খুব নিরাপদ জায়গা অর্থে ব্যবহৃত একটা প্রবাদ হলো “মায়ের পেটের শিশুর মতই নিরাপদ”, এখন সময় এসেছে প্রবাদ্গুলো বদলানোর (দিন বদল কিনা) যুবলীগ আর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কাছে আজ মায়ের পেটের শিশুরাও নিরাপদ নয়। অবশ্য এটা যে আনকোরা নতুন ঘটনা, তা কিন্তু না এর আগেও তাদের দুইপক্ষের মারামারিতে স্কুলের বাচ্চা, নিরীহ পথচারীরা, ভার্সিটির ছাত্রী সহ বিভিন্ন সময় অনেকেই নিহত হয়েছে। আসলে যারা মরেছে তাদেরই দোষ আমি বলবো। কেনই বা তোমরা এই সময় ঐ দিক দিয়ে যাবে, একটু ঘুরপথ দিয়ে গেলে নিশ্চয়ই তোমাদের মরতে হত না! খবরে প্রকাশ, গত বৃহস্পতিবার মাগুরার কারিগরপাড়ায় বিকালে যুবলীগের দুগ্রুপের মারামারির সময় চা বিক্রেতার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা বেগম নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় গুলিবিদ্ধ হন। সাথে সাথে আহতদের স্থানীয় হাসপাতেলে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা অস্ত্রপচার করেন এবং নির্ধারিত সময়ের দেড়মাস আগেই শিশুকে ভুমিষ্ট করান । গুলিটা শিশুর পিঠ দিয়ে ঢুকে বুক দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং সেই সাথে একটি চোখ ও নষ্ট হয়ে যায়। শিশুটিকে আরো উন্নত চিকিতসার জন্য রবিবার ঢাকায় নেয়া হয়। সর্বশেষ খবর অনু্যায়ী মা কিছুটা সুস্থ হলেও আশঙ্কা কাটেনি শিশুটির। মা মাগুরায় আর শিশুটি ঢাকায় চিকিতসাধীন আছে, দুইজন দুই জায়গায় অথচ জন্মের পর সবচেয়ে যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হচ্ছে মায়ের শালদুধ তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এই শিশুটি। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ঘটনা ঘটেছে এমনই সময়ে যখন দেশের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী ও গনতান্ত্রিক (!!) ছাত্র সংঘঠনের কাউন্সিলের প্রস্তুতি চলছিলো । এই কাউন্সিল নিয়ে দেখলাম আমাদের মিডিয়াগুলো খুব উচ্চাসিত। সবাই প্রশংসার ঢালি নিয়ে বসেছেন। সেখানে এই নবজাতকের গুলিবিদ্ধ হবার খবর অনেকটাই অর্বাচীনের মতো মনে হচ্ছে।
অপরাধীরা গ্রেফতার হলো কিনা জানতে চাচ্ছেন তো? কিংবা আইনের শাসনে বিশ্বাসী বলে দিন রাত মুখে ফেনা বের করছে যে দলের নেতারা, তাদের মুখের কথা বিশ্বাস করে আপনি বোধহয় আশায় বুক বেধে আছেন, নিশ্চয়ই ভাবছেন নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধের কারনে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠন করে এতক্ষনে আসামীদের গ্রেফতার করে রিমান্ড আবেদন চাওয়া হয়ে গেছে। তবে শুনুন প্রকৃত সত্য, বাহাত্তর ঘন্টার মধ্যে আসামী গ্রেফতারের কথা বললেও এখনো কেউ গ্রেফতার হয় নি। বরং মোবাইলে প্রতি নিয়ত মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে অসহায় পরিবারটিকে।
মিডিয়া কি করছে? ভাই ডিস্টার্ব করবেন না তো, ছাত্রলীগের কাউন্সিল নিয়ে ব্যাস্ত আছি। লাইভ দেখাতে হবে, নব নির্বাচিত সভাপতি সেক্রেটারী কে টিভি টকশো তে ডাকতে হবে, কত কাজ! কত শিশুই ত প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। এরকম খবর ৩৬৫ দিনই থাকে ছাত্রলীগের কাউন্সিল কি প্রতিদিন হয়?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭