আজব দেশের গজব পাবলিক!
বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব
মোকাবেলার দৃঢ় নেতৃত্ব ও সূদূরপ্রসারি পদক্ষেপের
স্বীকৃতিস্বরুপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
জাতীসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরষ্কার
"চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ"পেয়ে দেশের জন্য
গৌরব অর্জন করলেন।
আমরাও দেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে সেই
গৌরবের অংশীদার।
তো কেন এই পুরষ্কার একবার ভেবে দেখা উচিৎ
নয়?
চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ মানে রাজনীতির খেলায়
চ্যাম্পিয়ন মনে করে কেউ যদি আনন্দে বগল বাজান
তবে ভুল হবে। শিল্পায়নের এই যুগে বিশ্বের
শিল্পোন্নত দেশ গুলো প্রতিনিয়ত যেই পরিমান
কার্বডাই অক্সাইড বাতাসে নির্গত করছে তাতে
পৃথিবীর জলবায়ুতে এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
এর ফলে পৃথিবীর পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবে
যেই দশটি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
তার মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান সবার শীর্ষে -
(জার্মান ওয়াচ)।
সুতরাং আমাদের দেশই সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বদরবারে এর বিরুদ্ধে
দৃঢ়তার সাথে তার যুক্তি তুলে ধরেছেন। এর
মোকাবেলায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর কাছে
প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা চেয়ে
আসছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, শিল্পোন্নত
দেশগুলো কোন কর্ণপাতই করছে না। ফলাফল
বর্তমানে আমাদের দেশে জলবায়ুর আমুলিক
পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে ব্যপক ভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত।
আমাদের ষড়ঋতুর দেশ আজ গ্রীষ্ম বর্ষা ও শীত
ছাড়া আর কোন ঋতুর আগমন ও প্রস্থান বুঝা যায়
না। তাছাড়া দেশের প্রাকৃতিক দূর্যোগ সিমাহীন।
যেমন -বৃষ্টিপাত হ্রাস,লবণাক্ততা
বৃদ্ধি,অস্বাভাবিক তাপমাত্রা,মরুকরণ,ভূগর্ভস্থ
পানির স্তর হ্রাস,সুপেয় পানির
অভাব,জলোচ্ছাস,স্থায়ী
জলাবদ্ধতা,শিলাবৃষ্টি,অতিবৃষ্টি তিব্র ও
দীর্ঘস্থায়ী বন্যা,নদী
ভাঙ্গন,ভূমিধ্বস,ভূমিকম্প,সুনামীর
সম্ভাবনা,সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি,প্রাকৃতিক
সম্পদ হ্রাস,মৎস সম্পদ ,জীব বৈচিত্র্য,উদ্ভিদ
প্রজাতি হ্রাস। স্বাস্থ্য ঝুকিতে জনগন।
আমাদের সরকার এইসব প্রাকৃতিক দূর্যোগের
বিরুদ্ধে কি করতে পারে? সামান্য কিছু সরকারি
ত্রাণ বিতরণ ছাড়া। টিভিতে সরকারের উচ্চপদস্থ
মন্ত্রিদের লম্বা ভাষণ"এই দূর্যোগ আমাদের
সাহসীকতার সাথে মোকাবেলা করতে হবে" আর
"গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান" শুধু এতো টুকুই।
দেশের ভুক্তভোগী জনগন এটুকু না পেলেও
মোকাবেলা করবে বা সহে যাবে কারণ সহে যেতে
হবে।
সুতরাং যারা প্রধানমন্ত্রী"চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা
আর্থ" পুরষ্কারে ভুষিত হওয়ায় আনন্দে বগল
বাজাচ্ছেন তারা হয়তো ভাবছেন আমাদের নেত্রী
হয়তো রাজনীতির খেলায় এই পৃথিবীর সেরা বা যারা
একটু বুঝতে পারছেন তারা হয়তো সত্যিটাই জানেন।
কিন্তু আমার মনে হয় কোনটাই না, বিশ্ব মাতবরা
মনে করছে এই পৃথিবীতে নিরবে সহ্য করার মতো
একটা জাতীই আছে সেটা হচ্ছে বাঙ্গালী। তাই
সহনশীলতা চ্যাম্পিয়ন স্বরুপ ট্রফিটা
প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আরে, আমার আজব দেশের গজব পাবলিক,
কলা খেয়ে বাকলটা যেমন ছাগলের দিকে ছুড়ে দেওয়া
হয়। তেমনি বাকলের মতোই লাগছে আমার কাছে
ট্রফিটাকে।।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮