somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই ক্রুসেড (ছয় খন্ড একত্রে)

১০ ই অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ক্রুসেড আমার পুরোন একটি লেখা। যখন লিখেছিলাম তখন ছিলাম একজন সাধারন ব্লগার, ইদানিং আমি সেফ হয়েছি। তাই এটি আবার পোস্ট করলাম। কারো বিরক্তির উদ্রেক হলে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আগেই। কিন্তু এটুকু গ্যারান্টি আমি দিতে পারি এটা পড়ার পর আপনার মন্তব্য হবে- ধন্যবাদ, অনেক কিছু জানলাম।



সেই ক্রুসেড
প্রথম খন্ড

ক্রুসেড। অহংকার, রাজ্যদখল, সংস্কৃতির আদান-প্রদান সবই একই সুতোয় গাঁথা।

ফ্রান্সের রেনেসাঁ বিপ্লব, ক্রুসেড যুদ্ধেরই অবদান। এক কথায় বলা চলে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের মহাজাগরণ ঘটে এই ক্রুসেডের মাধ্যমে।

ক্রুসেডের পূর্বে ইউরোপীয় জীবন ধারা ও এশিয় জীবন ধারায় ছিলো আকাশ পাতাল তফাত। হিট্টি তার আরবের ইতিহাস বইতে বলেছেন; সে সময় বাগদাদে ফুতফাতে পর্যন্ত আলো জ্বলতো, খাবারের মৌ-মৌ গন্ধে এশিয়ার আকাশ-বাতাস মুখোরিত হত ঠিক সে সময় ইউরোপের সবচেয়ে অভিজাত নগরী ফ্রান্সে সামান্য বৃষ্টিপাতে রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত কর্দমাক্ত হয়ে যেত, মশলা যুক্ত সুস্বাদু খাবারতো দূরের কথা সমস্থ ইউরোপ পুড়িয়ে বা কাঁচাই খাবার সেবন বা ভক্ষন করতো।
ক্রুসেডবর্তি সময় গুলোতে মুসলমান ও খ্রীষ্টানদের মাঝে প্রবল শত্রুতা থাকলেও আভিজাত্যতা ঠিকই আদান-প্রদান ঘটেছে। মুসলমানদের মশলা মখানো ঝোল যুক্ত খাবার ইউরোপে যায়। যায় জানালার সার্সি, দরজার পর্দা, বিছানার তোষক, বিভিন্ন প্রকার মশলা, ঘরের ভেন্টিলেটর, তাত্বিক রসায়ন শাস্ত্র, যায় শুন্য, যায় গননা পদ্ধাতি, জ্যর্তিবিদ্যার তত্ব, মখমলের কাপড়, রেশম, ঝাড়বাতি, সুগন্ধি, ট্রান্সপারেন্ট হয় সমস্থ মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার। বস্তারিত পাবেন এই বইতে-Hitti’s History of Arabs।মজার কিছু গল্পও পাবেন বইটির বাংলা ভার্সন আরবের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বইয়ে।

ক্রুসেড মূলত শুরু হয়, মুসলমানদের রাজ্যবিস্তারকে কেন্দ্র করে। বিশেষ করে জেরুজালেম দখল।
৬৩৬ সালে মুসলিম সেনাপতি আমর ইবনুল আস জেরুজালেম অবরুদ্ধ করেন। সে সময় খলিফা ছিলেন হজরত উমর (রা.)।
চারমাস অবরোধের পর জেরুজালেমের প্রধান ধর্ম জাজক সেফ্রোনিয়াস,খলিফা উমর (রা.) স্বয়ং জেরুজালেম উপিস্থিত হয়ে চুক্তিপত্রে সাক্ষর করলে জেরুজালেম মুসল্মানদের হাতে অর্পিত হয়।
খলিফার মহানুভবতায় জেরুজালেম বাসী আত্মসমর্পন করে। তারা স্বাধীনভাবে ধর্মকার্জ সম্পাদনের অধিকারের জন্য এক সন্ধিপত্রে খলিফাকে দিয়ে সাক্ষর করিয়ে নেয়। এ সময় তিনি সুলাইমান (আ.) এর হয়কলের উপর (যা ৫৯৭ খ্রীষ্টপূর্বে ব্যাবিলন সুম্রাট নেবকাড নেজার কতৃক ধ্বংশ প্রাপ্ত হয়েছিলো) মসজিদ নির্মানের আদেশ দিয়ে মদীনা প্রত্যাবর্তন করেন।
১০৮৭ সালে পোপ তৃতীয় ভিক্টরের মৃত্যু হলে দ্বিতীয় উর্বান পোপ হন।
১০৯৫ সালে পূর্ব রোম সম্রাট এলেক্সিয়াস (Alexius) এর আহ্বানে খ্রীষ্টান সন্যাসী পিটারের (Peter the Harmit) পরামর্শে মুসলমানদের নাগপাশ হতে পবিত্র শহর জেরুজালেম উদ্ধারের জন্য দক্ষিন ফ্রান্সের ক্লেয়মেন্ট নামক জায়গায় এক সবভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পোপের মোটিভেশনাল বৃত্ততায় উত্তেজিত হয়ে ফ্রান্স, লরেন, ইটালী, সিসিলি থেকে প্রায় দেড় লক্ষ খ্রীষ্টান সেরুজালেম যাত্রা করে।
খ্রীষ্টান সন্যাসী পিটারের চল্লিশ হাজার ধর্মযোদ্ধা এশিয়া মাইনর আক্রমণ করলে প্রথম ক্রুসেড আরাম্ভ হয় (১০৯৬)।
এই সময়ে মুসলিম জগত অভ্যন্তরীন কোন্দলে জর্জরিত ছিলো। বাগদাদের সিংহাসন নিয়ে সেলজুকী সুলতান মালেক শাহের পুত্রদের এবং দামেশক ও আলেপ্পার আধিপত্য নিয়ে মালেক শাহের ভ্রাতুস্পুত্র রেজওয়ান ও দুদাকের মধ্যে বিবাদ চলছিলো। স্পেনের আরবরা পরস্পর গৃহযুদ্ধ ও প্রতিবেশী খ্রীষ্টানদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। মিশরের খলিফা ছিলেন হীনবল এবং বিলাশ স্রোতে ভাসমান। সুতরাং এশিয়া মাইনর ও সিরিয়ার মুসলিম জনসাধারণ এই যুদ্ধে কোন সাহায্য পেল না।
ইকনিয়ামের সেলজুকী সৈন্যের আক্রমণে এবং রসদাদির অভাবে পিটারের পরিচালিত সমস্থ খ্রীষ্টান বাহিনী এশিয়া মাইনরে বিনষ্ট হয়। এসম্পর্কে Gardiner’s History of England-p. 120 পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ‘They belived it to be unneccesary to take money or food, that God would supply His warriors.- All these perished on the way.’
১০৯৭ সালে গডফ্রের (Godfrey of Bouillon) নেতৃত্বে পরিচালিত সাত লক্ষ খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধা কন্সটান্টিনপোলের পথে এশিয়া মাইনর আক্রমণ করেন। ইকনিয়ামের সেলজুকী সুলতান কিলিজ আর্সালান দাউদ খ্রীষ্টান বাহীনির গতিরোধ করতে গিয়ে পরাজিত হন (জুন), খ্রীষ্টানগণ পথের মাঝে যে সমস্থ নগর ও গ্রামাদি পেয়েছে সমস্থ পুড়িয়ে ফেলে ও অধিবাসীদের হত্যা করে। যেহেতু যুদ্ধ, তাই হত্যা গুলো হয়েছে নির্দয় ভাবেই। এরপর খ্রীষ্টানগণ এন্টিয়ক নগর আবরোধ করে ২১ অক্টোবর।
নয় মাস অবরোধের পর খ্রীষ্টান ক্রুসেডারগণ এন্টিয়ক নগর অধিকার করে ১০৯৮ সালের ৩রা জুন। নগরের অধিবাসীদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা এবং ভক্ষন করে। কারন খ্রীষ্টান ধর্মজাজকগণ প্রচার করেছিলো যে, যারা মুসলমানের মাংশ ভক্ষন করবে তারা নিস্পাপ অবস্থায় সর্গে আরোহন করতে পারবে। খ্রীষ্টান দলপতি বোহিমন্ড এন্টিয়কের রাজা ঘোষিত হন।
জানুয়ারী, ১০৯৯ সালে ফরাসী কাউন্ট রেমন্ড (Raymond of Toulouse) এর নেতৃত্বে পরিচালিত খ্রষ্টান যোদ্ধাগণ সিরিয়ার মেরাতুন্নোমান নগর ভস্মিভূত ও এর এক লক্ষ অধিবাসীকে হত্যা করে।
ক্রুসেডার দলপতি গডফ্রে মিসরের ফাতেমিয় খলিফা মোস্তা আলী বিল্লার সেনাপতি ইফতেখার উদ্দৌলাকে পরাজিত করে জেরুজালেম নগর দখল করে। এবং সেখানকার প্রায় সত্তর হাজার (Viae-Hitti’s History of the Arabs-P.639) অধিবাসিকে হত্যা করে (জুলাই, ১০৯৯)। এ ব্যাপারে নিচের রেফারেন্সগুলো না দিলেই নয় ‘… … at the moment when the Christians entered the Holy city the sun eclipsed, the earth was hidden in darkness, and the stars appeared in broad daylight.’ Vide-Historian’s History of the World-Vol.VIII,P.353. ‘Holding Muhammadans to be the special enemies of God, they treated them as no better than savage beasts. There was terrible butchery when jerusalem was taken and Christian men fancied that they did God service by dashing out the brains out of Muhammadan babies against the walls.’ Gardiners, History of England-P.121.
গডফ্রে জেরুজালেমের রাজা বলে ঘোষীত হন। তার আদেশে জেরুজালেমের প্রসিদ্ধ মসজদ (M osque of Omar) গির্জায় পরিনত হয়। এ খবর শুনে বাগদাদের খলিফা মোস্তাজহের কোন মৌখিক সহনুভূতি প্রকাশ করলেন মাত্র। কিন্তু সেলজুকী সুলতান মদ্যপায়ী বর্কইয়ারুকের মুখে সহানুভূতির বাক্যও উচ্চারিত হল না। (Hitti’s History of Arabs-P.480.)



সেই ক্রুসেড
২য় খন্ড
জেরুজালেম পতনের সংবাদ শুনে মিশরের ফাতেমিয়া খলিফা পুনঃএকদল সৈন্য প্রেরণ করেন। কিন্তু ঐ সৈন্যদল আস্কালন নগরের কাছেই খ্রীষ্টানদের হাতে পরাজিত হয়।
খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধাগণ সিরিয়ার সুমদ্রপকূলবর্তি হাইফা জাফ্‌ফা, কাইসারিইয়া, আক্কা, তারসুস প্রভৃতি নগর দখল পুর্বক নগরসমুহের মুসলমান ও ইহুদী আধিবাসীগণকে হত্যা করে। অন্যদিকে জেরুজালেমের রাজা গডফ্রের মৃত্যু হয়। তার ভাই বল্ডউইন (Boldwin) রাজপদে অধিষ্ঠিত হন (১১০০)।
এন্টয়াক রাজ বোহিমন্ড সেলজুক সেনাপতি গোমিস্তিগিন কতৃক পরাজিত ও বন্দি হন। ক্রুসেডার দলপতি রেমন্ড সিরিয়ার ত্রিপোলী বন্দর অবরোধ করেন। অন্যদিকে বিভিন্ন দলপতির নেতৃত্বে পরিচালিত চার লক্ষাধিক খ্রীষ্টান যোদ্ধা এশিয়া মাইনরের আনাতোলিয়া প্রদেশে খাদ্যাভাব, মহামারী ও তুর্কি সৈন্যদের হাতে প্রাণ বিসর্জন করে। মিসরের ফাতেমিইয়া খলিফা মোস্তা আ’লীর মৃত্যু হয়। তার পাঁচ বছর বয়সী সন্তান আমীর বি-আহকামেল্লাহ্ রাজ্য লাভ করে ১১০১ সালে।
এ্যকুইটাইনের ডিউক উইলিয়াম সসৈন্য জেরুজালেমের পথে কন্সটান্টিনোপলের নিকট নহত হন।
বাগদাদের সেলজুকী সুলতান বর্কইয়ারুকের মৃত্যুর পরে তার ভাই মুহাম্মদ শাহ সিংহাসনে বসেন।
এর মধ্যে ১১০৯ সালের জুলাই মাসে অনেক সময় অবরোধের পর খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধাগণ সিরিয়ার ত্রিপোলী বন্দর অধিকার করে অধিবাসিদের হত্যা করে খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের ত্রিপোলী ও আলেপ্পা নগর ধ্বংশের খবরে বাগদাদের খলিফা মোস্তাজহির বিল্লা জামে মসজিদে প্রার্থনা করেই চুপ থাকলেন। সেলজুকী সুলাতান মুহাম্মদ শাহও কিছু করা থেকে বিরত থাকেন। সেই শহরে বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থাগার খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধারা পুড়িয়ে ফেলে। ঐ গ্রন্থাগারে ত্রিশ লক্ষ বই ছিলো। নগর দখলের পর রেমন্ডের আদেশে এই গ্রন্থাগারের কি গতি করা যায় এর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কাউন্ট সেন্ট জিন্ নামক প্রবীন পাদ্রী গ্রন্থাগার পরিদর্শণ করেন। পাদ্রী মশায় প্রথম রুমে প্রবেশ করেন, সেখানে কুরানের অনুলিপি সাজানো ছিলো। তিনি ক্রমে বিশটি বই খুলে দেখেন সবগুলোই কুরান। তিনি তক্ষুনি ঘোষনা করলেন-এই গ্রন্থাগারের সমস্থ বই খ্রীষ্টধর্মের বিরুদ্ধে। তার আদেশে ঐ গ্রন্থাগার পুড়ানো হল। (cf.Gibbon’s Roman Empire-Vol II,P.505.)
মৌস্পল ও দামেশকের সেলজুকী শাসকর্তাদের দ্বারা খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদণ তিবরিয়া হ্রদের (Sea of Gallilee) তীরে পরাভূত হয় (১১১৩)।
এই সময়ের মাঝে পোপ ছিলেন জিলেসিয়াস, দ্বিতীয় কেলিটাস্, হনোরিয়াস, দ্বিতীয় ইনোসেন্ট, দ্বিতীয় চেলেস্টাইন(১০??-১১৩০ সাল)
খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা সিরিয়ার বিভিন্ন যুদ্ধে তুর্কিদের কাছে পরাজিত হয়। মুসলমানদের করুন পরিনতি দেখে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লা তুমরাই নামক জৈনক তাপস পশ্চিম আফ্রিকায় নিজেকে প্রতিস্রুত ইমাম মেহেদী বলে ঘোষনা করে। যাযাবর আরব বেদুইনরা তার সাথে যোগ দেয় (১১২০ সাল)।
এই যখন অবস্থা ১১৩৭ সালে ক্রুসেড বিজয়ী মহাবীর সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন ইবনে আইয়ূব (Saladin) ইরাক প্রদেশের তাকরিৎ নামক স্থানে জন্মগ্রহন করেন।
মৌসলের স্বাধীন আমীর আতাবুক ইমাদউদ্দিন জঙ্গী ক্রুসেডার ডিউক জসেলিনকে পরাজিত করে সিরিয়ার এডেসা দখল করেন।
জার্মান সম্রাট তৃতীয় কনরোড (Conrod III) ও ফ্রান্সরাজ সপ্তম লুঁই (Louis VII) নেতৃত্বে নয় লক্ষ খ্রীষ্টান ক্রুসেডার সিরিয়া আক্রমন করে। ফরাসী রানী ইলিয়ানের আদর্শে অনুপ্রয়াণিত হয়ে হজার হজার নারীও এই যুদ্ধে যোগ দেন। এই বিড়াট বাহিনীর সিরিয়ায় উপস্থিত হলে দ্বিতীয় ক্রুসেড আরাম্ভ হয় (১১৪৭ সাল)। খ্রীষ্টান ক্রুসেডারগণ এন্টিয়ক নগর পুনঃদখল করে।
আলেপ্পার আমীর নুরউদ্দিন জঙ্গী ও তার ভাই মৌসলপতি সয়ফউদ্দিন জঙ্গী ছারা অন্য কোন মুসলিম রাজশক্তি ঐ দুর্দিনে সিরিয়াবাসীর সাহায্যে আসে নাই। দামেশক নগরের নিকট ক্রুসেডারগণ জঙ্গী ভাতৃদ্বয়ের কাছে পরাজিত হয়। আলেপ্পা রাজ নুরউদ্দিন জঙ্গীর সাথে এডেসার ডিউক দ্বিতীয় জোসেলিনের বিবাদ শুরু হয়। নুরউদ্দিন জোসেলিনকে বন্দি করেন। জেরুজালেম রাজা তৃতীয় বল্ডউইন মিসরীয় বাহীনিকে পরাজিত করে ভুমধ্যসাগরের উপকূলবর্তি আস্কালন বন্দর দখল করেন (১১৫১-১১৫৩)।
১১৫৯ সালে ভীষন ভুমিকম্পে সিরিয়া বধ্বস্ত হলে খ্রীষ্টানগণ সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে।
মরক্কোর সুলতান আব্দুল মো’মেন খ্রীষ্টান গনকে পরাভূত করে সমগ্র ত্রিপোলী স্বরাজ্যভুক্ত করেন।
আলেপ্পার আমীর নুরউদ্দিন জঙ্গী ক্রুসেডের খ্রীষ্টান যোদ্ধাগণকে হারিম শহরের নিকটবর্তি কোন এক স্থানে পরাজিত করেন। এই যুদ্ধে অধিকাংশ খ্রীষ্টান নেতা, এন্টিয়ক রাজা তৃতীয় বোহিমন্ড ও ত্রিপোলীর ডিউক তৃতীয় রেমন্ড নিহত অথবা বন্দি হন।
এবার একটু মিসরে দিকে আসি, কারন ক্রুসেড যুদ্ধ বিজয়ের অন্যতম দাবিদার মিশর। খ্রীষ্টপূর্ব ৩১সালে মিসর রোম সম্রাজ্য ভুক্ত হওয়ার পর ৬১৮ সালে পারসিকরা মিসর আক্রমন করে, এবং মিসর দখল করে। যদিও ৬২২ ও ৬২৭ সালে রোমকরা আবার পারসিকদের কাছ থেকে মিসর পুণরুদ্ধান করে। ৬৪১ খ্রীষ্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি যুবাইর ইবনে আওয়াম কতৃক আরবদের মিশর জয় হয়। পরবর্তিতে খলিফা শাসন ব্যাবস্থা প্রধান প্রধান মুসলিম দেশগুলোতে ছরিয়ে পরে। যেমন উমাইয়া বংশীয় খলিফা শাসন, ফাতেমিয়া বংশীয় খলিফা শাসন, আব্বাসীয়া খলিফা শাসন ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে মিশরে ক্রুসেড চলাকালীন সময়ে ১২৬১ সালের আগ পর্যন্ত ফাতেমিয়া খলিফারা শাসন করতো। তদানীন্তন ফাতেমিয়া খলিফা গণ প্রধান মন্ত্রীর হাতে রাজ্যভার আর্পন করে অন্তঃপুরে সময় কাটাত। রাজপ্রাসাদের নিকটবর্তি আল আজহার মসজিদে শুধু শুক্রবার উপস্থিত হয়ে জুম’আর নামাজ পরতেন। খলীফার প্রাসাদে চার হাজার কক্ষ ছিলো। ঐ সকল কক্ষগুলো স্বর্ণ, রৌপ, মণিমাণিক্য খচিত দ্রব্যাদিতে পরিপূর্ণ ছিলো। খলিফার দাস-দাসী ও ভৃত্যগণের সংখ্যা আঠারো হাজার থেকে ত্রিশ হাজার ছিলো। ফলতঃ তখন প্রধান মন্ত্রীই ছিলেন রাজ্যের সর্বময় কর্তা। সতরাং রাজ্যে তো অরাজকতা বিরাজ করবেই।
১১৬৯ সালে মিসরের ফাতেমিয়া বংশীয় শেষ খলিফা আল আজিদের বিদ্রহী সেনাপতি দিরগামকে দমন করতে অসমর্থ হলে প্রধান মন্ত্রি শাবের আল সা’দী আলেপ্পার-রাজ নুরুদ্দিনের সেনাপতি ‘শেরকুহ’ মিশরে উপস্থিত হন এবং বিলবেজ নামক স্থানে বিদ্রহী সেনাপতি দিরগামকে নিহত করেন। শাবের আলেপ্পো ফিরে যান। এদিকে মিসর-মন্ত্রী শাবের জেরুজালেমের খ্রীষ্টান রাজা এমালরিকের সঙ্গে নুরউদ্দিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। নুরউদ্দিন এ কথা শুনে শেরকুহ ও তার ভাতিজা সালাহ্উদ্দিন ইবনে আইয়ূবকে মিশর আক্রমনে পাঠান। জেরুজালেম রাজ এমেলরিকও মন্ত্রীর সাহায্যার্থে মিশরে উপনীত হন। রাজধানী কায়রোর নিকটবর্তি বাবেইন নামক স্থানের যুদ্ধে মন্ত্রী শাবের ও জেরুজালেম রাজের সম্মিলিত সেনাদল পরাভূত হয়। মন্ত্রী শাবের নিহত হন। শেরকুহ রাজধানী কায়রো ও সালাউদ্দিন অ্যালেক্সজেন্ড্রা বন্দর অধিকার করেন। ফাতেমিয়া খলিফা আল আজিদ শেরকুহকে মন্ত্রীপদে নিযুক্ত করেন। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই শেরকুহর মৃত্যু হলে সালাহ্‌উদ্দিন মিসরের মন্ত্রীত্ব লাভ করেন। এরই মধ্যে আল্ আজিদ দিনিল্লার মৃত্যু হয় ১১৭১ সালে। প্রধান মন্ত্রী মৃত খলিফার পরিবারবর্গকে প্রচুর বৃত্তি প্রদান করে স্বয়ং সিংহাসনে আরোহন করেন। ইনিই সুলাতান সালহ্‌উদ্দিন। এর পর থেকে যা যা ঘটতে থাকে তাকে ক্রুসেড ড্রামার ইন্টারভাল বলা চলে

চলবে…


সেই ক্রুসেড
তৃতীয় খন্ড

১১৭১ সালে সালাহ্‌উদ্দিনের সুলতান হবার পর কপিতয় মিশরিয় নেতার আহ্বানে সিসিলির নর্মান রাজ দ্বিতীয় উইলিয়াম ছয়’শ যুদ্ধজাহাজ ও ত্রিশ হাজার সৈন্যসহ মিশরের অ্যালেক্সজান্ড্রিয়া বন্দর আক্রমন করেন। সালাহ্‌উদ্দিন অবিলম্বে বিদ্রোহী নায়কগণকে ধৃত ও হত্যা করেন এবং সিসিলি রাজ্যের সম্মুখীন হন। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে উইলিয়াম স্বরাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেন।
এর কয়েক বছর পরে, প্রায় ১১৭৬ সালে সিরিয়ার বালক সুলতান মালেকু শাহ ইসমাইল মন্ত্রী গুমস্তাগীনের পরামর্শে দামেশক থেকে আলেপ্পোয় রাজধানী স্থানাতরিত করেন। এই সুযোগে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা দামেশক নগর অবরোধ করে। এই খবর শুনে সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন মাত্র সাত’শ সৈন্য নিয়ে দামেশক উপস্থিত হন। খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা সালাহ্‌উদ্দিনের সাথে বিবাদে না জরিয়ে অবোরধ প্রত্যাহার করে। অপর দিকে সিরিয়ার মন্ত্রী দেখলেন তার উদ্দেশ্য চিরতার্থ হচ্ছে না। তিনি মৌসল অধিপতি সায়েফউদ্দিন জঙ্গীর ভাতিজা মালেকু সালেহের পক্ষ দামেশক আক্রমন করলে সালাহ্‌উদ্দিনের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে সালাহ্‌উদ্দিন জয়লাভ করেন। তিনি সিরিয়ার তখ্‌তে ভাই তুরান শাহকে শাসন-কতৃত্ব প্রদান করে মিশরে ফিরে আসেন।
ইসমাইলী বাতেনী সম্প্রদায়ের জৈনক ব্যাক্তি সুলতান সালাহ্‌উদ্দিনকে হত্যা করার চেষ্টা করে এবং ব্যার্থ হয়। এজন্য সুলতান বাতেনী সম্পরদায়ের বিখ্যাত দলপতি রশিদউদ্দিন সিনান ‘শেখল জবল’-এর বাসস্থান মাসইয়াদ আবরোধ করেন। শেখল জবল উপায়ন্তুর না দেখে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং শান্তি রক্ষা করে থাকার প্রতিজ্ঞা করেন।
যদিও বাতেনী সম্প্রদায় ক্রুসেডে সেভাবে জরিত ছিলো না, কিন্তু তাদের সম্পর্কে বলার লোভটা সংবরন করতে পারছি না।
সৈয়দ বংশীয় ইমামদের কথা তো আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি জানি। এই ইমামদের ভেতরে ইমাম জাফর সাদেক (রা.) ও ইমাম-এ-আজম ইমাম আবু হানিফা (রা.) সবচেয়ে প্রসিদ্ধ। আমাদের দেশে যারা হানিফা (রা.) মাজহাব মেনে চলেন তাদের হানাফি বলা হয়। আর একটা কথা না বললেই না, যারা আবু হানিফার থেকে বেশি ইসলাম বোঝেন তাদের মোহাম্মদী বলা হয়।
সৈয়দ বংশীয় ইমাম জাফর সাদেক তার জৈষ্ঠপুত্র ইসমাঈলকে ইমাম পদে অভিষিক্ত করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু ইসমাঈল যথেষ্ঠ জ্ঞানী হওয়া সত্বেও তার অমিতাচার ও পানাসক্তির সংবাদ ইমাম জাফর সাদেক শোনেন। তিনি তার মত পরবর্তন করেন এবং তার দ্বিতীয় পুত্র মুসা আল কাজেমকে সপ্তম ইমাম পদে মনোনীত করেন। কিন্তু ইসমাঈল-ভক্তরা বিশ্বাস করতো মদপান বা তদৃশ্য কার্জ্যে ইমাম পদে কোন ক্ষতি হয় না, এরজন্য তিনি অনুপযুক্ত বিবেচিত অথবা ইমাম পদ থেকে বিচ্যুত হতে পারেন না। তারা ইসমাঈলকে গুপ্ত ইমাম এবং তার পুত্র মুহাম্মদকে শেষ ‘প্রেরিত পুরুষ’ বা ‘আল তাম্ম’ বিবেচনা করে থাকে। তাদের মতে জগেতে আল্লাওহর পক্ষ থেকে আদম, নূহ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা, মুহাম্মদ ও আল তাম্ম এই সাত জন প্রেরিত পুরুষ অবির্ভূত হয়েছেন। এদের প্রত্যেক দুই জনে মধ্যবর্তি সময়ে একজন ‘সামেৎ’ অর্থাৎ নিরব কর্মি এসেছেন। যেমন ইসমাঈল, হারূন, আলী প্রমুখ। তারা বিশ্বাস করে যে ইসমাঈল অচিরে ঐশীশক্তিতে শক্তিমান হয়ে মেহেদি রূপে পুনঃআগমন করবেন। তাদের এই মতবাদ কে ‘আল বাতেন’ এবং মতবাদে বিশ্বাসী ব্যাক্তিদের ‘বাতেনী’ বা ‘ইসমাঈলী’ বলা হয়। এই মতবাদ যারা প্রচার করে তাদেরকে ‘দাঈ’ বলে হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে ময়মুন কতৃক বাতেনী মতবাদ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি প্রথমতঃ বসরা ও পরে সিরিয়ার সালামিয়া নামক স্থান থেকে বাতেনী মতবাদ গুপ্ত অথচ দৃঢ়ভাবে প্রচার করতে থাকেন। ৮৭৪ সালে আব্দুল্লার মৃত্যুর পর হামাদান আল কারামাৎ নামক তদীয় কুফাবাসী জৈনক শিষ্য বাতেনীদের এক ভিন্ন সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। অতপর আবু সাইদ হাসান আল জান্নাবীর নেতৃত্বে কারমাতিয়া মতবাদ সুদৃঢ় হয় এবনহ তার একান্ত প্রচেষ্টায় পারস্য উপসাগর থেকে এমামা ও ওমান পর্যন্ত ভূভাগ তার শাসনাধীন হয়। ৯০৩ সালে তার পুত্র আবু তাহের সুলাইমান আল কারমাতি দক্ষিণ ইরাক উৎসন্ন ও হজ্বের রাস্তায় বিশ হাজার হজ্বযাত্রীর প্রাণনাশ এবং জম জম কূপে মানব রক্ত দিয়ে শোনিত করে। তিনি কাবার কৃষ্ণ প্রস্থর স্থানান্তরিত করেন (৯২৯-৩০ সাল)।
ইমাম গাজ্জালী (রা.)-এর সহপাঠী হাসান ইবনুল সাব্বাহ বাতেনী মতবাতে দীক্ষালাভ করে ১০৯০ সালে উত্তর পারস্যের আলবুর্জ পর্বতের ১০২০০ ফুট উপরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ এক মনোরম উপত্যাকায় আলামুত (Egale’s Nest) নামক দূর্ভেদ্য দুর্গ নির্মান করে বাতেনী সম্প্রদায়ের কেন্দ্র স্থাপন করেন। ঐ দুর্গে হাসান ও পরবর্তি বাতেনী নেতৃবিন্দের যত্নে স্বর্গীয় নন্দন-কানন সদৃশ্য এক আপরূপ বাগান নির্মাণ করে ওটাকেই কুরানে বর্ণিত বেহেশত বলে ঘোষনা করা হয়। দরিঞ্জার নামক ক্ষুদ্র নদী আলবুর্জের বরফগলা জলিরাশি বহন করে দুর্গের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হত। বাতেনী মতবাদে দীক্ষিত অনুচরগণ বা ফেদায়ী দ্বারা নানা দেশ থেকে অপহৃতা সুন্দরী রমনীদের ঐ উদ্যানে রাখা হয়েছিলো। তাদেরকে স্বর্গিয় হুর বলা হত। উদ্যানের স্থানে স্থানে স্বর্ণ, রৌপ, হীরক তৈরি অট্টলিকা নির্মিত হয়েছিলো। যদিও এর বেশির ভাগই ছিলো গিল্টি। গাছে গাছে পাখি গুলো মধুর কন্ঠে কুরানের ‘সালামু আলায়কুম তিবতম ফাদখুলুহা খালিদিন’,’সালামুন কাওলাম্‌মির রাব্বির রাহীম’ ইত্যাদি বাক্য সমূহ উচ্চারণকরে নব আগন্তুকগণকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করতো। বাতেনী মতবাদে নবদিক্ষিত কয়েকজন ব্যাক্তিকে একত্রে মাদকদ্রব্য মিশ্রিত শরবত পান করিয়ে সংজ্ঞালোপ অবস্থায় গাধার পিঠে বা অন্য কোন বাহনে কাজভিন থেকে গভীর অরন্যে, দুর্গম গিরিসঙ্কট ও পার্বত্য সুরঙ্গের ভিতর দিয়ে ঐ বেহেশতে নিয়ে আসা হত। নবদিক্ষিত ফেদিয়াগণ সেখানে ঐ হুর্ব গেলমানদের সহবাসে মত্ত থাকত। তাদের পুনঃ সংজ্ঞাহীন করে কাজভিন নগরে আনা হত। ঐ বেহেশ্ত সুখের আশায় ফেদিয়াগণ দলপতির আদেশ পালন করতে বিন্দুমাত্র ইতস্তত করতো না। ফেদিয়াদের বিভিন্ন গুপ্তকর্ম এই সকল মানুষদের দ্বারায় করানো হত।
এদের হাতেই মন্ত্রী নিজামুল মুলক, নিশাপুরের নজমুদ্দিন কুবরা ও তাতার রাজ মঙ্গু খাঁ নিহত হয়েছিলেন। দীর্ঘ্যকাল পর্যন্ত তাদের আশ্রয়স্থল অক্ষুণ্ন ছিলো। অবশেষে ১২৫৬ সালে তাতার দলপতি হালাকু খাঁ আলামুত ও পার্শ্ববর্তি দুর্গ সমূহ ধ্বংশস্তুপে পরিণত করে বাতেনী সম্প্রদায়ের মূল উৎখাত করেন। অন্যান্য বাতেনীগন বিভিন্ন মুসলিম জগতে বিভিন্ন জনপদে ছত্রভঙ্গ বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। ১২৭১-৭২ সালে ইতালিয়ান পর্যটক মার্কোপোলো ঐ দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখেন এবং তা ভ্রমনবৃত্তান্তে লিখে রাখেন।
জেরুজালেমের রাজা হেনেরী একবার শেখুল জবলের সাথে একবার সাক্ষাত করেন শেখুল জবল তার অনুচরদের বিশ্বস্ততা প্রদর্শনের জন্য দুইজন অনুচরকে প্রাসাদের চূড়া থেকে লাফ দেয়ার আদেশ করেন। অনুচরেরা সাথে সাথে লাফ দিয়ে প্রান ত্যাগ করে তিনি পোষা কবিতরের মাধ্যমে দুরের অনুচরদের কাছে সংবাদ প্রেরন করতেন। (Hitti’s History pf the Arabs)






সেই ক্রুসেড
চতুর্থ খন্ড

আলোচনা করছিলাম সুলতান সালাহ্‌উদ্দিনকে বাতেনী সম্প্রদায় কতৃক হত্যার চেষ্টা করা হয় এই নিয়ে। সে ঘটনা তো পঠক পড়েছেনই।
প্রতি শতাব্দীতে একজন করে বীর দেখার সৌভাগ্য হয় পৃথিবীর মানুষদের। বারো ও তেরোশ শতাব্দীতে চারজন বীর দেখতে পেয়েছিলো পৃথিবীবাসী এক এই সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন, অপর তিনজনের একজন সিংহ হৃদয় সম্রাট রিচার্ড, বিশ্বত্রাশ চেঙ্গিস, আর গরিবের বন্ধু রবিন হুড। শেষের দুজন আমাদের ক্রুসেড প্রসঙ্গের ভেতরে পড়েননা।
১১৭৭ সালে সুলতান সাল্লহ্‌উদ্দিন প্যালেস্টাইনের মার্জিয়ান নামক স্থানের যুদ্ধে ক্রুসেডার খ্রীষ্টানগণকে পরাজিত করেন। এর পরপরই সুলতান সালহ্‌উদ্দিনের আহ্বানে সান্‌জা নদীর তীরে পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম রাজন্যবর্গের এক সম্নেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইকনিয়াম, আর্মেনি, মৌসল, জর্জিয়া, আরবাল, কায়ফা মার্দিন প্রভৃতি স্থানের নরপতিরা ঐ সন্মেলনে উপস্থিত হয়ে (২রা অক্টোবর, ১১৮০সাল), দুই বছর পর্যন্ত পরস্পর বিবাদ থেকে নিবৃত্ত থাকার প্রতিশ্রুত হন।
খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের সঙ্গে যুদ্ধে মসৌল বাদশাহ আতাবুক সয়েফউদ্দিন নিহত হন। তার ভাই আয়েজউদ্দিন মসুদ মসৌলের রাজপদে অধিষ্ঠত হন। আলেপ্পো-রাজ মালেক সালেহ ইসমাঈলের মৃত্যু হলে(ডিসেম্বর, ১১৮১ সাল) তার অন্তিম ইচ্ছানুসারে তার পিতৃব্য পুত্র মৌসলপতি আয়েজউদ্দিন মসউদ আলেপ্পো রাজ্যলাভ করেন। আয়েজদ্দিন মসউদ সুলতান সালাহ্‌উদ্দিনের বিরুদ্ধবাদী হন।
পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম রাজ্যনবর্গের সন্মেলনের দুই বছর পর সুলতান সালহ্‌উদ্দিন আরব,সিরিয়া, মিশর ও নিউবিয়ার স্বাধীন সুলতান বলে ঘোষিত হন। ওদিকে প্যালাস্টাইনের খ্রীষ্টান ক্রুসেডারগণ পূর্ব সন্ধি লঙ্ঘন করায় সুলতান সালহ্‌উদ্দিন মিসর থেকে সিরিয়া উপস্থিত হন। এই যুদ্ধে তার ভায়ের ছেলে ফররুখ শাহ তাকে সাহাজ্য করেন। তাদের সন্মিলিত যুদ্ধে খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধানগণ পরাজিত হয়। এরপর সুলতান সাল্লহ্উদ্দিন ইরাকের ইর্ষাপরায়ণ মুসলিম নেতাগণদের দমন করার জন্যে অগ্রসর হন। ক্রমেই তিনি এডেসা, রাক্কা, কারকিসিয়া, নসিবিন প্রভৃতি শহর অধিকার করেন এবং সবশেষে তিনি মৌসল অবরোধ করেন ১১৮২ খ্রীষ্টাব্দে। মৌসলরাজ আয়েজউদ্দিন মসউদ আলেপ্পো শহর সুলতানকে প্রদান করে সন্ধি স্থাপন করেন।
ক্রুসেডার খ্রীষ্টান সেনাপতি রেজিনাল্ড (Reginald of Chatillon) (আরব রা রেজিনাল্ডকে ‘আরনাত’ বলে ডাকতো) সুয়েজের দক্ষিনে অবস্থিত আকাবা উপসাগরের তীরবর্তি আইলা বন্দর অবরোধ করে সেখানে আরব-বণিকদের বারোটি জাহাজ লুটপাট করার পর পুড়িয়ে ফেলে এবং আরব বণিকদের হত্যা করে। অতঃপর রেজিনাল্ড মদীনায় অবসস্থিত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সমাধি উৎখাত করতে মদিনা যাত্রা করেন।
সুলতান সালাহ্‌উদ্দিনের নৌ সেনাপতি এই সংবাদ শুনে অবিলম্বে হেজায যাত্রা করেন। লোহিত সাগরের তীরবর্তী রাবেগ বন্দরের নিকটবর্তী পার্বত্য পথে ১১৮৪ সালে মিসরীয় বাহিনী ক্রুসেডার খ্রীষ্টানদের গতিরোধ করে। রেজিনাল্ড পরাজিত হয়ে প্যালেস্টাইনে পালিয়ে যান। অধিকাংশ সৈন্য নিহত অথবা বন্দিভাবে মিসরে আনিত হয়। সউলতান সালাহ্‌উদ্দিন প্রতিজ্ঞা করেন স্বহস্তে তিনি রজিনাল্ডকে হত্যা করবেন।
সুলতান সালহ্‌উদ্দিন আশি হাজার আশ্বারোহী সৈন্যসহ তিবরিয়া হৃদের (Sea of Gallile) তীরবর্তী হিত্তিন প্রান্তরে খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের সাথে যুদ্ধ করেন এবং যুদ্ধে জয় লাভ করেন(৩-৪ঠা জুলাই, ১১৮৭ খ্রীষ্টাব্দ)। এই যুদ্ধে ত্রিশ হাজার খ্রীষ্টানযোদ্ধা নিহত হয় এবনহ জেরুজালেমের রাজা গুই (Guy de Lusignau)। রোজিনাল্ড ও অন্যান্য প্রধান প্রধান খ্রীষ্টান সেনানায়করা সুলতানের হাতে বন্দী হয়। সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন পূর্ব প্রতিজ্ঞানুযায়ী রেজিনাল্ডকে হত্যা করেন। সুলতানের বিজয়ী সেনাদল ক্রমে আক্কা, নাজারেথ, হাইফা, সিজারিয়া, জাফ্‌ফা, সিডন, বৈরুত প্রভৃতি নগর অধিকার করে। সুলতান স্বয়ং জেরুজালেম আবরোধ করেন (২৩ সেপ্টেম্বর, ১১৮৭ খ্রীষ্টাব্দ) কয়েকদিন পরেই নগরবাসী সুলতানের কাছে আত্নসমর্পন করে (২রা অক্টোবর, ১১৮৭ খ্রিষ্টাব্দ)।
Kingdom of Heaven চলচিত্রটিতে যে কাহীনি উপস্থাপন করা হয়েছে তা মনগড়া মাত্র। আসলে খ্রীষ্টানগন কোন প্রতিরোধই গঠন করতে পারে নাই। সুলতানের সমস্থ মহানুভবতা কল্পিত নায়কের গলায় দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। সুলতানের আদেশে প্রত্যেক খ্রীষ্টান দশ হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রদান করে স্ব-স্ব ধনসম্পদসহ নগর পরিত্যাগের অনুমতি লাভ করে। মুক্তিপণ প্রদানের সময়ে দুইজন স্ত্রীলোক ও দশজন শিশু একজন পুরুষ সমান বিবেচিত হয়েছিল (Hitti’s History of Arabs)। চল্লিশ দিন পর্যন্ত খ্রীষ্টানরা এইভাবে মুক্তিপণ দিয়ে অন্যত্র প্রস্থান করতে থাকে। খ্রীষ্টানদের শহর পরিত্যাগের পর সুলতান সাল্লহ্‌উদ্দিন মহাসমারহে জেরুজালেম শহরে প্রবেশ করেন(২৭শে রজব, ৫৮৩ হিজরি)। প্রিয় পাঠক, ১০৯৯ খ্রীষ্টাব্দে গডফ্রে কতৃক জেরুজালেম অধিকার সময়ের ঘটানা এবং সুলতান সালহ্‌উদ্দিনের ঐ শহর বিজয় কালের ঘটনার ভেতরে পার্থক্য বিচার করুন।
পৃথিবীর অপরপ্রান্তে ইংল্যান্ড সম্রাট দ্বিতীয় হেনেরীর মৃত্যু হয়। তার ছেলে সিংহ হৃদয় রিচার্ড (Richard the Lion-hearted) সিংহাসনে আরোহণ করেন ১১৮৯ খ্রীষ্টাব্দে। সম্রাট রিচার্ডের আদেশে ক্রুসেড যুদ্ধের ব্যায় স্বরূপ প্রত্যেক ইংল্যান্ড বাসীর আয়ের দশমাংশ ‘Saladin Tax’ নামে সংগ্রহীত হত।
এই সময়ে পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের পতন ও সিরিয়া-প্যালেস্টাইনে খ্রিষ্টানদের শোচনীয় পরাজয়-বার্তা শুনে ইংল্যান্ড রাজ সিংহ হৃদয় রিচার্ড, ফরাসী-সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপ্‌স ও জার্মান রাজ ফ্রেডারিক বার্বারোসা অগনিত সৈন্যসহ জেরুজালেম উদ্ধারার্থে যাত্রা করেন। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও ঘৃনিত তৃতীয় ক্রুসেড শুরু হয়।
খ্রীষ্টান ধর্মযোদ্ধাগণ দলে দলে সিরিয়ার সুমদ্রকূলবর্তী টায়র ও আক্কা নগরে সমবত হতে থাকে। এই যোদ্ধাদের ভেতরে বহু যুবতি সৈনিক বেশে সিরিয়ায় আগমন করেছিল। তাদের শিবিরে পুরুষ ও নারী সৈন্যরা একত্রে সমাবেশে ব্যাভিচার স্রোত অবাধে চলতে লাগলো। ইংল্যান্ডের আর্চবিশপ বল্ডউইন ঐ বিভৎস ব্যাভিচার ও মদপানের প্রাবল্য দেখে হতাশ হলেন এবং এক রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভবের মায়া ত্যাগ করলেন।
সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন স্বয়ং অক্কা নগর আক্রমন করেন (২৭শে আগস্ট, ১১৮৯)
ভীষন যুদ্ধে খ্রীষ্টানরা পরাজিত হয় সেই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর। এই যুদ্ধে ৪ হাজার খ্রীষ্টান ক্রুসেডার নিহত হয়। এই সময় সম্রাট রিচার্ড ও ফিলিপ সসৈন্য আক্কার নিকটবর্তি হলে খ্রীষ্টান ক্রুসেডাররা বিপুল উৎসাহে পুনঃ আক্কা অবোরধ করে।
জার্মান রাজ ফ্রেডারিক নিজ সৈন্যসহ ঈজিয়ান সাগরে সলিল সমাধি হন। সিরিয়ার বিভিন্ন যুদ্ধে খ্রীষ্টানরা বার-বার পরাজিত হতে থাকলেও ইউরোপ থেকে নতুন নতুন যোদ্ধা সিরিয়ায় আসতে থাকলে ক্রুসেডারদের সাহস ও উৎসাহ বারতে থাকে। দুই বছর আক্কা শহরের অবরোধ ধরে রাখার পর সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন পিছু হটতে থাকেন। এরই মধ্যে সম্রাট রিচার্ড আক্কা উপস্থিত হন।


সেই ক্রুসেড
পঞ্চম খন্ড
September 7, 1191 – Richard the Lionheart defeats Saladin at Battle of Arsuf
This engraving, imagined by distinguished book illustrator Gustave Dore in the mid-1800s, depicts Richard the Lionheart’s leading of a third and final charge against the forces of famed Arab leader Saladin at the Battle of Arsuf, 820 years ago today.
The success of the crusader army in the battle, and Richard’s remarkable hands-on leadership style in war, both shocked and awed Saladin and the Saracen army, creating a sense of mutual respect that set the basis for the treaty between the two men that established a Christian presence in the holy land and ended the Third Crusade, a little over a year after the battle.
১১৯১ সালে আক্কা নগর বাসী নিরুপায় হয়ে আত্মসমর্পণ করে। সিংহ হৃদয় রিচার্ড প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে নগরের সাতাশ হাজার ইহুদী ও মুসলমান নাগরিকদের হত্যা করে খ্রীষ্ট ধর্মের আদর্শ প্রদর্শন করেন। আক্কা আবরোধের সময় দুই বছর বছরের ক্ষন্ড যুদ্ধে খ্রীষ্টানপক্ষের প্রায় এক লক্ষ সৈন্য নিহত হয়েছিলো। ধর্মোৎসাহের আগুন এমন প্রচন্ডভাবে আর কোথাও জ্বলে উঠে নাই। মোট কথা এই ক্ষুদ্র স্থানে ইউরোপ ও এশিয়ার সমস্ত শক্তি প্রায় ক্ষয়ে গিয়েছিলো।
এই সময়ে সম্রাট রিচার্ড ও ফ্রান্স রাজ ফিলিপের মধ্যে মনোমানিল্য সৃষ্টি হয় এবং ফিলিপ স্বসৈন্য ফ্রান্স যাত্রা করেন। কিছুদিন পর সম্রাট রিচার্ড খবর পান ফিলিপ রিচার্ডের ভাই জনকে ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসানোর পায়তারা করছে। সম্রাট রিচার্ড দেশে দেশে ফিরে যাবার চিন্তা করতে থাকলেন, ফলে সুলতান সালহ্‌উদ্দিনের সাথে তার সন্ধি করা একান্ত জরুরী হয়ে পড়লো। কিন্তু সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন সন্ধী প্রস্তাবকে সন্তর্পনে পাশ কাটিয়ে গেলেন। কিন্তু সম্রাট রিচার্ডকে সিংহাসন বাঁচান আতি জরুরী হয়ে পরেছিলো কারন তিনি যদি রাজ সিংহাসন হারান তবে তাকে চিরকাল এই এশিয়া মাইনরে পড়ে থাকতে হবে। যা কোন মানুষের জন্য কখনই কাম্য নয়। শেষ পর্যন্ত সুলতান সালাহ্‌উদ্দিন সন্ধি করতে রাজি হন। কিন্তু সন্ধি সম্রাট রিচার্ডের মনপুত না তাই তিনি জেরুজালেম আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেন। অপরদিকে যখন তিনি আক্কা জয় করেন তখন খ্রীষ্টান বাহীনিতে তিন লক্ষ সৈন্য ছিলো। তিনি উপকূল পথে জেরুজালেম যাত্রা করতে চাইলে মাত্র এক লক্ষ খ্রীষ্টান সৈন্য তার সাথে আসে। কারন খ্রীষ্টান ক্রুসেডারদের ব্যাভিচারের ঘটনা তার কানে গেলে তিনি আদেশ করেন ধোপিনী ছারা কোন স্ত্রীলোক সৈন্যদের সঙ্গে যেতে পারবে না। এতে অধিকাংশ খ্রীষ্টান যোদ্ধা নিরুৎসাহিত হয়ে রিচার্ডের শিবির ত্যাগ করে।
সম্রাট রিচার্ড ১১৯২ খ্রীষ্টাব্দে সিরিয়ার সিরিয়ার উপকূলবর্তী জাফ্‌ফা বন্দর আবোরোধ করেন। যুদ্ধ স্থগিত করে রিচার্ড ইংল্যান্ড প্রত্যাবর্তনের জন্য সুলতান সালহ্‌উদ্দিনকে বার বার প্রস্তাব করেও অকৃতকার্য হন। ইতোমধ্যে সম্রাট রিচার্ড আসুস্থ হয়ে শয্যাগত হন। রিচার্ডের কাতর সংবাদ শুনে সুলতান যুদ্ধ স্থগিত রাখেন এবং তার চিকিৎসার জন্য এক প্রবীন চিকিৎসক ও পথ্যের জন্য নানাবিধ উপাদেয় ফল ও বরফ প্রেরণ করেন। রিচার্ড সুস্থ হলে সুলতান সালাহ্উদ্দিন ও সম্রাট রিচার্ড সন্ধি প্রস্তাবে বসার জন্য একে অপরকে আহ্বান করেন। এই দুই বান্দার কি ভীমরতি ধরলো কে জানে সন্ধিতে দুজনে বসে রিচার্ডের বোন জোয়ানের (Joan) সাথে সালাহ্‌উদ্দিনের ভাই মালেকুল আব্দুল সয়েফউদ্দিনের বিয়ে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। এবং রিচার্ডের প্রস্তাবনুসারে জেরুজালেম নগর নব-দম্পতিকে বিয়ের উপহার স্বরূপ প্রদান করা হল। (Hitti’s History of Arabs. P.651)। উইকিপিডিয়া থেকে বিস্তারিত তুলে দেওয়া হলঃ
The Third Crusade (1189–1192), also known as the Kings' Crusade, was an attempt by European leaders to reconquer the Holy Land from Saladin (Salāh ad-Dīn Yūsuf ibn Ayyūb). It was partially successful, but fell short of its ultimate goal—the reconquest of Jerusalem.
After the failure of the Second Crusade, the Zengid dynasty controlled a unified Syria and engaged in a conflict with the Fatimid rulers of Egypt, which ultimately resulted in the unification of Egyptian and Syrian forces under the command of Saladin, who employed them to reduce the Christian states and to recapture Jerusalem in 1187. Spurred by religious zeal,
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:৪১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×