somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু করার চেষ্টা

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[এই ছবিটা সেগুনবাগিচায়]


ব্লগে কথা হয় সোহায়লা আপুর সাথে আমার। আপুকে ভাল লেগে গেল। ফেইসবুকে এড করলাম। তার পর আরো ভাল করে পরিচয় হল আপুর সাথে।

আপু আমাকে ইনভাইট করলেন ‘Operation Piyaju-Beguni!!’ নাম। দেখে আমার ভাল লাগল। আমার বাসার কাছেই ছিল ১টা ইভেন্ট। ঠিক করে ফেললাম যাব। দেখেছি মাসের শুরুতেই। পরীক্ষা চলছিল তাই খোঁজ নিব নিব করে নেওয়াই হচ্ছিল না। ১৫ তারিখ রাতে হুট করে কল দিলাম তাসফিয়া আপু কে। আপু আমাকে জানালো , ১৭ তারিখ যেতে হবে দুপুর ২টায়, আপুর বাসায়।

আমি সবকিছু ঠিক করে রেখেছি মনে মনে, কি করব। পরদিন দেখি সকাল থেকে মেঘলা আকাশ। বের হলাম ১টায়। আর তখনি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। রিকশায় করে বাসা খুঁজে বের করে যেতে ১ ঘন্টা লেগে গেল। ২টায় পৌছাতে পারলাম। আমিতো খুব ভয়ে ছিলাম দেরি হবে ভেবে। তাসফিয়া আপুর সাথে পরিচয় হল।ছিল নিয়ামা আপু, সাবেরা আপু, রাকিব ভাইয়া, এহসান ভাইয়া। আরো ছিল সানিল সজব, মাসুদ রাহমান, ইমরুল হুদা অয়ন, এহসান , অঞ্জন সাজ্জাদ, সালমান হাসান, আরমিন জামান খান, অমি আহমেদ, রাকিব।


তাসফিয়া আপু সবার সাথে আলোচনা করে সব ঠিক করল। সবাইকে বুঝিয়ে দিল, কাকে কি করতে হবে। আমি একেবারেই নতুন আর কি করব, ঠিক মত করতে পারব কিনা সেটা নিয়েও অনেক চিন্তায় ছিলাম। .

মোট ১৪ জন কাজ করব, এক এক করে সবাই এসে পড়লো।
৩টায় খাবার আসা শুরু হল। সবাই মিলে কাজ শুরু করলাম। সব গুছানো, প্যাকেট করা। মোট ১০৫ টা প্যাকেট হল।
৫টায় ২ গ্রুপ করে বের হলাম। ১ গ্রুপ যাবে সেগুনবাগিচা। ২য় গ্রুপ যায় বেইলী রোড। আমি ছিলাম বেইলী রোড এর গ্রুপে।

আপু আমাকে গাড়িতে বসে থাকতে বললেন, সবাই বাইরে ঘুরে খুঁজে বের করলেন ছোট ছোট ছেলেদের, কাজ করে, অনেকে কাধে ব্যাগ নিয়ে আছে। এমন আরও কিছু বাচ্চাদের লাইন করে দাঁড় করানো হয়। তারপর এক এক করে সবার হাতে ইফতার দেওয়া হল। সবাই খুব খুশি মনেই নিয়েছে।
যাবার সময় দেখলাম অনেক গুলো ছেলে এক সাথে বসে খাবার খুলছে, এক সাথেই বসে খাবে মনে হল। আমাদের কাছে সব প্যাকেট শেষ,১টা আছে বাকি। আমরা খুজছিলাম কাকে দেওয়া যায়।
হঠাৎ ২টা ছেলে দৌড়ে আসল ,
একজন বলল, "আপা , আপা , আমাকে দেন, আমি পাইনাই"। কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না আপু,
বললেন, " আমাদের কাছে ১টাই আছে বাবু" ।
১জন কে সেটা দেওয়া হল। ছেলেটা অন্য ছেলেটাকে বলল, তুই আমার থেকে নিস। আমরা তো অবাক আর খুব ভালও লাগল, যে এত টুকু ছেলে তাও শেয়ার করতে শিখেছে।

এটা খুব ছোট ১টা কাজ ছিল। খুব কম দিতে পেরেছি আমরা। আমার মনে হচ্ছিল আরো যদি থাকত তা হলে আরো অনেক কে দেওয়া যেত। আজ আমরা শুরু করেছি, কাল আরো অনেকেই আসবে এভাবেই। সবাই এভাবেই শুরু করলে হয়তো আর অনেককিছু করে ফেলা যাবে। সেই আশায় রইলাম।

খুব ভাল ভাবেই সব শেষ হয়। অনেক ভাল লেগেছে কাজটা করতে পেরে। একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা এটা আমার জন্য।

সৃষ্টিকর্তা কে ধন্যবাদ আমাকে এমন একটা কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

আর সোহায়লা আপু কে অনেক ধন্যবাদ আপু আমাকে জানিয়াছেন, তানাহলে করা হত না আমার। আর তাসফিয়া আপু কেও ধন্যবাদ, কারন আপু আমাকে গাড়িতেই থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন, আর সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, নাহলে আমি হয়ত সবার মত. কাজ করতে পারতাম না।
আরাফাত ভাইয়া কেও ধন্যবাদ আমাকে এই লেখাটা লিখতে সাহায্য করার জন্য।
আর সব আপু আর ভাইয়া কে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত কষ্ট করেছেন সে জন্য। সবাই এক সাথে কাজ করেছি বলেই সব ভাল ভাবে হয়েছে।

কিছু ছবি সে দিনের,



[এখানে সাজানো আমাদের ছোট চেষ্টার সামান্য ইফতারি]





[সেগুনবাগিচায় ইফতারি দেয়া হচ্ছে]



-------------------------------------
রামাদানের শুরু থেকেই প্ল্যান শুরু করে দেই আমরা ইফতার পার্টির , কোন রেস্ট্রুরেন্ট এবার কি স্পেশিয়াল অফার দিচ্ছে , কোথায় ফাটাফাটি সব ইফতার আইটেম, হোকনা গলা কাটা দাম ! সারাবছর তো আর ইফতার হয়না !! চকবাজার এর ক্রেইয এর পর নতুন স্টার এর ইফতার ফেস্টিভ্যাল, ভুতের ভুতুরে সব ইফতার ,বাচ্চা জিলাপীর আকর্ষন , বেইলিরোডের মুখরোচক সব খাবার দাবার , নামী হোটেল গুলোতে হেভভি ইফাতারের এডভার্টাইযমেন্ট , আমরা বিভ্রান্ত জাতি রামাদানের সংযমের শিক্ষা টা ভুলে উদর এর ওরশিপ করা শুরু করি , তারচেয়ে প্রধান হয়ে যায় ইফতার কে কেন্দ্র করে আড্ডা আর গেট টুগেদার! হয়তো অত খারাপ না ব্যাপারগুলো , কিন্তু আরো ভালোতো করা যায়!!

সেই চিন্তা থেকেই এই ইনিশিয়েটিভ কমিউনিটিএকশনের একশনিয়ার ছেলেমেয়েরা নেয়!
উদ্দেশ্য,
* পথশিশুদের সাথে ইফতার করা যারা ভিক্ষাজীবী নয় বরং কাজ করে।
* রিওয়ার্ড পাওয়া , আল্লাহ তো এই মাসে বেশী বেশী ভালো কাজ করতে বলেছেন!
* দলবদ্ধ ভাবে কাজে এগিয়ে এসে সব সময় স্ট্রাগল করা মানুষ গুলোর কাছে যাওয়া
* অপচয় না করে , চেইন ফুড কোর্টে অযথা খরচ না করে এমন ভাবে পার্টি করা যাতে মনটা অপার্থিব শান্তিতে ভরে যায় , যেটার কোন মূল্য নিরুপণ করা যায়না!
* একবেলা ভালো কিছু খাবারের ব্যাবস্থা করা ওদের জন্য , যেটা হয়তো সামানয় কিন্তু যে ভালোবাসা আর সহমর্মিতা সেখানে জড়িয়ে আছে তা অসামান্য!
*লিডারশিপ বিল্ডিং !
রামাদানে কমিউনিটিএকশনের বেশ আরো কিছু কাজের এটাও একটা ছিল।
সাতাশ তারিখ ট্রায়াল ভার্সনের পর টানা পনের দিন , সাতেরটি টিম এই কাজ করেছে সারা ঢাকায়। বিভিন্ন ভাবে , বিভিন্ন জায়গায়!

[এই অংশ টুকু সোহায়লা আপুর লেখা আমার অনুরোধে যেন সবাই পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারে।আপুকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে এটা লিখে দেয়ার জন্য।]
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১০ রাত ৩:৪২
৪৭টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×