শহরের কোনো এক ফ্ল্যাটে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া একটা ছেলে একা থাকতো।
একদিন, বাসায় ফেরবার পর তার কাছে কেমন জানি খটকা লাগলো। তার ঘরের কি একটা যেন ঠিক নেই।
পরের দিন বাসায় এসে তার ঠিক একই রকম অগোছালো লাগতে লাগলো। এরকম বেশ কিছুদিন চলতে থাকার পর একদিন সে বুঝতে পারলো কি হচ্ছে।
তার ঘরের ফার্নিচারগুলো আগের অবস্থান থেকে একটুখানি করে সরে যাচ্ছিল। প্রতিদিন বাইরে যাবার আগে যেভাবে সোফাটা দেখে যাওয়া হত, ঘরে ফিরে দেখা যাচ্ছিল সোফাটা একটু ডেবে গিয়েছে, বা সরে গিয়েছে। কদিন পরেই সব পরিষ্কার হয়ে গেল তার কাছে, কে এসে তার ঘরের আসবাবপত্র নেড়ে চেড়ে যায়...
প্রায় বছরখানিক আগে, তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকাপ হয়। তবে এখনো মাঝে মধ্যে মেয়েটির কল আসে তার ফোনে। আবার মাঝে মাঝে জানলা দিয়ে বাইরে তাকালে মেয়েটিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। বেশ অনেকদিন ধরেই ছেলেটার মনে সন্দেহ হচ্ছিল মেয়েটা তাকে স্টক করছে কিনা। এবার সে একেবারে নিশ্চিত হল যে সেই মেয়েটাই ঘরে প্রবেশ করে, যখন ছেলেটা বাইরে যায়।
মেয়েটার কাছে ঘরের চাবির একটা কপি নিশ্চয়ই আছে।
সে সরাসরি পুলিশকে জানাতে পারতো। কিন্তু তার কাছে কোনো প্রমাণ ছিল না। সচারাচর, ছেলেরাই মেয়েদেরকে অনুসরণ করে, উল্টোটা পুলিশ সহজে বিশ্বাস করবে না।
তাই সে ঘরে একটা গোপন ক্যামেরা বসালো। সে বাইরে গেলে ঘরে কি হয় তা সেখানে রেকর্ড হবে।
“যদি ও আবার ঘরে ঢোকে, তাহলে সাথে সাথে ভিডিও নিয়ে পুলিশের কাছে যাবো”, ভাবলো ছেলেটা।
ক্যামেরা ঠিক মত বসানোর পর সে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে বাইরে বেশ খানিকক্ষণ ঘুরে আসলো। আসার সময় দোকান থেকে কয়েকটা হেভি-ডিউটি তালা কিনে নিলো। এই তালাগুলো দরজায় লাগালে আধা ঘণ্টা লাগবে খুলতে আর বন্ধ করতে।
বাসায় ফিরে সে জলদি দরজায় তালাগুলো এঁটে দিলো।
ঘরের সবজায়গায় চোখ বুলিয়ে বোঝা গেল আজ কোনো কিছু এলোমেলো হয় নি, সবকিছু আগের জায়গাতেই আছে। কিন্তু তারপরেও ভিডিও রেকর্ডিংটা একবার দেখে নিশ্চিত হতে চাইলো সে।
যা ভেবেছিল তাই, সে দেখলো তার এক্স-গার্লফ্রেন্ড ফ্ল্যাটে এসেছিল। ভিডিওটা এরকমঃ
ছেলেটা ঘরে ফেরার ঠিক আগে আগে, মেয়েটা ফ্ল্যাটে লুকিয়ে ঢুকে পড়ে। তার মুখে মুচকি হাসি রেখে সে তার হাতের ছুরিটার দিকে তাকালো। ঘরের আর কোনো কিছুর দিকে তার আর চোখ পড়লো না, বরং সে ক্লজেট ওয়ারড্রোবের ভেতর ঢুকে পড়লো।
আর তখনই ছেলেটা সদর দরজা খুলে ভেতরে আসলো, নতুন তালা বসালো।
ভিডিওতে নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলো ছেলেটি।
(গল্পটি ইন্টারনেটে বহুল প্রচারিত জাপানি গল্প থেকে অনূদিত। কপিরাইট না থাকলেও অনুরোধ রইলো, লেখাটি রিপোস্ট করে অনুবাদককে নিরুৎসাহিত করবেন না।)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫