somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২১ জানুয়ারির মানববন্ধন নিয়া বিভ্রান্তি, অপপ্রচার ও চক্রান্ত

২০ শে জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেলানীসহ সীমান্তের সব হত্যাকান্ড বন্ধের দাবিতে আগামী ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হইছে, এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলা প্রয়োজন।

আমরা দেখছি ২১ জানুয়ারির মানববন্ধনের দাওয়াত সম্বলিত একটি পোস্ট স্টিকি হয়ে ঝুলছে প্রায় সব প্রধান বাংলা ব্লগগুলোতে। ব্লগের মতো বিকল্প মাধ্যমে সীমান্ত হত্যাকান্ড বিরোধী কর্মসূচির প্রতি এমন সমর্থন নিশ্চয় আমাদের উত্সাহিত করে।

কিন্তু এই সমর্থন আন্দোলন কর্মসূচিতে সহযোগ দেওয়ার বদলে ফাপড় দালালির সংযোগ ঘটাইতে পারে।

কারণ
এরই মধ্যে এমন একটা ধারণা গজাইছে যে সামুর মতো কথিত মুক্তিযুদ্ধপন্থীরা এই কর্মসূচির ডাক দিছে। তাই মানববন্ধনে এখান সোনাব্লগের পোস্ট দেখে মনে হবে যে কর্মসূচি কথিত দেশ বাচাও ইসলাম বাঁচাওপন্থীদের উদ্যোগে হইতেঠে। বাংলাদেশের দলবাজির বড় দুই মার্কা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো ব্লগের বিভাজনটা এভাবে করা যায়। বাকি ব্লগগুলো হলো সিপিবি, বাসদ, ইসলামী এক্যজোট, জেপির মতো। তাই অন্য ব্লগের লোকজনও এভাবেই দুই দলের অনুগামী হয়েই আসবে।

যেহেতু ভারত আমাদের বোন মারছে সেহেতু মুক্তিযুদ্ধপন্থীরা ৭১-এর স্টেনগান নিয়া আসবেন। আর দেশ বাচাও, ইসলাম বাচাওঅলারা আইবেন জিহাদের নাঙ্গা তলোয়ার নিয়া। এই দুই পক্ষের একই ময়দানে একই সময়ে অবস্থানের যে ছিরিৎযুক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে আছে, তাতে ধরে নেয়া যায়. আসলে ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২৮ অক্টোবরের মতো একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও জিহাদ সংঘটিত হইবে।

কিন্তু খেয়াল করলে আমরা দেখব ফেলানী ইস্যুটাকে এখন পর্যন্ত রাস্তায় নিয়ে এসেছে দুইটা সাংগঠনিক ব্যানার ১. দৈনিক আমার দেশ-এর পাঠক সংগঠন পাঠকমেলা ও বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট।

পাঠকমেলা চট্টগ্রামে প্রথম গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ নিয়ে একটি মানববন্ধন করেছে। পাঠকমেলা এককভাবে এই মানববন্ধন করে নাই সঙ্গে ছিল আমার বর্ণমালা ব্লগার্স ফোরাম ও নক্ষত্র সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ।

আমার দেশ এই কর্মসূচিকে পরের দিন শেষের পাতায় গুরুত্বপূর্ণ খবর হিসেবে ছেপেছে।

ওই দিনের কর্মসূচির পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটা মানববন্ধন করা হবে। ওই সিদ্ধান্ত মতেই আগামী ২১ জানুয়ারির মানববন্ধন হচ্ছে।

আসছে শুক্রবারের ও গত শুক্রবারের পুরা কাহিনীর কথা আবার ছাপানো হয়েছে পাঠকমেলার পাতায় প্রধান প্রতিবেদনের মধ্যে।

এই প্রতিবেদন পড়লেই দেখা যাবে এই মানববন্ধনের প্রধান উদ্যোক্তা মূলতঃ চট্টগ্রাম মহানগর পাঠকমেলার সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান হেলাল।
আর তিনি পাঠকমেলার সংগঠক হলেও শুরু থেকেই ফেলানী হত্যাকে কেন্দ্র করে এক জন সংবেদনশীল দেশপ্রেমিক তরুনের ভূমিকাই পালন করেছেন। তিনি কোথাও আমার দেশ পাঠকমেলার এক মহানগরের তালেবর হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন নি।
বরং তিনি চেষ্টা করেছেন সীমান্তে ৎর হত্যা বিরোধী কর্মসূচিতে সবাইকে এক করতে। এজন্য তিনি শুরু থেকে ব্লগে ও ফেসবুকের সাহায্য নিয়েছেন। নোট, পোস্ট আর স্ট্যাটাস দিয়া কাম সারনের প্রথার মধ্যে আটকে না থেকে তিনি রাস্তায় একটা প্রতিবাদ গড়াতে চেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি নিজের সংগঠন পাঠকমেলাকে সম্পৃক্ত করেছেন জনসমাগম ও সেফটি নিশ্চিত করার ভাবনা থেকে। মূলতঃ পাঠকমেলার প্লাটফর্মের কারনেই চট্টগ্রামে মানববন্ধন হতে পেরেছিল।

কিন্তু পাঠকমেলা মনে করে ফেৎলানী হত্যার প্রতিবাদকে একান্ত নিজস্ব বুজরুকি বানানোর প্রয়োজন নাই। এ সব করলে প্রতিবাদ আর প্রতিবাদ থাকে না। এমনকি আনন্দের ঘটনাও কালিঝুলিতে মাখামাখি হয়। যেমন মুসা ইব্রাহিমের এভারেস্ট বিজয়। দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইল স্টার একখানা জাতীয় আনন্দকে নিজস্ব সাফল্যে পরিণত করতে গিয়ে মজাটাই নষ্ট করে ফেলেছে। যা মুসার এভারেস্ট আরোৎহণকে পর্যন্ত প্রশ্নের মুখে দাড় করিয়েছে।

দেশের তরুণরা ফেলানীসহ সীমান্তের সব হত্যার ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে চাচ্ছে। ব্যস। পাঠকমেলা সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ব্যবহারজীবীতা নিয়া পাঠকমেলার কোন সংস্কার নাই। অতীতে ল্যাম্পপোস্টের ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু বকর হত্যা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি বিরোধী আন্দোলনেও পাঠকমেলা নিজেকে ব্যবহৃত হতে দিয়েছে। কারণ এই সব ইস্যু মানুষের। মানুষের লগে থাকাই ঠিক কাজ।

অপপ্রচার>>
এই বার নির্দিষ্ট করে বলতে হয় মানববন্ধনের আয়োজকদের ব্যাপারে। মূলত এর আয়োজক হচ্ছে ফেসবুকের একটি পেইজ ‌'Felani : Resistance Starts From Here (ফেলানী : প্রতিরোধের শুরু এখানেই)'-ভুক্ত সদস্যদের ফোরাম save our sovereignty (SOS)

এর মধ্যে হরেক কিসিমের পোলাপান আছে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ ভার্চুয়াল দুনিয়ার অভিগম্যতা নিয়ন্ত্রৎণ করবার মতো কামিলিয়াতি আওয়াৎমীলীগ, বিএনপি বা জামাতের হয় নাই। তাই সব দল মতের লোকজনই নির্দিষ্ট যে কোন জায়গায় গুতা মারতে পারে।

কথা হচ্ছে এই পেইজে যারা এসেছেন তারা সবাই একটি কর্মসূচির পক্ষে এসেৎছেন। কর্মসূচিটি হচ্ছে সীমান্ত হত্যাকান্ড বন্ধ করা।
খেয়াল রাখা দরকার এই সীমান্ত হত্যা বন্ধের কর্মসূচিগত লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সবাই নিজ নিজ ডংকা কম পিটিয়েছে। ২১ জানুয়ারির প্রোগ্রামে কতজনযে থাকতে সম্মত হইছে, কত জন যে কাজ করেতেছে ভাবা যায় না। কিন্তু কেউই নিজেদের ঢোল পিটাইতেছে না। মূলতঃ এর মাধ্যমে কর্মসূচিকে নিজের কর্মসূচি হিসেবেই গ্রহণ করা হয়।

কাজেই এই কর্মসূচিকে কেউ যদি কোন দলের লোকদের কর্মসূচি বলে প্রশ্ন তুলে অপপ্রচারের চেষ্টা করেন তাহলে ব্যাপারটা কী দাড়ায়? যিনি বলেন এই প্রোগ্রামের আয়োজক কে বা কাহারা মূলতঃ তিনি নিজেকে এই প্রোগ্রামকে নিজের মনে না করেই প্রশ্ন তোলেন। এখন জানার ব্যাপার হচ্ছে কেন ফেলানী হত্যার প্রতিবাদকে নিজেদের মনে করতে পারেন না কেউ কেৎউ? তাদের প্রতিবন্ধিত্বটা কী??

এখন যদি খেয়াল করলে দেখা যাবে মানববন্ধনকে নিজের মনে করতে না পারলেও কেউ কেউ ঠিকই মানববন্ধন নিয়া অপপ্রচারটা চালাতে পারছেন।

চক্রান্ত>>
একটা সত্য হচ্ছে ২১ তারিখের মানববন্ধনে ব্লগ ও ফেসবুক থেকে দাওয়াত পেয়ে লাখ লাখ লোক জড়ো হবে না। কয়েক শত মানুষই আসবে। যারা পোস্ট লিখছে, ব্যানার তৈরি করছে, ফেস্টুন লিখছে, তারাই সবান্ধব হাজির থাকবেন। যারা প্রোগ্রামটা নিজের মনে করে নিয়েছেন তারাই থাকবেন। কিন্তু বিভ্রান্তি তৈরিকারি ও অপপ্রচারকারীরা কেউই আসবেন না। সুতরাং তাতে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।

কিন্তু খুব খেয়াল কইরা একটা ব্যাপার মনে করিয়ে দেই। যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, যারা অপপ্রচার করছেন তারা এম্নি এম্নি ৎ করছেন না। তাদের একটা চক্রান্ত আছে। সেই চক্রান্তটা হচ্ছে- ছাগু-ভাকু নানথান গু-মুত ছড়াছড়ি করে আয়োজকদের হতোদ্যম করে দেয়া। ব্যস। এটা হয়ে গেলেই হল। সাধারণদের আর খুজে পাওয়া যাবে না।

তাই আয়োজকদের বলি আমরা কেউই উত্সাহ-উদ্দীপন হারিয়ে ফেলব না। আমরা অবশ্যই ২১ জানুয়ারির মানববন্ধন সফল করব। কারণ আমরা জানি ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ চলে তখনও একদল মানুষ এরকম বিভ্রান্তি, অপপ্রচার ও চক্রান্তের মাধ্যমে ফাকিস্তানকে এক রাখার নাম করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু বেল পাকলে যেমন কাকের কিছু করার থাকে না। কৎতিপয় বিরোধীর উত্পাতেও কিছু যায় আসেনা।

মনে রাখতে হবে পূর্ব বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষেরা রাজাকার-আলবদর-ছাগু-ভাদা-ধুনফুন হয় না। ঐতিহাসিক সত্য-সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষেরা মুক্তিযুদ্ধে যায়, মুক্তিযুদ্ধ সমর্থন করে। আর হাতে গোণা দালাল-পরের অন্নে লালিত-হারামজাদা-নির্বোধ-ক্রিমিনাল-অপ্রকৃতস্থরাই রাজাকারি করে।


কপি : Click This Link
২৩টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×