somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার। ইরানের বিখ্যাত পার্সিয়ান সুফি বায়েজিদ বোস্তামীর নামে গড়ে উঠা এই মাজার চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের পাশাপাশি চট্টগ্রামে আসা দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্যও একটি অত্যন্ত আকর্ষনীয় স্থান। জনশ্রূতি অনুযায়ী বায়েজিদ বোস্তামীর চট্টগ্রামে আগমনের ইতিহাস শুনতে পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামে অবস্থানের পরে প্রস্থানকালে ভক্তকূল তাকে থেকে যাবার অনুরোধ করলে উনি তাদের ভালোবাসা ও ভক্তিতে মুগ্ধ হয়ে কনিষ্ঠ আঙ্গুল কেঁটে কয়েক ফোঁটা রক্ত মাটিতে পড়ে যেতে দেন এবং ঐ স্থানে উনার নামে মাজার গড়ে তুলবার কথা বলে যান।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারের পাদদেশে একটি সুবিশাল দীঘি অবস্থিত। এর বাসিন্দা হিসাবে বোস্তামীর কাছিম সুবিখ্যাত। বোস্তামীর কাছিম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অত্যন্ত বিরল এবং চরমভাবে বিপন্নপ্রায় প্রজাতি। বর্তমানে বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার প্রাঙ্গন ব্যতীত বিশ্বের আর কোথাও এদের দেখা মিলে না। মাজারের দেখাশোনার দ্বায়িত্বে থাকা মাজার তত্ত্বাবধায়ক কমিটির লোকদের দ্বারাই এদের প্রতিপালন করা হয়। বর্তমানে মাজার প্রাঙ্গন সংলগ্ন এই দীঘিতে দেড়শো থেকে সাড়ে তিনশো কচ্ছপের আবাস রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। প্রজনন মৌসুমে মাজারের মূল পাহাড়ের পেছনে এদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে এদের ডিম পাড়ার ব্যবস্থা করা হয়।

মাজারের ভক্তকূল ও আঞ্চলিক জনশ্রুতি অনুযায়ী মাজার প্রতিষ্ঠাকালে এই অঞ্চলে প্রচুর দুষ্ট জ্বীন এবং পাপীষ্ঠ আত্মার পদচারণা ছিলো। বায়েজিদ বোস্তামী তার এই অঞ্চলে ভ্রমনকালে এইসব দুষ্ট আত্মাকে শাস্তিস্বরূপ কাছিমে পরিণত করেন এবং আজীবন পুকুরে বসবাসের দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।


(২) নিচ থেকে পাহাড়ের উপর মাঝারে যাওয়ার জন্য এমন সিড়ি দেওয়া আছে।


(৩) মাঝারে দর্শনার্থী পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা দরজা রয়েছে।


(৪) মাঝারের বাসি ফুলগুলো চত্তরে রাখা আছে, মনের আশা বাসনা পূরণ হওয়ার জন্য ওখান থেকে অনেকেই বাসি ফুলের কিছু অংশ নিয়ে যাচ্ছে।


(৫) গাছগুলোতে লাল হলুদ রঙা সুতা বেধেই মনের আশা পূরণ করে নেওয়া যায়।


(৬) কাঠ গোলাপ গাছগুলো এমন সব আধ্যাত্মিক যায়গায় খুবই জনপ্রিয় কেন জানিনা।


(৭) বার আউলিয়ার আস্তানা শরীফ লেখা রয়েছে এখানে। এটা মাঝারের একেবারে পেছনের অংশে। এখানে বসে নাকি বায়েজিদ বোস্তামী অন্যান্যদের সাথে কথা বলতেন।


(৮/৯) এখানে আরো একটা মজার বিষয় হলো মানুষ ওদের কিছু টাকা পয়সা দান করলে একজন ঝাড়ু দিয়ে মাথায় বাড়ি দিয়ে ওনার মনের আশা পূরণ করার দোয়া করছেন বা মনের সব কালিমা ঝাড়ু দিয়ে দূর করে দিচ্ছেন।




(১০) বারান্দায় একজন ক্যাস বাক্স নিয়ে বসে আছেন, এখানে দানের টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী গ্রহণ করা হয়।


(১১) এটা মুল মাঝার। এখানেও অনেকেই টাকা দিচ্ছে, আর একজন আবার সেই টাকা দানকারীকে ময়ুরের পালক দিয়ে বানানো ঝাড়ু দিয়ে ঝেড়ে দিচ্ছে। ক্যামেরা দেখে মাঝারের উপর থেকে টাকা ফেলে ঝাড়ু রেখে সে চলে যায়। অবশ্য আমাকে সে ছবি তুলতেও বাধা দিয়েছিল, কিন্তু আমার অনমনীয় ভাব দেখে নিজেই সরে পড়ে।


(১২) দক্ষিণ পাশের চত্ত্বরে নিরন্তর জ্বলে চলছে এমন আগর বাতি আর মোমবাতি।


(১৩) পাহাড় থেকে নেমে আসার আগে মাঝারের পূর্ব পাশে দাঁড়িয়ে তোলা একটা ছবি।


(১৪) সমাধি পাহাড়ের পাদদেশে এবং দীঘির পাড়ে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ঠ মোঘলরীতির আয়তাকার মসজিদ। স্থাপত্যশৈলী থেকে ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর আমলে মসজিদটি নির্মিত। বর্তমানে সামনে দিয়ে আরো নির্মান কাজ করে মসজিদটাকে সম্প্রসারন করা হচ্ছে।


(১৫/১৬) দীঘির পাড়ে বোস্তামী কচ্ছপের জন্য খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছে ভক্তকুল। এই কচ্ছপ যার খাবার খাবে তার মনের আশা পূরণ হবে।




(১৭/১৮) কোন একটা কচ্ছপ কাছাকাছি আসলে ওর মুখে খাবার ঠেকে দেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। মনের বাসনা পূরণ না করে কেউ যেন এখান থেকে যাবেনা।




(১৯) কেউ আবার হাতের নাগালে এলে ওদেরকে ডলে ডুলে গায়ের শ্যাওলা পরিস্কার করে দিচ্ছে।


(২০) আর কচ্ছপের খাবার বিক্রির ব্যবসাটাও এখানে বেশ জমজমাট।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭
৪৯টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×