যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে ব্লোগারদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল ছিল শাহাবাগ। গণজাগরন মঞ্চের সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না নাস্তিকদের। ব্লগে নাস্তিকদের সাথে আস্তিকদের লড়াই ছিল প্রথম থেকেই। কাকপক্ষী আর হোরাসমামার যুক্তি-তর্কের উপস্থাপনা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু শাহাবাগ যখন দেশের নতুন সরাকার (ইমরান সরকার) দখল করে নিল তখন বিরোধীরা পেল এক মোক্ষম সুযোগ।
চালের ভিতর যেমন দু-একটা কালো চাল থাকে তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিরত ব্লোগারদের ভিতরথেকে বেছে-বেছে এক কুলাঙ্গারকে মেরে ফেলে পুরো আন্দোলনের থিমটাই নষ্ট করে দিল বিরোধীরা।
থাবা বাবা শুধু মরেই গেল না মরে জম্ম দিয়ে গেল "হেফাজতে ইসলাম" নামের আর একটি শক্তি। তারা স্মরন কালের এক বিশাল জনসভা করল ঢাকার প্রাণ কন্দ্রে। সব ধরনের মিডিয়া ব্যাপকভাবে প্রচার করল যেই জনসভা। যার আকার এবং জনসংখ্যা দেখে মানুষের মাথাই ঘুরে গেল। পুরো বাংলাদেশ হেফাজত নামের ঘোরের মধ্যে চলেগেল।
এদিকে নতুন সরকারের আদেশে (ইমরান সরকার) দেশের জাতীয় পতাকা উঠা-নামা শুরু করল। আতে ঘাঁ লাগল প্রগতীশীলদের মনে। পেছন থেকে সরে গলে অনেকেই।
এরমধ্যেই চলে এল ৫ই মে। এক টার্নিপয়েন্ট। ফসল ঘরে তোলার দিন। সরকার মহোদয় এক মহা ভুল করে বসল। শেষ রাতে তারে চালাল অপারেশন। সকালে মানুষ ঘুম থেকে উঠে জানতে পারল হেফাজতকে ঢাকা থেকে আইন রাক্ষাকারী বাহিনি উতখাত করেছে। একই দিনে বিরোধি দল বিএনপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলাহল হাজার-হাজার লোকের গণ হত্যার সংবাদ।
মানুষ বিশ্বাস করল। হেফাজতের ফসল চলে গেল বিএনপির ঘরে। সরকারী দল তা বুঝল অনেক দেরিতে। ততক্ষনে চার-চারটি নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয় হেয়ে গেছে। টনক নড়ল সরকারের। গাজিপুর নির্বাচন। প্রধান এজেন্ডাগুলির একটি হেপাজত।
জাতীয় সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিলেন।বললেন হাইতি সহ বিশ্বর অন্যান্য স্থানের বিভিন্ন দুর্ঘটনার ছবি হেফাজতের মৃত্যু হিসাবে চালানো হয়েছে। সবধরনের মিডিয়াতে ঐ বক্তব্য এসেছে।
স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন, দেশের মানুষ (ভোটার) কেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিশ্বাস না করে বিরোধীদের বক্তব্য বিশ্বাস করছে?
দেশে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয়ের নির্দিষ্ট ভোটার আছে। যারা যে কোন অবস্থাতে এ দুই দলকে ভোট দিবে। কিন্তু ভোটের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় যে ভোটারদের মাধ্যমে তারা এ দু-দলের নির্দিষ্ট সমর্থক নয়। এ ভোটাররা (মানুষগুলো) এখন প্রধানমন্ত্রীকেও বিশ্বাস করেনা বিরোধী দলকেও বিশ্বাস করে না। দু-দলই র্দৃনীতিবাজদের অভয় অরণ্য।
বিএনপি রাজনৈতিক কর্ম-কান্ডের সর্বাগ্রে রাখছে হেপাজতরে ফসল। আর সরকার তা টার্ন করাতে চাচ্ছে পতিত শৈরাচার এরশাদের দিকে।
গাজিপুর নির্বাচন এই সরকারের কফিনে কি শেষ পেরেক মেরে দিবে?