মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘ক্বদরের রাত্র হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোতে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ তালাশ করো।’
আজ দিবাগত রাতটিই রমাদ্বান শরীফ-এর ২৭ তারিখ রাত। যে রাতে শবে ক্বদর তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তাই সকলের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে, অন্যান্য বিজোড় রাতের ন্যায় আজ রাতেও শবে ক্বদর তালাশ করা।
অর্থাৎ খালিছভাবে তওবা করতঃ সারা রাত ইবাদত-বন্দিগী, যিকির-ফিকির, মীলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ ও দোয়া-মুনাজাতে কাটানো।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন শরীফ নাযিল করি। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ক্বদরের রাত্রিতে লৌহমাহফুজ থেকে সামায়ে দুনিয়া বা পৃথিবীর আকাশে বাইতুল ইজ্জত নামক কুদরতী ঘর মুবারক-এ এক সাথে নাযিল করেন। আপনি তো জানেন ক্বদরের রাত্রির ফযীলত কি? ক্বদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ অবতীর্ণ হন মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে সকল বিষয়ের প্রতি সালাম বর্ষণ করেন ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত।”
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বদরের রাত্রিতে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি একদল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরসহ যমীনে অবতীর্ণ হন। অতঃপর দাঁড়ানো, বসা ইত্যাদি অবস্থায় যিকিরকারী ও ইবাদতকারী সকলের প্রতি ছলাত বর্ষণ করেন।”
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “পাঁচ রাতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয়- ১. রজব মাসের পহেলা রাত, ২. বরাতের রাত, ৩. ক্বদরের রাত, ৪ ও ৫. দুই ঈদের দুই রাত্র।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, শবে বরাত বা অন্যান্য রাত্রিগুলো যেরূপ নির্দিষ্ট শবে ক্বদর তদ্রƒপ নির্দিষ্ট নয়। শবে ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রগুলোর যেকোন রাত্রিতেই হতে পারে। তাই শেষ দশ দিনের প্রত্যেক বেজোড় রাত্রিতে শবে ক্বদর তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে হানাফী মাযহাবের ইমাম, ইমামে আ’যম হযরত আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেহেতু ফতওয়া দিয়েছেন যে, ‘শবে ক্বদর রমাদ্বান শরীফ-এর ২৭ তারিখ রাতে।’ তাই আমরা এ রাতে বিশেষভাবে শবে ক্বদর তালাশ করে থাকি। অর্থাৎ এরাতটি বিশেষভাবে ইবাদত-বন্দিগী, দোয়া-দরূদ, তাছবীহ-তাহলীল, তওবা-ইস্তিগফারে কাটিয়ে থাকি।
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ক্বদরের রাত্রিতে যে ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে বলেন,
* প্রথমতঃ বাজামায়াত ইশা, তারাবীহ ও বিতর নামায আদায় করতঃ মীলাদ শরীফ পাঠ করে সংক্ষিপ্ত নছীহত করে তওবা-ইস্তিগফার করে দোয়া-মুনাজাত করবে।
* অতঃপর দুই দুই রাকায়াত করে ৪ অথবা ৬ অথবা ৮ অথবা ১০ অথবা ১২ রাকায়াত শবে ক্বদরের নামায পড়বে।
* অতঃপর ছলাতুত তাসবীহ-এর নামায পড়বে, যার দ্বারা মানুষের গুনাহ-খাতা ক্ষমা হয়।
* যিকির-আযকার করবে, যার দ্বারা ক্বলব বা অন্তর ইসলাহ ও ইতমিনান হয়।
* দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, যার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার রাসুল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
* কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করবে, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
* সম্ভব হলে কবরস্থান যিয়ারত করবে, যার দ্বারা সুন্নত আদায় হয়।
* তাহাজ্জুদের নামায পড়বে, যা দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য হাছিল হয়।
* অতঃপর পুনরায় মীলাদ শরীফ ক্বিয়াম শরীফ করে খালিছ ইস্তিগফার ও তওবা করবে, যার মাধ্যমে বান্দা-বান্দির সমস্ত গুণাহ-খাতা মাফ হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার খালেছ সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। অর্থাৎ শবে ক্বদরের বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত ও নাযাত ইত্যাদি হাছিল করা যায়।
* আর সর্বশেষ ছুবহে ছাদিকের পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করবে অর্থাৎ আখিরী মুনাজাত করবে। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশি হবেন ও উনার নিয়ামত লাভ হবে। তবে আখিরী মুনাজাত এতটুকু পূর্বে শেষ করবে যাতে রোজাদারগণ সাহরী খেতে পারে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- আজ দিবাগত রাতটিই রমাদ্বান শরীফ-এর ২৭ তারিখ রাত। যে রাতে শবে ক্বদর তালাশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই সকলের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে, অন্যান্য বিজোড় রাতের ন্যায় আজ রাতেও শবে ক্বদর তালাশ করা। অর্থাৎ খালিছভাবে তওবা করতঃ সারা রাত ইবাদত-বন্দিগী, যিকির-ফিকির, মীলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ ও দোয়া-মুনাজাতে কাটানো।
-০-

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




