মার্কিন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন, বিদ্যুতিক বাতির আবিষ্কারক হিসেবেই সবাই একনামে চেনেন তাঁকে। ইন্টারনেটে উনার মজার বেশ কয়েকটি কাহিনী পড়লাম, তিনি নাকি অন্ধকারকে খুব ভয় পেতেন, এই ভয় দূর করতেই কিনা কে জানে শেষমেষ বাতিই আবিস্কার করে বসলেন।
অথচ ছোটবেলায় কিন্তু স্কুলের সবচেয়ে খারাপ ছাত্র মানে ছিলেন, মাথামোটা আর কি। সাত ভাই বোনের মাঝে তিনি ছিলেন সবার কনিষ্ট। একে ত বড় ফ্যামেলি তার উপর স্কুল থেকে অভিবাবকের কাছে নালিশ, কাহাতক সহ্য করা যায়? বাবা ছিলেন চরম বিরক্ত, কিন্তু মা? মা তো মা ই!
সেই কাহিনি দিয়েই না হয় শুরু করি,
স্কুল থেকে চিঠি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলো এডিসনকে, ভালো কিছু একটা যে না সেটা অনুমান করতে পেরেছিলেন ঠিকই, সুতরাং বাবাকে না দিয়ে মাকেই দিলেন চিঠিটা, আর মা কি জানি ভাবলেন, তারপর চোখ মুছে উনার সামনেই জোরে জোরে পড়তে লাগলেন চিঠিটা...
"আপনার পুত্র খুব মেধাবী, এই স্কুলটি তার জন্য অনেক ছোটো এবং এখানে তাকে শেখানোর মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক নেই।দয়া করে আপনি নিজেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করুন।"
আর চিঠির কথা শুনে এডিসনের চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠলো, তারপর থেকে মায়ের কাছেই শিক্ষা নেয়া শুরু করলেন।
এরপর পার হয়ে গেছে অনেকদিন, এডিসন ও অনেক বড় বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, মার্কেটিং এর বড় কেউকেটা। মা ও আর বেঁচে নেই ততদিনে। কি এক কাজে পুরাতন কাগজ নাড়াচাড়া করছিলেন, হঠাত-ই চোখ পড়লো ভাজ করা এক কাগজের দিকে, হাত বাড়িয়ে নিয়ে পড়তে শুরু করলেন, স্কুলের সেই চিঠি। অদ্ভুত এক অনুভুতি, অজানা এক ব্যাথায় যেনো বুকের পাজর ভেঙ্গে আসতে চাইলো, চোখ ফেটে পানি পড়তে লাগলো। তাতে লিখা ছিলো...
"আপনার সন্তান স্থুলবুদ্ধি সম্পন্ন, সে এই স্কুলের উপযুক্ত নয়, আমরা কোনোভাবেই তাকে আমাদের স্কুলে আর আসতে দিতে পারি না।"
তারপর তার ডাইরিতে লিখলেন "টমাস আলভা এডিসন একজন স্থুলবুদ্ধি সম্পন্ন শিশু ছিলেন।একজন আদর্শ মায়ের দ্বারা তিনি শতাব্দীর সেরা মেধাবী হয়ে উঠলেন"
এখন উনার কিছু মজার ঘটনা বলি...
উনি তখন বেশ ছোট হঠাৎ উনাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। সবাই খুজে নেমে পড়লো। খুজতে খুজতে উনাকে পাওয়া গিয়েছিলো এক নির্জন জায়গায় কয়েকটি মুরগির ডিমের উপর উপুর হয়ে শুয়ে আছেন, সবাই জিজ্ঞেস করার পর তিনি যা বললেন তাতে সবার চক্ষু চড়ক গাছ, তিনি নাকি ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বের কর্তে চেয়েছিলেন, তাঁর অকাট্য যুক্তি ছিলো মুরগির নীচে ডিম রাখলে তা থেকে বাচ্চা বেরোলে আমার পেট থেকে কেনো হবে না?
আগে বলেছিলাম উনার কুটিকালের গল্প...
এখন যেটা বলছি সেটা উনার বড়কালের গল্প, তখন তিনি বেশ টাকাওয়ালা মানুষ, গেছেন ট্যাক্স অফিসে রিটার্ন জমা দিতে, গিয়ে নিজের নাম লিখতে গিয়ে পড়েছেন বিরাট ফ্যাসাদে, কিছুতেই নিজের নাম মনে করতে পারছেন না, মার খেলে মানুষ বাপের নাম ভুলে যায় কিন্তু উনি দিব্যি নিজের নামটাই ভুলে বসে আছেন। বসে বসে চুল ছিড়ছেন আর দাত কিড়মিড় করছিলেন, হটাত প্রতিবেশীর সাথে দেখা "কি ব্যাপার টমাস কি করো এখানে" মুহুর্তেই মনে পড়ে গেলো নিজের নামখানি।
যৌবনকালের কথা বাকি থাকবে কেনো? সেটাও বলে দেই ফাঁকে...
কাজ করছিলেন ল্যবুটরিতে, খেয়াল চাপলো হেলিকপ্টার বানাবেন, আর জালানী হিসেবে থাকবে বারুদ, আগ পিছ না ভেবে যেই চিন্তা সেই কাজ, একটা নমুনা বানিয়ে যেই চালাতে গেলেন, সাথে সাথে বুম! পুরো ল্যাবরেটরি তে আগুন ধরে গেলো। পড়ি কি মরি, কোন মতে বের হয়ে চাচা আপন প্রান বাঁচালেন!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫০