ধি করে শেষ পর্যন্ত ৩০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো । এর মধ্যেই রমজান ও শেষমেশ ঈদের ছুটি যোগ হলো । ইতিমধ্যে ঈদ বিবেচনায় শপিংমল, মার্কেট খুলে দেয়া হয়েছে । কলকারখানা তো বেশ আগে থেকেই চালু হয়েছে । জীবন ও জীবিকার প্রশ্নে অর্থনীতি বাঁচানো দায় আছে । তবে এই প্রহসনে বলি দেওয়া হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবন । প্রথমত ছুটি ঘোষনার পর শ্রমিকদেরর স্ব স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করাতে না পারার, ব্যর্থতার সাথে যোগ হয়েছে, দল বেঁধে সামাজিক দূরত্বকে তোয়াক্কা না করে ঢাকা ত্যাগ । গণপরিবহন বন্ধ না করে ছুটি ঘোষনার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ছিলো । বাড়ি ফেরার আনন্দে ঢাকা থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লো মহামারী করোনা । আর দ্বিতীয় অংশে, সিদ্ধান্তহীনতার নাটকে দোদুল্যমান শ্রমিকদের চাকুরি বাঁচানোর তাগিদে পায়েই হেঁটেই কর্মস্থলে যোগদান করেছেন । অর্থনীতির খাতিরে গার্মেন্টস, কলকারখানা সব খুলে দিয়ে যে বিপুল জনগোষ্ঠী ঢাকা ও আশপাশের শিল্পাঞ্চলে অবস্থান করছেন, যা কিনা করোনার সংক্রমনের রেড জোন । করোনা পরিস্থতির এই ভয়াবহ সময়ে এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে আদৌ ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে ? সরকার থেকে ঈদে গণপরিবহন চলাচলের কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, এবং নিজের কর্মস্থলে থাকার কঠোর নির্দেশ দেয়া থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই নির্দেশা কতটুকু কার্যকর হবে তা প্রশ্ন থেকেই যায় । করোনার প্রথম আঘাতেই প্রায় ২০ হাজারের ওপর আক্রান্ত ও ২৫০ অধিক মৃত্যু। লকডাউনের শিথিলতায় যে ভয়াবহ দ্বিতীয় আঘাত হানার বন্দোবস্ত হচ্ছে তা সামলাবে কিভাবে বাংলাদেশ?
দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমন ঠেকাতে ঈদে বাড়ি ফেরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হোক । ঈদের বাজার, শপিংমল, মার্কেট ইত্যাদিতে সামাজিক দূরত্ব যেকোন মূল্যে নিশ্চিত করা হোক । একটা ঈদ গেলে আরো অনেক ঈদ আসবে, তবে নিজের আপনদের কাছে স্বেচ্ছায় জীবাণু নিয়ে যাবেন না ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:২৩