'তুমি তো শ্রাবণ দিনে,
তুমিতো দুকূল ভেঙে খেলো
আমি যে ভেসে চলি
তোমারই স্রোতে শুধু,বলো??'-গ্রামের এই দূর্যোগপূর্ণ রাত্রি,আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা,অনেকটা ঠিক তোর ছায়ার মতন।।স্কুলে পড়ার সময় খাতাতে পাতা জুড়ে হিজিবিজি লেখে তোর নাম লিখতাম,বন্ধুরা তা দেখে হাসাহাসি করতো,পাত্তায় দিতাম না,আমি তখন তোর আর আমার আত্মার সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করতাম আর কি।।
ছাদের পাঁচিল,সবুজ ফার্ন,এন্টেনা,ছেড়া ঘুড়ি,সাদা কালো টিভি,স্যাঁতস্যাঁতে গল্পের বই আর তুই কৈশোরে পড়া আমার কাছে এটাই ছিলো ধ্যান জ্ঞান।।তারপর বয়স বেড়েছে সব কিছুর।।তোকে মুখ ফুটে বলতে না পারার ধৈর্য এর বয়স বেড়েছে,শহুরে কৃত্রিম জীবনে আমি এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি।।হয়তো সেই ভাবে কোনো কিছুর অভাব নেই জীবনে,আছে বলতে তোর কোলে মাথা রেখে চুপচাপ একটা শান্ত জীবন কাটাবো ভেবেছিলাম,সেটা আর এ জন্মে হলো না।।
মনে পড়ে তোর সেই অষ্টমীর দিনের কথা,পুজোর প্যান্ডেলে বাজছিল 'গোল প্রিন্টের শাড়ি পরে..',হালকা নীল রঙের শাড়িতে আমার বুকে ঝড় তুলে তুই অঞ্জলি দিতে এসেছিলিস।।দূর থেকে আমায় দেখতে পেয়ে মুচকি হাসি দিয়েছিলিস একটা,তোর ঐ মুচকি হাসির পাল্লায় পড়ে প্রথম এবং শেষ বার পুজোতে অঞ্জলি দেওয়া।।আমার কানের কাছে এসে বলেছিলিস 'তোর ভ্রু টার জন্য হিংসে হয় আমার ',আমি উত্তর দিতে পারি নি।।
বহুবছর কেটে গেছে পুজোতে আর তোকে দেখতে পাই না।।দিনের শেষে আমি ভেবে থাকি আর বলা হলো না 'আমার খাতায় হিজিবিজি হয়েই কি তুই থেকে যাবি'।।নবমীর কোনো এক বিকেলে দেখা হলে নির্জন জায়গায় বসে তোকে 'জয় গোস্বামী' শোনাবো।।আমার ভালোবাসার অদম্য ইচ্ছের গল্প টা তোকে শোনাবো,তখন হয়তো কানের পাশে সাদা হয়ে যাবে তোর চুল,আমার চোখের পাওয়ার আরো বেড়ে যাবে,তারপর ঝেঁপে বৃষ্টি নামবে,হাওয়ায় উড়বে তোর শাড়ির আঁচল,আমি ফিরে যাবো আমার সেই হিজিবিজি আঁকার খাতায়,ব্যস.....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১১