৬ তারিখ সকাল ৮ টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে গেলাম। টিকিট নেই। দাঁড়ানো টিকিট নিলাম। ২ ঘন্টা অপেক্ষার পর ১১ টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে যাত্রা।
পরীক্ষা ৩.৩০ এ। যেতে যেতে ২.৩০। সি.কে ঘোষ রোডে মিন্টু কলেজে সিট। খিদে পেয়েছিল। সিঙারা, পেঁয়াজু খেয়ে হল এ ঢুকলাম।
যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হলো। কিন্তু আমার পরীক্ষা শেষ হলো সময়ের অনেক আগে।
পরীক্ষা শেষে রিফাতের জন্য অপেক্ষা করছি। যদিও জানি না রিফাত কোথায়। ওর সাথে দেখা হওয়ার কথা কিন্তু কোথায় দেখা করব সেটা বলা হয়নি।
মোবাইলে চেক করলাম ও কল দিয়েছিল।
ব্রীজ থেকে ভালুকার বাসে উঠলাম। ৫০ টাকার ভাড়া ১০০। কিছু করার নেই। দিতে বাধ্য। সরকার না কি জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।
২
বাড়িতে লোকজনের অভাব নেই। বোন ভাগ্নিরা সবাই এসেছে। মা খুব অসুস্থ। ওনাকে ডাক্তার দেখানো দরকার। স্থানীয় ক্লিনিকে কিছু পরীক্ষা দিয়েছে। এগুলো করাতে হলে ময়মনসিংহে যেতে হবে।
পরদিন ময়মনসিংহে এলাম। মায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হলো। হার্টে সমস্যা, ফুসফুসে সমস্যা, যকৃতে সমস্যা, চর্বি জমে গেছে, হাড়ে মাংস, প্রেশারে সমস্যা।
ডাক্তার ওষুধ দিলেন। মাকে বাড়ি নিয়ে এলাম।
আমার চিন্তায় বেচারির ঘুম আসে না। কোনো সদগতি করতে পারিনি। ঘর-সংসারও হয়নি। এসব নিয়ে সারাক্ষণ ভাবনা। আশ্বস্ত করলাম সব ঠিক হয়ে যাবে।
৩
মালিবাগ মোড়ে ডাচ-বাংলার এটিএম বুথ নেই। মৌচাক মোড়ে গেলাম। একজন বলল শান্তিনগর যেতে।
পাসওয়ার্ড ভুল। ৩ বার। নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাসায় এলাম। পিন নাম্বারটা দেখে মালিবাগ চৌধুরী পাড়া গেলাম। সেখানে একটা বুথ আছে।
বুথে কার্ড আটকে গেল।
একটা কাজের অগ্রিম টাকা। যদিও কাজটা শুরু করতে পারিনি এখনও। টাকাটা কত দরকার সেটা তো আমি জানি। বাসা ভাড়া, একটা ঋণ এবং খাবারের টাকা।
কী করব বুঝতে পারছি না। প্রেশার গেল লো হয়ে। বুথের সামনে বসে পড়লাম। ব্যাংকে গিয়ে কথা বলব সে সুযোগও নেই। আজ ব্যাংক বন্ধ।
টিউশনি ১১ টায়। এদিকে মাথায় খেলছে কেমনে টাকার ব্যবস্থা করব। সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে ফোন দিলাম। যদিও জানি ওর অবস্থা খুব খারাপ। ফোন দিয়ে মনে হলো ফোনটা দেওয়া উচিত হয়নি।
ও অন্য একজনকে ফোন দিতে বলল। কিন্তু সঙ্কোচ হলো। বন্ধুটা খুব ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তবুও দিতে পারলাম না। অন্য একজনকে দিলাম। ফোন ধরল না। মনে হয় ব্যস্ত।
নিরুপায় হয়ে যাকে ফোন দিতে চাইনি, তাকেই ফোন দিলাম। ও কিছু টাকা 'নগদ' করল।
ছাত্রীকে পড়াচ্ছি কিন্তু পড়ানোয় মন বসছে না। নাস্তা এসেছে। ছাত্রীকে কিছু লিখতে দিয়ে ভাবলাম নাস্তাটা করি। এর মধ্যে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে পরিচিতর ফোন।
কোচিং এ যাওয়া হয় না অনেকদিন। গতমাসের টাকাও বাকি। এত অস্থিরতা মধ্যে কী পড়াব?
দিন হতে দিন আসে যে কঠিন আমি দীনহীন কোন পথে যাইতাম?
ছবি: গুগল
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৪