শুক্রবারের পর (১০ ফেব্রুয়ারি) আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় গিয়েছিলাম। দু’দিনে বই কিনলাম মোটে একটা। নাটকের বইয়ের জন্য অন্য প্রকাশ’র স্টল খুঁজতে খুঁজতে মুক্তদেশ’র স্টলের সামনে আসার পর স্বয়ং লেখক মহাশয় বইটা হাতে ধরিয়ে দিলেন। নেড়েচেড়ে দেখলাম। তারপর মনে হলো লেখা খারাপ না।
উপন্যাসধর্মী এ বইটার নাম ‘পোস্টমর্টেম’; লিখেছেন মাসুদ চাকলা নামে জনৈক লেখক। এটা উনার তৃতীয় উপন্যাস। উনার প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কীর্তনখোলার বাঁকে’। এরপর উনি ‘হাসেম আলীর স্বপ্নভঙ্গ’, ‘নরকবিলাস’ লিখেছেন।
এর আগে বইমেলা ঘুরে ঘুরে দেখলাম। অনেক স্টল খাঁ খাঁ করছে। লোকজন বই কেনার চেয়ে ঘোরাঘুরিই বেশি উপভোগ করছে। প্রেমিক-প্রেমিকাই বেশি মনে হলো। অবশ্য বইমেলায় প্রেমিক-প্রেমিকা নিয়ে ঘোরাঘুরির আনন্দই অন্য রকম। যাহোক, কিছু কিছু প্রকাশনী একদম নতুন লেখকদের বই প্রকাশ করেছে। তাদের সাহসী পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু বই কেনাবেচার যা অবস্থা দেখলাম, খুব খারাপই লাগল।
কিছু কিছু বই তো যাচ্ছে তাই। মানুষ গুরুত্বপূর্ণ সব বই রেখে কেন এসব পড়বে? সাহিত্যের প্রতি মমত্ববোধ নেই এমন মানুষ বই প্রকাশ করলে আমার মনে হয় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। এর বাইরে যারা মোটামুটি ভালো লেখেন, তাদের কি আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবও নেই একটা-দুটো বই কেনার- এই প্রশ্নটাও উঁকি দিল মনে।
কোনো প্রকাশক বা লেখক ভদ্রতার খাতিরে বেচাকেনা নিয়ে সঠিক তথ্য দেন না, তবে ব্যবসা যে খুব ভালো না সেটা সহজেই অনুমেয়। তার ওপর বইয়ের যা দাম, ইচ্ছে থাকলেও অনেকের সাহস হয় না। আমি বই প্রকাশের ক্ষেত্রে লেখকদের প্রায়ই বলি কিছু ধরা পাঠক না তৈরি করে শুধু শুধু বই করবেন না। আপনার যত্নে লেখা বইটা কেউ কিনছে না, কিনলেও খাটের নিচে ফেলে রাখছে- এটা নিশ্চয়ই আপনার জন্য অপমানজনক? তারচেয়ে বরং বিভিন্ন জায়গায় লিখুন। লোকজন মতামত দিক। তারপর না হয় বই করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭