অমর কবিতা
রায়ান নূর
আমি এমন এক কবিতা লিখব
যা ভেসে বেড়াবে সাগরের ঢেউয়ে
আর ছবির মতো নিয়ে যাবে কল্পলোকে,
আমি সেই কবিতাই লিখব
যেখানে প্রকৃতির সকল কলা মানবে হার
যৌবন হবে আরবি ঘোড়ার মত উদ্দাম ৷
সেই কবিতা, যাতে থাকবে অমৃত রস
যেখানে হার মানে পৃথিবীর সকল রসশাস্ত্র ,
যার প্রতিটি লাইন আর শব্দে সম্মোহনী
মানুষকে করবে পাগল,উন্মাদ, পিপাসু ৷
যা আলো ছড়াবে চোখে,বুকে ,চিত্তে,বৃত্তে
আর একে একে বন্দী হবে মায়ার জগতে
অনায়াসে কোন শৃঙ্খল ছাড়াই,
আমি এমন এক কবিতা লিখব
যা পড়ে ভুলে যাবে মানুষ ক্ষুধা,তৃষ্ণা,কাম
ভুলে যাবে রোদের সেই তেজ,ঝড়ের তান্ডব ৷
মানুষ খুঁজে নেবে তার পরিচয় দিকবিদিক
ভুলে যাবে পূর্বপুরুষের স্মৃতি,
বর্বর জাতি হবে কোমল, হৃদয়বান
শান্ত ধার্মিক হবে অধর্মের চূড়ান্ত অবশেষ ৷
আমি সেই কবিতাই রচনা করব
ইতিহাস যাকে ভুলবেনা হাজার বছরের স্মৃতিতে
যা পূর্বপুরুষেরা রেখে দেবে উত্তর পুরুষের জন্য
যা পাঠ করে পশুরাও অর্জন করবে মানুষের গুন
যা দেখে জ্যোতিষীরা চেনে নেবে তার পথ
যা চিত্তে ভেসে বেড়াবে সহস্র বছর তারকার মতো
যেমন চন্দ্র আলো দেয় মহাকাল অতীতে ৷
সেই কবিতার বীজ বপন করব প্রকৃতিতে
যাকে সালাম করবে প্রকৃতির নীরব শূন্যতা
যাকে হৃদয়ে করে তুলবে বেদনার রব
যার ভাষা ফুটবে তাদের ঝরা পত্রে
যার দেহ হবে পাতা ঝরা বৃক্ষে
যার দ্যোতনা সূর্যের চির তেজ
যার ব্যঞ্জনা চন্দ্রের অমৃত রশ্মি
যার নাম দেবে আদি মানবের কুলাঙ্গার বংশধরেরা ৷
আমি পৃথিবীর বুকে সেই কবিতা রচনা করব
যা মানুষ পড়ে অন্ধ,বধির,বোবা হবে ভেদ নিঃসরণে
আর পৃথিবীর সকল মানুষ দুইদলে ভাগ হয়ে যাবে
একদল হাসবে দেহ দেখে, একদল কাঁদবে ভাষাহীনতায় ৷
প্রকৃতি কেবল বিচার করবে মানুষের অবয়ব আকারে
যাতে থাকবে দুই সুতোর দাড়িপাল্লা এর ওজন বিচারে ৷
মানুষ তখন কি মানুষ থাকবে এমন প্রশ্ন অবান্তর তখন,
তুমি কি জানতে চাও কেমন সে কবিতা,কিবা তার শক্তি
তুমি জানতে চাও কেমন তার শক্তি,কেমন শব্দের খেলা ৷
তাহলে চোখ বুজে বুকে হাত দিয়ে নিজেকে একবার দেখো
মনকে বলো সে কবিতার কথা,বিবেককে প্রশ্ন করো জানতে
তবেই তুমি পাবে আমার লেখা সে অমর কবিতা,
যে কবিতা চোখ খোলা রেখে পড়া যায় না,
সে কবিতা পড়ে মন,বোঝায় বিবেক, অনুভব করে হৃদয় ৷
একবার পড়ো,
বুঝবে,তুমি মানুষ নও কেবল একটা পাতাঝরা বৃক্ষ মাত্র ৷
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১১