somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পান সুপারি আর চুন! :P সাথে জর্দা! :!>

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গ্রাম থেকে দাদী বাসায় আসছে আর আমি দাদিকে খুব ফলো করছি। এটাই ছিল আমার রুটিন যখন প্রথম দাদিকে দেখেছি। দাদা সব সময় কাছে থাকেন বলে তিনি আমার খুব কাছের মানুষ। কিন্তু দাদী খুব দূরের কারন দাদিকে আমি খুব একটা কাছে পাইনি। আমি যে সময়ের কথা বলছি সেটা ছিল আমি যখন চার কিংবা পাঁচ বছরের মেয়ে। দাদিকে অনেকদিন পর দেখেছিলাম বলেই আমার কাজ ছিল দাদির সব কাজ খুব মন দিয়ে খেয়াল করা। দাদির সাথে সাথে সব সময় একটা সোনালি রঙের গোল ডিব্বা। খুব খেয়াল করতাম সেটা কে! :-B
আর সারাদিন দাদী কি যেন মুখে পুরে খেতে থাকে। কিছুতেই শেষ হয়না। দাদি কি গিলতে ভুলে গেছে নাকি! কি আশ্চর্য! সারাদিন ধরে কি খাচ্ছে! চিন্তার কথা! B:-/
একদিন চোখে পরে গেল দাদি সেই সোনালি রঙের ডিব্বা থেকে কিছু একটা বের করছে। এক দৌড়ে কাছে বসে উকি দিলাম। দেখি সবুজ বড় কয়েকটা পাতা! আর গোল গোল ছোট্ট বলের মত একটা ফল। আর কিছু কৌটা। দাদি কালো একটা কিছু দিয়ে গোল বল গুলো কাটল কুচি কুচি করে। একটা পাতা হাতে নিয়েছে। একটা কৌটা থেকে সাদা কি যেন নিয়ে মাখলেন পাতায়। তারপর সুন্দর করে ভাজ করে মুখে পুরে দিলেন।
দাদি তাহলে সারাদিন পাতা খায়! :-/

আমাকে দেখে দাদি বললেন "খাবি?"
আমি তো লাফ দিয়ে উঠি পারলে, "হ্যা" :D

একটা পাতা থেকে পিচ্চি একটা টুকরা নিলেন তাতে গোল বলের একটা টুকরা আর এক চিমটি সাদা কি যেন লাগিয়ে দিলেন। আমার কেমন লেগেছিল প্রথম খেতে তা মনে নেই তবে :P এর পর থেকে আমার কাজ ছিল দাদির সেই সোনালি ডিব্বার খেয়াল রাখা আর দেখা কখন দাদি সেই পাতা বের করেন। আমিও সাথে সাথেই দাদির সামনে বসে যেতাম। পরে অবশ্য জানতে পেরেছিলাম এটা পান, সুপারি আর চুন। আমাকে খুব পিচ্চি একটা টুকরা দিতেন! ছোট দের নাকি অল্প অল্প খেতে হয়। :(

সেই থেকে দাদি আসলে আমি খুশি হয়ে যেতাম খুব কারন সেই পান খাবার লোভে। :!> কি অদ্ভুত দেখতে আর খেতে। সব থেকে মজার যখন জিভ লাল রঙের হয়ে যায়। :P একটু পর পর জিভ বের করে আয়নায় দেখতাম যে জিভ টা কত লাল হয়েছে। :P

দাদি বছরে একবার আসতেন বাসায়। তার মানে প্রতি বছরে একবার আমার পান খাওয়ার উৎসব হতো। :P

এবং তার পর আমার এত সাধের পান খাওয়া একে বারেই ইতি হয়ে গেল একটা ঘটনায় :(



মামার বৌ-ভাত ছিল সেদিন। নানু বাসার ছাদে প্যান্ডেল করা হয়েছে। খাবার পরে দেখলাম একটা টেবিলে পান সুপারি আরও অনেক লাল হলুদ রঙের মসলা সাজিয়ে রাখা। আমি পারলে লাফ দিয়ে যাই :P পান খেতে।
নিলাম পান আর যত মসলা আছে সব দিলাম। নামও সব গুলোর জানি না। দাদি আমাকে চুন আর সুপারি কিছু দিতেন না। তাই এত বড় সুযোগ আমি ছাড়তে চাইলাম না। খয়ের, জর্দা, সাদা পাতা, আর যা যা ছিল সব নিলাম বেশি করে :P
খালা বললেন "নিও না জর্দা, খেতে পারবা না।"
আমি কি আর শুনি সেই কথা! ;)
খুব মজা করে পান খাচ্ছি। এর মাঝে শুনি মামীর বাড়ি থেকে মেহমান চলে আসছে। আমি পান খেতে খেতে নীচে নামছি। ছাদ থেকে শুধু নীচের তলার পা দিয়েছি আর মাথা টা কেমন চক্কর মেরে উঠল! :-& সেটা যে কিরকম অনুভূতি বলে বুঝানো যাবে না! বুঝলাম পানে ধরেছে আমাকে। কাউকে বুঝতে দিলাম না। ধীরে ধীরে নেমে নানুর রুম খালি পেয়ে একদম ঠাস করে খাটে পরলাম। এর পর আর কিছুই মনে নেই আমার! :|

:( কত সময় গেছে আমার কিছুই মনে নেই, আম্মু এসে ডাক দিল। আম্মু অবাক আমি ঘুমাচ্ছি দেখে। মামা আমাকে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোর? আমি লজ্জায় কি বলব! :#> চুপ করে আছি। মামা কিভাবে জানি বুঝে গেল
"তুই জর্দা দিয়ে পান খাইছিস তাই না?" X((
"হুম" :!> আমি আর কি বলব!

উঠে দেখি মামা, মামি চলে যাচ্ছে! তার মানে সব প্রোগ্রাম শেষ! :(( আমি পুরা সময় টাই ঘুমায় পার করেছি! :(( আমার ডাক ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল! নিজের উপর আর পানের উপর এত রাগ হচ্ছিল X((

:((
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১১
৫৬টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×